যদি চান কাস্টমার আপনার পণ্যটি ক্রয় করুক, তাহলে আপনাকে জানতে হবে কোন বিষয়গুলি একজন কাস্টমারকে আপনার থেকে পণ্য কিনতে উৎসাহিত করে।
পণ্যের কোয়ালিটি, ভালো কাস্টমার সাপোর্ট, বিক্রেতার সুনাম – এসব আপনি জানেন । কিন্তু যখন প্রোডাক্ট কোয়ালিটি, কাস্টমার সাপোর্ট ও আপনার উপর আস্থা – সবই ঠিক আছে, তখনও কি যথেষ্ট পরিমান ক্রেতা আপনার থেকে পণ্য ক্রয় করছে?
আপনি কি জানেন একজন কাস্টমার অনলাইনে কোনো একটি পণ্য কেনার আগে কোন কোন বিষয়গুলি বিবেচনা করে?
অন্য কাস্টমারদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার রিভিউ
অনলাইনে নিয়মিত কেনাকাটা করেন এমন একজনকে প্রশ্ন করেছিলাম, “যখন অনলাইনে কিছু কেনার সিদ্ধান্ত নেন, তখন আপনি কোন বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন?”
তিনি বলেন, “আমি রিভিউ দেখি। তবে সবার রিভিউ দেখি না। আমি যে পণ্যটি কিনতে চায় সে পণ্যটি যদি কোন ক্রেতা ব্যবহার করে থাকেন তবে তাঁর অভিজ্ঞতা আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে করতে সাহায্য করে।”
খেয়াল করুন,
সব রিভিউ না, যে পণ্যটি সে কিনতে চায় সেই পণ্য ব্যবহারকারির রিভিউ।
অনলাইন বিজনেস যারা করেন, তাঁদের ধারনা নেগেটিভ রিভিউ খারাপ। এই ধারনাটি সত্যি নয়। যদি বিক্রেতা সেই নেগেটিভ রিভিউ দানকারীর সমস্যা সুন্দর ভাবে সমাধান করতে পারেন, তবে সেটি আরও বেশি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। কাস্টমার আশ্বাস পায় যে, কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে বিক্রেতা তার সমাধান করবে।
আমাদের একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি ।
হঠাৎ একদিন আমরা নোটিফিকেশন পেলাম, আমাদের গুগল লিস্টিং পেজে কোনো এক ভদ্রলোক ১ ষ্টার দিয়েছেন।
আমরা তৎক্ষণাৎ কারন অনুসন্ধান শুরু করলাম। আমাদের রেকর্ডস খুঁজে দেখলাম, ওই ভদ্রলোকের সাথে আমাদের কোনো ধরণের কোনো লেনদেন হয়নি। খোঁজ নিয়ে দেখা গেলো সেই বাক্তি উক্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে কোন প্রকার বিজনেস করে নি, এবং তাঁদের সম্পর্কে জানেও না।
তখন আমরা অত্যন্ত বিনয়ের সাথে উনার কাছে জানতে চাইলাম, ঠিক কি কারণে উনি আমাদের কে নেগেটিভ রিভিউ দিয়েছেন এবং উনার জন্য আমরা কি করতে পারি?
ওই ভদ্রলোক আমাদেরকে কোনো উত্তর দেননি, কিন্তু উনি উনার রিভিউ টি পরিবর্তন করে ৫ ষ্টার করে দিয়েছিলেন!
আপনি যদি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হন আর কাস্টমারদের সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হন, তবে তাঁর ফলাফল আপনি অবশ্যই পাবেন।
বিভিন্ন উৎস থেকে আপনার সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য
অনলাইনে কেনাকাটা শুরু হয় পণ্যটি গুগলে সার্চ করার মধ্যদিয়ে। সত্যিকার অর্থে ৭৩% কেনাকাটার সিদ্ধান্ত গ্রহন করার জন্য এই গুগল সার্চ প্রধান ভুমিকা রাখে।
সাধারণত একজন কাস্টমার অনলাইনে কারো থেকে পণ্য কেনার আগে তাঁর নাগালের মধ্যে সব রকম উৎস হতে বিক্রেতা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। যেমন,
- ফেসবুক পেজ ও গ্রুপ থেকে
- বিক্রেতার ওয়েবসাইট থেকে
- বন্ধু বা পরিবারের সদস্য হতে
- অনলাইন পত্রিকা হতে
- বিক্রেতার সাথে সরাসরি কথা বলে
এমন আরও অনেক ভাবে ক্রেতা তথ্য অনুসন্ধান করে।
একটি জরিপের রিপোর্ট অনুযায়ী,
- ৩৯% ক্রেতা ই কমার্স ওয়েবসাইট হতে তথ্য সংগ্রহ করে
- ৫৯% ক্রেতা বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের পরামর্শে অনলাইনে কিনতে প্রভাবিত হয়
তথ্যসূত্র: Harvard Business School (The daily Star)
পূর্বের অভিজ্ঞতা ক্রেতাদের অনলাইনে পণ্য কেনাকাটায় দারুণ প্রভাব বিস্তার করে।
কেনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবার আগে ক্রেতা কি করে?
সব রকম পণ্য কেনার ধরন একই রকম হয় না, তবে ক্রেতারা সাধারনত যেভাবে কেনার জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায় তার একটা উদাহরণ দেই:
দেখা গেছে, ৭২% ক্রেতা স্মার্ট ফোন কেনার জন্য দুটি ভিন্ন মডেল পছন্দের তালিকায় রাখে আর ৫৭% ক্রেতা ৫ টির ও বেশি ব্র্যান্ডের ই কমার্স সাইটে গিয়ে স্মার্ট ফোনটির তথ্য নেয়। ৬০% ক্রেতা স্মার্ট ফোন কেনার জন্য ২ সপ্তাহ আগে থেকে অনলাইনে সে সম্পর্কে তথ্য খুঁজতে থাকে।
তাই বুঝতেই পারছেন, অনলাইনে বিভিন্ন জায়গায় আপনার পণ্যের বা ব্র্যান্ডের সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য একজন কাস্টমারের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ।
সহজ সরল উপস্থাপনা
কোন পণ্য কেনার ক্ষেত্রে মানুষের স্বাভাবিক আচরণ হল, সে যত সহজভাবে পণ্যটি সম্পর্কে জানতে পারবে পণ্যটি কেনার সম্ভবনা তাঁর তত বেশি।
তাই পণ্যের অফার ও ডিস্কাউন্ট দেবার ধরন খুব সাধারন হওয়া ভালো। একটা অফার দেখে মানুষ ১৭ মিলি সেকেন্ড সময়ের মধ্যে সে সম্পর্কে একটি ধারনা তৈরি করে।
মানব মস্তিস্কের একটা ধরন হল সে পুরনোকে আঁকড়ে রাখতে চায়। খেয়াল করলে দেখবেন, অধিকাংশ মানুষ যখন কোনো নতুন রেস্টুরেন্টে যায়, তখন আগেই খেয়েছে এমন মেনু অর্ডার করে।যদি রেস্টুরেন্টেটি পূর্ব পরিচিত হয় আর আগেও সেখানে খাওয়ার অভিজ্ঞতা থাকে, তবে নতুন ডিস অর্ডার করতে কাস্টমার স্বস্তি বোধ করে । কিন্তু সে নতুন কোন রেস্টুরেন্টে সেই স্বস্তি পায় না।
কেনাকাটার ক্ষেত্রে পার্থক্য হল সে একবার আপনার শপ হতে পণ্য অর্ডার করলে পরেরবার কেনার সময় আপনাকেই প্রাধান্য দিতে চাইবে।
পণ্যের ছবি ন্যাচারাল হলেই ভালো, এডিট করা ছবি ক্রেতাকে বিভ্রান্ত করতে পারে। তবে ইকমার্স সাইটের জন্য ভালো মানের ছবি হতে হবে, ক্রেতা অনেকসময় ছবি ডাউনলোড করে অবসর সময়ে জুম করে দেখে। আর ছবির মান যদি খারাপ হয়, তবে আপনার পণ্য না কেনার সম্ভবনা ৯০%।
কাস্টমারের আবেগকে প্রাধান্য দেয়া
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষ কিছু কেনার সিদ্ধান্ত নেয় আবেগ হতে, এরপর সেটি কেনার পক্ষে যুক্তি খোঁজে।
একদল ক্রেতাকে খোলা পরিবেশে স্বাভাবিকভাবে পালিত কিছু মুরগী দেখানো হল, আর বলা হল এগুলো স্বাস্থ্যকর কিন্তু কম সুস্বাদু । অন্য আরেকদলকে খামারে পালিত এমন কিছু মুরগী দেখানো হল, আর বলা হল এগুলো খুব সুস্বাদু কিন্তু স্বাস্থ্যকর না।
দেখা গেল, কিছু ক্রেতা খোলা পরিবেশে পালিত মুরগী কেনার পক্ষে।আর কিছু ক্রেতা খামারে পালিত মুরগী কেনার পক্ষে।
প্রথম দল মনে করে খোলা পরিবেশে পালিত মুরগী খাওয়া উচিত, কারণ স্বাদ কম হলেও এটি ‘স্বাস্থ্যকর’। অন্যদিকে, দ্বিতীয় দল খামারে পালিত মুরগী খাবার পক্ষে, কারণ একটু কম স্বাস্থ্যকর হলেও এর স্বাদ ভালো।
খেয়াল করুন, দুই দলই কিন্তু তাদের পছন্দের জন্য নিজের মত যুক্তি দেবার চেষ্টা করেছে।যারা স্বাস্থ্য সচেতন তারা স্বাস্থ্যকর খাবার প্রাধান্য দিয়েছে । যারা ভোজনপ্রিয় তারা স্বাদকে প্রাধান্য দিয়েছে ।
তাই পণ্যের মার্কেটিং করার সময় আমাদের অবশ্যই কাস্টোমারদের আবেগকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং পণ্যকে টার্গেটেড কাস্টোমারদের আবেগের/পছন্দের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে।
আপনার অনলাইন বিজনেস সম্পর্কিত যে কোনো প্রশ্ন বা সমস্যা সমাধানে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে 0176668138 অথবা 01729241499 অথবা hello@deshicommerce.com
Amazing tips
Thank you.
আপনার মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ই কমার্স বিজনেস মার্কেটিং নিয়ে আগামীতে দারুণ সব ব্লগপোষ্ট পড়তে আমাদের সাথে থাকুন।
Nice
আপনার মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ই কমার্স বিজনেস মার্কেটিং নিয়ে আগামীতে দারুণ সব ব্লগপোষ্ট পড়তে আমাদের সাথে থাকুন।