ব্ল্যাক ফ্রাইডের দিনে আমেরিকায় একজন কাস্টমার শুধুমাত্র অফার পেয়ে কেনাকাটা করার জন্য ২.৫ ঘণ্টা লাইনে দাড়িয়ে থাকে। আপনি কি কখনো এতো সময় কেনাকাটার জন্য লাইনে দাড়িয়েছেন? শুনে অবাক হলেও সত্য একটি দুর্দান্ত অফার মানুষকে এতোটাই আগ্রহী করে তুলতে পারে।
শুধুমাত্র অফার পাবার কারণে আমেরিকার ৬০% মানুষ তাদের সারা মাসের বেতনের ৮০% টাকা খরচ করে কেনাকাটায়।
সুতরাং অফার সেল নিয়ে আসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু সেই অফারটি কি যা আপনার শপের স্টক একেবারে খালি করে দিতে পারে?
আমাদের দেশে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা যে অফারগুলো কাস্টমারদের প্রদান করি, সেগুলো তেমন পরিমান সেল নিয়ে আসতে পারে না। কারন আমাদের দেয়া অফার কাস্টমারদের চাহিদাকে বোঝে না।
অফার কি?
অফার হলো এমন একটি প্রস্তাব যা বিক্রয় কার্যক্রমকে আকর্ষণীয় করে তোলে এবং ক্রেতাকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। এটি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন:
- ডিসকাউন্ট (ছাড়) – নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বা শতাংশ কমানো।
- বাই ওয়ান গেট ওয়ান (BOGO) – একটি কিনলে আরেকটি ফ্রি।
- লিমিটেড টাইম ডিল – নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিশেষ মূল্যছাড়।
- এক্সক্লুসিভ মেম্বারশিপ অফার – শুধুমাত্র নির্দিষ্ট গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুবিধা।
অফার দেবার আগে আমাদের জানতে যা জানতে হবে
- কোনটি অফার এবং কোনটি অফার না
- অফার কেন একজন কাস্টমারের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়
- কাস্টমারদের দ্রুত কেনাকাটার সিদ্ধান্ত নেয়াতে কীভাবে একটি অফার ডিজাইন করবেন
- কার্যকর অফার তৈরির পদ্ধতি ও সেটি কিভাবে অপ্টিমাইজ করতে হয়
কোনটি অফার এবং কোনটি অফার না কিভাবে বুঝবেন?
আপনি যা সেল করছেন এটি আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এটি অফার নয়। আপনার প্রোডাক্টটি শুধুমাত্র একটি প্রোডাক্ট। অফার হচ্ছে সেই প্রোডাক্ট ও সার্ভিস সেল করার অনন্য উপায়।
প্রতিটি আলাদা কাস্টমার সেগমেন্টের জন্য আপনার দেওয়া প্রতিটি প্রোডাক্ট ও সার্ভিস অফার আলাদা হতে পারে, অথবা একাধিক অফারের অংশ হতে পারে।
সচেতন থাকুন, আপনার কাস্টমারদের জন্য দেয়া অফারটি তৈরি করার জন্য সীমাহীন উপায় রয়েছে। এই উপায় কখনো সহজ কখনোবা জটিল কম্বিনেশনে তৈরি হতে পারে। কখনো শর্ট টাইমে সেল নিয়ে আসতে কখনোবা দীর্ঘমেয়াদে সেল নিয়ে আসার জন্য তৈরি হতে পারে।
যদিও অফার তৈরি করার সময় কোন অফারটি কাজ করবে সেটি আগে থেকে জানার উপায় নেই। তার জন্য, আপনাকে এটি পরীক্ষা করতে হবে।
যদি কাস্টমারদের সঠিক অফার সঠিক সময়ে দিতে পারেন, তবে বেচাকেনায় যে পরিবর্তন আসে তা রাত দিনের পার্থক্য তৈরি করে।
বিফোর এবং আফটার গ্রিড
একজন কাস্টমার আপনার বিজনেসের সাথে যুক্ত হবার পূর্বে কি অবস্থায় ছিল এবং আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নেবার পরে তার পরিবর্তিত অবস্থা বা অভিজ্ঞতা কি রকম? এই বিষয়টা জানা ও চিত্রায়ন করা প্রয়োজন। কিন্তু কেন?
বিষয়টি বোঝার সুবিধার্থে বিফোর এবং আফটার গ্রিড চিত্রটি নিচে দেওয়া হয়েছে খেয়াল করুন, প্রয়োজনে এটি সেভ করে রাখুন।
ছবি সংগ্রহীতঃ DigitalMarketer.com
এখানে তিনটি আলাদা কলাম রয়েছে।
প্রথম কলাম বিফোর গ্রিডঃ
একজন কাস্টমার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কেনার আগের অবস্থা উল্লেখ করতে হবে। তার সমস্যা ও অভিজ্ঞতা এখানে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
তৃতীয় কলাম বা একেবারে ডান দিকের কলাম আফটার গ্রিডঃ
যখন সে একটি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ব্যবহার করলো তখন তার অভিজ্ঞতা কি এখানে উল্লেখ করতে হবে। আফটার গ্রিডে কাস্টমারের সমস্যার সমাধানের ফলে ইতিবাচক অভিজ্ঞতাগুলো তুলে নিয়ে আসতে হবে।
মাঝের কলামে কাস্টমারদের প্রাপ্ত তথ্য থেকে তাকে কোন ক্যাটাগরিতে রাখবো, তার ডেমোগ্রাফিক বৈশিষ্ট্যগুলো কি বের করে সেটি লিপিবদ্ধ করতে হবে। যা একই ধরনের অন্য কাস্টমারদের আচরণগত ও অভিজ্ঞতালব্ধ বৈশিষ্ট্য গুলো সম্পর্কে জানতে ও প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে তার অবস্থান নির্ণয় করতে সাহায্য করবে।
পূর্বে যে বিষয়গুলো নিয়ে সে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল এবং পরবর্তী পর্যায়ে যখন প্রোডাক্ট বা সার্ভিসটি গ্রহণ করল তখন তার যে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা হলো এর মাঝে কোন বিষয়গুলো প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে? এটি জানার মাধ্যমে কাস্টমারদের সম্পর্কে আরো স্পষ্ট তথ্য নিশ্চিত করা মূল লক্ষ্য।
কেন কাস্টমারদের এই পরিবর্তনজনিত প্রভাবকগুলো সম্পর্কে জানা প্রয়োজন?
"প্রকৃতপক্ষে একজন কাস্টমার একটি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কেনে না, মূলত সে কেনে পরিবর্তন।"
কোনো একটি অবস্থায় কাস্টমার যখন নিয়মিত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিল এবং তা থেকে মুক্তির উপায় খোঁজ করছিলো, তখন যে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস তাকে সেই সমস্যার সমাধান দিয়েছে তা প্রকৃত অর্থে তার নেতিবাচক অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে ইতিবাচক দিকে নিয়ে গেছে।
অর্থাৎ কাস্টমার প্রোডাক্ট কিনছে না, সে কিনছে পরিবর্তিত ইতিবাচক অবস্থা।
আপনি যখন একজন কাস্টমারের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ব্যবহারের পূর্বের নেতিবাচক অবস্থা এবং প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ব্যবহারের পরের অবস্থা সম্পর্কে জানবেন তখন পরিস্কার ভাবে বুঝবেন কোন ধরনের অবস্থায় কাস্টমার আপনার প্রোডাক্ট নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে ও তাদের সেগমেন্ট কি।
এখানে সেগমেন্ট বলতে বোঝানো হয়েছে কাস্টমারকে সেই বৈশিষ্ট্যগুলো যা তাদের টার্গেট করার জন্য জানা আবশ্যক। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিস্কার হয়।
ধরুন একজন কাস্টমার তার বাচ্চার জন্য বাথট্যাব কিনতে চাচ্ছে। কিন্তু সে প্রকৃতপক্ষে কিনতে চাচ্ছে তার বাচ্চার গোসলের নিরাপদ সমাধান।
পূর্বের বাথটাবে তার বাচ্চার অস্বস্তি বোধ করতো। বাথট্যাব অনেক শক্ত হবার ফলে বাচ্চার অনেক কষ্ট হতো। বাথট্যাবের প্লাস্টিক কোয়ালিটি খুব ভাল না হবার ফলে সেটি ফুটো হয়ে যেতো। কাস্টমার এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য এমন একটি সমাধান খোঁজ করছিলো যা তার বাচ্চার গোসল কে আরো আরামদায়ক করবে সাথে অনেক দিন সেই বাথট্যাব ব্যবহার করতে পারবে।
এবার যখন সেই কাস্টমার বাথট্যাব কিনলো এবং তার পূর্বের নেতিবাচক অভিজ্ঞতাগুলো বা সমস্যাগুলো সমাধান হলো তখন সে আনন্দিত হলো। তাহলে এই কাস্টমারের যে বৈশিষ্ট্যগুলো রয়েছে আপনার ভবিষ্যৎ কাস্টমারদের মাঝে সেই একই ধরনের বৈশিষ্ট্যগুলো থাকবে। যা সম্ভব্য কাস্টমারদের খুঁজে পেতে সহায়ক।
ধরুন আপনার কাস্টমার বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে,
- তারা নিউ মাদার
- চাইল্ড কেয়ার আইটেমে আগ্রহ রাখে
- বেবিদের নিয়ে তৈরি ব্লগগুলো সে ফলো করে
- বেবি টয়ে আগ্রহ রাখে
- কোয়ালিটি প্রোডাক্ট সম্পর্কে সচেতন ইত্যাদি
আপনি যখন একজন কাস্টমারের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে পরিস্কার ভাবে জানবেন এবং তাকে সঠিক ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করতে পারবেন সেই মুহূর্তে তার জন্য আপনার প্রোডাক্ট এবং সার্ভিসের ম্যাসেজ তৈরি করা সহজ হয়ে যাবে। কিভাবে তার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কাস্টমারদের জন্য ভ্যালু অ্যাড করে সেটি বোঝাতে সক্ষম হবেন।
বিশেষ করে অনেক সেলার তাদের প্রোডাক্ট এবং সার্ভিসকে কাস্টমারের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য করে তুলতে পারেন না বিধায় তিনি কি অফার দিবেন সেটি তার কাছে স্পষ্ট নই।
এমন একটি অফার যেটি কাস্টমারের অভিজ্ঞতার পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম না সে অফারটি কাস্টমারদের জন্য মোটেও গুরুত্ব রাখবেনা।
স্টেটমেন্ট অফ ভ্যালু বনাম ইউনিক সেলিং প্রপোজিশন
আমরা একটি প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের জন্য অফার অথবা ম্যাসেজ তৈরি করার সময় বেশিরভাগ সময়ে খেয়াল করি ইউনিক সেলিং প্রপোজিশন বিষয়টিকে।
ইউনিক সেলিং প্রপোজিশন আমাদের বলে, কেন আমার প্রোডাক্ট অন্যদের প্রোডাক্ট থেকে আলাদা। প্রতিযোগীদের সাথে আমাদের প্রোডাক্ট এর পার্থক্য গুলো কি। কিন্তু এই চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং পাওয়ারফুল হচ্ছে স্টেটমেন্ট অফ ভ্যালু।
স্টেটমেন্ট অফ ভ্যালু আমাদের বলে একটি প্রোডাক্ট কাস্টমারের জন্য কি কারণে গুরুত্বপূর্ণ। সে প্রোডাক্ট ও সার্ভিস কাস্টমারদের কিভাবে সেরা অভিজ্ঞতা লাভের সাহায্য করে।
এটি আরো বলে আপনার ব্র্যান্ড কিভাবে কাস্টমারের কেয়ার করে।
এটি সত্য যে ইউনিক সেলিং প্রপোজিশন বিজনেসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু আমরা যখন স্টেটমেন্ট অফ ভ্যালু মাথায় রেখে একটি প্রোডাক্টের জন্য অফার তৈরি করবো, এটি সরাসরি কাস্টমারকে বেশি আকৃষ্ট করে।
উদাহরণস্বরূপ, আমরা ইতিপূর্বে বেবি প্রোডাক্ট নিয়ে কথা বলছিলাম, সেখানে ইউনিক সেলিং প্রপোজিশনে আমরা বলতে পারি আমাদের প্রোডাক্ট এর ম্যাটেরিয়াল অন্যদের থেকে অধিক মানসম্মত এবং এর বিপরীতে আমরা হয়তোবা এর বৈশিষ্ট্যগত ব্যাখ্যা দিতে পারি।
কিন্তু যখন আমরা স্টেটমেন্ট অফ ভ্যালু বিষয়ে বলব, তখন এটি কাস্টমারদের বলে তার বেবিকে এই বাথ ট্যাবে গোসল করানোর সেরা অভিজ্ঞতা সম্পর্কে। হতে পারে বাচ্চাটি পূর্বে বাথ ট্যাবে গোসল করার সময় প্লাস্টিকের রুক্ষতার কারনে কষ্ট পেতো। কিন্তু যখন বাথট্যাবের পরিবর্তন করে দেওয়া হল তখন সে আগের চেয়ে অনেক বেশি স্বস্তি অনুভব করছিলো। যে কাস্টমার তার বেবির জন্য এই প্রোডাক্ট ব্যবহার করেছে তার ইতিবাচক অভিজ্ঞতার কথা এখানে প্রকাশিত হয়।
এই ম্যাসেজটি কাস্টমার অকপটে গ্রহণ করে, কারণ এটি অভিজ্ঞতালব্ধ।
কাস্টমার ভ্যালু জার্নি ও অফার
একটি অফার ডিজাইন করার আগে আমাদের জানতে হবে কাস্টমারদের জার্নির সিকোয়েন্স যা একজন কাস্টমার step-by-step আসার পরে একটি ব্র্যান্ডকে রিকগনাইজ করে এবং লয়াল কাস্টমারে রুপান্তরিত হয়।
আমি প্রথমেই একটি কাস্টমারকে অফার দিলাম আর অফার পাওয়া মাত্র সে সেটি গ্রহণ করে নিবে এমনটি ভাবা মোটেও সঠিক হবে না
কাস্টমার ভ্যালু জার্নি বিষয়টা কি?
একটি ব্র্যান্ডের সাথে যুক্ত হওয়া থেকে লয়াল কাস্টমারে কনভার্ট হবার যে জার্নি তার প্রতিটি ধাপে একটি ব্র্যান্ড থেকে তার যে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি সেটিকেই কাস্টমার ভ্যালু জার্নি বলে।
কাস্টমার প্রাথমিক অবস্থায় একটি ব্র্যান্ডের সাথে যুক্ত হয় এবং কিছু নির্দিষ্ট ধাপ পার হবার পরে সেই কাস্টমার ব্র্যান্ডের কাস্টমারের লয়াল কাস্টমারে রুপান্তরিত হয় এবং প্রতিটি ধাপে তাদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন অফার ডিজাইন করা প্রয়োজন হয়।
ছবি সংগ্রহীতঃ DigitalMarketer.com
১. এ ধাপের প্রথমে আসে অ্যাওয়ারনেস
এ অবস্থায় কাস্টমার কেবল একটি ব্র্যান্ড সম্পর্কে জানে এবং সে সময় তাঁর কাছে খুব বেশি তথ্য থাকে না।
অফারঃ রেফারেল অফার এই ধাপের জন্য উপযুক্ত
২. দ্বিতীয় ধাপঃ এনগেজমেন্ট
এবারে কাস্টমার সেই ব্র্যান্ড বিষয়ে আরো বেশি তথ্য পায় এবং তার আগ্রহের জায়গায় তৈরি হয়। আরো বেশি জানার জন্য সে ব্র্যান্ডের সাথে এঙ্গেজ হয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে লাইক, শেয়ার বা কমেন্টের মাধ্যমে।
অফারঃ এই ধাপে আপনি কাস্টমারদের শর্ট ভিডিও বা ব্লগ পোস্ট অফার করতে পারেন যা তাকে অধিক তথ্য দেবে।
৩. তৃতীয় ধাপঃ সাবস্ক্রাইব
এ পর্যায়ে কাস্টমার ব্র্যান্ড থেকে আরো বিস্তারিত তথ্য পেতে ইচ্ছা পোষণ করে। অহেতুক কোন কারণ ছাড়া কেউ কোন বিষয়ের উপর আগ্রহী হয়ে উঠে না। তাই প্রত্যেকটি সাবস্ক্রাইবার একটি ব্র্যান্ডের জন্য প্রস্পেক্ট। তারা সেই ব্র্যান্ডের ইমেল নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করে।
অফারঃ এই ধাপে গেটেড কন্টেন্ট অফার করুন। অর্থাৎ তার পার্সোনাল তথ্য যেমন ইমেল বা ফোন নম্বরের বিপরীতে দরকারি ডকুমেন্ট বা টিউটোরিয়াল ইত্যাদি।
৪. চতুর্থ ধাপঃ কনভার্ট
এই পর্যায়ে তাকে কাস্টমার ছোট পারচেস করে বা কম মূল্যমানের প্রোডাক্ট কেনে।কাস্টমার সেই প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ব্যবহার শুরু করে।
অফারঃ এক্ষেত্রে তাকে ফ্রি প্রোডাক্ট বা ডেমো অফার করতে পারেন। (নোটঃ আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ধরনভেদে উপযুক্ত অফার তৈরি করবেন।)
৫. পঞ্চম ধাপঃ এক্সাইটমেন্ট
কাস্টমারকে এখন প্রোডাক্টটি ব্যবহার করছে এবং তাকে যে তথ্য প্রদান করা হয়েছিল তার সাথে সে সামঞ্জস্যতা খুঁজে পাচ্ছে। এতে করে তার অভিজ্ঞতা অনেক ভালো এবার সে কাস্টমার পরবর্তী ধাপে যায় অর্থাৎ সে দারুণ আনন্দিত হয়।
অফারঃ কাস্টমার ফিডব্যাক নেয়া সাপেক্ষে তাকে গিফট প্রদান করতে পারেন।
৬. ষষ্ঠ ধাপঃ এসেন্ড
এ অবস্থায় কাস্টমার সে ব্র্যান্ডের প্রতি দারুণ রকম ইতিবাচক ধারণা পোষণ করে এবং ব্র্যান্ডকে তার পছন্দের শীর্ষে অবস্থান দেয়। ব্র্যান্ড এই কাস্টমারের কাছে আপসেল করতে থাকে।
অফারঃ একই ধরনের উচ্চমূল্যের প্রোডাক্ট কেনার জন্য অফার ডিজাইন করুন। আপসেলের মাধ্যমে তার কেনাকাটার পরিমান বাড়িয়ে তুলুন।
৭. সপ্তম ধাপঃ অ্যাডভোকেট
এখন কাস্টমার শুধুমাত্র সে প্রোডাক্ট ব্যবহার করছে না বরং নিজেই সে প্রোডাক্টের উপযোগিতা সম্পর্কে আরো তথ্য প্রদান করছে অন্য কাস্টমারদের এবং তাদের সেটি ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছে। পাশাপাশি সে ব্র্যান্ড কেউ সে তার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে নানা রকমের তথ্য দিয়ে সহায়তা করছে।
অফারঃ তার রিভিউ নেবার জন্য অফার দিন।
৮. অষ্টম ধাপঃ প্রমোট
এবারে একজন কাস্টমার সেই প্রোডাক্টটি অন্যদের রেফার করে। সে নিজেই সেই প্রোডাক্টের বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে রোল প্লে করে।
অফারঃ তাকে বেশি বেশি কুপন বা রেফারেল কোড দিন।
কাস্টমার জার্নির প্রতিটি পর্যায়ে ভিন্ন ধরনের অফার তৈরি করার মাধ্যমে সেই কাস্টমারদের ব্র্যান্ডের সাথে এঙ্গেজ থাকতে, ও কেনাকাটা চালিয়ে যেতে উপযোগিতা তৈরি করতে হয়। অফারের মানে শুধুমাত্র মূল্যছাড় না।
অফারের কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে ও ধরে রাখতে সেটি অপটিমাইজ করবেন কিভাবে?
এন্ট্রি পয়েন্ট অফার
তিন ধরনের অফার রয়েছে যা দ্বারা একজন কাস্টমারকে সহজেই এংগেজ করা যায়। সেগুলো হচ্ছে,
- গেটেড কন্টেন্ট
- লস লিডার
- প্রোডাক্ট রিভিউ
কাস্টমারদের প্রথমবারের মত একটি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ব্যবহার করানো এর মূল লক্ষ্য। আপনার প্রোডাক্ট ও সার্ভিস কোয়ালিটি সন্তোষজনক হলে কাস্টমার বারবার কিনবে।
গেটেড কন্টেন্ট
গেটেড কন্টেন্ট এমন একটি অফার প্রক্রিয়া যেখানে কিছুর বিনিময়ে কিছু পাওয়া যায়। যেমন ধরুন, আপনার টেকনোলজি কোম্পানি এবং আপনি ডিজিটাল প্রোডাক্ট সেল করেন।
এক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রোডাক্ট যে কারণে অথবা যে সমস্যা সমাধানের জন্য তৈরি করেছেন সেই সমস্যার সমাধানের কিছু কার্যকরী উপায় নিয়ে একটি টিউটোরিয়াল ভিডিও তৈরি করতে পারেন এবং এটি আপনার অডিয়েন্সের অফার করতে পারেন।
তবে শর্ত হচ্ছে যদি এই টিউটোরিয়াল ভিডিওটি ডাউনলোড করতে চায় তবে তাকে অবশ্যই তার পার্সোনাল ইনফরমেশন দিতে হবে। (যেমনঃ ইমেল, ফোন)
কাস্টমারকে আপনার ভ্যালু জার্নির লুপে প্রবেশ করানো হয়।
লস লিডার অফার
লস লিডার অফার সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি দারুন কার্যকারী অফার। যে সকল প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস ব্যবহার না করার পূর্বে সে সম্পর্কে খুব বেশি পরিমাণ তথ্য জানা সম্ভব হয়না অথবা এর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানা যায় না সে প্রোডাক্ট গুলোর জন্য লস লিডার অফার তৈরি করতে হয়।
লস লিডার অফারের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসটি আপনি অফার করছেন তার জন্য একটি আংশিক মূল্য আপনাকে পরিশোধ করতে হচ্ছে কখনো এটি কেউ কেউ বিনামূল্যে অফার করেন ।
ধরুন একজন কাস্টমার গুগোল ওয়ার্কস্পেস সাইন আপ করবেন এবং আপনি তাকে বলছেন প্রথমবার সে যদি সার্ভিসটি সাইনআপ করে তবে তাকে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত সিক্সটি পার্সেন্ট ডিসকাউন্টে এই সার্ভিসটি ব্যবহার করতে দিবেন।
এখানে কাস্টমারসিক্সটি পার্সেন্ট টাকা পরিশোধ করছে এবং বাকি ফরটি পার্সেন্ট টাকা অফার দাতা পরিশোধ করছেন। অর্থাৎ আপনি আংশিক টাকা লস করে একজন কাস্টমারকে এন্ট্রি করছেন বা আপনার অফার এর সাথে যুক্ত করছেন।
লস লিডার অফারটি সাধারণত মার্কেটিং ক্যাম্পেইন বাজেটের মধ্যেই ধরে নেওয়া হয়। আপনার প্রতিষ্ঠানের যদি যথেষ্ট আর্থিক সক্ষমতা থাকে তবে লস লিডার অফার প্রদানের মাধ্যমে সঠিক কাস্টমারদের ফিল্টার করে সার্ভিস রেগুলার করানো যায়। এতে করে একটি দীর্ঘ সময়ে কাস্টমারদের সার্ভিসটি ব্যবহারের করানোর মাধ্যমে লস কাটিয়ে লাভের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়।
প্রোডাক্ট প্রিভিউ
ডিজিটাল প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিশেষ করে সফটওয়্যার সার্ভিস চালু করার জন্য ডেমো দারুণ একটি অফার কারণ গেটেড কন্টেন্টে প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবহারিক তথ্য পায় কিন্তু প্রোডাক্ট প্রিভিউের দ্বারা সেটি ব্যবহার করে দেখার সুযোগ থাকে। সেজন্য তাকে কোনরকম মূল্য পরিশোধ করতে হয় না ।
এন্ট্রি পয়েন্ট অফার তৈরির জন্য ব্রেইন স্ট্রোর্মিং
আপনাকে যদি এক মিনিট সময় দেওয়া হয় এবং বলা হয় আপনার সামনের মানুষটিকে আপনার প্রতি আকৃষ্ট করুন, তাহলে আপনি কি করতেন?
আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের কাস্টমারদের আকৃষ্ট করার জন্য খুব অল্প সময় পাবেন আর সেটিকে কাজে লাগাতে হবে। তা না হলে কাস্টমার হারাবেন।
একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন প্রত্যেকটি অফার একেকটি ভ্যালু প্যাক। যে অফারটি আপনি কাস্টমারদের দিচ্ছেন সেটি যদি তাকে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ব্যবহারে অন্যান্য যেকোনো সময়ের থেকে বেশি পরিমাণে লাভবান না করে, তবে সে কখনোই অফারটি গ্রহণ করবে না।
এখন একজন কাস্টমার লাভবান হয় তখনই যখন সে প্রোডাক্ট ও সার্ভিস নিয়ে তার সমস্যার সমাধান পায় খুব সহজে সাথে আর্থিক মূল্যমানেও লাভবান হয়।
যে তিনটি অফার প্রক্রিয়ার কথা বলা হয়েছে প্রত্যেকটি স্টেজে অফারের ধরন ভিন্ন এবং কাস্টমারদের লাভবান হওয়ার প্রক্রিয়া ভিন্ন।
খেয়াল করলে দেখবেন গেটেড কনটেন্টের ক্ষেত্রে কাস্টমার শুধুমাত্র তার ইনফরমেশন দেওয়ার মাধ্যমে একটি অজানা তথ্য জানার সুযোগ পাচ্ছে। এটি তার জানার প্রক্রিয়াকে বিস্তৃত করে। অপরদিকে তাকে কোন প্রকার খরচ করতে হচ্ছে না এবং খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয় না শুধুমাত্র ইনফর্মেশন দেবার সাথে সাথে সে তথ্যটি পেয়ে যাচ্ছে।
আবার যখন লস লিডার অফারের কথা বলছি, তখন একজন কাস্টমার স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম মূল্য দিয়ে সেই প্রোডাক্ট বা সার্ভিসটি ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছে।
এটি সেই প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের কার্যকারিতা পরীক্ষা সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। অপরদিকে যদি সেটি অকার্যকর বলে প্রমাণিত হয় তবে তার লস করার পরিমাণ আর্থিক ভাবে কমে যাচ্ছে।
আবার প্রোডাক্ট রিভিউ বা ডেমো পর্যায়ে একজন কাস্টমার একটি প্রোডাক্ট ও সার্ভিস কিছু সময়ের জন্য বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। শুধুমাত্র এটির ব্যবহার এবং ইউজ কেসগুলো পরীক্ষা করার জন্য সেজন্য তাকে কোনো রকম খরচ করতে হচ্ছে না।
এই প্রতিটি জায়গায় কাস্টমার লাভবান হচ্ছে। তাই অফার তৈরি করার সময় যে বিষয়টি সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে একজন কাস্টমার আপনার অফার থেকে অবশ্যই লাভবান হতে হবে।
কাস্টমারদের পেইন্ট পয়েন্ট গুলো খুব ভালভাবে বোঝার চেষ্টা করুন। প্রতিটি স্টেজে কাস্টমারের পেইন পয়েন্ট গুলোর উপর ভিত্তি করে অফার তৈরি করুন যেমনটি উল্লেখ করা হয়েছে।
অফার অপটিমাইজেশন
একটি অফার কত ইফেক্টিভ ভাবে অপটিমাইজ করার মাধ্যমে কাস্টমারদের সামনে প্রদর্শন করতে পারছেন বা পৌঁছে দিচ্ছেন সেটির উপর অফারের কার্যকারিতা এবং সফলতা নির্ভর করে।
আমরা একটি অফারকে ধাপে ধাপে অপটিমাইজ করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানব।
ধরুন, একটি ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড অফার দিচ্ছে এবং প্রোডাক্ট গেজেট আইটেম। তাহলে অফার গুলো কিভাবে অপটিমাইজ করতে হবে।
অফারের শুরুতেই আমাদের মনোযোগ দিতে হবে পেমেন্ট সংক্রান্ত বিষয়ে।
প্রথম ধাপ
এ পর্যায়ে আপনি প্রথমে প্রোডাক্টের সাধারণ মূল্যটি উপস্থাপন করবেন।
- প্রোডাক্টঃ ব্র্যান্ডড হেডফোন
- মূল্যঃ ৬০০০ টাকা
সাধারণ দৃষ্টিতে আমাদের মনে হতে পারে এটি শুধুমাত্র প্রোডাক্ট এবং প্রোডাক্ট এর মূল্য। কিন্তু প্রোডাক্টের এই সাধারন মূল্য থেকেই শুরু হয় অফার শুরু করার প্রক্রিয়া।
দ্বিতীয় ধাপঃ
এবারে পেমেন্ট টার্ম উল্লেখ করুন।
একটি প্রোডাক্টের পেমেন্ট কয়েকটি ধাপে অফার করা যেতে পারে যেটিকে ইএমআই বলা হয়। এখানে কয়েক মাসে ভেঙ্গে ভেঙ্গে মূল্য পরিশোধ করার সুযোগ। বেশি মূল্যমানের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের জন্য এই কৌশল দারুন কার্যকরী।
- প্রোডাক্টঃ ব্র্যান্ডড হেডফোন
- মূল্যঃ ৬০০০ টাকা
- পেমেন্ট টার্মঃ ইএমআই সর্বোচ্চ তিন মাসের। প্রতি মাসে ২০০০ টাকা।
এখানে আপনি প্রোডাক্টের মূল্যমান কম করেননি কিন্তু প্রোডাক্টের মোট মূল্যকে তিনটি ভাগে ভাগ করে কাস্টমারদের আলাদাভাবে পেমেন্ট করার সুযোগ দিয়েছেন। যা সেই প্রোডাক্টকে কাস্টমারের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে এসেছে।
এক্ষেত্রে কাস্টমার খুব কম পরিমাণ পেমেন্ট করার মাধ্যমে কাস্টমার প্রোডাক্টটি কেনার সুযোগ পাচ্ছে। একই সাথে আপনি কোন রকম ডিসকাউন্ট না দিয়ে প্রোডাক্ট এর পুরো মূল্য সাপেক্ষে বিক্রি করতে পারছেন।
তৃতীয় ধাপঃ
ডিসকাউন্ট যেকোনো বিজনেসের জন্য সেল নিয়ে আসতে সক্ষম। তবে ডিসকাউন্ট প্রথম থেকে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে দিলে সেটি আরও বেশি কার্যকর হয়।
- প্রোডাক্টঃ ব্র্যান্ডড হেডফোন
- মূল্যঃ ৬০০০ টাকা
- পেমেন্ট টার্মঃ ইএমআই সর্বোচ্চ তিন মাসের। প্রতি মাসে ২০০০ টাকা।
- ডিসকাউন্টঃ ১০০০ টাকা
যারা পটেনশিয়াল কাস্টমার এবং যাদের চাহিদা একেবারেই শেষ মুহূর্তে অবস্থান করছে এ ধরনের অফার তাদেরকে দারুণ রকম আকৃষ্ট করে।
চতুর্থ ধাপঃ
অফারটি আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে এবারে যুক্ত করুন বোনাস। তাতে অফারটি ফ্রেস থাকবে, যোগ হবে বাড়তি উপযোগিতা।
- প্রোডাক্টঃ ব্র্যান্ডড হেডফোন
- মূল্যঃ ৬০০০ টাকা
- পেমেন্ট টার্মঃ ইএমআই সর্বোচ্চ তিন মাসের। প্রতি মাসে ২০০০ টাকা।
- ডিসকাউন্টঃ ১০০০ টাকা
- বোনাসঃ এর সাথে থাকছে বিশ্বখ্যাত মিউজিক্যাল ব্যান্ড এর একটি অ্যালবাম।
পঞ্চম ধাপঃ
এই ধাপে বান্ডেল অফার যোগ করে এগিয়ে যেতে হবে। কাস্টমারদের একের পর এক লোভনীয় অফারের মাধ্যমে ক্রমাগত মনোযোগ ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
- প্রোডাক্টঃ ব্র্যান্ডড হেডফোন
- মূল্যঃ ৬০০০ টাকা
- পেমেন্ট টার্মঃ ইএমআই সর্বোচ্চ তিন মাসের। প্রতি মাসে ২০০০ টাকা।
- ডিসকাউন্টঃ ১০০০ টাকা
- বোনাসঃ এর সাথে থাকছে বিশ্বখ্যাত মিউজিক্যাল ব্যান্ড এর একটি অ্যালবাম।
- বান্ডেল অফারঃ ব্র্যান্ডেড হেডফোন ও পেনড্রাইভ একসাথে কিনলে পাবেন আরো ২০% ডিসকাউন্ট।
ষষ্ঠ ধাপঃ
একজন কাস্টমার অনেকগুলো অফার পাবার কেনাকাটা সম্পন্ন করে তখন তাকে খরচ করা অর্থের নিরাপত্তা অফার করতে পারেন। অর্থাৎ সে যে মূল্য পরিশোধ করে প্রোডাক্ট ও সার্ভিস কিনছে সেটির গুনগত মান যদি দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী না হয় তবে মূল্য ফেরত সুবিধা। অর্থাৎ কেনাকাটায় সঠিক উপযোগিতা নিশ্চিত হবার নিরাপত্তা।
- প্রোডাক্টঃ ব্র্যান্ডড হেডফোন
- মূল্যঃ ৬০০০ টাকা
- পেমেন্ট টার্মঃ ইএমআই সর্বোচ্চ তিন মাসের। প্রতি মাসে ২০০০ টাকা।
- ডিসকাউন্টঃ ১০০০ টাকাবোনাসঃ এর সাথে থাকছে বিশ্বখ্যাত মিউজিক্যাল ব্যান্ড এর একটি অ্যালবাম।
- বান্ডেল অফারঃ ব্র্যান্ডেড হেডফোন ও পেনড্রাইভ একসাথে কিনলে পাবেন আরো ২০% ডিসকাউন্ট।
- গ্যারান্টিঃ সাত দিনের মধ্যে প্রোডাক্ট সংক্রান্ত সমস্যায় মূল্য ফেরত
সপ্তম ধাপঃ
অনেকগুলো অফার পর্যায়ক্রমে দেবার পরে কাস্টমার যখন চিন্তা করছে এই প্রোডাক্টটি টার এখন কেনার সঠিক সময়। এই মুহূর্তে তাঁর কেনাকাটার সিদ্ধান্তকে আরো সন্নিকটে নিয়ে আসতে আর্জেন্সি তৈরি করতে পারেন।
আপনি বলতে পারেন এই অফার একটি নির্ধারিত সময় পর্যন্ত এভেলেবেল। অফার মিস হয়ে যাবার ভয় তৈরি করে দ্রুত কেনাকাটা করার অবস্থা তৈরি করা যাকে ফিয়ার অফ মিসিং বলে।
যখন আর্জেন্সি তৈরি করা হয় ঠিক সেসময় কয়েকটি ক্ষেত্রে কাস্টমারদের মনে প্রোডাক্ট কেনাকাটার জন্য দ্রুততম সময়ে সিধান্ত নিতে সাহায্য করে সেগুলো হচ্ছে,
- যখন আমরা বলি অফারটি খুবই কম পরিমান স্টকে এভেলেবেল আছে
- প্রোডাক্টের স্টক রয়েছে কিন্তু নির্ধারিত সময় পরে অফার থাকবে না। পরবর্তী সময়ে সেই প্রোডাক্ট কিনতে পূর্বের মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
- নির্ধারিত সময় পরে এর সাথে এক্সট্রা বোনাস এবং বান্ডেল অফার থাকবে না।
কাস্টমার যখন একটি প্রোডাক্ট কেনার সিধান্ত নিতে আটকে আছে কিন্তু একটি নির্ধারিত সময় পরে অফার গুলো হারিয়ে যাবার ভয়ে তার মধ্যে কাজ করবে। তখন সে আরো দ্রুত প্রোডাক্ট কেনার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে তৎপর হয়ে ওঠে।
- প্রোডাক্টঃ ব্র্যান্ডড হেডফোনমূল্যঃ ৬০০০ টাকা
- পেমেন্ট টার্মঃ ইএমআই সর্বোচ্চ তিন মাসের। প্রতি মাসে ২০০০ টাকা।
- ডিসকাউন্টঃ ১০০০ টাকাবোনাসঃ এর সাথে থাকছে বিশ্বখ্যাত মিউজিক্যাল ব্যান্ড এর একটি অ্যালবাম।
- বান্ডেল অফারঃ ব্র্যান্ডেড হেডফোন ও পেনড্রাইভ একসাথে কিনলে পাবেন আরো ২০% ডিসকাউন্ট।
- গ্যারান্টিঃ সাত দিনের মধ্যে প্রোডাক্ট সংক্রান্ত সমস্যায় মূল্য ফেরত
- আর্জেন্সিঃ নির্ধারিত সময়ের পরে মূল্য পূর্বের অবস্থানে ফেরত যাবে এবং কোনরকম বোনাস থাকবে না
চ্যাম্পিয়ন অফারঃ
এতো অফার দেবার পরেও একটি অফারকে আরো গতিশীল ও কার্যকরী করা সম্ভব। দেখা গেছে মানুষের আবেগি সিদ্ধান্তগুলো কেনাকাটায় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই এবারে মানবিক ভাবে অফারটিকে গ্রহণযোগ্য করতে হবে।
হয়তো আপনি খেয়াল করেছেন অনেক জুতো প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বলে আপনার কেনা প্রতিটি জোড়া জুতো থেকে সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য এক জোড়া জুতা প্রদান করা হবে।
একদিকে যেমন আপনি কিনছেন একই সাথে আপনার কেনার বিপরীতে একটি সুবিধাবঞ্চিত শিশু জুতো ব্যবহার করার সুবিধা অর্জন করছে। এটি মানবিক ভাবে তাকে ভাল বোধের অনুভুতি দেয়।
- প্রোডাক্টঃ ব্র্যান্ডড হেডফোনমূল্যঃ ৬০০০ টাকা
- পেমেন্ট টার্মঃ ইএমআই সর্বোচ্চ তিন মাসের। প্রতি মাসে ২০০০ টাকা।
- ডিসকাউন্টঃ ১০০০ টাকা
- বোনাসঃ এর সাথে থাকছে বিশ্বখ্যাত মিউজিক্যাল ব্যান্ড এর একটি অ্যালবাম।
- বান্ডেল অফারঃ ব্র্যান্ডেড হেডফোন ও পেনড্রাইভ একসাথে কিনলে পাবেন আরো ২০% ডিসকাউন্ট।
- গ্যারান্টিঃ সাত দিনের মধ্যে প্রোডাক্ট সংক্রান্ত সমস্যায় মূল্য ফেরত
- আর্জেন্সিঃ নির্ধারিত সময়ের পরে মূল্য পূর্বের অবস্থানে ফেরত যাবে এবং কোনরকম বোনাস থাকবে না
- চ্যাম্পিয়ন অফারঃ আপনার প্রতি জোড়া কেনা জুতার বিপরীতে সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য অর্থায়ন করা হবে।
একটি বিষয় সবসময় মাথায় রাখবেন প্রতিটি আলাদা ইন্ডাস্ট্রির জন্য অফার অপটিমাইজেশনের ধরন হবে আলাদা। ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ এক রকম হবে আবার সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রির জন্য অন্য রকম হবে। আবার একটি ফ্যাশন ব্র্যান্ডের জন্য এই অফারের ধরন হবে ভিন্ন কিন্তু সবার জন্য অফার অপ্টিমাইজেশন প্রক্রিয়া একই রকম।
অফারগুলো কেমন পারফর্ম করতে সেটি ক্রমাগত পরীক্ষা করার মাধ্যমে সর্বাধিক কার্যকর অফার কম্বিনেশন খুঁজে পেতে হবে।
অফার নিয়ে শেষ কথা
আপনি যখন জানবেন কিভাবে অফার ডিজাইন করতে হয় ও সেটিকে কার্যকরী করে তুলতে এর অপ্টিমাইজেশন প্রক্রিয়া কিভাবে পরিচালিত হয় তখন আপনার কাস্টমারদের জন্য সেরা অফারটি তৈরি করতে সক্ষম হবেন। আপনার দেয়া প্রতিটি অফার বিজনেসের সেল বাড়িয়ে তুলে আরো বেশি কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
দিন শেষে একটি বিজনেসের সফলতা ও ব্যর্থতা পরিমাপ করা হয় টাকার অংকে, তাই বিজনেসে প্রফিট করতে ভুল অফার দিয়ে টাকা অপচয় না করে সঠিক অফারটি তৈরি করুন, লাভবান হোন।
সবার আগে মন্তব্য করুন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন
মন্তব্য করতে হলে আপনাকে লগ ইন করতে হবে।