বর্তমান চাকুরির বাজারের করুণ পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে অনেক তরুণ-তরুণী ব্যবসা ক্ষেত্রে নিজের ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠা করতে চান। এছাড়া প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের জীবনমানের যে পরিবর্তন ঘটেছে সেক্ষেত্রেও নতুন নতুন সম্ভাবনাময় ব্যবসা খাতের সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া একজন উদ্যোক্তার জীবন মানে হলো একটি স্বাধীন জীবন।
কিন্তু এই প্রতিযোগিতার বাজারে নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা মোটেও সহজ কাজ নয়। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক দিকনির্দেশনা ও জ্ঞান। আর আপনি যদি এখনো জেনে না থাকেন কীভাবে আপনার ব্যবসা শুরু করবেন কিংবা আপনার জন্য সেরা ব্যবসা কোনটি হতে পারে, তাহলে আমাদের আজকের আলোচনা কেবল আপনাকে ঘিরেই।
আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব ২০২৫ সালের সব থেকে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে। এমনকি ছোট-বড় বিভিন্ন বাজেট নির্ভর ব্যবসা নিয়েও আলোচনা করব যাতে খুব সহজেই আপনি আপনার বাজেটের মধ্যে থেকেই একটি বিজনেস শুরু করতে পারেন।
বাংলাদেশে লাভজনক ব্যবসার পূর্নাঙ্গ তালিকা
প্রযুক্তির অবশ্যম্ভাবী অগ্রগতির কল্যাণে বর্তমানে বাংলাদেশে অসংখ্য লাভজনক ব্যবসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সৃজনশীলতা, সঠিক পরিকল্পনা ও বাজার বিশ্লেষণ এর মাধ্যমে যে কোন ব্যবসাকে একটি লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করা যেতে পারে।
সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে ১৫ টি সবচেয়ে লাভজনক বিজনেস আইডিয়া নিচে তুলে ধরা হলো:
১. ই-কমার্স
২. ডিজিটাল মার্কেটিং
৩. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
৪. রেস্টুরেন্ট ও ক্যাফে
৫. স্ট্রিট ফুড
৬. স্বাস্থ্য সেবা
৭. ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি
৮. শিক্ষা ও কোচিং সেন্টার সার্ভিস
৯. অর্গ্যানিক ফুড উৎপাদন ও প্রসেসিং
১০. ফ্রিল্যান্সিং
১১. পরিবহণ ও ডেলিভারি সার্ভিস
১২. বিউটি পার্লার
১৩. ফিটনেস ও ওয়েলনেস পরিষেবা
১৪. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট
১৫. ডে-কেয়ার ব্যবসা
১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া
কি অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন মাত্র ১০ হাজার টাকায় এখনকার সময়ে কোনো ব্যবসা হয় নাকি?
বিস্মিত হলেও সত্যি যে মাত্র ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেও আপনি আপনার স্বপ্নের যাত্রা শুরু করতে পারেন।
আর এ পর্যায়ে আমি আলোচনা করতে চলেছি বর্তমান সময়ের শীর্ষ চাহিদা সম্পন্ন ২৫ টি বিজনেস আইডিয়া নিয়ে যেগুলো কেবল ১০ হাজার টাকা বাজেটেও শুরু করা যায়।
১. ফুড ডেলিভারি সার্ভিস
২. স্ট্রিট ফুড
৩. হাউস কিপিং সেবা
৪. ফ্রিল্যান্স রাইটিং বা কন্টেন্ট রাইটিং
৫. এডুকেশনাল কোচিং সেন্টার সার্ভিস
৬. ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস
৭. ট্যুর গাইড
৮. পোষা প্রাণী পরিষেবা সার্ভিস
৯. মোবাইল সার্ভিসিং
১০. ফ্রিল্যান্স ফোটোগ্রাফি
১১. ফ্রিল্যান্স ফটো এডিটিং ও ভিডিও এডিটিং
১২. ব্লগিং
১৩. অর্গ্যানিক প্রোডাক্ট বিক্রি
১৪. স্কিন কেয়ার বা বিউটি সার্ভিস
১৫. বুটিক বা হাতে তৈরি পোশাক বিক্রি
১৬. ক্রাফট বা হ্যান্ডমেড গিফ্ট আইটেম বিক্রি
১৭. হোম মেড ফুডের ব্যবসা
১৮. নির্বাচনী প্রচারণা বা পোস্টার তৈরি
১৯. বেবি ডে-কেয়ার সার্ভিস
২০. হোম ডেলিভারি
২১. প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রদান করে ব্যবসা
২২. হাঁস, মুরগি, বা মাছের ব্যবসা
২৩. ড্রাই ফ্রুটের ব্যবসা
২৪. সিজনাল ফলের ব্যবসা
২৫. শুঁটকি মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ
৫০ হাজার টাকায় ব্যবসার আইডিয়া- যে ব্যবসাগুলো শুরু করতে পারেন
১. ফ্রিল্যান্সিং
তুলনামূলক কম খরচে শুরু করা যায় এমন ব্যবসাগুলোর মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ও লাভজনক একটি সেক্টর। ৫০ হাজার বা তারও কম অর্থ বিনিয়োগ করে আপনিও হতে পারেন একজন সফল উদ্যোক্তা।
তবে এক্ষেত্রে যেহেতু বিশেষ কিছু স্কিলের দরকার হয়, সেহেতু প্রথমে আপনি অফলাইনে বা অনলাইনে কোর্স করে স্কিল ডেভেলপ করতে পারেন। এছাড়াও কিছু প্রফেশনাল টুলস যেমন প্রিমিয়াম গ্রাফিক ডিজাইন সফটওয়্যার, ওয়েব ডিজাইন টেমপ্লেট, বা কন্টেন্ট রাইটিং সফটওয়্যার কিনতে পারেন যা আপনার কাজকে সহজ ও অর্থবহ করবে। পাশাপাশি কিছুটা বাজেট আপনার কাজের বিজ্ঞাপন ও মার্কেটিং এর জন্য বরাদ্দ করতে পারেন।
২. ই-কমার্স
ই-কমার্স শব্দটি ছোট হলেও এর সম্ভাবনা ও ক্ষেত্র বিশাল। তবে আপনি যদি ছোট বা মাঝারি আকারের ই-কমার্স বিজনেস শুরু করতে চান তাহলে ৫০ হাজার টাকা আপনার জন্য যথেষ্ট।
এক্ষেত্রে প্রথমত আপনাকে একটি নির্দিষ্ট ধরনের পণ্য বাছাই করতে হবে। তা হতে পারে গৃহস্থালি পণ্য, কসমেটিকস, স্থানীয় হস্তশিল্প বা পোশাক। এরপরে যে কাজটি করতে হবে তা হলো হলো একটি ই-কমার্স সাইট তৈরি করা। তবে এই কাজটি অনেকের কাছে বিশেষ করে যারা নতুন উদ্যোক্তা হতে চান তাদের জন্য কিছুটা জটিল মনে হতে পারে।
আপনিও যদি তেমনটাই ভেবে থাকেন তাহলে ভাবনার দরজায় এখনি তালা দিন। Deshicommerce বাংলাদেশ ভিত্তিক এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যা আপনাকে কম খরচে এবং দ্রুততম সময়ে একটি স্ট্যান্ডার্ড ই-কমার্স সাইট তৈরিতে সহায়তা করবে। এছাড়া নিজস্ব ফেসবুক আইডি এবং ওয়েবসাইটেও ই-কমার্সের বিস্তর সুবিধা রয়েছে।
৩. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সেবা বাংলাদেশের আরো একটি জনপ্রিয় ব্যবসা, যা স্বল্প পুঁজি দিয়ে শুরু করা যায়। এর জন্য ৫০ হাজার টাকার মধ্যে প্রথমে ইভেন্ট পরিচালনার জন্য কিছু মৌলিক সরঞ্জাম কিনতে পারেন যেমন, স্টেজ ডেকোরেশন সামগ্রী, লাইটিং ও সাউন্ড সিস্টেম, এবং অন্যান্য ইভেন্ট সরঞ্জাম।
এরপর মার্কেটিং ও নেটওয়ার্কিং এর জন্য সামাজিক মাধ্যমে বা লোকাল ইভেন্টে আপনার কাজের বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারেন।
পাশাপাশি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে সঠিক দক্ষতা অর্জনের জন্য কোর্স করা যেতে পারে, আপনাকে আরো বেশি দক্ষ ও সফল হতে সাহায্য করবে।
৫ হাজার টাকায় ব্যবসা- যে ব্যবসাগুলো শুরু করতে পারেন
১. হোম মেড ফুড ডেলিভারি
বর্তমান সময়ে মানুষ যথেষ্ট স্বাস্থ্য সচেতন এবং শৌখিন ও বটে। সেইসঙ্গে দৈনন্দিন জীবনে ব্যস্ততা বৃদ্ধির সাথে সাথে অনলাইনে খাবার অর্ডারের প্রবণতাও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাই আপনি যদি রান্নায় পারদর্শী হন এবং আপনার বাজেট যদি মাত্র ৫ হাজার টাকা হয়ে থাকে তাহলে হোম মেড ফুড সার্ভিসিং হতে পারে আপনার জন্য বেস্ট একটি অপশন।
২. কন্টেন্ট রাইটিং
ফ্রিল্যান্স রাইটিং এর চাহিদা বর্তমানে চোখে পরার মতো। আপনার যদি ক্রিয়েটিভ রাইটিংয়ে হাতেখড়ি থেকে থাকে বা লেখালেখি আপনার একটি শখ, তাহলে কন্টেন্ট রাইটিং একটি সস্তা কিন্তু লাভজনক উদ্যোগ হতে পারে।
৩. শখের কাজকে ব্যবসা বানানো
আমাদের প্রত্যেকেরই মূলত কিছু না কিছু শখের কাজ রয়েছে। আর এই শখের কাজটিই যদি আপনার উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে তাহলে কেমন হয় বলুন তো?
জ্বি আপনার যদি খুব স্বল্প পুঁজি হয়ে থাকে এবং আপনার কোনো বিশেষ শখ থেকে থাকে যেমন- পেইন্টিং, ডুডলিং, বেকিং বা কোনো হাতের কাজ, তাহলে সেগুলো অনলাইনে বা স্থানীয় মার্কেটে বিক্রয়ের মাধ্যমে আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
১৫ হাজার টাকায় ব্যবসা তালিকা
১. ফাস্টফুড বা স্ট্রিট ফুড ব্যবসা
মাত্র ১৫ হাজার মধ্যে ছোট একটি স্টল দিয়ে এই ব্যবসাটি শুরু করা সম্ভব। যেকোনো ধরনের এক বা একাধিক ফাস্টফুড দিয়ে শুরু করতে পারেন আপনার এই বিজনেসটি।
২. মোবাইল এক্সেসরিজ বিক্রি
সময়ের সাথে স্মার্টফোন ব্যবহারের চাহিদা যেমন বেড়েছে তেমনি বিভিন্ন ধরনের ফোন ও মোবাইল এক্সেসরিজের প্রয়োজনীয়তাও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মোবাইল কাভার, চার্জার, ইয়ারফোন, মাইক্রোফোন, সেলফি স্টিক ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের পণ্য লোকাল মার্কেট থেকে কিনে অনলাইনে বিক্রি করা যেতে পারে।
৩. প্লান্ট ও নার্সারি ব্যবসা
গাছের সঙ্গে মানুষের শখ্যতা জন্ম জন্মান্তরের। আর আজকাল তো অনলাইন ও অফলাইন উভয় ক্ষেত্রে গাছের চাহিদা ব্যাপক। সেক্ষেত্রে টবে লাগানো গাছ ও শৌখিন গাছ বিক্রি হতে পারে একটি লাভজনক ব্যবসা।
২০ হাজার টাকার ব্যবসা তালিকা
১. কসমেটিকস ও বিউটি প্রোডাক্ট ব্যবসা
রাজধানীর চকবাজার, ইসলামপুর বা অনলাইন পাইকারি সরবরাহকারীদের কাছ থেকে স্বল্প মূল্যে বিউটি প্রোডাক্টস ক্রয় করে অনলাইনে বা অফলাইনে বিক্রি করতে পারেন।
২. অনলাইন টিউশনি
যেকোনো একাডেমিক বিষয় অথবা বিভিন্ন স্কিল-বেইজড কোর্স যেমন- স্পোকেন ইংলিশ, গ্রাফিক ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি বিষয়ের ওপর অনলাইন কোর্স বিক্রি করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে ফেসবুক, ইউটিউব, জুম বা গুগল মিটের মতো প্লাটফর্মে পেইড ক্লাস নিতে পারেন। এছাড়া উডেমি বা কোর্সেরা প্লাটফর্মগুলোতে কোর্স বিক্রি করাও একটি লাভজনক ব্যবসা।
৩. পুরাতন পণ্য রিসেল
কম দামে ভালো কন্ডিশনের প্রোডাক্ট কিনে অনলাইনে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে যেমন- ফেসবুক, বিক্রয়.কম অথবা দারাজে বেশি দামে বিক্রি করতে পারেন। এটি একটি কম ঝুঁকিপূর্ণ ও অন্যতম লাভজনক ব্যবসা।
৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা তালিকা
১. টি-শার্ট বা অন্যান্য কাস্টমাইজড পোশাক ব্যবসা
কাস্টম ডিজাইন করা টি-শার্ট, হুডি বা অন্যান্য ধরনের পোশাক বিক্রি করতে পারেন। এক্ষেত্রে লোকাল ফ্যাক্টরি থেকে পাইকারি কিনে বা নিজের ডিজাইন করেও সেল করতে পারবেন। তাছাড়া বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে ও ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে সেল করার সুযোগ রয়েছে।
২. ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস
ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস হলো বিভিন্ন কোম্পানি, ব্রান্ড বা উদ্যোক্তাদের অনলাইনে প্রচার-প্রসার ও বিক্রি বৃদ্ধির জন্য মার্কেটিং সেবা প্রদান করা। এতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, SEO, কনটেন্ট মার্কেটিং, গুগল ও ফেসবুক অ্যাডস, ই-মেইল মার্কেটিং এবং লিড জেনারেশন অন্তর্ভুক্ত।
১ লাখ টাকায় ব্যবসার তালিকা
আপনার বাজেট যদি মোটামুটি ১ লাখ টাকার কাছাকাছি হয়ে থাকে এবং আপনি যদি একটি লো-রিস্ক ব্যবসা শুরু করতে চান, তাহলে গাড়ি ওয়াশিং ও ডিটেইলিং সার্ভিস একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে।
এটি যেকোনো শপিংমল অফিস আদালত বা ব্যস্ত সড়কের পাশে শুরু করা যায়। হোম সার্ভিস বা অ্যাপভিত্তিক বুকিং সিস্টেম চালু করলে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়া সম্ভব। এভাবে ভালো পরিষেবা ও ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবহার করে সহজেই মাসে ৫০,০০০-১,০০,০০০ টাকা আয় করা যায়।
২ লাখ টাকায় ব্যবসা তালিকা
১. রেস্টুরেন্ট বা কফি শপ
ব্যস্ত কিংবা মনোরম এলাকাগুলোতে রেস্টুরেন্ট বা কফিশপ ব্যবসা একটি অত্যন্ত লাভজনক বিজনেস আইডিয়া। এক্ষেত্রে ভালো ইন্টেরিয়র, অনলাইন ফুড ডেলিভারি ও মার্কেটিং এর সহায়তা নিলে কাস্টমার পাওয়া আরো সহজ হয়।
একটি ছোট বা মাঝারি সাইজের কফি শপের জন্য দুই লাখ টাকার মধ্যে দোকান ভাড়া, ইন্টেরিয়র, রান্নার সরঞ্জাম ও মার্কেটিং করা অনায়াসেই সম্ভব।
২. বুটিক ও ফ্যাশন হাউস
দুই লাখ টাকা বাজেটের মধ্যে খুব সহজেই নিজস্ব একটি ফ্যাশন হাউজ তৈরি করা সম্ভব। এখানে দেশীয় পোশাক যেমন শাড়ি, থ্রি-পিস, কুর্তি বা কাস্টম ডিজাইনড পোশাক বিক্রি করা যেতে পারে।
৩. গাড়ির স্পেয়ার পার্টস ও এক্সেসরিজ ব্যবসা
এ ধরনের ব্যবসায় মূলত গাড়ি ও বাইকের ব্যাটারি, ইঞ্জিন অয়েল, টায়ার, লাইট ও এক্সেসরিজ বিক্রি করা হয়। লোকাল মার্কেট ও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিক্রি বাড়ানো যেতে পারে।
এছাড়া আপনি যদি গ্যারেজ ও গাড়ির মালিকদের টার্গেট করে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন তাহলে দ্রুত লাভ পাওয়া সম্ভব। ভালো লোকেশন ও নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী থাকলে ব্যবসাটি টেকসই ও লাভজনক হয়।
৩ লাখ টাকার ব্যবসার তালিকা
লন্ড্রি সার্ভিস, বিউটি পার্লার অথবা সেলুন, এধরনের ব্যবসা শুরু করার জন্য ৩ লাখ টাকা যথেষ্ট একটি এমাউন্ট। সব থেকে বড় কথা হলো এই বিজনেসগুলোর চাহিদা আসলে কখনো শেষ হয় না। আবাসিক এলাকা বা বাজারের কাছে দোকান খুলে কাপড় ধোয়া, ইস্ত্রি করা, ড্রাই ক্লিনিং ইত্যাদি সেবা প্রদান করে ভালো পরিমাণ অর্থ আয় করা যায়। এছাড়া নারীদের জন্য বিউটি পার্লার এবং পুরুষদের জন্য সেলুন বেশ জনপ্রিয়। চুল কাটা, ত্বকের যত্ন, মেকআপ, মেনিকিউর, পেডিকিউর ইত্যাদি সেবা দিয়ে আয় করা যায়।
৪ লক্ষ টাকা দিয়ে কি ব্যবসা করা যায় বাংলাদেশে?
বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ৪ লক্ষ টাকা দিয়ে ছোট আকারের উৎপাদন ব্যবসা শুরু করা হতে পারে সবথেকে লাভজনক একটি পদক্ষেপ। এক্ষেত্রে দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত হয় এমন পণ্যের উৎপাদন করা যেতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মোমবাতি তৈরি, সাবান তৈরি, বাচ্চাদের স্কুল ব্যাগ, বা যেকোনো ধরনের হস্তশিল্প ইত্যাদি। এছাড়া স্থানীয় বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করে বিক্রি করা যেতে পারে।
৫ লাখ টাকায় বাংলাদেশে যে ব্যবসাগুলি শুরু করতে পারবেন?
১. কৃষি বা ফার্মিং ব্যবসা
সঠিক পরিকল্পনা ও পদ্ধতিতে কাজ করতে পারলে কৃষি বা খামার ব্যবসা অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি খাত। বর্তমান বাংলাদেশে মৎস্য চাষ, মুরগি পালন, গরু মোটাতাজাকরণ বা হাইড্রোপনিক কৃষি অনেক লাভজনক ব্যবসা। এক্ষেত্রে জায়গা ব্যবস্থাপনা, পশু বা মাছ ক্রয়, খাদ্য ও ঔষধ যোগানে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সম্ভাব্য ৪০-৬০% লাভ উপার্জন করা সম্ভব।
২. অটোরিকশা বা বাইক রেন্টাল বিজনেস
ব্যস্ত শহরে অটোরিকশা বা বাইক রেন্টাল সার্ভিস বেশ ফলপ্রসূ হতে পারে। ৫ লাখ টাকার মধ্যে একাধিক ই-বাইক কেনা সম্ভব এবং দৈনিক প্রতি অটোরিকশা থেকে ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত আয় হতে পারে।
১০ লাখ টাকায় বাংলাদেশে কি কি ব্যবসা শুরু করা যায়?
১. আইটি ফার্ম বা সফটওয়্যার কোম্পানি
আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, বা SEO-তে দক্ষ হয়ে থাকেন বা ইতোমধ্যে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ভালো অভিজ্ঞতা থেকে থাকে, তাহলে ১০ লাখ টাকার মধ্যে অনায়াসে একটি আইটি ফার্ম শুরু করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার ব্যয়ের খাতগুলো হতে পারে- অফিস সেটাপ, দক্ষ কর্মী নিয়োগ, মার্কেটিং ও ক্লায়েন্ট হান্টিং। আর সঠিক উপায়ে কাজ করতে পারলে কাজের পরিমাণ অনুযায়ী এসব সেক্টরে ৫০-১০০% পর্যন্ত লাভ করা সম্ভব।
২. গার্মেন্টস বা টেইলারিং
১০ লাখ টাকার মধ্যে নিজস্ব বুটিক হাউস বা পোশাক কারখানা তৈরি করা সম্ভব। সেলাই মেশিন, ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, কর্মী নিয়োগ, প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহ ও মার্কেটিং এর জন্য ১০ লাখ টাকার মধ্যে বিনিয়োগ করে টেইলারিং বিজনেস শুরু করা যেতে পারে।
৩. গ্রোসারি স্টোর
মহল্লার ভেতরে ব্যস্ত এলাকায় বা প্রধান সড়কের পাশে একটি সুপার শপ বা মিনি মার্কেট খুলতে পারেন।
১৫ লাখ টাকায় বাংলাদেশে কি কি ব্যবসা শুরু করা যায়?
১. ফার্নিচার বা ইন্টেরিয়র ডিজাইন সার্ভিস
কাঠের ফার্নিচার, মেটাল ফার্নিচার, অফিস বা হোম ডেকর ফার্নিচার ডিজাইন করে ও বানিয়ে বিক্রি করতে পারেন। পাশাপাশি আপনার যদি ইন্টেরিয়র ডিজাইনিংয়ের ট্রেনিং ও দক্ষতা থেকে থাকে তাহলে ইন্টেরিয়র ডিজাইন সার্ভিসও দিতে পারবেন।
২. গাড়ি ভাড়া বা লজিস্টিক সার্ভিস
১৫ লাখ টাকায় ১-২ টি প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস বা পিক আপ ভ্যান কিনে rent-a-car বা লজিস্টিক সার্ভিস শুরু করতে পারেন। এছাড়া Uber বা Pathao- এর মতো রাইড শেয়ারিং-এও যুক্ত হতে পারেন।
২০ লাখ টাকায় বাংলাদেশে কি কি ব্যবসা শুরু করা যায়?
২০ লাখ টাকা বাজেটে বর্তমানে বাংলাদেশে আরো কিছু লাভজনক ব্যবসা শুরু করা যায়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু ব্যবসা হল বড় আকারে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা, ই-কমার্স, কৃষিভিত্তিক ব্যবসা, ড্রপ শিপিং বা অ্যামাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং, মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক্স এর দোকান, ট্যুরিজম বিজনেস ইত্যাদি।
৫০ লাখ টাকার ব্যবসার আইডিয়া
৫০ লাখ টাকা যেহেতু একটি বড় অ্যামাউন্ট সেক্ষেত্রে এখানে ব্যবসা সম্ভাবনাও অনেক যদি তা সঠিকভাবে সঠিক স্থানে বিনিয়োগ করা হয়।
যেমন- বর্তমানে বাংলাদেশে কনস্ট্রাকশন ও রিয়েল এস্টেট এর ব্যবসা বেশ লাভজনক হতে পারে, বিশেষ করে যদি সঠিক পরিকল্পনা ও লোকেশনে বিনিয়োগ করা যায়।
এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আপনাকে ব্যবসার ধরন নির্ধারণ করতে হবে। প্রথমত আপনি ভালো লোকেশনের জমি কিনে পরে তা বেশি দামে বিক্রি করতে পারেন। ঢাকার আশেপাশের অঞ্চল যেমন-কেরানীগঞ্জ, পূর্বাচল, কান্দানগর বা চট্টগ্রাম সিলেট রাজশাহী এসব অঞ্চলে এ ধরনের কাজে বেশি লাভ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এছাড়া এপার্টমেন্ট বা বাড়ির নির্মাণ করেও তা বেশি দামে বিক্রি করতে পারেন। বর্তমান বাজারে মিড রেঞ্জ অ্যাপার্টমেন্টের ব্যাপক চাহিদা আছে। তাছাড়া উন্নয়নশীল শহর ও শিল্প এলাকাগুলোতে ৫০ লক্ষ টাকায় ২-৩ তলা বাড়ি নির্মাণ করে তা ব্যাচেলর, অফিস বা পরিবারের জন্য ভাড়া দেওয়া যেতে পারে।
তাছাড়া কনস্ট্রাকশন সাপ্লাই বিজনেসও একটি লাভজনক কাজ। সর্বোপরি একটি ভালো লোকেশন নির্বাচন এ ধরনের বিজনেসের মূল হাতিয়ার।
ঢাকা | কেরানীগঞ্জ পূর্বাচল সাভার উত্তরা বসুন্ধরা |
চট্টগ্রাম | কক্সবাজার খুলশী পতেঙ্গা অক্সিজেন এলাকা |
সিলেট | বিমানবন্দর এলাকা শাহপরান ও অন্যান্য উপশহর |
রাজশাহী ও খুলনা | শিল্প এলাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে |
এ ধরনের কাজে মূলত দীর্ঘমেয়াদি লাভের সম্ভাবনা অনেক বেশি। তবে বাজার বিশ্লেষণের সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া বিনিয়োগ করা অনেক ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ ও হতে পারে।
স্মার্ট ব্যবসার তালিকা
১. অনলাইন কনসালটেন্সি
এটি এমন একটি ব্যবসা যেখানে আপনি আপনার অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান অনলাইনে শেয়ার করার মাধ্যমে অন্যকে পরামর্শ দেওয়ার মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
এটি হতে পারে –
- বিজনেস কনসালটেন্সি – স্টার্ট-আপ বা ফিনান্সিয়াল পরামর্শ
- ক্যারিয়ার ও এডুকেশনাল কনসালটেন্সি – এডমিশন, স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে পড়াশোনা ও চাকরি সম্বন্ধীয় পরামর্শ
- স্বাস্থ্য ও লাইফস্টাইল – ডায়েট ফিটনেস ও মেন্টাল হেলথ
- আইনি পরামর্শ – ইমিটেশন গাইডেন্স লিগ্যাল এডভাইজিং
২. পডকাস্টিং
পডকাস্ট হলো অডিও বা ভিডিও ভিত্তিক কন্টেন্ট, যেখানে নির্দিষ্ট কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়ে থাকে। এখানে আপনি আপনার অভিজ্ঞতা, জ্ঞান, পরামর্শ বা মতামত অডিও বা ভিডিওর মাধ্যমে দর্শক শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন।
এক্ষেত্রে বর্তমানে সবচেয়ে ডিমান্ডিং বিষয়গুলো হতে পারে:
- ক্যারিয়ার ও এডুকেশন
- ব্যক্তির উন্নয়ন বা self development
- টেক ও বিজনেস
- বিনোদন ও গল্প (Storytelling, True Crime, Comedy)
নতুন ও ইউনিক ব্যবসার তালিকা
১. অটোমেটেড ভেন্ডিং মেশিন
হাসপাতাল, অফিস বা শপিংমলে স্মার্ট অটোমেটেড পেন্ডিং মেশিন বসিয়ে চা কফি বা স্ন্যাকস বিক্রি করা যেতে পারে। এখানে কম জনবল প্রয়োজন এবং এটি একটি ২৪/৭ ব্যবসা তাই এটি কম খরচে অধিক লাভজনক। ৫-২০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রতি মেশিনে প্রতি মাসে প্রায় ৫০,০০০ – ১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা যেতে পারে।
২. VR গেমিং ও এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার
ভার্চুয়ালি রিয়েলিটি নিয়ে মানুষের আগ্রহ এখন তুঙ্গে। তাছাড়া ছোট-বড় প্রায় সব বয়সী মানুষের মাঝে VR গেমিং এর চাহিদাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৫-৩০ লাখ টাকা ব্যয় করে মাথাপিছু ৩০০-১০০০ টাকা চার্জ নেওয়া যেতে পারে।
৩. ইকো ফ্রেন্ডলি প্যাকেজিং ও পরিবেশবান্ধব পণ্য
প্লাস্টিকের পরিবর্তে বাঁশ, পাট, কাগজ বা বায়োডিগ্রেডেবল উপাদান দিয়ে ব্যাগ, কাপ, বক্স প্রভৃতি তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। সাম্প্রতিককালে এটি একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে। কেননা সরকার ইতোমধ্যে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করেছে। তাই পরিবেশবান্ধব পণ্যের চাহিদাও বেড়েছে।
ক্ষুদ্র ও ছোট ব্যবসার আইডিয়া
এ পর্যায়ে আমরা কয়েকটি ক্ষুদ্র ও ছোট ইউনিক বিজনেস আইডিয়া তুলে ধরব:
০১. ফ্রিল্যান্সিং ও ডিজিটাল সার্ভিস
০২. ইউটিউব ও কনটেন্ট তৈরি
০৩. মিনি ডেকেয়ার সার্ভিস
০৪. বেবি সিটিং সার্ভিস
০৫. মাশরুম চাষ
০৬. ট্রেনিং বিজনেস
বাংলাদেশে কোন শিল্পে বা খাতে ব্যবসা লাভজনক?
লাভজনক শিল্প বা ব্যবসার খাতগুলো মূলত বাজারের চাহিদা বিনিয়োগের পরিমাণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায়িক দক্ষতার উপর নির্ভর করে।
আসুন বর্তমান বাংলাদেশে কয়েকটি লাভজনক শিল্প ও ব্যবসাখাত সম্পর্কে জেনে নেই:
১. পাইকারি ব্যবসা
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পাইকারি ব্যবসা বরাবরই বেশ লাভজনক। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেমন- গ্যাস লাইটার, কসমেটিকস, মুদি মালামাল, কাপড়, ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদি পাইকারি কেনা-বেচা লাভজনক হতে পারে। এসব খাতে লাভের মার্জিন কম হলেও মোটা আয় অনেক বেশি হয়। তবে এখানে মূলধন যেমন বেশি প্রয়োজন তেমনি প্রতিযোগিতাও অত্যন্ত বেশি। তাছাড়া সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট কেউ বেশ ভালো হতে হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও নারায়ণগঞ্জের মতো বাণিজ্যিক শহরে পাইকারি ব্যবসা অনেক লাভজনক।
২. শেয়ার বাজার স্টক ব্যবসা
দীর্ঘ মেয়াদে ভালো স্টকে বিনিয়োগ করতে পারলে ভালো রিটার্ন পাওয়া যায়। তবে একদম অনভিজ্ঞ হয়ে এ কাজে পা দিলে ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেশি। অভিজ্ঞতা দক্ষতা ও বাজার বিশ্লেষণ ভালো থাকলে এটি একটি ভালো প্যাসিভ ইনকামের বিজনেস হতে পারে।
৩. উৎপাদনমুখী খাতে ব্যবসা
পোশাক শিল্প, প্রসাধনী, প্লাস্টিক, ওষুধ, প্যাকেটজাত খাবার ইত্যাদি তৈরির মাধ্যমে রপ্তানি এবং অভ্যন্তরীণ বাজার দখল করা সম্ভব। বিনিয়োগের ক্ষমতা থাকলে এটি সবচেয়ে লাভজনক একটি খাত।
৪. প্রচার, বিক্রয় ও বিপনন পন্য সম্বলিত ব্যবসা
বর্তমান অনলাইন ভিত্তিক দুনিয়ায় ই-কমার্স, ডিজিটাল মার্কেটিং, ড্রপশিপিং, ও ব্র্যান্ড প্রোমোশন করে অনেক টাকা ইনকাম করা সম্ভব। যদিও এক্ষেত্রে ব্র্যান্ড বিল্ডিং করতে সময় লাগে এবং প্রতিযোগিতাও বেশি, ধৈর্য্য ও সঠিক প্লানিং নিয়ে কাজ করলে এই সেক্টরে ভবিষ্যত সম্ভাবনা অনেক বিশাল।
৫. মিডিয়া ব্যবসা
ইউটিউব চ্যানেল, নিউজ পোর্টাল, বিজ্ঞাপন সংস্থা ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের মতো কাজগুলোর বর্তমান বাংলাদেশে যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। তবে কিছুক্ষেত্রে মনেটাইজেশন এবং দর্শকসংখ্যা বাড়ানো কঠিন হতে পারে। কিন্তু যারা ক্রিয়েটিভ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে দক্ষ, তাদের জন্য এটি লাভজনক।
বিজনেস শুরু করার প্রক্রিয়া
০১. বিজনেস আইডিয়া ও পরিকল্পনা তৈরি
প্রথমে বাজার গবেষণা করুন। কোন খাত লাভজনক ও চাহিদা কেমন বিচার করুন। এরপর আপনার প্রতিযোগী কারা এবং তারা কতটুকু এগিয়ে আছে বিশ্লেষণ করূন। মার্কেটে প্রতিযোগীদের বিট করতে পারাটাই মূলত বড় একটি ব্যাপার।
০২. বাজেট নির্ধারণ ও পুঁজি সংগ্রহ
একটি সুনির্দিষ্ট বাজেট নিয়ে কাজ শুরু করুন এবং বাজেটের উপর ভিত্তি করে ব্যবসার ধরন নির্ধারণ করুন। এক্ষেত্রে আপনি যদি নিজস্ব টাকা বিনিয়োগ করতে চান ভালো কথা। তা না হলে ব্যাংক ঋণ নিও কাজ শুরু করতে পারেন যেমন- SME Loan, Startup Loan ইত্যাদি। এছাড়া বিভিন্ন বড় বড় বিনিয়োগকারীদের কেও আপনার বিজনেসে বিনিয়োগ করতে আকৃষ্ট করতে পারেন।
০৩. আইনগত অনুমোদন গ্রহণ
আপনার ব্যবসা-ধরন অনুযায়ী আইনগত অনুমোদন ও রেজিস্ট্রেশন তৈরি করুন।
ট্রেড লাইসেন্স | স্থানীয় সিটি কর্পোরেশন বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নিতে পারবেন |
BIN (Business Identification Number) | NBR থেকে নিতে হয় |
ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন | বার্ষিক আয় ৫০ লাখ টাকার উপরে হয়ে থাকলে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। |
ট্রেডমার্ক (যদি ব্র্যান্ড তৈরি করতে চান) | DPDT থেকে রেজিস্ট্রেশন |
কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন | RJSC (Register of Joint Stock Companies) থেকে নিবন্ধন |
০৪. ব্যবসার অবকাঠামো তৈরি
এ পর্যায়ে ব্যবসার ধরনের উপর ভিত্তি করে অফিস অথবা অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরি করুন।
০৫. মার্কেটিং ও নেটওয়ার্কিং
ব্যবসাকে যদি একটি হিউম্যান বডির সাথে তুলনা করি তাহলে এতক্ষণ আমার যা কিছু আলোচনা করেছি তা ছিল একটি মানবদেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ এবং মার্কেটিং ও নেটওয়ার্কিং হলো সেই বডির মস্তিষ্ক। অর্থাৎ এটি হলো ব্যবসাকে লাভজনক করার মেইন পার্ট।
এক্ষেত্রে বর্তমানে অনলাইন মার্কেটিং সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ও লাভজনক। যেমন-
- ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, ইনস্টাগ্রামে মার্কেটিং করুন।
- ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবহার করুন (SEO, Facebook Ads, Google Ads)।
- প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি ও ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করুন।
- লয়ালটি প্রোগ্রাম, অফার ও ডিসকাউন্ট দিন।
০৬. ব্যবসা পরিচালনা, ব্যবসা সম্প্রসারণ ও আয় বৃদ্ধি
নিশ্চিন্ত মনে এবার আপনি আপনার ব্যবসা পরিচালনা শুরু করতে পারেন। নিয়মিত স্টক ও ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্ট করতে থাকুন এবং নতুন পণ্য বা সার্ভিস যোগ করুন। রিটার্ন/এক্সচেঞ্জ পলিসি তৈরি করা বিজনেস সম্প্রসারণের একটি ভালো দিক।
এছাড়াও কাস্টমার কেয়ার ও সাপোর্ট সিস্টেম চালু করতে পারেন। পরিশেষে আপনার ব্যবসায় যদি মোটামুটি লাভজনক হতে শুরু করে তাহলে বিদেশী মার্কেটগুলো টার্গেট করতে পারেন।
ব্যবসা- বানিজ্য বিষয়ক সেরা বইসমূহ
আপনি যে কোন কাজ শুরু করতে চান না কেন সে ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও সঠিক দিকনির্দেশনার কোন বিকল্প নেই। আর এক্ষেত্রে বইয়ের চেয়ে বিকল্প কোন বন্ধু হতে পারে না।
ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ক সেরা কিছু বইয়ের তালিকা দেওয়া হলো:
- Freelancing the Future – মোস্তাফিজুর রহমান
- Startup Kusholota- সাবিরুল ইসলাম
- Becoming Steve Jobs- Schlender & Rick Tetzeli
- The Intelligent Investor– Benjamin Graham
- Zero to One- Peter Thiel
আপনার ব্যবসা কেন অনলাইনে নিয়ে আসা উচিত?
বর্তমান ডিজিটাল যুগে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে অনলাইন উপস্থিতি থাকা অত্যন্ত জরুরি। এটি যেমন খরচ সাশ্রয়ী, ও সময়োপযোগী, তেমনি গ্রাহকের কাছে দ্রুত পৌঁছানোর সহজ উপায়। ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, ওয়েবসাইট বা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নিরবিচ্ছিন্নভাবে পণ্য ও সেবা প্রদান করা যায়।
অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৭৮টি প্রতিষ্ঠান অনলাইনে বিজনেস করে আসছে। আর এই চাহিদা ও জনপ্রিয়তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। সুতরাং আপনিও যদি এই প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে চান তাহলে আপনার ব্যবসাকে অনলাইনে নিয়ে আসার কোন বিকল্প নেই।
সম্পর্কিত প্রশ্নসমূহ
ঢাকা শহরের জন্য সেরা ব্যবসাগুলো কি?
ঢাকা শহরের জন্য কয়েকটি সেরা ব্যবসার আইডিয়া হলো স্ট্রিট ফুড, রেস্টুরেন্ট ও ক্যাফে, ফুড ডেলিভারি, টিউশনি বা কোচিং সেন্টার, ফ্যাশন শপ ও কাঁচামাল ব্যবসা।
চট্রগ্রাম শহরের জন্য সেরা ব্যবসাগুলো কি?
চট্টগ্রাম শহর বাংলাদেশের একটি প্রধান বাণিজ্যিক শহর। এখানে বন্দর, শিল্প, পর্যটন এবং খাদ্যশিল্প বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই চট্টগ্রামের মধ্যে লাভজনক কিছু ব্যবসা হলো ট্যুরিজম, খাদ্য ও রেস্টুরেন্ট, টেক্সটাইল ব্যবসা, কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট, স্বাস্থ্যসেবা ও ফার্মেসি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন
আগের মন্তব্য গুলো পড়ুন