একটি সফল অনলাইন ব্যবসার গোপন মার্কেটিং কৌশলটি কি? পরিমিত বাজেটে পরিমাপযোগ্য অনলাইন প্রচার প্রচারণায় ই-মেইল মার্কেটিং বিজনেসের জন্য গেইম চেঞ্জার টুলস। কিন্তু কেন ইমেল মার্কেটিং ই কমার্স ব্যবসায়ীদের কাছে এতো গুরুত্বপূর্ণ?
ইমেইল মার্কেটিং কি?
ইমেইল মার্কেটিং হলো একটি ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল, যেখানে ইমেইলের মাধ্যমে সম্ভাব্য বা বর্তমান গ্রাহকদের কাছে পণ্য, সেবা বা ব্র্যান্ডের প্রচার করা হয়। এটি গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি, বিক্রয় বৃদ্ধি এবং ব্র্যান্ড সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
ইমেইল মার্কেটিংয়ের ধরণ
১. প্রোমোশনাল ইমেইল – ডিসকাউন্ট, অফার, বা নতুন পণ্য প্রচারের জন্য।
২. ট্রান্সাকশনাল ইমেইল – অর্ডার কনফার্মেশন, রিসিপ্ট, শিপিং আপডেট ইত্যাদি।
3. নিউজলেটার ইমেইল – ব্লগ আপডেট, কোম্পানির খবর বা শিক্ষামূলক কনটেন্ট।
৪. ড্রিপ ক্যাম্পেইন ইমেইল – নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী গ্রাহকদের ইমেইল পাঠানো।
ইমেইল মার্কেটিং এর সুবিধাগুলো?
ইমেইল মার্কেটিং এর নিচে উল্লেখিত সুবিধা রয়েছে:
- ব্যক্তিগতকরন
- মতামত ও জরিপ
- বেচাকেনা বাড়ে
- কাস্টমারদের এনগেইজড রাখে
- ই কমার্স সাইটের ট্রাফিক বাড়ায়
- সঠিক সময়ে সঠিক মেসেজ দেওয়া যায়
- ইমেইল মার্কেটিং এর খরচ কম
- নিজস্ব অ্যাড মিডিয়া হিসেবে ব্যবহার করা যায়
নিচে প্রতিটি সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
১. ব্যক্তিগতকরন
অন্যান্য মিডিয়াগুলোতে অ্যাড দেবার সময় সবাইকে আলাদাভাবে ভাবে সম্বোধন করা সম্ভব হয় না। কিন্তু ইমেল মার্কেটিং-এ একটি ইমেইল কনটেন্ট প্রতিটি টার্গেট কাস্টমারকে ব্যক্তিগতভাবে সম্বোধন করে পাঠানো সম্ভব।
যেমন,
শুভ সকাল সুমন, দেশি কমার্সের ই কমার্স সল্যুশন ব্যবহারে আপনার অনলাইন বিজনেস ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বময়।
শুভ সকাল আরিফ, দেশি কমার্সের ই কমার্স সল্যুশন ব্যবহারে আপনার অনলাইন বিজনেস ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বময়।
শুভ সকাল মালিহা, দেশি কমার্সের ই কমার্স সল্যুশন ব্যবহারে আপনার অনলাইন বিজনেস ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বময়।
মানুষ তাঁর নিজের নামে পাওয়া কনটেন্ট গুলোর প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়।
২. মতামত ও জরিপ
ইমেল মার্কেটিং দ্বারা শুধুমাত্র প্রোডাক্ট প্রোমোশন করা হয় এমন নয়।আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে কাস্টমারদের মতামত জানা যায়। কাস্টমার কীভাবে আপনার বিজনেসকে গ্রহন করছে সেই জরিপ চালানো যায়। এতে করে ক্রমাগত পরিবর্তন সাধন করে বিজনেসকে সফলতার দিকে ধাবিত করা সম্ভব হয়।
৩. বেচাকেনা বাড়ে
৫৯% ব্যবসায়ী মনে করেন ইনভেস্ট করা অর্থের বিপরীতে আয় বাড়াতে ই মেইল মার্কেটিং একটি কার্যকর পদ্ধতি। যে সকল ব্যবসায়ীরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছে তাদের বেচাকেনা ৭৬০% বেড়ে গেছে।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫৯% মানুষ বলেছেন, ইমেল মার্কেটিং কাস্টমারদের কেনাকাটার সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করে।
একটি গবেষণায় দেখা যায়, ক্রেতা তাদের পূর্ব পরিচিত ব্র্যান্ডগুলি থেকে বার বার পণ্য কিনতে পছন্দ করেন। এটি অবাক হওয়ার মতো কোন বিষয় নয়, অনলাইন কাস্টমার কেনাকাটার জন্য তাদের পরিচিত ওয়েবসাইটগুলি এবং ব্র্যান্ডগুলিকেই বেশি প্রাধান্য দেয়।
৪. কাস্টমারদের এনগেইজড রাখে
কাস্টমারদের নিয়মিত ভাবে এঙ্গেজ রাখতে ইমেল মার্কেটিং সফল একটি পদ্ধতি। বছরের সারাটা সময় কাস্টমারদের সাথে খুব সহজে যোগাযোগ রাখা যায়।
৫. ই কমার্স সাইটের ট্রাফিক বাড়ায়
ইমেইলে বিষয়বস্তু পছন্দ করলে পুরো কনটেন্টটি পড়তে বা জানতে আগ্রহী কাস্টমার ইমেলের বডিতে জুড়ে দেয়া একটি Call to action (CTA) বাটন ক্লিক করে মূল ওয়েবসাইটে আসে। এতে আপনার ই কমার্স সাইটে ট্রাফিক বেড়ে যায়।
৬. সঠিক সময়ে সঠিক মেসেজ দেওয়া যায়
ধরুন, আজ আপনার কিছু কাস্টমারের জন্মদিন। আপনি আগে থেকে শিডিউল করে রাখলে তাঁর জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে পারবেন।এতে করে আপনার কাস্টমার খুশি হবে।
বিজনেসে কাস্টমারদের সাথে সঠিক সময়ে সঠিক মেসেজ দিয়ে এঙ্গেজ রাখা খুব জরুরি বিষয় যা না জানার ফলে অনেক ব্যবসায়ী কাস্টমার হারান।
৭. ইমেইল মার্কেটিং এর খরচ কম
মার্কেটিং এর যেকোনো পদ্ধতির চেয়ে ইমেলের ব্যবহার খরচ বাঁচায়। নিউজ পেপারে একটি অ্যাড দিতে আপনাকে ইঞ্চি প্রতি টাকা খরচ করতে হয়, সাথে আছে গ্রাফিক ডিজাইন, কপি রাইটিং এর খরচ। প্রতিবার অ্যাড দিতে গুনতে হয় এই খরচ।
কিন্তু ইমেল মার্কেটিং এ শুধু কনটেন্ট থাকলেই ইচ্ছেমত পরিসরে কাস্টমারদের তথ্য প্রদান করা সম্ভব।যতবার ইচ্ছে আপনার অ্যাড কাস্টমারদের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন এর জন্য বাড়তি খরচ গুনতে হয় না।
মার্কেটিং এর সফলতা পরিমাপের একটি ইনডিকেটর হচ্ছে, অ্যাড দিতে কত কম পরিমাণ খরচ করে কত বেশি সেল করার সক্ষমতা।
৮. নিজস্ব অ্যাড মিডিয়া
ই মেইল মার্কেটিং নিজস্ব অ্যাড মিডিয়ার কাজ করে। ক্রমাগত কাস্টমার পর্যবেক্ষণ ও অ্যাড প্রবাহ নিশ্চিত করে বিজনেসের সর্বোচ্চ প্রমোশনাল সফলতা নিশ্চিত করা যায়।
ইমেইল মার্কেটিং এর ইতিহাস
ইমেইল মার্কেটিংয়ের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৮ সালে, যখন গ্যারি থুয়েরক (Gary Thuerk) নামের একজন মার্কেটার প্রথমবারের মতো ইমেইলের মাধ্যমে বাণিজ্যিক বার্তা পাঠান। তিনি DEC (Digital Equipment Corporation) কোম্পানির পণ্য প্রচারের জন্য প্রায় ৪০০ জন সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে একটি ইমেইল পাঠান, যা থেকেই আধুনিক ইমেইল মার্কেটিংয়ের সূচনা ঘটে। যদিও এই প্রচারণাটি আজকের দৃষ্টিতে স্প্যাম হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, তবে এটি বিপুল সাড়া ফেলেছিল এবং কোম্পানিটির বিক্রয়ে লক্ষণীয় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল।
পরবর্তী কয়েক দশকে ইন্টারনেটের প্রসার এবং ইমেইল ব্যবহারের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইমেইল মার্কেটিং আরও কাঠামোবদ্ধ ও কার্যকর একটি মার্কেটিং টুলে রূপ নেয়। ১৯৯০ ও ২০০০ দশকে বিভিন্ন ইমেইল মার্কেটিং সফটওয়্যার ও অটোমেশন টুল তৈরি হয়, যার ফলে ব্যবসাগুলো ব্যক্তিগতকৃত, সময়োপযোগী এবং টার্গেটেড ইমেইল পাঠাতে সক্ষম হয়।
কেন ইমেইল মার্কেটিং ই-কমার্স বিজনেসের সাফল্যের চাবিকাঠি ?
ওয়েবসাইট ট্র্যাফিকের বাস্তবতা হলো, আপনি যখন সম্ভব্য কাস্টমারদের টার্গেট করে অনলাইনে অ্যাড চালান আর এতে করে আপনার ই কমার্স ওয়েবসাইটটিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক নতুন কাস্টমার আসে।
কিন্তু আপনি আবার নতুন অ্যাড দিলে পুনরায় টার্গেট কাস্টমার আপনার ই-কমার্স সাইটে আসবে সেই নিশ্চয়তা নেই। কারণ, ওপেন মিডিয়াতে আগ্রহী কাস্টমারদের নিয়মিতভাবে এঙ্গেজ রাখা ও পর্যবেক্ষণ করা সব সময় সম্ভব হয় না।
যদি কাস্টমারদের ইমেল লিস্ট আপনার কাছে থাকে এবং নিয়মিত বিরতিতে আপনার প্রোডাক্ট ও সার্ভিসের তথ্য অথবা কাস্টমারদের জন্য প্রয়োজনীয় ও উপকারী তথ্য প্রদানের মাধ্যমে তাদের এঙ্গেজ রাখেন তবে আপনার ই কমার্স সাইটের প্রতি একসময় তাদের আগ্রহ তৈরি হয়।
এতে করে পরবর্তী কেনাকাটার জন্য তাঁরা আপনার ই কমার্স সাইটকে বেঁছে নেবার সম্ভবনা বাড়ে।
ইমেইল মার্কেটিং এর গুরুত্ব ও এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
বিভিন্ন ফ্যাক্ট ও ডেটা এর কার্যকারিতা এবং ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের সাক্ষ্য দেয়। দেখা গেছে, ইমেইল মার্কেটিং-এ বিনিয়োগকৃত প্রতি ডলারের বিপরীতে গড়ে $42 পর্যন্ত আয় ফেরত পাওয়া যায়, যা অন্যান্য অনেক মার্কেটিং চ্যানেলের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। লিড জেনারেশনের ক্ষেত্রেও এর কার্যকারিতা প্রশ্নাতীত, যেখানে ৫৯% মার্কেটার এটিকে সোশ্যাল মিডিয়া এবং PPC-এর চেয়ে দ্বিগুণ কার্যকর বলে মনে করেন। ব্যক্তিগতকরণের মাধ্যমে ইমেইলের কার্যকারিতা আরও বৃদ্ধি পায়; ব্যক্তিগতকৃত ইমেইলগুলি সাধারণ ইমেইলের তুলনায় ৬ গুণ বেশি লেনদেন ঘটাতে সক্ষম।
বর্তমান বাজার পরিস্থিতিও ইমেইল মার্কেটিং-এর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎের ইঙ্গিত দেয়। ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী এই বাজারের আকার প্রায় USD 0.93 বিলিয়ন ছিল এবং পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০৩৩ সাল নাগাদ এটি USD 1.21 বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে, যা প্রায় ২.৯% CAGR হারে বৃদ্ধি পাবে। অন্য একটি পূর্বাভাসে ২০২৫ সালে বাজারের আকার USD 12.88 বিলিয়ন এবং ২০৩০ সালে USD 22.81 বিলিয়ন পর্যন্ত পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে CAGR ১২.১১% হতে পারে।
ডিজিটাল যোগাযোগের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং উন্নত প্রযুক্তির সংযোজন এই বাজারকে আরও সম্প্রসারিত করছে। ই-কমার্স এবং অনলাইন রিটেইল সেক্টরের প্রসারও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। তবে, ডেটা প্রাইভেসি সংক্রান্ত কঠোর নিয়মকানুন এবং স্প্যাম ফিল্টারের মতো কিছু চ্যালেঞ্জও মার্কেটারদের মোকাবিলা করতে হয়।
ই-কমার্স বিজনেসে ইমেইল মার্কেটিংএর সাফল্য
২০১৮ সালে DMA এর গবেষণায় দেখা গেছে ই-মেইল মার্কেটিং-এ খরচ করা প্রতি ডলারের বিপরীতে গড়ে ৩২ ডলার রিটার্ন আসে। টাকার অংকে প্রতি ৮৬ টাকায় ২৭৫২ টাকার বিজনেস হয় ( বর্তমান ডলার রেট অনুযায়ী)। বছরের পর বছর ধরে করা ই-মেইল মার্কেটিং সংক্রান্ত গবেষণাগুলো একই চিত্র তুলে ধরে।
এমারসিসের ২০১৮ এর প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ৮০% প্রতিষ্ঠান তাদের কাস্টমার সংগ্রহ ও তাদের ধরে রাখার জন্য প্রাথমিক চ্যানেল হিসাবে ইমেলের উপর নির্ভরশীল।
তাই ক্রেতাদের কাছে বার বার আরও বেশি সেল করার জন্য ইমেল মার্কেটিং সবসময় নির্ভরযোগ্য ও কার্যকরী কৌশল বলে অনলাইন ব্যবসায়ীরা বিশ্বাস করেন।
ইমেইল মার্কেটিং শুরু করবেন কীভাবে?
অনলাইন বিজনেসের শুরুতেই ব্যবসায়ীদের মনোযোগ দিতে হবে কাস্টমারদের ই-মেইল লিস্ট তৈরিতে। বিজনেস শুরু করার আগে থেকে এই কাজ এগিয়ে রাখলে ভালো হয় তবে বিজনেস শুরুর প্রথমদিন হতে ই-মেইল লিস্ট তৈরি শুরু করতে পারেন।
ই-মেইল মার্কেটিং দ্বারা রেগুলার সেল নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন এমন ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তাঁরা প্রথম কবে কাস্টমারদের ই-মেইল লিস্ট তৈরি শুরু করেছিলেন? অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা উত্তরে বলেছিলো, “বিজনেস শুরুর প্রথম দিন থেকে।”
১০ টি জনপ্রিয় ইমেইল মার্কেটিং টুলস
কাস্টমারদের কাছে নিয়মিত বিরতিতে ইমেইল পাঠানোর জন্য প্রয়োজন একটি অটোমেটিক সিস্টেম।
নিচে দেয়া কতগুলো বেস্ট ইমেইল প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে থেকে আপনার বিজনেসের জন্য উপযুক্ত প্ল্যাটফর্মটি বেছে নিন।প্রয়োজনে এক্সপার্টদের পরামর্শ নিন।
- Constant Contact
- SendInBlue
- GetResponse
- MailChimp
- ConvertKit
- Drip
- AWeber
- Keap
- MailerLite
- ActiveCampaign
ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য লিড জেনারেশন করবেন কিভাবে?
কীভাবে আপনি আরও নতুন নতুন কাস্টমারদের ই-মেইল এড্রেস পাবেন, কীভাবে কাস্টমারদের এঙ্গেজ করবেন সেই পরিকল্পনা করুন।লিড জেনারেশনের প্রচলিত কৌশলগুলোর মধ্যে রয়েছে,
- সাইনআপ ফর্ম
- প্রতিযোগিতার আয়োজন
- কাস্টমারদের প্রয়োজনীয় ফ্রি রিসোর্স অথবা টুলস অফার
- বিজনেস ব্লগ
কাস্টমারদের এঙ্গেজ রাখতে প্রয়োজন কনটেন্ট প্ল্যান। কনটেন্ট প্ল্যান হলো আপনি টার্গেট কাস্টমারদের কি মেসেজ দিবেন, কীভাবে দিবেন তার খসড়া পরিকল্পনা।
লিড জেনারেশনে ই-কমার্স ওয়েবসাইটের ব্যবহার
কাস্টমার আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে কেনাকাটা করলে তার ই-মেইলটি আপনার ই কমার্স সাইটে অর্গানাইজড ভাবে স্টোর হয়ে যায়। সেই ই-মেইলগুলোতে পরবর্তী সময়ে নতুন নতুন প্রোডাক্টের প্রমোশনাল মেসেজ দিয়ে কাস্টমারদের আপডেট রাখা সহজ হয় যা রেগুলার সেল নিয়ে আসতে দারুণ সহায়ক।
ইমেইল মার্কেটিং করে আয় করা যায় কিভাবে?
ইমেইল মার্কেটিং করে আয় করা সম্ভব বিভিন্ন উপায়ে, যেমন:
- ফ্রিল্যান্সিং – Fiverr, Upwork, Freelancer-এ ক্লায়েন্টদের জন্য ইমেইল ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে আয় করা যায়।
- ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি – নিজস্ব এজেন্সি খুলে ক্লায়েন্টদের ইমেইল মার্কেটিং সেবা দেওয়া যায়।
- এফিলিয়েট মার্কেটিং – ইমেইল লিস্ট ব্যবহার করে অ্যাফিলিয়েট পণ্য বা পরিষেবা প্রচার করে কমিশন আয় করা যায়।
- ই-কমার্স ও ড্রপশিপিং – ইমেইল মার্কেটিং ব্যবহার করে পণ্য বিক্রি করে আয় করা যায়।
- SAAS কোম্পানির জন্য ইমেইল মার্কেটিং – সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর জন্য লিড জেনারেশন এবং কনভার্সন বাড়ানোর কাজ করা যায়।
ইমেইল মার্কেটিং কি বেশি বেতনের কাজ?
হ্যাঁ, ইমেইল মার্কেটিং একটি লাভজনক এবং উচ্চ বেতনের পেশা। দক্ষ ইমেইল মার্কেটারদের জন্য আয় অনেক বেশি হতে পারে, কারণ:
- উচ্চ ROI (প্রত্যাবর্তন হার) – ইমেইল মার্কেটিং ব্যবসার জন্য অত্যন্ত লাভজনক, তাই কোম্পানিগুলো এতে বিনিয়োগ করে।
- বিশেষজ্ঞদের চাহিদা – দক্ষ ইমেইল মার্কেটারদের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে ভালো সুযোগ রয়েছে।
- ফ্রিল্যান্স মার্কেটে উচ্চমূল্য – ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে ইমেইল মার্কেটিং সেবার দাম বেশ ভালো, প্রতি প্রজেক্টে $50 থেকে $5000 পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
- জব মার্কেটেও ভালো বেতন – একজন ইমেইল মার্কেটিং স্পেশালিস্টের গড় মাসিক বেতন $3000 থেকে $7000 পর্যন্ত হতে পারে।
সঠিক দক্ষতা অর্জন করলে ইমেইল মার্কেটিং দিয়ে ভালো পরিমাণ আয় করা সম্ভব।
ইমেইল মার্কেটিং এর সাথে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সম্পর্ক
ইমেইল মার্কেটিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং একে অপরের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ডিজিটাল মার্কেটিং একটি ব্যাপক কৌশল, যা বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্য ও সেবার প্রচারের জন্য বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করে, যেমন সোশ্যাল মিডিয়া, সাইট অ্যানালিটিকস, পেইড অ্যাডভার্টাইজিং এবং ইমেইল মার্কেটিং। ইমেইল মার্কেটিং এই ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে, যেখানে ব্র্যান্ডগুলি ইমেইল মাধ্যমে সরাসরি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছায়, তাদের আকৃষ্ট করে এবং বিক্রয় বাড়ানোর জন্য কার্যকরী কৌশল প্রয়োগ করে।
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম যেমন সোশ্যাল মিডিয়া বা ওয়েবসাইটের সমন্বয়ে ইমেইল মার্কেটিংকে আরও বেশি শক্তিশালী করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা ডেটা বা সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইনগুলোর ফলাফলগুলো ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আরও নির্দিষ্ট, ব্যক্তিগতকৃত এবং লক্ষ্যভিত্তিক প্রচারণায় রূপান্তরিত করা সম্ভব। এই সম্পর্কটি ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশলের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন উপকরণের মধ্যে সুষম সমন্বয়ের মাধ্যমে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য পূরণের জন্য এক শক্তিশালী টুল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
পরিশেষে
ইমেল মার্কেটিং একটি সুনিয়ন্ত্রিত ও কার্যকরী পদ্ধতি যার দ্বারা অতি কম খরচ করে প্রোডাক্টের অ্যাড কাস্টমারদের কাছে পৌঁছে দেয়া যায়। বেড়ে যায় প্রফিটের অংক। কাস্টমার এঙ্গেজ, লিড জেনারেশন ও রেগুলার সেল করতে আজকে থেকেই শুরু করুন ই মেইল মার্কেটিং।
আরো পড়ুনঃ
ইকমার্সের লোকাল মার্কেটিং: নিজ এলাকার কাস্টমারদের কাছে বিজনেস করার কৌশল
বারবার জিজ্ঞাসিত প্রশ্নসমূহ
জিমেইল দিয়ে কি ইমেইল মার্কেটিং করা যায়?
জিমেইল সীমিত সংখ্যক ইমেইল পাঠাতে পারে, তবে ইমেইল মার্কেটিং টুল ব্যবহার করা ভালো।
ইমেইল মার্কেটিং শিখতে কতদিন লাগে?
সাধারণত ১-৩ মাসের মধ্যে শেখা সম্ভব।
Email marketing এর কাজ কি?
ইমেইলের মাধ্যমে পণ্য, সেবা বা ব্র্যান্ডের প্রচার ও গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ রাখা।
জিমেইল এ ইমেইল ব্লাস্ট কিভাবে করব?
গুগল ওয়ার্কস্পেস বা ইমেইল মার্কেটিং টুল (যেমন Mailchimp) ব্যবহার করতে হবে।
ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য গুগল ওয়ার্কস্পেস ব্যবহার করা যাবে কি?
হ্যাঁ, তবে সীমিত সংখ্যক ইমেইল পাঠানো যায়।
ইমেইল মার্কেটিং রেজাল্ট দেখতে কতদিন লাগে?
সাধারণত ২৪-৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক ফলাফল দেখা যায়।
ইমেইল মার্কেটিং কারা করে?
ব্যবসায়ী, ডিজিটাল মার্কেটার, সংস্থাগুলো এবং ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান।
একসাথে 2000 মেইল পাঠানোর উপায়?
ইমেইল মার্কেটিং টুল (Mailchimp, SendinBlue) বা গুগল ওয়ার্কস্পেস ব্যবহার করতে হবে।
জিমেইল দিয়ে কি ইমেইল মার্কেটিং করা যায়?
সীমিতভাবে করা যায়, তবে বৃহৎ পরিসরের জন্য বিশেষ টুল দরকার।
ইমেইল যোগাযোগের জন্য গুগল ওয়ার্কস্পেস কোন টুল ব্যবহার করা হয়?
Gmail, Google Groups এবং Google Contacts।
গুগলের কি মেইলিং লিস্ট আছে?
হ্যাঁ, Google Groups ব্যবহার করে মেইলিং লিস্ট তৈরি করা যায়।
জিমেইল ইমেইল লিমিট বাড়ানোর উপায়?
গুগল ওয়ার্কস্পেস সাবস্ক্রিপশন বা তৃতীয় পক্ষের ইমেইল সার্ভিস ব্যবহার করতে হবে।
জিমাস কি গুগল থেকে?
না এটি গুগলের সেবা নয়। তৃতীয় একটি ইমেইল মার্কেটিং টুল যা জিমেইলের সাথে কাজ করে।
কিভাবে জিমেইল ক্যাম্পেইন তৈরি করব?
Gmass বা Mail Merge ব্যবহার করে জিমেইল ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা যায়।
গুগল ওয়ার্কস্পেস কারা ব্যবহার করতে পারে?
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং পেশাদার ব্যবহারকারীরা।
ইমেইল মার্কেটার এর কাজ কি?
ইমেইল কন্টেন্ট তৈরি, ক্যাম্পেইন পরিচালনা এবং বিশ্লেষণ করা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন
আগের মন্তব্য গুলো পড়ুন