রিপিট কাস্টমার একুইজিশন ফ্রেমওয়ার্ক: পুরনো কাস্টমারদের ফিরিয়ে আনার কৌশল যা একটি বিজনেসের গ্রোথে মূল ভূমিকা পালন করে। যদিও একই ধরনের মার্কেটিং কৌশল সকল ধরনের বিজনেসের জন্য সমান ফলাফল নিয়ে আসে না এবং সব ধরনের বিজনেস মডেলের জন্য সামঞ্জস্য না।
মার্কেটিং এর এমন প্রচুর ট্যাকটিস রয়েছে যা ব্যবহার করে আপনি কাস্টমার একুইজিশন করতে পারবেন ও তাদের কাছে প্রোডাক্ট বেচাকেনা করতে পারবেন। তবে সেরা মার্কেটিং সেটাই যেখানে একটি মার্কেটিং প্ল্যান নির্দিষ্ট বিজনেস মডেলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এবং সেই মার্কেটিং কৌশলটি ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসতে সক্ষম।
কাস্টমার একুইজিশনের জন্য মার্কেটিং প্ল্যান নিয়ে বিস্তারিত কথা বলার আগে আপনাকে যে বেসিক জিনিস জানতে হবে সেটি হচ্ছে,
- আপনার কাস্টমার কারা
- তাদের চাহিদা কি
- কিভাবে আপনার প্রোডাক্ট এবং মার্কেটিং কৌশল তাদের চাহিদা পূরণে সক্ষম
এই বিষয়গুলোর উপর নির্ভর করে যখন আপনি মার্কেটিং কৌশল তৈরি করবেন, তখন এটি আপনাকে কাঙ্খিত ফলাফল এনে দিবে। আমরা কাঙ্খিত ফলাফল বলতে বুঝি বেচাকেনা সম্পন্ন হওয়াকে।
একটি বিজনেসের সাসটেইনেবিলিটির জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাট্রিক্স উন্নত করা আবশ্যক, সেগুলো হচ্ছে
- পারচেজ ফ্রিকোয়েন্সি
- এভারেজ অর্ডার ভ্যালু
- টোটাল নাম্বার অফ কাস্টমার
তবে এটিও মাথায় রাখবেন এ তিনটি ম্যাট্রিক্স এর ঊর্ধ্বগতি একটি বিজনেসকে সফলতার দিকে নিয়ে যেতে সহায়ক হলেও এর বাইরে আর কোন কাজ নেই, এমন কথা মোটেও চিন্তা করা যাবে না। বরং সকল মার্কেটিং প্রচেষ্টা দ্বারা এই তিনটি ম্যাট্রিক্সকে ক্রমাগত উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে হবে এবং একই সাথে এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্র্যান্ডগুলো নতুন কাস্টমার একুইজিশনের দিকেই বেশি মনোযোগী হয়, কিন্তু সর্বদা নতুন কাস্টমার একুইজিশনে ব্যয়বহুল। এর চেয়ে পুরনো কাস্টমারকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী। কিন্তু আপনি কি হুটহাট চাইলেই পুরনো কাস্টমারদের আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন? না পারবেন না। এর কিছু কৌশল আছে।
একটি সলিড মার্কেটিং ফ্রেমওয়ার্ক যা পুরনো কাস্টমারদের ফিরিয়ে নিয়ে এসে আরো বেশি কেনাকাটা করানোর মাধ্যমে আপনার বিজনেসকে প্রফিটেবল করতে সাহায্য করে।
এ পুরো কর্মযজ্ঞের কিছু নির্দিষ্ট স্টেপ রয়েছে আজকে সেই স্টেপগুলো নিয়ে বলবো।
- লয়ালটি প্রোগ্রামঃ ব্র্যান্ডের প্রতি ভালবাসা
- ইমেইল উইনব্যাক ক্যাম্পেইন
- ইমেইল অথবা এসএমএস সাইনআপ কুপন প্রোগ্রাম
- পরিকল্পনামাফিক নতুন আইটেম রিলিজ
- সাবস্ক্রিপশন বিজনেস মডেল
- মিন,মিডিয়ান এবং মোড
- আপসেল এবং ক্রসসেল
- পেইড মার্কেটিং
- অর্গানিক কাস্টমার একুইজিশন
- সর্বোচ্চসংখ্যক ট্রাফিক কনভার্সন
কিভাবে রিপিট কাস্টমার নিয়ে আসবেন
একটি বাগান নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমে বেড়ে উঠে আর রিপিট কাস্টমার সেই বাগানের মত। তাদের বিজনেস গ্রোথে সামিল করতে, বিজনেসে এঙ্গেজ রাখতে এবং তাদের কাছে বেশি বেশি বেচাকেনা করতে মার্কেটিং এ খরচ করতে হবে।
কোন একজন কাস্টমার একবার আপনার কাছ থেকে কেনার পরে সে যখনই দ্বিতীয়বার আবার আপনার প্রোডাক্ট কিনবে, তখন তাকে টার্গেট করার জন্য আপনার মার্কেটিং খরচ কমে আসবে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে সব কাস্টমার একের অধিক বার একটা ব্র্যান্ড থেকে কেনাকাটা করে তাদের জন্য একুইজিশন খরচ প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু খরচ নেই বলেই কি আপনি বসে থাকবেন?
একটা কথা মনে রাখা জরুরী, কোন কিছুই বিনামূল্যে হয় না। আর্থিক দিক থেকে হয়তো একজন কাস্টমার আপনি সুবিধা না দিয়ে তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসছেন, কিন্তু আপনি তাকে সেরা প্রোডাক্ট সরবরাহ করছেন।
একটি দুর্দান্ত শপিং অভিজ্ঞতার সাথ্যে এমন কিছু এক্সট্রা ভ্যালু (কাস্টমার সাপোর্ট, ফেয়ার প্রাইস, টপ ক্লাস ডেলিভারি ইত্যাদি) দিচ্ছেন যে কারনে আপনার প্রতি সে লয়াল থাকে। কাস্টমার লওয়ালটি ব্র্যান্ডের প্রতি কাস্টমারদের ভালবাসা, এটি বাধ্য হবার বিষয় না।
কাস্টমার লওয়ালটি তৈরি করার ক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কাস্টমারদের প্রয়োজন সম্পর্কে বোঝা, তাদের চাহিদা গুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া। আর তবেই তাদের সঠিক ভ্যালু প্রদান করে লয়াল কাস্টমারের পরিণত করতে পারবেন।
একজন সাধারন কাস্টমারকে লয়াল কাস্টমারে পরিণত করার জন্য তিনটা জিনিস গুরুত্বপূর্ণ,
মার্চেন্ডাইজিং
কাস্টমারকে সর্বদা সেরা পণ্যটি দিবেন। প্রোডাক্টের গুণগতমান যেন কোনোভাবেই নিম্নমানের না হয়। আপনি যে প্রোডাক্টগুলো উৎপাদন করছেন অথবা সেল করছেন সেগুলো অবশ্যই যেন কাস্টমারদের চাহিদা পূরণে সক্ষম হয় একই সাথে টার্গেট কাস্টমারদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে।
কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স
কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স বলতে আমরা বুঝি কাস্টমার সার্ভিস। একজন কাস্টমার প্রোডাক্ট কেনার আগে কেনে কমিটমেন্ট। আপনি একজন কাস্টমারকে যত সুন্দর শপিং এক্সপিরিয়েন্সের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন ব্র্যান্ডের প্রতি তার লয়াল হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।
মার্কেটিং
এরপরেই প্রয়োজন মার্কেটিং। যখন সঠিক কাস্টমারের কাছে সঠিক প্রোডাক্ট সঠিক সময় তুলে ধরবেন তখন সে আপনাকে গ্রহণ করবে । প্রয়োজনের সময় আপনাকে খুঁজে পাবার কারণ হিসাবে সে লয়াল কাস্টমার হয়ে উঠবে।
এখন আসি কিভাবে আপনার প্রোডাক্ট বাজারজাতকরণ বা মার্কেট করবেন
লয়ালটি প্রোগ্রামঃ ব্র্যান্ডের প্রতি ভালবাসা
সুপার শপ এবং ই কমার্স বিজনেসের ক্রমবর্ধমান সময়ে আমরা কমবেশি অনেকেই লয়ালটি প্রোগ্রাম শব্দটির সাথে পরিচিত।লয়ালটি প্রোগ্রাম মূলত একজন কাস্টমারের পারচেস ফ্রিকোয়েন্সি ও এভারেজ অর্ডার ভ্যালুর সাথে সম্পর্কিত।
একজন কাস্টোমার যত বেশি কেনাকাটা করবে তার প্রতিটি কেনাকাটায় বিপরীতে তার জন্য রেওয়ার্ড পয়েন্ট জমা হতে থাকবে এবং সেই রেওয়ার্ড পয়েন্ট দ্বারা সেই কাস্টমারকে বিভিন্ন সময়ে সেরা ডিসকাউন্ট অফার দেওয়া হয়ে থাকে যা সাধারন কাস্টমার পায় না।
যে কোনো সুপারশপে কেনাকাটা করতে গেলেই আপনি যখন ক্যাশ কাউন্টারে বিল পরিশোধ করতে যান আপনাকে বলা হয়, “স্যার আপনার কি মেম্বারশিপ কার্ড রয়েছে”।
যদি থাকে তবে সে মেম্বারশিপ কার্ডে আপনার কেনাকাটা তথ্যগুলোকে এন্ট্রি করা হয় এবং আপনি প্রতিবার কেনাকাটায় কত বেশি পরিমাণ কেনাকাটা করছেন তার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধাপে আপনাকে নাম্বারিং করা হয়। অর্থাৎ যে বেশি কেনাকাটা করবে তার নাম্বার বাড়তে থাকবে এবং সে নাম্বার এর উপর নির্ভর করে খুব সহজেই বের করে ফেলা যায় আপনার বিজনেসের লয়াল কাস্টমার কারা।
আপনি যখন এটি জানবেন তখন তাদেরকে আরো বেশি ডিসকাউন্ট দেবার মাধ্যমে কাস্টমারকে বারবার আরো বেশি পরিমান কেনাকাটা করাতে সক্ষম হবেন।
উইন-ব্যাক ইমেইল ক্যাম্পেইন
উইন ব্যাক ইমেইল ক্যাম্পেইন আসলে কি? সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করলে বিষয়টি এমন, কাস্টমার যখন প্রথমবার কেনাকাটা সম্পন্ন করলেন তখন আপনার ডাটা সেলারের কাছে লিপিবদ্ধ হয়ে যায়। এখন সেই সেলার চাইলে খুব সহজেই আপনাকে তার অন্যান্য প্রোডাক্ট গুলো দেখাতে পারেন।
কাস্টমার যদি সে প্রোডাক্টে ইন্টারেস্ট না হন তাকে ডিসকাউন্ট অফার দিতে পারেন।
কাস্টমার যদি ডিসকাউন্ট অফারেও ইন্টারেস্ট ফিল না করেন, তবে তার কাছে সার্ভে ফরম পাঠানোর মাধ্যমে সেলার জানার চেষ্টা করেন, কেন তিনি কেনাকাটা করছেন না।
পরবর্তী কেনাকাটায় কাস্টমার যেন প্রবলেম ফেস না করে সেজন্য সেলার বিজনেসের বাধাগুলোকে দূর করার পদক্ষেপ নিতে সচেষ্ট হন।
প্রথম ইমেইল
একজন কাস্টমার যখন কেনাকাটা সম্পন্ন না করেই আপনার সাইট থেকে চলে যায় এর কিছুক্ষণ পরে অথবা একদিন পরে সে একটি ইমেইল পাবেন। ইমেইলটিতে আপনার কেনাকাটার ধরন বিবেচনায় আরো কি কি সে কিনতে পারে সে প্রোডাক্টগুলো সাজেস্ট করা হয়।
এখন কাস্টমারের যদি চাহিদা থাকে আর প্রয়োজনীয় কিছু খুঁজে পেলে সেটা সে কিনতে চায়।
দ্বিতীয় ইমেইল
প্রথম ইমেইল পাবার পরেও কাস্টমার যদি কেনাকাটার না করেন, তবে তাকে একটি ছোট এমাউন্টের ডিসকাউন্ট দেয়া হয়ে থাকে অর্থাৎ তাকে ট্রিগার করানো হয়। সে কি মূল্য ছাড় জনিত কারণে কেনাকাটা করছে না, যদি তাই হবে তবে আশা করা যায় ডিস্কাউন্ট অফার তাকে উৎসাহী করবে।
তৃতীয় ইমেইল
দ্বিতীয় ইমেইলে ছোট পরিমাণ ডিসকাউন্টে পাবার পরেও যখন কাস্টমার কেনাকাটা করে না, তখন তাকে বড় ধরনের ডিসকাউন্ট দিয়ে কেনাকাটা করতে উত্সাহ করা হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বেশি ডিস্কাউন্ট পাবার পরে একটি কাস্টমার গ্রুপ সক্রিয় হয়ে উঠে।
বেশি পরিমান ডিস্কাউন্ট নিয়ে একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করি,
বাংলাদেশি মার্কেটে “লারিভ ব্র্যান্ড” কিছুদিন আগে বেশি পরিমান ডিসকাউন্ট অফার দিয়ে বেশ ভালো পরিমান সাড়া পেয়েছিলো। দেখা যায়, কাস্টমার ট্রায়ালরুমের বাইরে লম্বা লাইনে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে প্রোডাক্ট ট্রায়াল করছেন। ট্রায়াল করা প্রোডাক্টের প্রায় ৮০% সেল হয়ে যায়।
চতুর্থ ইমেইল
এরপরও যখন কাস্টমার কেনাকাটা করছে না, তখন তাঁকে একটি সার্ভে ফ্রম পাঠানোর মাধ্যমে জানার চেষ্টা করা হয়, কেন সে কেনাকাটা করছে না।
ইমেইল অথবা এসএমএস সাইনআপ কুপন প্রোগ্রাম
সোশ্যাল মিডিয়ায় কাস্টমারদের খুঁজে পাওয়া ও এঙ্গেজ রাখা অনেক বেশি ব্যয়বহুল সে ক্ষেত্রে email-marketing আপনার জন্য একটি আদর্শ সমাধান।
কিন্তু সে আগের মতই বলতে হয় কাস্টমার যদি আপনার থেকে কোন ভ্যালুয়েবল জিনিস না পায় তবে সে আপনার কথা শুনবে না সেজন্য তাকে ইমেইল এড্রেস দিয়ে আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট সাইন করলে তাকে আপনি গিফট প্রদান করবেন এই ঘোষণা দেন এবং এই ঘোষণাটি অনেক বেশি কার্যকরী।
পরিকল্পনামাফিক নতুন আইটেম রিলিজ
প্রতিনিয়ত নতুন প্রোডাক্ট লঞ্চ করা, হুটহাট প্রোডাক্ট লঞ্চ করা, কোন কারণ ছাড়া প্রোডাক্ট লাঞ্চ করা একটি সমস্যা। এলোমেলো ভাবে প্রোডাক্ট লঞ্চ করার পরে যদি আফসোস করেন,
কেনো আমার কাস্টমার নেই, কেনো কাস্টমারকে কিনে না অথবা প্রোডাক্ট কি তারা পছন্দ করছে না, সেটি কি যৌক্তিক?
কিন্তু আদতে আপনি যখন অনির্দিষ্ট বা এলোমেলো ভাবে প্রোডাক্ট লঞ্চ করেন, কাস্টমার জানতেই পারে না নতুন প্রোডাক্ট কি এসেছে।
কিন্তু আপনি যখন প্রথম থেকেই কোন দিনে প্রোডাক্ট লঞ্চ করবেন সে বিষয়টি নির্ধারণ করে নেন, হতে পারে সপ্তাহে একবার, মাসে একবার বা বছরে একবার তবে ঠিক সেইসময় কাস্টমার আপনার পেজে বা ওয়েবসাইটে নজর দিবে।
এর মূল কারণ তারা এখন জানে, আপনি একটি নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত নতুন প্রোডাক্ট লঞ্চ করেন।
সাবস্ক্রিপশন বিজনেস মডেল
সাবস্ক্রিপশন বিজনেস মডেল সকল ইন্ডাস্ট্রির জন্য কার্যকরী নাও হতে পারে। তবে ডিজিটাল প্রোডাক্ট অথবা সফটওয়্যার প্রোডাক্টের জন্য দারুণ রকম কার্যকর।
অনেকেই বিজনেসের শুরুতে বিগ ইনভেস্টমেন্ট করতে চায় না। সেক্ষেত্রে আপনি তাদেরকে একটি স্ট্যান্ডার্ড মানের সফটওয়্যার ব ডিজিটাল প্রোডাক্ট স্বল্প খরচে ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে পারেন।
এছাড়াও বান্ডেল অফারগুলো নিয়মিতভাবে কাস্টমারদের কাছে প্রমোট করে আপনি ম্যাক্সিমাম রিভিনিউ জেনারেট করতে পারবেন। ব্যান্ডেল অফারের ক্ষেত্রে সাবস্ক্রাইবারের প্যাকেজ যখন লো বা রান আউট হবে তখন সে নিজ উদ্যোগে রিফিল করে নিতে সচেষ্ট।
সে ক্ষেত্রে যারা রেগুলার কাস্টমার তাদেরকে নিয়মিত বিরতিতে ইমেইল পাঠিয়ে রিমাইন্ডার দেওয়া যেতে পারে। সাবস্ক্রিপশন মডেলের একটি বড় সুবিধা হচ্ছে বিজনেসের ৮০% রেভিনিউ এই সাবস্ক্রিপশন মডেল থেকে উঠে আসে।
আসুন এবারে জানবো এভারেজ অর্ডার ভ্যালু বাড়িয়ে তোলার মাধ্যমে কি করে আরো বেশি রেভিনিউ আয় করা যায়
মিন, মিডিয়ান ও মোড
স্কুল-কলেজে গণিত করতে গিয়ে আমরা সবাই মিন, মিডিয়ান এবং মোড সম্পর্কে অবগত হয়েছি। আপনার বিজনেসের ক্রমাগত বেড়ে উঠাতে এর গুরুত্ব রয়েছে। এটি আপনাকে বুঝতে সহায়তা করে কাস্টমার রিটেনশন, সেলস গ্রোথ ও সেলস ভলিয়মের অবস্থা সম্পর্কে জানতে।
মিন
একটি মূলত অ্যাভারেজ অর্ডার ভ্যালু কে নির্দেশ করে। এ পর্যন্ত যত কেনাকাটা হয়েছে সমস্ত কেনাকাটার পরিমাণকে যোগ করে কেনাকাটার সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে একটি বের হয়ে যায়।
মিডিয়ান
সকল অর্ডার ভ্যালুর মধ্যমান। যতগুলা অর্ডার হয়েছে সবগুলো অর্ডার ভ্যালু গড়ের মধ্যবর্তী মান।
মোড
যে অর্ডার ভ্যালু সংখ্যায় সবচেয়ে বেশিবার রিপিট হয়েছে।
আপসেল এবং ক্রসসেল
ফ্রী ডেলিভারি, ক্যাশব্যাক অফার, এগুলো সব সময় একই রকম ভাবে কাজ করে না। আপনাকে লোভনীয় ডিসকাউন্ট অফারের পাশাপাশি কাস্টমারের চাহিদাকে উস্কে দিতে হবে এবং সেজন্য আপসেলিং এবং ক্রস সেলিং কৌশল ব্যবহার করা হয়।
ক্রস সেলিং
ক্রস সেলিং মূলত একটি প্রোডাক্টের রিলেটেড প্রোডাক্ট সাজেস্ট করা। যেমন ধরুন, আপনি রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছেন। আপনি পিজা অর্ডার করেছেন, কিন্তু ওয়েটার এর পাশাপাশি আপনাকে কোক অফার করবে এবং মিনারেল ড্রিংকিং ওয়াটার অফার করবে। এটি হচ্ছে ক্রস সেলিং।
আপ সেলিং
আপ সেলিং হচ্ছে একই ধরনের প্রোডাক্টের বড় সাইজ অফার করা । যেমন ধরুন, আপনি রেস্টুরেন্টে ৬ ইঞ্চি পিজা অর্ডার করবেন ভাবছেন কিন্তু তারা আপনাকে ১০ ইঞ্চি পিজা অফার করলো। এটি হচ্ছে আপ সেলিং।
পপুলার মার্কেটিং মেথডগুলো ব্যবহার করে রেভিনিউ বাড়িয়ে তুলুন
এতক্ষণ বললাম বিজনেস স্ট্র্যাটিজি, সেলস নাম্বার ব্যবহার করে কৌশলে কাস্টমারদের কাছে আরো বেশি পরিমাণে সেল করার পদ্ধতি নিয়ে। কিন্তু এর বাইরেও গতানুগতিক মার্কেটিং পদ্ধতি গুলো, যেমনঃ ট্রাডিশনাল অথবা ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়গুলোতে আপনাকে নজর দিতে হবে।
পেইড মার্কেটিং
মার্কেটিং এর জন্য আপনাকে খরচ করতে হবে। বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমগুলোতে সক্রিয় দর্শকদের আপনার প্রোডাক্ট ও সার্ভিসগুলো দেখাতে হবে।
কৌশলগত মার্কেটিং পদ্ধতি কাস্টমারদের থেকে আরও বেশি পরিমাণে রেভিনিউ জেনারেট করতে সহায়তা করলেও যে কাস্টমারগুলো আপনার রেভিনিউয়ের সোর্স হবে তাদেরকে পেতে আপনাকে লিড জেনারেট করতে হবে।
এই লিড জেনারেট করার জন্য অনেক মাধ্যম রয়েছে যার মধ্যে বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমগুলো অত্যন্ত কার্যকরী মাধ্যম। এছাড়াও আপনি চাইলে পুরনো পদ্ধতি গুলো, যেমনঃ মার্কেট ভিজিট করে কাস্টমার নিয়ে আসতে পারেন। তবে সেগুলো অনেক বেশি সেকেলে। তারচেয়ে খুব সহজে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সহায়তা নিয়ে কার্য সম্পন্ন করা।
অর্গানিক কাস্টমার একুইজিশন
সব সময় পেইড মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে কাস্টমার একুইজিশন করা বিজনেসের প্রফিট কমিয়ে দেয়। এগুলোর পাশাপাশি আপনাকে অর্গানিক ভাবে কাস্টমার একুইজিশন করার যে সকল কৌশল টুলস রয়েছে সবগুলো চলমান রাখার প্রয়োজন।
বিশেষ করে প্লাটফর্মে অর্গানিক ভাবে কাস্টমার একুইজিশনের জন্য ব্লগ পোস্ট, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, ইমেইল মার্কেটিং, এসএমএস মার্কেটিং এগুলো অত্যন্ত পরিচিত এবং পরীক্ষিত মাধ্যম।
সর্বোচ্চসংখ্যক ট্রাফিক কনভার্সন
এতকিছু করার পর সবশেষে আসে ট্রাফিক কনভার্সন। কিন্তু তারা যখন আসে সেই মুহূর্তে তাদের ক্লায়েন্টে পরিণত করতে না পারলে পুরো কার্য পদ্ধতি বা কর্মযজ্ঞ বিফলে যায়। আপনি যত বেশি ট্রাফিক সফল ভাবে কনভার্ট করে ক্লাইন্টে রুপান্তর করতে পারবেন আপনার বিজনেসের রিটার্ন অফ ইনভেসমেন্ট তত বেশি হবে।
পরিশেষে
গ্রেট মার্কেটিং সর্বদা বেশি পরিমাণে সেল নিয়ে আসতে সাহায্য করে। কথাটি শুনতে অনেক সিম্পল মনে হলেও এটি একটি শক্তিশালী বাক্য।
একটি প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড একদিকে যেমন কাস্টমার একুইজিশনে মনোযোগী হয়। একই সাথে কাস্টমার রিটেনশনের দিকে তাদের সমান গুরুত্ব থাকে। কারণ রিপিট কাস্টমার একটা বিজনেসের রেভিনিউের জায়গাটিকে শক্ত করে।
তাই প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কাস্টমার একুইজিশন এবং রিটেনশন করার মাধ্যমে কাস্টমারদের নিয়মিতভাবে এঙ্গেজ করার মাধ্যমে আপনার বিজনেসকে. আরো বড় করে তুলুন, যা আপনাকে কাঙ্খিত রেভিনিউ নিয়ে এসে দিবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন
আগের মন্তব্য গুলো পড়ুন