ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রয়েছে ইসলামের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা যা দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জাহানের জন্য মঙ্গলময়। এমনকি ইসলাম কখনো বৈরাগ্যবাদ সমর্থন করে না। ইসলামে বৈরাগ্যবাদীদের কোন স্থান নেই। কেননা একজন প্রকৃত মুমিন কখনোই বেকারত্বের গ্লানি মাথায় নিয়ে থাকতে পারেনা।
স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেছেন, “অতঃপর সালাত শেষ হওয়া মাত্র তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড়ো এবং তোমার রবের অনুগ্রহ সন্ধান করতে থাকো আর আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করতে থাকো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।” (সূরা জুমআ, আয়াত: ১০) আর পৃথিবীর বুকে আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য হালাল রুজির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। এমনকি আল্লাহর প্রেরিত নবী-রাসুলগণ-ও বিভিন্ন ধরনের হালাল পেশায় যুক্ত ছিলেন।
তন্মদ্ধে হুজুর (সাঃ) যে পেশার ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি কথা বলেছেন তা হল ব্যবসা। এমনকি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও ব্যবসা করেছেন। সুতরাং ব্যবসা একটি সুন্নতী পেশাও বটে। এছাড়া ব্যবসার ফাজায়েল, হালাল-হারাম ও অন্যান্য দিক নির্দেশনা নিয়ে অনেক হাদীস, ইসলামিক উক্তি ও কোরআনে অনেক বাণী রয়েছে। আর আজকের লেখনীতে আমার ব্যবসা নিয়ে ইসলামিক উক্তি-গুলোই তুলে ধরার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।
ব্যবসা নিয়ে ৬৩ টি ইসলামিক উক্তি
১. কোরানের আয়াত
“ব্যবসা হালাল, কিন্তু সুদ হারাম।” (সূরা বাকারা, আয়াত ২৭৫)
“হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায় ভাবে গ্রাস করো না, কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিতে ব্যবসা করা বৈধ।” (সূরা আন-নিসা, আয়াত ২৯)
২. আল-হাদীস
“উত্তম কামাই হল একজন মানুষের নিজের হাতের কামাই, এবং সব ধরনের মাবরুর ব্যবসা বাণিজ্যের কামাই।” (মুসনাদে আহমাদ)
“যে ব্যক্তি সত্য ও সৎ ব্যবসায়ী হয়, কিয়ামতের দিন সে আমার সাথে থাকবে।” (সহীহ মুসলিম)
“যে ব্যক্তি ব্যবসা করতে চায়, সে যেন সততার সাথে ব্যবসা করে, কারণ ব্যবসায়ের মধ্যে সততা আর বিশ্বাস থাকলে আল্লাহ তাকে বরকত দেন।” (সহীহ মুসলিম)
৩. মনীষীদের উক্তি
“ব্যবসা মানুষের সম্মান এবং আয় উপার্জনের একটি প্রকৃত পথ, তবে এতে সততা ও নির্ভরযোগ্যতা থাকতে হবে।” (হযরত আলী রাঃ)
“ব্যবসা একটি অমূল্য শিল্প, তবে এর সাথে সততা ও ন্যায়পরায়ণতা থাকা আবশ্যক।” (ইমাম হাসান রাঃ)
“ব্যবসা একটি নেক আমল।” (হযরত মাওলানা মুফতী তকী উসমানী)
ব্যবসা নিয়ে হাদিস
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রয়েছে উত্তম আদর্শ। এমনকি ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও তিনি পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন। কেননা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং ব্যবসার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। কখনো চাচা আবু তালিবের ব্যবসার সঙ্গী হয়েছেন তো আবার কখনো আরবের ব্যবসায়ী কাফিলার সঙ্গ দিয়েছেন।
এরপর ৪০ বছর বয়সে যখন নবুয়ত প্রাপ্ত হলেন, তখনো হালাল পন্থায় ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য উম্মতকে উৎসাহ প্রদান করেছেন। তবে আপনি যদি হালাল ও সঠিক পথে ব্যবসা করতে কোন নির্ভরযোগ্য সাপোর্ট খুঁজে না পান তাহলে দেশি-কমার্স রয়েছে আপনার পাশে।
যাইহোক, ব্যবসা নিয়ে হুজুর (সাঃ) অসংখ্য হাদিস বর্ণনা করে গিয়েছেন যেগুলো আমাদের মত সাধারন মানুষের জন্য উত্তম পথপ্রদর্শক। আর ব্যবসা নিয়ে ইসলামিক উক্তির এ পর্যায়ে আমরা ব্যবসা সম্পর্কিত কয়েকটি হাদিস বর্ণনা করব।
১. “সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ীরা পরকালে নবী, শহীদ ও সিদ্দিকদের সাথে থাকবে।” (সহীহ তিরমিজি)
২. “যে ব্যক্তি ব্যবসার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে, সে যেন আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে।” (মুসনাদে আহমাদ)
৩. “যে ব্যক্তি ব্যবসা করবে এবং তার ব্যবসায় সততা এবং নির্ভরযোগ্যতা দেখাবে, আল্লাহ তার ব্যবসাকে সফল করবেন।” (সহীহ মুসলিম)
৪. “রিজিকের ১০ অংশের ৯ অংশই ব্যবসায় বাণিজ্যের মধ্যে এবং এক অংশ গবাদি পশুর কাজে নিহিত।’ (আল জামিউস সাগির)
সাহায্য নিয়ে উক্তি
ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম সর্বদা ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেয়। এক মুমিন অপর মুমিন বান্দার ভাই। বিপদগ্রস্ত, অভাব ও প্রয়োজনের সময় একে অন্যকে সাহায্য সহযোগিতা করা মুমিন হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন, যে তার বান্দাদের প্রতি দয়া করে।” (বুখারী ও মুসলিম)
হাদিস শরীফে আরো এরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি একজন মুসলমান ভাইয়ের প্রয়োজন মিটিয়ে দেয়, আল্লাহ তায়ালা তার প্রয়োজন মিটিয়ে দেন।” (আবু দাউদ)
ইসলামে এই সাহায্যের আহ্বান ব্যবসা ক্ষেত্রেও করা হয়েছে। ব্যবসায়িক কাজে একে অন্যকে সহযোগীতা করা সম্পর্ক দৃঢ় করে। তাহলে চলুন এ পর্যায়ে আমরা সাহায্য নিয়ে কিছু ইসলামী উক্তি জেনে নেই।
১. কোরানের আয়াত
“এখন তোমরা একে অপরকে সাহায্য করো, একে অপরকে সহযোগিতা করো—অথবা যেকোনো ভালো কাজের জন্য সাহায্য গ্রহণ করো।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২৫৪)
“তোমরা সৎকাজে পরস্পরকে সাহায্য করো এবং পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অপরকে সাহায্য করো না।” (সূরা মায়িদাহ, আয়াত ২)
“নিশ্চয়ই আল্লাহ ইনসাফ করতে ও সৎ কাজ করতে এবং আত্মীয়কে দান করতে আদেশ করেন।” (সূরা আন-নাহল, আয়াত ৯০)
২. আল-হাদীস
“আল্লাহ তায়ালা ততক্ষণ তাঁর বান্দার সাহায্য করেন, যতক্ষণ সে তার অপর ভাইয়ের সাহায্য করতে থাকে।” (সহীহ মুসলিম)
“যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের অভাব মোচনে সাহায্য করবে, আল্লাহ তায়ালা তার অভাব মোচনে সাহায্য করবেন।” (বুখারী)
“সবচেয়ে উত্তম মানুষ সে যে অন্যের উপকারে আসে।” (তিরমিজি)
“যে ব্যক্তি কোন মুমিনের পার্থিব দুঃখ-কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তার দুঃখ-কষ্ট দূর করবেন।” (আবু দাউদ ও তিরমিজি)
“সর্বোত্তম কাজ হলো যার মাধ্যমে মানুষের উপকার হয়।” (মুসলিম)
৩. মনীষীদের উক্তি
“অন্যকে সাহায্য করা হলো আপনার দুনিয়ায় থাকার ভাড়া স্বরূপ। এটা নিয়ে অহংকার করবেন না।” (মোহাম্মদ আলী)
হালাল হারাম নিয়ে উক্তি
চলমান বাজার পরিস্থিতি ও অস্থিরতা বিবেচনা করে আমাদের অনেকের মনেই এখন প্রশ্ন জাগতে পারে ব্যবসা কি হালাল? জ্বি, ব্যবসা অবশ্যই একটি হালাল ইবাদত যতক্ষণ না এতে কোন হারাম যুক্ত করা হয়।
১. কোরানের আয়াত
“আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২৭৫)
“যে ব্যক্তি কোনো হারাম বস্তু গ্রহণ করে তার দোয়া কবুল হয় না।” (সূরা আল-মায়েদা, আয়াত ৯০-৯১)
“”হে মুমিনগণ! আমি তোমাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা হতে হালাল ও পবিত্র বস্তু আহার কর এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর যদি তোমরা কেবল তাঁকেই উপাস্য মানো।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৭২)
“হে মানবজাতি, তোমরা পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তু ভক্ষণ কর, আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিঃসন্দেহে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সূরা বাকারা, আয়াত ১৬৮)
২. আল-হাদীস
“এমন শরীর কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না যা হারাম দ্বারা পূর্ণ। জাহান্নামই তার উপযুক্ত স্থান।” (মুসনাদে আহমাদ)
“অন্যান্য ফরজ কাজ আদায়ের সঙ্গে হালাল রিজিক তালাশ করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ।” (বায়হাকি)
“আল্লাহ তায়ালা পবিত্রতা ছাড়া নামাজ কবুল করেন না এবং হারাম সম্পদের সদকা কবুল করেন না।” (মুসলিম, তিরমিজি, নাসায়ি)
৩. মনীষীদের উক্তি
“যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন করে, তার অন্তর আলোকিত হয়; আর যে ব্যক্তি হারাম উপার্জন করে, তার অন্তর অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়।” (ইমাম গাজ্জালী রহ.)
“হালাল রিজিক গ্রহণ করা শুধু জীবিকা নয়, বরং এটি আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের মাধ্যম।” (ইবনে তায়মিয়া রহ.)
প্রতারণা নিয়ে ইসলামিক উক্তি
১. কোরানের আয়াত
“আর তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষকে ধন-সম্পত্তির কিছু অংশ জেনে-বুঝে অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করো না।” (সূরা আল বাকারা আয়াত ১৮৮)
“যারা মাপে কম দেয়, তাদের জন্য দুর্ভোগ। এরা লোকের কাছ থেকে যখন মেপে নেয়, তখন পূর্ণ মাত্রায় নেয় এবং যখন মেপে দেয় তখন কম করে দেয়। তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে? সেই মহাদিবসে যেদিন মানুষ দাঁড়াবে বিশ্ব প্রতিপালকের সামনে।” (সূরা মুতাফফিফিন, আয়াত : ১-৬)
“তোমরা সঠিক ওজন কায়েম করো এবং ওজনে কম দিও না।” (সুরা রহমান,আয়াত : ৭-৯)
২. আল-হাদীস
“যে প্রতারণা করবে সে আমার উম্মতের দলভুক্ত নয়।” (সহিহ মুসলিম)
“যে ব্যক্তি আমদানি করবে সে রিজিকপ্রাপ্ত হবে। আর যে গুদামজাত করবে সে অভিশপ্ত হবে।” (ইবনে মাজাহ)
“একদা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাজারে গিয়ে একজন খাদ্য ব্যবসায়ীর দোকানের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। এমন সময় তিনি খাদ্যের ভিতরে হাত প্রবেশ করিয়ে দেখলেন খাদ্যের ভিতরের অংশ ভেজা ও নিম্নমানের। এমন অবস্থা দেখে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্যের মালিক কে বললেন, হে খাবারের পন্যের মালিক এসব কি? লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল, এতে বৃষ্টি পড়েছিল। অতঃপর হুজুর (সাঃ) এরশাদ করলেন, তাহলে তুমি সেটাকে খাবারের উপরে রাখলে না কেন যাতে মানুষ তা দেখতে পেত? যে ধোঁকা দেয় সে আমার উম্মত নয়।” (সহিহ মুসলিম)
“তোমরা বেচাকেনার ক্ষেত্রে অধিক শপথ থেকে বিরত থাক, কেননা তা পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি করলেও বরকত নষ্ট করে দেয়।” (মুসলিম)
“জঘন্য অপরাধী ছাড়া কেউ-ই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি (মূল্যবৃদ্ধির আশায়) মজুত করে না।” (আবু দাউদ)
৩. মনীষীদের উক্তি
“প্রতারণার মাধ্যমে উপার্জন করা সম্পদ কখনো স্থায়ী হয় না; বরং তা ধ্বংস হয়ে যায়।” (ইমাম আবু হানিফা রহ.)
“যে ব্যবসায় প্রতারণা করে সে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয়।” (হযরত আলী রা.)
সততা এবং বিশ্বাস নিয়ে উক্তি
১. কোরানের আয়াত
“মানুষকে তার প্রাপ্য বস্তু কম দিবে না। আর জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করবে না।” (সূরা আশ-শূরা, আয়াত ১৮৩)
“যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের ব্যবস্থা করে দেন এবং তাকে অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন।” (সূরা আত-তালাক, আয়াত ২-৩)
“আর মাপে পরিপূর্ণ দাও যখন তোমরা পরিমাপ কর এবং সঠিক দাঁড়িপাল্লায় ওযন কর। এটা কল্যাণকর ও পরিণামে সুন্দরতম।” (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৩৫)
২. আল-হাদীস
“বিশ্বস্ত আমানতদার ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন শহীদদের সাথে থাকবে।” (তিরমিযী)
“সততা মানুষকে পুণ্যের দিকে নিয়ে যায়, আর পুণ্য জান্নাতে পৌঁছে দেয়।” (সহিহ বুখারী)
“সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ীরা কিয়ামতের দিন নবীগণ, সিদ্দীকরা (সত্যবাদীরা) ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে।” (তিরমিজি)
“জঘন্য অপরাধী ছাড়া কেউ-ই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি (মূল্যবৃদ্ধির আশায়) মজুত করে না।” (আবু দাউদ শরিফ)
“তোমরা বেচাকেনার ক্ষেত্রে অধিক শপথ থেকে বিরত থাক, কেননা তা পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি করলেও বরকত নষ্ট করে দেয়।” (মুসলিম)
৩. মনীষীদের উক্তি
“সততা ও বিশ্বস্ততা ব্যবসায় সফলতার একমাত্র চাবিকাঠি।” (ইমাম আবু হানিফা রহ.)
“সততা ব্যবসার শেকড়, যা শক্তিশালী হলে ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব দীর্ঘস্থায়ী হয়।” (ইবনে খালদুন রহ.)
বেঈমানি নিয়ে উক্তি
বেঈমানি একটি কবীরা গুনাহ। বেইমান সম্পর্কে ইসলামে কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে। আর ব্যবসাক্ষেত্রে বেইমানের পরিণাম তো অত্যন্ত ভয়াবহ – দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ই ধ্বংসের কারণ।
১. কোরানের আয়াত
“তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।” (সূরা আত-ত্বীন, আয়াত ৬)
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন, আমানতসমূহ তার প্রকৃত পাওনাদারদের নিকট প্রত্যর্পণ করতে।” (সুরা আন-নিসা, আয়াত ৫৮)
“যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতির হেফাজত করে, যারা নামাজের ব্যাপারে যত্নবান হয়, এ লোকগুলোই হচ্ছে (জান্নাতের) উত্তরাধিকারী। জান্নাতুল ফিরদাউসের উত্তরাধিকারও এরা পাবে; এরা অনন্তকাল (সেখানে) থাকবে।” (সুরা মুমিনুন, আয়াত ৮-১১)
২. আল-হাদীস
“যে ব্যক্তি বেইমানি করবে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।” (সহিহ মুসলিম)
“যে ব্যক্তি আমানতের খেয়ানত করে সে মুমিন নয়।” (তিরমিযী)
“মুনাফিকের নিদর্শন তিনটি—মিথ্যা কথা বলে, ওয়াদা করলে ভঙ্গ করে, আমানত খিয়ানত করে।” (বুখারি)
৩. মনীষীদের উক্তি
“যে ব্যবসায় প্রতারণা করে সে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয়।” (হযরত আলী রাঃ)
“সততা ও বিশ্বস্ততা ব্যবসার প্রাণ, আর প্রতারণা ব্যবসার ধ্বংসের কারণ।” (ইমাম মালেক রহ.)
ব্যবসা সম্পর্কে কোরআনের আয়াত
আর কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ব্যবসা ও বাণিজ্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। যেগুলো একজন ব্যবসায়ী হিসেবে বা যিনি ব্যবসা করতে ইচ্ছুক তার জন্য জানা অতিব জরুরী। তাই ব্যবসা সম্পর্কে ইসলামিক উক্তি নিয়ে আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব ব্যবসার সম্পর্কে কোরআনের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আয়াত নিয়ে।
১. “সেসব লোক, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর যিক্র, সালাত কায়েম করা ও যাকাত প্রদান করা থেকে বিরত রাখে না। তারা সেদিনকে ভয় করে, যেদিন অন্তর ও দৃষ্টিসমূহ উল্টে যাবে।” (সূরা আন-নুর, আয়াত ৩৭)
২. “অতঃপর যখন নামায সমাপ্ত হয়, তখন যমীনে ছড়িয়ে পড়, আর আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করতে থাক- যাতে তোমরা সাফল্য লাভ করতে পার।” (সূরা আল-জুমু’আ, আয়াত ১০)
আপনার মূল্যবান মতামত দিন
আগের মন্তব্য গুলো পড়ুন