একটি সফল ই-কমার্স বিজনেস গড়ে তুলতে ৮ টি ব্র্যান্ডিং স্ট্রাটেজি সম্পর্কে জানার আগে আপনাদের সামনে একটি প্রশ্ন রাখতে চায়।
ই-কমার্স বিজনেস পরিচালনা করছেন কিন্তু বিজনেসে তেমন অগ্রগতি হচ্ছে না, এই সমস্যার সম্মুখীন হননি এমন উদ্যোক্তা কেউ কি আছেন?
সম্ভবত এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া সত্যি মুশকিল।
প্রতিটি ই-কমার্স উদ্যোক্তা তার বিজনেসের শুরুর দিকে বিজনেস গ্রোথ ধরে রাখতে চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। আপাতদৃষ্টিতে আপনি হয়তো তার সফলতা দেখছেন কিন্তু তার পেছনের গল্পটা আপনার অজানা।
যারা আজকে ই-কমার্স বিজনেসে সাফল্য পেয়েছেন, তারা সবাই বিজনেসের সূচনা লগ্ন থেকে বিজনেসের ধারাবাহিক গ্রোথ ধরে রেখেছিলেন।
কিন্তু কিভাবে ই-কমার্স বিজনেসে ধারাবাহিক গ্রোথ তারা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন? এর মুলে ছিলো একটি পরিকল্পিত ব্র্যান্ড স্ট্র্যাটিজি।
একটি ই-কমার্স বিজনেসের ব্র্যান্ডিং প্রচেষ্টা সফল করতে কি করতে হয়?
কি সেই সকল অভিনব উপায় যা একটি ই-কমার্স বিজনেসকে ক্রমাগত উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে থাকে?
কেন একজন কাস্টমার একটি ব্র্যান্ডের লয়াল কাস্টমারে পরিণত হয়?
বিজনেস ব্র্যান্ডিং এর কথা বলা হলে আমাদের চোখের সামনে কোন একটি বিজনেসের লোগো ভেসে ওঠে । কিন্তু ব্র্যান্ডিং শুধুমাত্র লোগো সর্বস্ব নয়। ব্র্যান্ডিং এমন একটি অভিজ্ঞতা যা কাস্টমারদের সন্তুষ্টি ও নিরাপত্তাকে প্রতিনিধিত্ব করে।
“ব্র্যান্ডিং হচ্ছে, মানুষ আপনার বিজনেস সম্পর্কে আসলে কি ভাববে এবং আপনি কতভাবে মানুষকে আপনার বিজনেস সম্পর্কে সেই ভাবনার খোরাক জোগাতে চান, তা সমন্বয় করার শিল্প।”
এটি এমন একটি অভিজ্ঞতা যা একজন কাস্টমার ইতিবাচকভাবে স্মরণ রাখে এবং অন্যদের থেকে আপনার প্রোডাক্ট ও সার্ভিসকে আলাদা করতে ব্যবহার করে।
বিজনেস ব্র্যান্ডিং এত সহজ বিষয় নয়, জানতে হবে অনেক খুঁটিনাটি বিষয় যা আপনার বিজনেস গ্রোথের ধারাবাহিকতাকে বজায় রাখবে।
১) আপনার টার্গেট অডিয়েন্স সম্পর্কে পরিপূর্ণ ভাবে জানুন
মার্কেটে ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি তৈরি করতে হলে প্রথমে জানতে হবে, আপনার টার্গেট অডিয়েন্স সম্পর্কে।
তারা কে, কি পছন্দ করে, কোথায় থাকে, তারা যখন একটি ব্র্যান্ডের সাথে এঙ্গেজ হয় তখন কি ধরনের আচরণ করে। খুঁজে বের করতে হবে তাদের ব্যক্তিগত প্রোফাইলের সেই বৈশিষ্ট্যগুলো যা কোনো একটি ব্র্যান্ডকে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে একই ধরনের সকল কাস্টমার গ্রুপের জন্য কমন।
পটেনশিয়াল অডিয়েন্স সম্পর্কে জানতে যা করবেন,
আপনার বিজনেসের জন্য আদর্শ কাস্টমার খুঁজে পেতে চাইলে পরিস্কার ভাবে জানুন আপনার বর্তমান কাস্টমারদের বৈশিষ্ট্যগুলো এবং একই বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন কাস্টমারদের ডাটা সংগ্রহ করে এনালাইসিস করুন। ডাটা সংগ্রহ করতে মার্কেট সার্ভে করুন।
যখনই একজন অডিয়েন্সের তথ্য সংগ্রহ করবেন তখন স্পেসিফিক হতে হবে। অর্থাৎ তার অতিক্ষুদ্র তথ্যগুলো আপনাকে তুলে নিয়ে আনতে হবে। জানতে হবে তার আচরণ, পেইন পয়েন্ট, প্যাশন এবং বিলিভ সম্পর্কে।
এরপর সেই ডাটা ব্যবহার করে বিস্তারিত কাস্টমার প্রোফাইল তৈরি করতে হবে, যাকে মার্কেটিং এর ভাষায় “বায়ার পারসোনা” বলে।
কাস্টমারের ডেমোগ্রাফিক ডাটা,
- লোকেশন
- ইনকাম
- পেশা
সাইকোগ্রফিক ডাটা,
- ইন্টারেস্ট
- অ্যাটিটিউড
- লাইফস্টাইল
- পছন্দ এবং অপছন্দ
ইত্যাদি ডাটা সম্বলিত একটি প্রোফাইল তৈরি করতে হবে।
আপনার প্রতিযোগীদের মার্কেট পজিশনিং, প্রাইসিং, কাস্টমার কমেন্ট, কমিউনিকেশন, সামাজিক মাধ্যমগুলোর রিভিউ বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে।
২) শক্তিশালী ব্র্যান্ড তৈরি করতে 4V
ব্র্যান্ডিংয়ের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান গুলো হচ্ছে 4V = (Vision, Voice, Values, Variation)
একটি ব্র্যান্ডের জন্য এগুলো ভিত্তিপ্রস্থরসম। ই-কমার্স বিজনেসকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এই চারটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
ভিশন
আপনার বিজনেসকে একটি নির্দিষ্ট সময় পরে কোথায় দেখতে চান? সেটি বিজনেসের ভিশন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অধিকাংশ ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের বিজনেস ভিশন থাকেনা, যে কারণে বিজনেস শুরু করার কিছুদিন পরেই তাদের বিজনেস গতি হারায়।
আপনি যখন জানবেন, আপনার বিজনেসের ভিশন কি অর্থাৎ আপনি বিজনেসকে একটা নির্দিষ্ট সময় পর ঠিক কোথায় দেখতে চান, তবে তা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো নেয়া আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে।
ভয়েস
ব্র্যান্ড বিল্ডিং এর জন্য টোন অফ ভয়েস অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আপনি কিভাবে আপনার টার্গেট অডিয়েন্সদের সাথে কথা বলছেন সেটির উপর নির্ভর করছে কাস্টমার আপনার সম্পর্কে কি ধারণা তৈরি করবে।
একটি তার ব্র্যান্ড কনটেন্টের মাধ্যমে কাস্টমারের সাথে মানুষের মতই কথা বলে। একটি ব্র্যান্ডের মেসেজ দ্বারা কাস্টমার কখনো আনন্দিত হয়, কখনো উৎসাহিত হয়, অনুপ্রাণিত হয় আবার বিষণ্ণ বোধ করে ও দুঃখ পায়।
তাই আপনার ব্র্যান্ড ভয়েস কাস্টমারদের সাথে কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে কি ধরনের টোন ব্যবহার করবে সেটি নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
ব্র্যান্ড ভয়েস অনেক ধরনের হতে পারে যেমন,
- Authoritative
- Cheerful
- Conservative
- Conversational
- Casual
- Enthusiastic
- Formal
- Friendly
- Funny
- Humorous
- Informative
- Nostalgic
- Playful
- Professional
- Provocative
- Romantic
- Sarcastic
- Serious
- Smart
- Sympathetic
- Trendy
- Trustworthy
কিভাবে আপনার ব্র্যান্ডের জন্য ব্র্যান্ড ভয়েস টোন খুঁজে বের করবেন?
আপনার ব্র্যান্ডের মিশন এবং ভিশন স্টেটমেন্ট রিভিউ করুন এবং দেখুন বিজনেসের সাথে কোন ধরনের ভয়েস অফ টোন সামঞ্জস্যপূর্ণ।
কাস্টমার সার্ভে পরিচালনা করে দেখতে পারেন, আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে অডিয়েন্সরা কি অনুভূতি প্রকাশ করছে এবং আপনার বর্তমান ভয়েস টোন সম্পর্কে তাদের মতামত কি।
নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনার ব্র্যান্ড যদি একটি মানুষ হয়, তবে তার ভয়েস টোন কেমন হতো।
আপনার ব্র্যান্ডের সেরা ৫ জন কাস্টমারের মতামত নিয়ে দেখুন, তারা আপনার ব্র্যান্ডের জন্য কি ধরনের ভয়েস টোন শুনতে পছন্দ করে।
ভ্যালু
আপনার ই-কমার্স বিজনেসের জন্য যে বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে চান, সেটি আপনার বিজনেসের ভ্যালু যা আপনার সমস্ত বিজনেসকে ধারণ করে।
ভ্যালু একটি ব্র্যান্ডের ভিশন, ভয়েস এবং ব্র্যান্ডের ইতিবাচকতাকে প্রভাবিত করে।এটি বিজনেসের এমন একটি মুখ্য বিষয় যা একটি ব্র্যান্ডের সাথে কাস্টমারদের যুক্ত থাকার অন্যতম কারণ। সোজা কথায় আপনার ব্র্যান্ড থেকে আপনার কাস্টমার কি পাবে তার পরিষ্কার রূপরেখা।
ব্র্যান্ড ভ্যালুর তালিকা জানতে ক্লিক করুন।
ভেরিয়েশন
আপনার বিজনেসটি আর সবার থেকে কেন আলাদা? কেন একজন কাস্টমার একই ধরনের অন্য একটি ব্র্যান্ড থেকে কেনাকাটা না করে আপনার ব্র্যান্ডকে কেনাকাটার জন্য বেছে নিবে?
অর্থাৎ আপনার ব্র্যান্ড এবং আপনার প্রতিযোগীদের ব্র্যান্ডের মধ্যে মূল পার্থক্য কি সেটি জানা এবং তার ওপর নির্ভর করে একটি ব্র্যান্ডের সমস্ত রকম কমিউনিকেশন স্ট্র্যাটেজি তৈরি করা প্রয়োজন।
4V সম্পর্কে জানার পরে কি করবেন?
এবার বাস্তবায়ন করার সময় , কিভাবে সেটি করবেন?
ধরুন, আপনার টার্গেট মার্কেট স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা । তাদের ক্যারেক্টার ফানি, প্লে-ফুল এবং কোন কিছুকেই তারা খুব বেশি সিরিয়াসলি নিতে পছন্দ করে না এবং তারা সবসময় বাজেটের মধ্যে কেনাকাটা করতে পছন্দ করে।
তাহলে আপনার ব্র্যান্ড ভয়েস টোন হতে হবে ফানি এন্ড প্লে-ফুল এবং বিজনেসের কমিউনিকেশন তৈরি করার ক্ষেত্রে খুব বেশি সিরিয়াস মেসেজ দেয়া ঠিক হবে না। ই-কমার্স স্টোরের কালার হবে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত সাথে টাইপোগ্রাফি শৈল্পিক হলে ভালো হয়।
তরুণদের জন্য ডেভেলপ করা কনটেন্ট যদি খুব বেশি প্রফেশনাল ধাঁচের হয়ে যায় তবে তাদেরকে এঙ্গেজ করবে না।
4V বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে তিনটি বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে, সেগুলো হচ্ছে লোগো, টাইপোগ্রাফি এবং কালার কম্বিনেশন। কারণ এই তিনটি উপাদান একটি ব্র্যান্ড সম্পর্কে একজন কাস্টমারের অবচেতন মনে ধারণা তৈরি করতে সাহায্য করে।
তাই লোগোটি হতে হবে মিনিংফুল এবং সহজে মনে রাখার মত। টাইপোগ্রাফি অবশ্যই টার্গেট অডিয়েন্সদের বয়স ও আচরণকে মাথায় রেখে নির্ধারণ করতে হবে এবং কালার নির্বাচন করতে হবে ফিলিং এর বিষয়টিকে বিবেচনা করে।
৩) এঙ্গেজিং এবং একশনেবল কনটেন্ট তৈরি করুন
একটি ই-কমার্স বিজনেসে কনটেন্ট কাস্টমারদের সাথে কমিউনিকেশন করে। তাই কন্টেন্ট তৈরি করার সময় ভাষার ব্যবহার এবং অ্যাপ্রোচ হতে হবে এমন, যেন সেটি আপনার কাস্টমারদের সাথে মানুষের মত কথা বলে।
একজন কাস্টমার যেন ই-কমার্স ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট পড়ার পরে একশন নিতে উৎসাহিত হয় এবং কন্টেন্ট তৈরির সময় ব্র্যান্ড ভয়েস ধরে রাখা আবশ্যক।
আপনার কনটেন্ট গুলো ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা পরিমাপ করার জন্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতে কাস্টমারদের রিভিউ, কমেন্ট, রিঅ্যাকশনগুলো পর্যবেক্ষণ করুন। প্রয়োজনে আপনার প্রতিযোগীদের কনটেন্ট নিয়ে রিসার্চ করুন, দেখুন তাদের কনটেন্টগুলোর ক্ষেত্রে কাস্টমারদের রিঅ্যাকশনগুলো।
৪) কাস্টমার সার্ভিসকে প্রাধান্য দিন
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেচাকেনা শেষ হয়ে যাবার পরে কাস্টমারদের কথা সবাই ভুলে যায় কিন্তু একটা ই-কমার্স বিজনেসের জন্য আফটার সেলস সার্ভিস কাস্টমারদের আস্থা অর্জন ও তাদের লয়াল করতে ভুমিকা রাখে।
কাস্টমারদের নিয়মিত এঙ্গেজ রাখতে হবে, তাদের কাছে সেল করা প্রোডাক্ট গুলো থেকে কাস্টমার কিভাবে সর্বোচ্চ উপযোগিতা পেতে পারে সে বিষয়ে নিয়মিত ট্রিক্স ও টিপস প্রদান করার মাধ্যমে তাদের এঙ্গেজ রাখতে হবে যেন পরবর্তী কেনাকাটায় তারা আপনাকে প্রাধান্য দেয়।
একজন হ্যাপি কাস্টমারের রিভিউ অথবা রেফারেন্স শতভাগ সাফল্যের সাথে আরেকজন কাস্টমারকে পেইড কাস্টমার হিসেবে রূপান্তর করে।
কাস্টমার সার্ভিস নিশ্চিত করতে যা করতে পারেন?
বায়িং প্যাটার্নের উপর নির্ভর করে কাস্টমারদের ভাগ করে ফেলুন, বিজনেসে সকল ধরনের কাস্টমার গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্মানিত তবে যারা আপনার কাছ থেকে বেশি পরিমাণে কিনছে তাদেরকে প্রাধান্য দিন।
যে সকল কাস্টমার বেশি বেশি কেনাকাটা করছে তাদেরকে টাচে রাখুন এবং যারা এখনো কেনাকাটা সম্পন্ন করেনি তাদেরকে রেলেভেন্ট এডুকেশনাল ও ইনফরমেটিভ তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন।
৫) স্বচ্ছতা ও নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করুন
আপনার বিজনেস একজন কাস্টমারের দৈনন্দিন জীবনে কি ভ্যালু অ্যাড করছে এবং আপনার বিজনেস কোন লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করছে সেটি কাস্টমারদের সামনে তুলে ধরতে পারেন।
যৌক্তিক প্রমাণ দিতে হবে আপনি যা বলছেন তা সত্য এবং তার স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত প্রদান করতে হবে। ই-কমার্স বিজনেসে আস্থা তৈরি করা প্রধান বিষয়। একবার কাস্টমারদের আস্থার জায়গাতে স্থান পেলে আপনার বিজনেসের ব্র্যান্ডি প্রচেষ্টা সফল।
অথেন্টিসিটি তৈরি করার জন্য কাস্টমার রিভিউ, ব্র্যান্ড স্টোরি, প্রোডাক্ট রিভিউ কাস্টমার ওপিনিয়ন ইত্যাদি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ।
পাশাপাশি আপনার বিজনেসের অগ্রগতি, এক্টিভিটিস এবং ফিউচার প্লান কাস্টমারদের জানতে দিন। কারণ এগুলো স্বচ্ছতা ও নির্ভরযোগ্যতা তৈরি করে।
৬) কাস্টমারদের প্রত্যাশাকে ম্যানেজ করুন
কাস্টমারদের প্রত্যাশা বিশাল। তাদের চাওয়ার কোন শেষ নেই তাই বলে কি আপনি তাদের সকল প্রত্যাশার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পারবেন? কখনোই না।
এক্ষেত্রে আপনি কাস্টমারদের প্রত্যাশার বিপরীতে কি ধরনের প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সক্ষম যথাসম্ভব স্বচ্ছতার সাথে উপস্থাপন করুন। কখনোই ওভার প্রমিসিং হতে যাবেন না।
বিজনেসের রিটার্ন পলিসি, রিফান্ড পলিসি, ডেলিভারি পলিসি, পেমেন্ট মেথড, টার্মস এন্ড কন্ডিশন সবকিছু যথাযথভাবে উল্লেখ করুন। প্রয়োজনে এই সকল বিষয়কে উন্নত করতে ইনভেস্ট করুন এবং আপনার বিজনেসের জন্য আদর্শ পলেসি তৈরি করতে মনোযোগী হন।
৭) কনটেন্ট মার্কেটিং এর উপর জোর দিন
৯৩% বি টু বি বিজনেস উদ্যোক্তা কন্টেন্ট মার্কেটিং-কে প্রাধান্য দেয় এবং তাদের মার্কেটিং বাজেটের ৪০% কন্টেন্ট মার্কেটিং এর জন্য বরাদ্দ রাখে।
ই-কমার্স বিজনেসের জয় পরাজয়ের বেশিরভাগই নির্ভর করে কনটেন্ট মার্কেটিংয়ের উপর। যত বেশি সাবলীল এবং বুদ্ধিদীপ্ত উপায়ে আপনার প্রোডাক্টের তথ্যগুলো কাস্টমারদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন। তত বেশি মানুষ আপনাকে গ্রহন করবে।
সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, ব্লগ পোস্ট, ইমেইল মার্কেটিং, এসএমএস মার্কেটিং, প্রতিটি চ্যানেলের জন্য সমন্বিত কনটেন্ট প্ল্যান করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
৮) কাস্টমার রিভিউ এবং ফিডব্যাক
আপনি বিজনেসের প্রচারে ও প্রসারে যা কিছু করছেন সবকিছুই আপনার অডিয়েন্স এবং পোটেনশিয়াল কাস্টমারদের ঘিরে, তাই তাদের মতামতকে মূল্যায়ন করা আপনার প্রয়োজন।
আপনার বিজনেস এবং প্রোডাক সম্পর্কে তারা কি বলে অর্থাৎ তাদের রিভিউ সংগ্রহ করুন।
নির্দিষ্ট সময় পরপর জরিপ পরিচালনা করুন এবং তাদের মতামত গ্রহণ করুন।
যদি খেয়াল করেন তারা পরিবর্তন চায় এবং বিজনেসের ভালো ও মন্দের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মতামত প্রদান করছে তবে সেগুলোকে আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করুন।
আপনার বিজনেসের আয়সীমা কাস্টমারদের সংখ্যা ও সন্তুষ্টির উপর নির্ভর করে।
আরো পড়ুনঃ
ইকমার্স বিজনেসে সেলস বাড়াতে ব্র্যান্ডিং কেন জরুরী?
পরিশেষে
একটি ই-কমার্স বিজনেসের সফলতায় ব্র্যান্ডিং অনস্বীকার্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।হাজারো লক্ষ ব্র্যান্ডের ভিড়ে আপনার ব্র্যান্ডটিকে কাস্টমারের মাঝে স্থায়ী জায়গা করে দিতে আপনাকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে।
ব্র্যান্ড বিল্ডিং প্রক্রিয়া ভিন্ন ভিন্ন কৌশলের সমন্বিত রূপ। আপনাকে সম্ভাব্য সকল কৌশল অবলম্বন করে পরীক্ষা করতে হবে এবং খুঁজে বের করতে হবে ঠিক কোন কৌশলটি আপনার বিজনেসের জন্য ইতিবাচক ফলাফল বয়ে নিয়ে আসছে।
আলোচিত ৮ টি ব্র্যান্ডিং স্ট্রাটেজি আপনার বিজনেস পরিচালনায় ইতিবাচক পরিবর্তন এনে দিতে ভূমিকা পালন করবে। ই কমার্স বিজনেসের নানবিধ কৌশল নিয়ে আপনাদের অভিজ্ঞতা ও মতামত শেয়ার করতে কমেন্ট করুন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন
আগের মন্তব্য গুলো পড়ুন