UGC Campaign নামক বিজনেস অ্যাডের দারুন একটি আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করবো। এই অ্যাড আইডিয়া সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জানি কিন্তু এর ব্যবহার, গ্রহণযোগ্যতা ও কৌশল সম্পর্কে পরিস্কার বুঝি না।
কাস্টমারদের কাছে একটি বিজ্ঞাপনের গ্রহনযোগ্যতা নির্ভর করে সেই বিজ্ঞাপনটি কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য তার উপর।
User Generated Content বা UGC Campaign
UGC হলো এমন একটি অ্যাড আইডিয়া যেখানে প্রোডাক্টটির ক্রেতা নিজেই সেই প্রোডাক্টের অ্যাড তৈরি করে ও সেটি সবার সাথে শেয়ার করে। এটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাডের জন্য অসাধারন একটি আইডিয়া।
Cocacola এর share a coke একটি UGC ক্যাম্পেইন। এই ক্যাম্পেইনটির রেজাল্ট কি ছিলো?
- এই ক্যাম্পেইন যুবকদের Coke গ্রহনের পরিমাণ ৭ % বাড়িয়ে দিয়েছিলো।
- এই ক্যাম্পেইন থেকে Coke ১৮.৩ লাখ মিডিয়া ইম্প্রেশন অর্জন করতে সক্ষম হয়।
- ফেসবুক থেকে ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আসার পরিমাণ ৮৭০% বেড়ে গিয়েছিলো।
- অনলাইনে ৭৬ হাজার Coke বোতলের ছবি শেয়ার হয়।
- সারাদশে ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার কাস্টম coke এর বোতল প্রিন্ট করা হয়।
- এই ক্যাম্পেইন Coke এর ব্র্যান্ড ইমেজে ইতিবাচক পরিবর্তন এনে দিয়েছিলো।
কীভাবে এই অ্যাড ক্যাম্পেইনটি পরিচালিত হয়েছিলো?
তারা প্রতিটি coke-এর বোতলে আলাদা আলাদা নামকরন করে। ধরুন, আসিফ, সুমন, আরিফ, কবির ইত্যাদি( USA) , বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তারা ভাই, বন্ধু, দাদা, নানা, বাবা, মা, ইত্যাদি নামকরন করে। এতে করে যে দাদার জন্য coke কিনবে সে “দাদা” লিখা বোতল কিনে। এতে করে দাদা খুশি হয়ে যায়। আবার যেহেতু দাদা লিখা বোতল অন্য ব্র্যান্ড দেয় না ফলে এটি তরুণদের কেনার প্রতি আগ্রহী করে তোলে।
Coke ক্রেতাদের অনুপ্রাণিত করে, তারা যেন বোতলে লেখা নামের ব্যক্তির সাথে coke পান করার সময়ের বোতল সহকারে ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে। যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া নিজেকে মেলে ধরার জায়গা আর এর ব্যবহারকারীরা এতে অভ্যস্ত ফলে ক্রেতারা আনন্দের সাথে ছবিগুলো শেয়ার করতে থাকে।
অ্যাড ক্যাম্পেইনটির ভিভিও দেখতে ক্লিক করুনঃ Share a coke campaign
এতে করে Coke এর তৈরি একটি অ্যাডের বিপরীতে সোশ্যাল মিডিয়াতে ক্রেতা দ্বারা Coke নিয়ে অসংখ্য পোস্ট হতে থাকে। ফেসবুক ভালো এনগেজমেন্ট প্রাপ্ত পোষ্টগুলোকে বেশি পরিমাণ রিচ দেয়। ফলে অর্গানিক রেজাল্টও ভালো হতে থাকে। Coke আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌছাতে সক্ষম হয়।
কেন UGC অ্যাড ক্যাম্পেইনগুলো সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত?
ডিজিটাল বা ট্র্যাডিশনাল উভয় ক্ষেত্রে Words of mouth হলো বেস্ট মার্কেটিং পলিসি। UGC অ্যাড ক্যাম্পেইনগুলো সর্বাধিক বিশ্বাসযোগ্য হবার একটি কারণ এই যে, এটি ভোক্তা দ্বারা স্বীকৃত।
৯২% মানুষ সেই ব্র্যান্ডের অ্যাডগুলোর প্রতি আস্থা রাখে যেগুলো সরাসরি ভোক্তা দ্বারা সুপারিশপ্রাপ্ত।
‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ একটি ব্র্যান্ডের জন্য খুবই গুরুত্তপূর্ণ সম্পদ । কারণ অদূর ভবিষ্যতে কাস্টমার তাদের প্রয়োজনীয় প্রোডাক্ট কেনার জন্য কমার্শিয়াল অ্যাড দ্বারা কম ‘অনুপ্রানিত’ হবে। তারা তাদের পছন্দমত আস্থাশীল ব্র্যান্ড খোঁজ করবে। সময় এখন কাস্টমার টু বিজনেস (C2B) মডেলের।
জরিপ বলছে, প্রফেশনাল অ্যাড ক্যাম্পেইনের সাথে UGC অ্যাড ক্যাম্পেইনের মিশ্রণ ঘটলে সেই অ্যাড ক্যাম্পেইনটির কার্যকারিতা ২৮% বেড়ে যায়।
৮৬% একবিংশ শতাব্দীর তরুণেরা মনে করে UGC অ্যাড ক্যাম্পেইন তৈরির সক্ষমতা একটি ভালো মানের ব্র্যান্ডকে নির্দেশ করে।
২০০৯ সালে Burberry’s art of the trench campaign সফল UGC অ্যাড ক্যাম্পেইন তৈরি করতে সক্ষম হয়। তারা ক্রেতাদের অনুপ্রানিত করে তাদের ব্র্যান্ডের তৈরি কোট পরে সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি শেয়ার করতে।
ভিভিওটি দেখতে ক্লিক করুনঃ Burberry’s art of the trench campaign
পরিশেষে, একটি বিজনেস লাভবান হবে যদি কম মার্কেটিং খরচ করে বেশি সেল করা সম্ভব হয়।আর UGC অ্যাড ক্যাম্পেইনএই লক্ষ্য অর্জনে আদর্শ মডেল। ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তারা বিনা খরচে এই অ্যাড মডেলটি তাদের বিজনেসে ব্যবহার করতে পারেন।
আপনি যদি আপনার বিজনেসে UGC অ্যাড ক্যাম্পেইন মডেল ব্যবহার করেন বা এ রকম অন্য কোনো ক্যাম্পেইন সম্পর্কে আপনার জানা থাকে তাহলে কমেন্টে শেয়ার করুন আপনার অভিজ্ঞতা।
সবার আগে মন্তব্য করুন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন
মন্তব্য করতে হলে আপনাকে লগ ইন করতে হবে।