বিনিয়োগ কী? কোথায় বিনিয়োগ করবেন?

বিনিয়োগ কী? কোথায় বিনিয়োগ করবেন?
শেয়ার করুন

প্রতিযোগীতামূলক এই আর্থিক বাজারে টিকে থাকতে হলে আর্থিক নিরাপত্তা এখন অনেক জরুরী। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ হতে পারে খুবই ভালো একটি উপায়। বিনিয়োগ শুধু টাকা বাড়ানোর উপায়ই নয় বরং বিনিয়োগের মাধ্যমের আর্থিক নিরাপত্তা লাভ করা সম্ভব। 

এই ব্লগে আমরা বিনিয়োগ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থেকে শুরু করে কোথায় এবং কীভাবে বিনিয়োগ করবেন, তার বিস্তারিত আলোচনা করব।

বিনিয়োগ কি? সংজ্ঞা ও তাৎপর্য

বিনিয়োগ কি বা বিনিয়োগ কাকে বলে এই প্রশ্নের উত্তরে অন্য কথায় বলা যায় বিনিয়োগ হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ভবিষ্যতে উচ্চ লভ্যাংশ পাওয়া সম্ভব। আপনার সঞ্চয় বা অর্থ তখনই বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হবে যখন আপনার সঞ্চিত অর্থ থেকে নির্দিষ্ট সময় পর আপনি কিছুটা বেশী অর্থ লাভ করবেন। বিনিয়োগের আরেকটি সংজ্ঞা হলো- “বিনিয়োগ হলো পরবর্তী সুবিধা অর্জনের জন্য সম্পদের প্রতিশ্রুতি”।

বিনিয়োগের মাধ্যমে আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়, অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হয় একই সাথে আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়। সুতরাং, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নিজের অর্জিত সম্পদের উপর মুনাফা বা লাভ বৃদ্ধির আশায় বিজনেস, শেয়ার, বন্ড, সম্পত্তি; প্রভৃতি ক্রয় করাকে Investment বা বিনিয়োগ বলে।

বিনিয়োগ কত প্রকার?

বিনিয়োগকে কয়েক ভাগেই ভাগ করা সম্ভব, কিন্তু সাধারণভাবে বিনিয়োগকে ৩ টি মূল শ্রেণীতে ভাগে ভাগ করা যেতে পারে যেগুলো হল ইকুইটি, ফিক্সড ইনকাম ও ক্যাশ ইকুইভ্যালেন্ট।

১. ইকুইটি (Equity)

ইকুইটি

ইকুইটি মানে হলো শেয়ার বা স্টকের মাধ্যমে কোনো কোম্পানির মালিকানা অংশে বিনিয়োগ। আপনি যদি কোনো কোম্পানির শেয়ার কেনেন, তাহলে আপনি মূলত সেই কোম্পানির একটি ক্ষুদ্র অংশের মালিক হবেন। এ ধরণের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উচ্চ রিটার্ণের সম্ভাবনা যেমন থাকে তেমনই ঝুঁকিও বেশি থাকে। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত।

২. ফিক্সড ইনকাম (Fixed Income)

এটা মূলত এমন এক ধরণের বিনিয়োগ, যেখানে নির্দিষ্ট সময় পরে নির্দিষ্ট হারে বা পরিমাণের লাভ পাওয়া যায় (সুদ, কুপন)। ঝুঁকি তূলনামূলকভাবে কম তাই যারা নিরাপদে বিনিয়োগ করতে চান তাদের জন্য উপযুক্ত। যেমন: সঞ্চয়পত্র, সরকারি বা প্রাইভেট বন্ড।

৩. ক্যাশ বা ক্যাশ ইকুইভ্যালেন্ট (Cash or Cash Equivalent)

এই ধরণের বিনিয়োগগুলো সাধারণত স্বল্পমেয়াদী হয় এবং সহজেই নগদে রূপান্তর করা যায়। কিন্তু ঝুঁকি কম আবার রিটার্ণও কম। যেমন: ব্যাংকের সঞ্চয়, স্বল্প মেয়াদি ডিপোজিট, মানি মার্কেট ফান্ড।

বিনিয়োগের বৈশিষ্ট্য

বিনিয়োগের বৈশিষ্ট্য

বিনিয়োগ মানে শুধু যে টাকা সঞ্চয় করা এমন নয়, বরং বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার পাশাপাশি আর্থিক নিরাপত্তাও দেয়।

নিচে বিনিয়োগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো –

  • ভবিষ্যতের জন্য আয় নিশ্চিত – বিনিয়োগের মূল লক্ষ্যই হলো ভবিষ্যতের জন্য আয় নিশ্চিত করা। এটি হতে পারে ব্যবসার লাভের মাধ্যমে কিংবা সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে।
  • ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকা – কোনো কিছুই ঝুঁকি ছাড়া হয়না। যেকোনো বিনিয়োগেই ক্ষেত্রবিশেষে কম-বেশী ঝুঁকি থাকে। এবং এটাই বিনিয়োগের একটি বৈশিষ্ট্য। তাই যেকোনো ক্ষেত্রেই বিনিয়োগের সময় ঝুঁকি বিশ্লেষণ করা জরুরী।
  • দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ – বিনিয়োগ কখনোই তাৎক্ষণিক ফলাফল দেয় না। এরজন্য সময় প্রয়োজন। আর এজন্যই বিনিয়োগ হলো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার একটি অংশ। যেখানে সময়ের সাথে সাথে মূলধন বৃদ্ধি পায়।
  • নিয়মিত পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন – বিনিয়োগ করে বসে থাকলেই চলে না। নিয়মিত মার্কেট ডিমান্ড, অর্থনৈতিক পরিবর্তন সব কিছুই খেয়াল রাখতে হয়।
  • বাজার পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল – বিনিয়োগকৃত অর্থ থেকে কত লাভ পাওয়া যাবে তা মূলত বাজারের অবস্থার উপর নির্ভর করে। বাজার যদি অনূকুলে থাকে তবে লাভের হার বাড়ে আর বাজার যদি প্রতিকূলে হয় তবে লাভের হার কম হতে পারে। এছাড়া মুদ্রাস্ফীতি, সুদের হার ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার উপরও বিনিয়োগ অনেকাংশে নির্ভর করে।

বিনিয়োগের উদ্দেশ্য 

সাধারণভাবে দেখতে গেলে বিনিয়োগের একটি অন্যতম উদ্দেশ্য হলো সম্পদ বৃদ্ধি। কিন্তু এটি ছাড়াও বিনিয়োগের আরো কিছু উদ্দেশ্য রয়েছে যেমন সম্পদের মূল্যমান হ্রাসরোধ, প্যাসিভ ইনকাম ও কর বাঁচানো।

নিচে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো- 

অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

ধরুন আপনার কাছে ১ লক্ষ টাকা আছে, আপনি যদি এটা ব্যাংকে রাখেন তবে দেখা যাবে মুদ্রাস্ফীতির কারণে আপনার মূলধনের মান কমবে। কিন্তু বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেহেতু এর বিনিময় মূল্য কিছুটা বেশী পাওয়া যায় তাই তা অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

আয় বৃদ্ধি

অনেকেই সঞ্চিত অর্থ ফেলে না রেখে কোথাও বিনিয়োগ করেন এই আশায় যে মাসিক ভিত্তিতে বা একটা নির্দিষ্ট সময় পর কিছু লভ্যাংশ পাওয়া যাবে।

প্যাসিভ ইনকাম

প্যাসিভ ইনকামের অনেকগুলো মাধ্যমের মধ্যে বিনিয়োগ অন্যতম একটি মাধ্যম। বিনিয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি একটি প্যাসিভ ইনকাম নিশ্চিত সম্ভব এবং যদি তা একটু খেয়াল করে করা হয় তবে তা নিরাপদও বটে। 

মুদ্রাস্ফীতি থেকে রক্ষা পাওয়া

সহজভাবে যদি বলি আজকে আপনি ১০০ টাকা দিয়ে যা কিনতে পারছেন, তা আগামী বছর কিনতে পারবেন না। খেয়াল করে দেখুন, গত ৫ বছরে জিনিস পত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে স্বাভাবিকভাবেই আপনি ৫ বছর আগে ৫০০ টাকায় যতটা বাজার করতে পারতেন সেটা কি এখন পারেন? না, এর কারণ মুদ্রাস্ফীতি। বিনিয়োগের মাধ্যমে আপনার সঞ্চিত অর্থের মান কমবে না বরং নির্দিষ্ট সময় পর এরচেয়ে কিছুটা হলেও বেশি রিটার্ণ পাবেন। এজন্যই সাধারণত মানুষ সেভিংসের পরিবর্তে এখন বিনিয়োগের দিকে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে।

কর বাঁচানো

বিভিন্ন বিনিয়োগ প্লাটফর্ম আছে যেখানে নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত আয়কর ছাড় পাওয়া যায়। যেমন—জাতীয় সঞ্চয়পত্র, পেনশন স্কিম, জীবন বীমা, বা কিছু সরকারি ইনভেস্টমেন্ট স্কিমে আয়কর আইনের ধারা ৪৪ ধারায় কর ছাড় পাওয়া যায়। এভাবে আপনি একদিকে সঞ্চয় করছেন, আবার করের চাপও কমাচ্ছেন।

বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত কি? বিনিয়োগের মৌলিক নীতি ও বিবেচ্য বিষয়

বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত বলতে মূলত আপনি কোথায়, কখন, কীভাবে, কেনো বিনিয়োগ করবেন এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়াকে বোঝায়। কারণ এই ধাপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আপনি যখন বিনিয়োগ করার চিন্তা করবেন তখন অবশ্যই আপনাকে সবকিছু যাচাই বাছাই করেই করতে হবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেকোনো ভুল সিদ্ধান্ত হতে পারে আপনার আর্থিক ক্ষতির অন্যতম একটি কারণ। 

নীচে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে যেসব মৌলিক নীতি বিবেচনায় রাখা উচিৎ তা আলোচনা করা হলো –

১. ঝুঁকি যাচাই (Risk Assessment)

ঝুঁকি যাচাই (Risk Assessment)

যেকোনো বিনিয়োগের ক্ষেত্রেই ঝুঁকি রয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে কম কিছুক্ষেত্রে বেশি। তবে যদি আপনি বিনিয়োগের আগে যাচাই বাছাই করেন তাহলে অনেকাংশেই এই ঝুঁকি কমানো সম্ভব। আপনি যেখানে বিনিয়োগ করছেন সেখানের ফাইনানশিয়াল রিপোর্ট চেক করে নিবেন। উদাহরণস্বরূপ, শেয়ার বাজার তুলনামূলকভাবে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, অথচ সঞ্চয়পত্র বা সরকারি বন্ড নিরাপদ কিন্তু কম রিটার্ন দেয়।

২. প্রত্যাশিত মুনাফা (Expected Return)

আপনি যে বিনিয়োগ করছেন তা থেকে আপনি কত রিটার্ণ আশা করেন সে বিষয়টাও মাথায় রাখা জরুরী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। আপনি যদি বেশি রিটার্ণ আশা করেন তবে এমন কোথাও বিনিয়োগ করা ভালো সিদ্ধান্ত হবে না যেখানে রিটার্ণ কম। 

৩. বিনিয়োগের সময়কাল (Time Horizon)

বিনিয়োগের সময়কাল (Time Horizon)

বিনিয়োগ সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি একটি বিষয়, আপনি চাইলেই যখন ইচ্ছা তখন সেটাকে তুলে ফেলতে পারবেন না। তবে আপনার উদ্দেশ্য যদি হয় কম সময়ের জন্য বিনিয়োগ তবে আপনার বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও এমন প্রতিষ্ঠানই নির্ধারণ করতে হবে যেখানে কম সময়ে রিটার্ণ পাওয়া যায়।

৪. তরলতা বা Liquidity

তরলতা বা Liquidity মানে হলো আপনার বিনিয়োগ সহজে তোলার উপযোগী কি না। অনেক সময় আমরা এমন খাতে বিনিয়োগ করি যেখান থেকে সহজে টাকা তোলা যায় না, তাই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এব্যাপারটা যেমন খেয়াল রাখা দরকার তেমনই আপনার জরুরী ফান্ডেও কিছু অর্থ রাখা দরকার যা আপনার যেকোনো ইমার্জেন্সিতে কাজে লাগবে।

৫. বৈচিত্র্যতা (Diversification)

বিনিয়োগের সুন্দর একটি কৌশল হলো – সব ডিম এক ঝুড়িতে না রাখা। মানে, একই জায়গায় সব অর্থ বিনিয়োগ না করা। আপনার সঞ্চিত অর্থ যদি এক জায়গায় বিনিয়োগ করে হারাতে হয় তাহলে নিশ্চয়ই ভালো লাগবে না? তাই এধরণের ঝুঁকি এড়াতে কয়েক জায়গায় বিনিয়োগ করা ভালো, এতে করে একখাতে মুনাফা হলেও অন্য খাতের মুনাফা দিয়ে তা সামাল দেয়া যায়।

বিনিয়োগকারী বলতে কি বুঝায়? বিনিয়োগকারী কারা?

সাধারণভাবে বলতে গেলে, যে কেউওই বিনিয়োগ কারী হতে পারে। বিনিয়োগকারী বলতে মূলত যিনি বিনিয়োগ করেন তাকে বোঝায়। যেকোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান যারা মুনাফার উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট খাতে অর্থ বিনিয়োগ করেন তারাই বিনিয়োগকারী। এই বিনিয়োগ হতে পারে ব্যবসা, হতে পারে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ। 

বিনিয়োগকৃত টাকাকে কি বলে?

বিনিয়োগকৃত অর্থকে মূলত মূলধন বলা হয়। মূলধন হচ্ছে সেই অর্থ, যা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ভবিষ্যতে লাভ অর্জনের উদ্দেশ্যে কোনো ব্যবসা, সম্পদ, বা আর্থিক খাতে বিনিয়োগ করে। এই টাকা থেকেই পরবর্তীতে মুনাফা বা আয় হয়। 

উদাহরণ- আপনি যদি ৫০ হাজার টাকা খরচ করে অনলাইনে একটা ই-কমার্স ব্যবসা দিয়ে থাকেন তাহলে এই ৫০ হাজার টাকা হলো আপনার মূলধন। আবার যদি শেয়ার বাজারে ১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন তবে সেটাও আপনার মূলধন।

বিনিয়োগ কোথায় করা উচিত?

এবার সব কিছু জানার পর যে প্রশ্নটা মাথায় আসে তা হলো – “বিনিয়োগ কোথায় করবো? কোথায় বিনিয়োগ করবেন বা কোথায় ইনভেস্ট করবেন এই প্রশ্নের উত্তরে সবচেয়ে সহজ ভাবে যদি বলি তাহলে আগে জানতে হবে আপনি কোন উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ করছেন? আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদি সম্পদ বৃদ্ধির চিন্তা করে বিনিয়োগ করেন তবে আপনার বিনিয়োগের খাত একরকম হবে আবার আপনি যদি উচ্চ রিটার্ণ আশা করেন তবে বিনিয়োগের খাত আরেকরকম হবে। 

চলুন জেনে নিই কিছু জনিপ্রিয় বিনিয়োগের খাত –

  • সঞ্চয়পত্র – সরকারি সঞ্চয়পত্র হলো বিনিয়োগের অন্যতম নিরাপদ একটি মাধ্যম। এখানে ঝুঁকির হার কম এবং লাভের হার বেশি।
  • মিউচুয়াল ফান্ড – যারা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে চান না তারা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন, এখানে অভিজ্ঞ ফান্ড ম্যানেজার আপনার হয়ে বিনিয়োগ পরিচালনা করে।
  • স্বর্ণ – আজকাল স্বর্ণ ও কিন্তু বিনিয়োগের বেশ ভালো একটি মাধ্যম। স্বর্ণের দাম বেশি হলেও এর বিক্রয়পরবর্তী রিটার্ণ ও বেশ ভালো এবং লসের সম্ভাবনা কম।
  • জমি ও রিয়েল এস্টেট – দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জমি বা রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ চমৎকার একটি মাধ্যম। এর থেকে ভবিষ্যতে বেশ ভালো পরিমানে রিটার্ণ পাওয়া যায় যদি একটু বিচক্ষনতার সাথে বিনিয়োগ করা হয়।
  • শেয়ারবাজার– যদি বেশি রিটার্ণ আশা করেন তবে শেয়ারবাজার বেশ ভালো একটি বিনিয়োগের মাধ্যম তবে এর ঝুঁকিও বেশি। 

স্বল্প পুঁজিতে বিনিয়োগ আইডিয়া

এগুলো তো বললাম বেশি পরিমাণের অর্থ থাকলে বিনিয়োগের মাধ্যমগুলোর কথা। কিন্তু অনেকেরই শুরুতে এত অর্থ থাকে না আবার নিজের স্বকীয়তা বজায় রাখতে চান অনেকেই। তাদের জন্য স্বল্প পূঁজিতে বিনিয়োগের একটি ভালো উপায় হলো ই-কমার্স বা অনলাইন ব্যবসা। 

বর্তমানে এটি  খুব লাভজনক একটি বিনিয়োগ ক্ষেত্র যা সঠিক উপায়ে পরিচালনা করা হলে মাসে যেমন ভালো একটা লাভ পাওয়া যাবে তেমনই নিজের একটি বযবসায়িক পরিচিতিও তৈরী হবে। 

বর্তমানে ২০২৫ সালে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া জানতে বা একটি প্রফিটেবল ই-কমার্স বিজনেস শুরুর কমপ্লিট গাইডলাইন পেতে ক্লিক করুন। 

বর্তমানে ফেসবুকে একটি পেইজ খুলে সহজেই আপনি যেমন আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারবেন তেমনই খুব অল্প খরচে নিজের ব্যবসার জন্য একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট মাত্র ১০ মিনিটি তৈরী করে ফেলতে পারবেন দেশিকমার্সের মাধ্যমে

বিনিয়োগের সুবিধা ও অসুবিধা

প্রত্যেক আর্থিক সিদ্ধান্তের কিছু সুবিধা ও কিছু অসুবিধা আছে। আর বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও তা বিদ্যমান। তবে একজন ভালো বিনিয়োগকারী সবসময় বিনিয়োগ করার পূর্বে এই বিষয়গুলোকে মাথায় রেখে আগায়। ণিচে বিনিয়োগের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো তুলে ধরা হলো – 

বিনিয়োগের সুবিধাসমূহ

  1. আয়ের নতুন উৎস সৃষ্টি
  2. সম্পদ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে
  3. অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রদান
  4. কর সাশ্রয়ের সুযোগ
  5. মুদ্রাস্ফীতি মোকাবেলা

বিনিয়োগের অসুবিধাসমূহ

  1. ঝুঁকি
  2. সময়সাপেক্ষ ব্যাপার (ভালো রিটার্ণ আশা করলে)
  3. মূলধন হারানোর সম্ভাবনা
  4. বাজার ও অর্থনীতির উপর নির্ভরশীলতা
  5. বিনিয়োগের সঠিক জ্ঞান ও পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা প্রয়োজন

ঝুঁকি কি? কত প্রকার ও কি কি

ঝুঁকি হলো সম্ভাব্য ক্ষতির সম্ভাবনা। যেকোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই যেমন সম্ভাবনা থাকে লাভের তেমনই সম্ভাবনা থাকে ক্ষতির সম্ভাবনাও। 

সাধারণত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি ৪ প্রকার –

  1. বাজার ঝুঁকি
  2. সুদের হার ঝুঁকি
  3. মুদ্রাস্ফীতি ঝুঁকি
  4. ব্যবসায়িক ঝুঁকি

সঞ্চয় কত প্রকার ও কি কি?

সঞ্চয় বলতে সাধারণ খরচের বাইরে অতিরিক্ত যে অর্থ জমানো হয় তাকে বোঝায়। 

সঞ্চয় সাধারণত তিন প্রকার:

  1. আবশ্যিক সঞ্চয়: নিয়মিত আয় থেকে প্রয়োজনীয় সংরক্ষণ। 
  2. ঐচ্ছিক সঞ্চয়: ইচ্ছামত জমিয়ে রাখা অর্থ, যা প্রয়োজন নেই তবুও নিজ ইচ্ছায় জমানো হয়। 
  3. জরুরী সঞ্চয়: অনিশ্চিত পরিস্থিতির জন্য জমা করা  অর্থ।

সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে পার্থক্য

সঞ্চয় বিনিয়োগ
১। ভবিষ্যতের জন্য আয় থেকে খরচ বাদ দিয়ে টাকা জমিয়ে রাখা। ১। অর্থকে এমন কোন মাধ্যম বা সম্পদে ব্যয় করা, যা ভবিষ্যতে লাভ বা রিটার্ন দেবে।
২। জরুরি খরচ, নিরাপত্তা, ভবিষ্যতের নির্ভরযোগ্যতা। ২। সম্পদ বৃদ্ধি, মুনাফা অর্জন, আর্থিক লক্ষ্যে পৌঁছানো।
৩। তুলনামূলকভাবে কম বা শূন্য ঝুঁকি ৩। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঝুঁকি যুক্ত (বাজারভিত্তিক)।
৪। খুবই সীমিত বা নামমাত্র (যেমন ব্যাংক সুদ)। ৪। সম্ভাব্য উচ্চ রিটার্ন, তবে ঝুঁকি অনুযায়ী ভিন্ন।
৫। সহজে টাকা উত্তোলনযোগ্য (উচ্চ তারল্য)। ৫। নির্ভর করে বিনিয়োগ মাধ্যমের উপর (কখনো কম তারল্য)।
৬। স্বল্প বা মধ্যম মেয়াদি ৬। কখনো স্বল্পমেয়াদি আবার কখনো দীর্ঘমেয়াদিও হতে পারে।

পরিশেষে

বিনিয়োগ যেমন আপনাকে আর্থিক নিরাপত্তা দিতে পারে আবার ভুল বিনিয়োগ আপনাকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থও করতে পারে। তাই যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে যাচাই বাছাই করে বিনিয়োগ করা উচিৎ। এতে আপনি যেমন আপনার বিনিয়োগকৃত অর্থের ভালো একটি রিটার্ণ পাবেন তেমনই আর্থিক ঝুঁকিও এড়াতে পারবেন। 

যদি স্বল্প পূজিতে বিনিয়োগের চিন্তা করেন তাহলে ই-কমার্স ভিত্তিক ব্যবসা যেমন আপনাকে আর্থিক স্বাধীনতা দিবে তেমনই ভবিষ্যতে আপনার বিনিয়োগটি দারণ একটি সম্পদে পরিণত হবে।

সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর

ব্যবসায় অর্থায়ন কাকে বলে?

ব্যবসার মূলধন সংগ্রহ ও তা পরিচালনার প্রক্রিয়াকে অর্থায়ন বলে।

বিনিয়োগের সুদ কি?

বিনিয়োগকৃত অর্থের বিনিময়ে যে অর্থ আয় হয় বা লাভ হয় তাকে বিনিয়োগের সুদ বলে (যদি তা নির্দিষ্ট হারে হয়)

বিনিয়োগ ব্যাংক কাকে বলে?

বিনিয়োগ ব্যাংক হলো এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা কর্পোরেট ও সরকারি প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগে সহায়তা করে।

 বৈদেশিক বিনিয়োগ কি?

যখন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দেশের বাইরে বিনিয়োগ করে তখন তাকে বৈদেশিক বিনিয়োগ বলে। 

নিজের ইকমার্স ওয়েবসাইট তৈরী করুন মাত্র ৫ মিনিটে

ব্যবহারে সহজ

কোডিং এর ঝামেলা নেই

খরচ সাধ্যের মধ্যে

সাইন আপ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট

আপনার মূল্যবান মতামত দিন

মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না। আবশ্যক ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত *

আগের মন্তব্য গুলো পড়ুন

সবার আগে মন্তব্য করুন