কিভাবে আপনার বিজনেস পেজের জন্য কার্যকরী ফেসবুক কনটেস্ট আয়োজন করবেন

কিভাবে আপনার বিজনেস পেজের জন্য কার্যকরী ফেসবুক কনটেস্ট আয়োজন করবেন
শেয়ার করুন

একটি কার্যকরী ফেসবুক কনটেস্ট আপনার ফেসবুক ব্র্যান্ড পেজকে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। ফেসবুক মার্কেটিং স্ট্রাটেজির একটি গুরুত্বপূর্ণ এলিমেন্ট হচ্ছে “এনগেজমেন্ট”। আপনি যত বেশি এনগেজমেন্ট তৈরি করতে পারবেন, তত বেশি মানুষের কাছে আপনার ফেসবুক পেজটি রিচ করতে সক্ষম হবে। 

ফেসবুকে এঙ্গেজমেন্ট ক্রিয়েট করার জন্য আমরা অনেক ধরনের কৌশল ব্যবহার করি। তার মধ্যে অন্যতম একটি কৌশল হচ্ছে “ফেসবুক কনটেস্ট”। 

ফেসবুকে এনগেজমেন্ট বাড়াতে হলে অডিয়েন্সদের স্বেচ্ছায় আপনার পোস্টের সাথে এঙ্গেজ করতে হবে। আর সেজন্য ফেসবুক কনটেস্ট দারুণরকম কার্যকরী একটি পদ্ধতি। আপনাকে শুধু টার্গেট অডিয়েন্সদের দিকে এমন একটি প্রশ্ন ছুড়ে দিতে হবে যাতে তারা উত্তর দিতে ইচ্ছে পোষণ করে। 

অথবা এমন কিছু কন্টেন্ট অফার করতে হবে যা তারা পছন্দ করবে ব্যবহার করতে। মানুষের সহজাত প্রবৃত্তির মধ্য একটি হচ্ছে নিজের স্কিল বা দক্ষতা সবাইকে জানান দেবার প্রবনতা। আপনাকে শুধু তার সেই প্রবৃত্তিকে নাড়া দিতে হবে। 

আর যখনই তারা উত্তর দিবে বা যুক্ত হবে তখনই ফেসবুকের এনগেজমেন্ট ও রিচ বাড়বে। কিন্তু এই কাজটি করতে গিয়ে আমরা এলোমেলো হয়ে যায়। বুঝে উঠতে পারি না কিভাবে “ফেসবুক কনটেস্ট” রান করবো।  

আজকে জানাবো step-by-step কিভাবে আপনি ব্র্যান্ড পেজের জন্য সফল ভাবে একটি সোশ্যাল মিডিয়া কনটেস্ট আয়োজন করবেন। 

প্রথম স্টেপঃ লক্ষ্য নির্ধারণ

আপনাকে প্রথমেই স্থির করতে হবে আপনি ফেসবুক কনটেস্ট থেকে কি অর্জন করতে চান? নিজেকে প্রশ্ন করুন,

  • আপনি কি পেজের লাইক সংখ্যা বাড়াতে চান?  
  • আপনি কি সেল নিয়ে আসতে চান?  
  • আপনি কি পেজের এনগেজমেন্ট লেভেলবাড়াতে চান?

আপনার চাওয়ার ওপর নির্ভর করেই সেট করতে হবে কনটেস্ট এর ধরন।

লাইক বাড়াতে চাইলে,

আপনি চাচ্ছেন আপনার পেজ লাইকের পরিমাণ বাড়াতে, সেক্ষেত্রে আপনি অনলাইন গেমের ব্যবস্থা করতে পারেন। এতে করে অডিয়েন্স গেমের মাধ্যমে বিনোদন পাবে ও পরবর্তী সময়ের জন্য পেজটি লাইক করে রাখবে। অনেকে বন্ধুদের সাথে নিয়ে গেম খেলার জন্য অপরকে রেফার করবে। 

সেল বাড়াতে চাইলে

কাস্টমারদের আপনার বিজনেস সম্পর্কে, প্রোডাক্ট সম্পর্কে মতামত দিতে বলুন। তাদের চাওয়া, তাদের আকাঙ্খার কথা প্রকাশ করতে বলুন। তাদের পরামর্শগুলো অনলাইন ফর্ম এর মাধ্যমে সংগ্রহ করুন। অর্থাৎ একটি অনলাইন সার্ভে পরিচালনা করুন।  

আপনার প্রোডাক্ট এর ধরন অনুযায়ী তাদের সেই প্রোডাক্ট ও সার্ভিস নিয়ে পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং ফিউচারে কি ধরনের প্রোডাক্ট তারা চায় সে বিষয়ে তাদের মতামত জানতে চান। আপনার সার্ভে ফর্মটি ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত করে রাখুন। 

ফাইনালি তারা যখন পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করবে তখন তাদের সরাসরি ওয়েবসাইটে নিয়ে যান।যখন তারা আপনার ওয়েবসাইটে ল্যান্ড করবে ফেসবুক চালানোর সময় ফেসবুক পিক্সেল ব্যবহার করে সহজেই তাদেরকে রি-টার্গেট করতে পারবেন। এটি আপনার সেল বাড়ানোর জন্য পটেনশিয়াল কাস্টমার খুঁজে পাবার একটি সহায়ক কৌশল।

এনগেজমেন্ট লেভেল ইমপ্রুভ করার জন্য

সাধারণত কনটেস্টে কাস্টমারদের একশন নিতে হয় অর্থাৎ পেজ বা পোস্ট লাইক করতে হয়, কমেন্ট করে প্রশ্নের উত্তর বা মতামত দিতে হয়। আর যখনই তারা এটি করে তখন ফেসবুকে তারা এঙ্গেজ হয়ে যায়।  যত বেশি কমেন্ট হবে, লাইক করবে, ততো বেশি এঙ্গেজমেন্ট বাড়বে। বোনাস পয়েন্ট হলো, তাদের পরবর্তী সময়ে রি টার্গেট করতে পারবেন। 

ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট

ইউজার জেনারেটেড কনটেন্ট তৈরি করার বিষয়টি মাথায় নিয়ে কনটেস্ট তৈরি করলে এটি বেশি লাভজনক হবে। কাস্টমারদের বলুন প্রোডাক্ট ও সার্ভিস নিয়ে তাদের টেস্টিমোনিয়াল অথবা রিভিউ পোস্ট করতে। প্রত্যেকে যখন প্রোডাক্ট নিয়ে রিভিউ বা টেস্টিমোনিয়াল শেয়ার করবেন তখন ফেসবুকের এঙ্গেজমেন্ট লেভেল অটোমেটিক ভাবে বেড়ে যাবে। একই সাথে বাড়বে অর্গানিক রিচের পরিমাণ। 

স্টেপ ২ঃ সৃষ্টিশীল হোন, একটু চিন্তা করুন

যখন আপনি প্রতিযোগিতার আয়োজন করছেন তখন আপনাকে সৃজনশীল হতে হবে। আপনার গ্রাফিক কনটেন্টগুলো যত বেশি ব্র্যান্ডেড এবং ইউনিক হবে তত বেশি মানুষ তাতে ইন্টারেক্ট করবে। তাই কনটেস্ট এর থিম নিয়ে প্ল্যান করুন। এমন একটি থিম তৈরি করুন যা দৃষ্টি নন্দন ও সৃষ্টিশীল এবং মানুষ সেটিকে মনে রাখতে পারে। 

নিচের ছবিতি খেয়াল করুন,  কি বিষয়ে কনটেস্ট ছবি দেখে সেটি পরিস্কার ভাবে বোঝা যায়।

 

 

স্টেপ ৩ঃ পুরস্কার নির্ধারণ করুন

কনটেস্টের জন্য পুরস্কার প্রদান করুন। বিনা কারণে কেউ আপনার কনটেস্ট এর সাথে যুক্ত হবে না। যদি কনটেস্টের বিজয়ীর জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেন তবে সেটি পাবার আশায় অডিয়েন্স উৎসাহী হবে অংশ নিতে।  

স্টেপ ৪ঃ ফেসবুকে অ্যাড দিন

শুধু কি কনটেস্ট করলেই হবে, এটি প্রচার না করলে কিভাবে মানুষ জানবে। কনটেস্ট যাদের জন্য তৈরি করেছেন তাদেরকে টার্গেট করে ফেসবুকে অ্যাড দিন। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অ্যাড চালু রাখুন। 

স্টেপ ৫ঃ বিজয়ী ঘোষণা ও পুরুস্কার প্রদান

এবারে বিজয়ীকে পুরুস্কার দিন। সেটি আপনার পেজে শেয়ার করুন। পুরুস্কার সব সময় আনন্দের মর্যাদার তাই বিজয়ী নিজে থেকেই সেটি আরো অনেকের সাথে শেয়ার করবে। এতে যেমন এঙ্গেজমেন্ট বাড়বে একই সাথে পেজের প্রতি অডিয়েন্সদের আস্থা তৈরি হবে।

নিজের ইকমার্স ওয়েবসাইট তৈরী করুন মাত্র ৫ মিনিটে

ব্যবহারে সহজ

কোডিং এর ঝামেলা নেই

খরচ সাধ্যের মধ্যে

সাইন আপ

 

স্টেপ ৬ঃ ফলাফল পরীক্ষা করুন

শুধুমাত্র কনটেস্ট পরিচালনা করলেই হবেনা আপনাকে জানতে হবে কনটেস্ট থেকে আপনার অর্জন কি। একটি কনটেস্ট শেষ হওয়ার পরে কতগুলো পেজ লাইক এসেছে, পোস্ট এঙ্গেজমেন্ট হয়েছে, পেজ ক্লিক হয়েছে, টপ পোস্ট কোনগুলো ছিল এসব বিষয় পরিষ্কার ভাবে জানতে হবে।

পরিশেষে

ফেসবুক  কনটেস্ট এর মূল উদ্দেশ্য ফেসবুক পেইজের এঙ্গেজমেন্ট এবং রিচ বাড়িয়ে তোলার মাধ্যমে সেল হবার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলা এবং ভবিষ্যৎ কাস্টমারদেরকে এঙ্গেজ রাখা।  

আর সেজন্য আপনাকে প্রতিবার কনটেস্টের শেষে রেজাল্ট পরীক্ষা করে দেখতে হবে। যদি কনটেস্ট সফল না হয় তবে কনটেস্ট এর ধরন চেঞ্জ করতে হবে, গ্রাফিক্স চেঞ্জ করতে হবে অথবা পুরস্কার নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হবে।  

সবসময় মনে রাখবেন এমন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ যা অডিয়েন্সদের চিন্তার বিকাশ ঘটাবে এবং একই সাথে সে পুরস্কৃত হবে। 

আরো পরুনঃ

মার্কেটিং কমান্ডমেন্টস: বিজনেস পরিচালনার ঠিক বেঠিকের আদ্যোপান্ত

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট

আপনার মূল্যবান মতামত দিন

মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না। আবশ্যক ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত *

আগের মন্তব্য গুলো পড়ুন

সবার আগে মন্তব্য করুন