দেশীকমার্স বনাম ওয়ার্ডপ্রেস

দেশীকমার্স বনাম ওয়ার্ডপ্রেস
শেয়ার করুন

অনলাইন ব্যবসা পরিচালনার জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করা এখন অপরিহার্য। বাংলাদেশে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা তাদের পণ্য ও সেবা অনলাইনে বিক্রির জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান। এক্ষেত্রে দেশীকমার্স এবং ওয়ার্ডপ্রেস দুটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। নিচে এই দুটি প্ল্যাটফর্মের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো তুলে ধরা হলো:

দেশীকমার্স (DeshiCommerce)

দেশীকমার্স একটি সম্পূর্ণ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম, যা বিশেষভাবে বাংলাদেশের বাজারের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি ব্যবহারকারীদের সহজেই অনলাইন দোকান তৈরি এবং পরিচালনা করতে সাহায্য করে।

সুবিধা

  • সহজ ব্যবহার: দেশীকমার্সের ইন্টারফেস খুবই সহজ এবং ব্যবহারকারী-বান্ধব। যাদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান কম, তারাও সহজে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • ফাস্ট ওয়েবসাইট লোডিংঃ উন্নত সার্ভার এবং অপটিমাইজেশন এর কারনে দেশীকমার্স দিয়ে তৈরি ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড ওয়ার্ডপ্রেস থেকে অনেক বেশী। যেটা ওয়েবসাইট ভিজিট এবং শপিং করে তোলে বাটার স্মুথ।
  • স্থানীয় সেবা সংযোজন: দেশীকমার্সে বাংলাদেশের পেমেন্ট গেটওয়ে (যেমন বিকাশ), কুরিয়ার সার্ভিস (যেমন পাঠাও, স্টিড ফাস্ট) এবং বাংলা ভাষায় কাস্টমার সাপোর্ট রয়েছে, যা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য সুবিধাজনক।
  • নিজস্ব থিম এবং প্লাগইন: দেশীকমার্সে সকল থিম এবং প্লাগইন নিজেদের ডেভেলপারদের মাধ্যমে তৈরি করা, তাই এগুলো অধিক নিরাপদ এবং আস্থাযোগ্য।
  • উন্নত গ্রাহক সেবা: দেশীকমার্সের গ্রাহক সহায়তা অত্যন্ত করিতকর্মা এবং ব্যবহারকারীদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে তৎপর সেবা প্রদান করে।
  • হোস্টিং এবং সিকিউরিটি: দেশীকমার্স নিজস্ব হোস্টিং এবং সিকিউরিটি প্রদান করে, তাই ব্যবহারকারীদের এই বিষয়ে চিন্তা করতে হয় না।
  • মূল্য: তুলনামূলকভাবে কম মূল্যে ভালো সেবা পাওয়া যায়।

অসুবিধা

  • কাস্টমাইজেশনের সীমাবদ্ধতা: ওয়ার্ডপ্রেসের তুলনায় দেশীকমার্সে কাস্টমাইজেশনের সুযোগ কিছুটা সীমিত।
  • প্লাগইনের সীমাবদ্ধতা: ওয়ার্ডপ্রেসের মতো দেশীকমার্সে প্লাগইনের বিশাল সংগ্রহ নেই।

ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) (WooCommerce প্লাগইন সহ)

ওয়ার্ডপ্রেস একটি জনপ্রিয় কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS), যা WooCommerce প্লাগইন ব্যবহার করে ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

সুবিধা

  • অত্যন্ত কাস্টমাইজযোগ্য: ওয়ার্ডপ্রেস অত্যন্ত কাস্টমাইজযোগ্য এবং ব্যবহারকারীরা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন।
  • বিশাল প্লাগইন এবং থিম সংগ্রহ: ওয়ার্ডপ্রেসে হাজার হাজার প্লাগইন এবং থিম রয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন ফিচার যোগ করতে এবং ওয়েবসাইটকে আকর্ষণীয় করতে সাহায্য করে।
  • সম্প্রদায় সমর্থন: ওয়ার্ডপ্রেসের একটি বিশাল সম্প্রদায় রয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।
  • বৃহৎ স্কেলের জন্য উপযুক্ত: বড় ব্যবসার জন্য ওয়ার্ডপ্রেস অনেক বেশি উপযুক্ত।

অসুবিধা

  • কারিগরি জ্ঞান প্রয়োজন: ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করতে কিছুটা কারিগরি জ্ঞান প্রয়োজন। নতুন ব্যবহারকারী এবং যারা কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহারে সিদ্ধহস্ত নয় তাদের জন্য ওয়ার্ডপ্রেস শেখা ও ব্যাবহার করা বেশ সময় সাপেক্ষ। বিশেষ করে কাস্টমাইজেশনের জন্য আপনাকে অবশ্যই কোডিং বিষয়ে দক্ষ হতে হবে।
  • হোস্টিং এবং সিকিউরিটি: ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকারীদের নিজেদের আলাদা করে হোস্টিং এবং সিকিউরিটির ব্যবস্থা করতে হয়।
  • প্লাগইন এবং থিম রক্ষণাবেক্ষণ: থার্ড পার্টি প্লাগিনে কখনই শতভাগ নিরাপত্তা বিধান করা সম্ভব হয়না। তাই নিরাপত্তার জন্য প্লাগইন এবং থিমগুলো নিয়মিত আপডেট করতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ আবার অনেক সময় হিতে-বিপরীতও হয়।
  • খরচ: ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং, থিম, প্লাগইন এবং ডেভেলপারের সব কিছুর খরচ আলাদা আলাদা করে দিতে হয়। তাই সব মিলিয়ে ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট তৈরির খরচ সাধারনত বেশি হয়। 

আপনার জন্য কোন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ভালো হবে?

  • যদি আপনি একটি সহজ এবং দ্রুত অনলাইন দোকান তৈরি করতে চান, এবং আপনার প্রযুক্তিগত জ্ঞান কম থাকে, তবে দেশীকমার্স আপনার জন্য অত্যন্ত সহজ এবং কার্যকর সমাধান।
  • যদি আপনার কাস্টমাইজেশনের প্রয়োজন হয় এবং আপনার প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকে তবে ওয়ার্ডপ্রেস আপনার জন্য সুবিধাজনক হতে পারে ।
  • ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরির বাজেট সীমিত হলে, দেশীকমার্সে আপনার জন্য পকেট সাশ্রয়ী হবে। 

উপসংহার:

আপনার ব্যবসার প্রয়োজন এবং বাজেটের উপর নির্ভর করে আপনি দেশীকমার্স বা ওয়ার্ডপ্রেস বেছে নিতে পারেন। উভয় প্ল্যাটফর্মেরই নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। তাই, আপনার জন্য কোনটি উপযুক্ত, তা নির্ধারণ করার আগে ভালোভাবে গবেষণা এবং সরাসরি +৮৮০১৭১৩ ৬৮১০৭৩ নম্বরে ফোন দিয়ে দেশীকমার্স প্রতিনিধির পরামর্শ নিতে পারেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট

সবার আগে মন্তব্য করুন

আপনার মূল্যবান মতামত দিন