ফেসবুক শপ ২০২০: প্রোডাক্ট বিক্রি করতে কিভাবে ফেসবুকে শপ তৈরী করবেন

ফেসবুক শপ ২০২০: প্রোডাক্ট বিক্রি করতে কিভাবে ফেসবুকে শপ তৈরী করবেন
শেয়ার করুন

ফেসবুক শপ হলো ফেসবুকের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ “অনলাইন স্টোর”।যার দ্বারা আপনার ফেসবুক পেজ ও ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইল/অ্যাকাউন্টের মধ্যে আপনার প্রোডাক্টেগুলো সুসজ্জিত উপায়ে কাস্টমারদের সামনে বিনামূল্যে তুলে ধরতে পারবেন। আপনার ফেসবুক ফলোয়াররা এই স্টোর থেকে কেনাকাটা করতে পারবে খুব সহজেই।

যদিও বর্তমান সময়ে ফেসবুক শপ ফিচারটি কেবলমাত্র ফিজিক্যাল প্রোডাক্টের জন্য ব্যবহার যোগ্য, কিন্তু সুখবর হচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে ডিজিটাল প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস রিলেটেড বিজনেসের জন্য এটিকে ব্যবহারযোগ্য করে তৈরি করার প্রক্রিয়া চলমান।

ফেসবুক শপ কেবলমাত্র প্রোডাক্ট শোকেস করার জন্য না, এর সাথে আরও কিছু অসাধারন  টুলস রয়েছে।

যেমনঃ  প্রমোশন, সেলস, মার্কেটিং, কনভার্শন, কাস্টমার সাপোর্ট এবং আরো  অনেক ফিচার।

এর বাইরে ফেসবুক থার্ড পার্টি ই কমার্স টুলস ইন্টিগ্রেশন সুবিধা দিচ্ছে যা ব্যবহার করে অন্যান্য ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম গুলো ফেসবুক শপের সাথে লিংক করতে পারবেন।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাগন ফেসবুক শপ ব্যবহার করে বিনামূল্যে সম্পূর্ণ অনলাইন সেলিং এক্সপেরিয়েন্স পাবেন। 

জেনে নেয়া যাক ফেসবুকের পাঁচটি নতুন ফিচার যা ফেসবুক শপ ২০২০ তে যুক্ত করা হয়েছে। 

ইউনিফাইড সিঙ্গেল শপ প্রেসেন্স শপিং এক্সপেরিয়েন্স

ফেসবুক একই সাথে ইনস্টাগ্রাম, স্টোরি, এড থেকে বিক্রয় এবং কেনাকাটার সুবিধা প্রদান করছে। অতি শিগ্রই মেসেঞ্জার ও হোয়াটস অ্যাপ এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা হবে। 

সহজ চেক আউট সুবিধা

ফেসবুক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটার সুবিধা প্রদান করছে যেটা এঙ্গেজড শপারদের জন্য দারুন একটি ফিচার। (এটি বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য না)

Real-time শপিং

ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম লাইভ ব্যবহার করে সরাসরি বিক্রয় সুবিধা রয়েছে যেটা বর্তমান সময়ের সব থেকে বেশি আলোচিত ফিচার হিসেবে লক্ষণীয়।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স

ফেসবুক আপনার দেয়া পোস্টগুলোর  ছবি থেকে প্রোডাক্টকে অটোমেটিক আইডেন্টিফাই করতে পারে। প্রোডাক্টের ছবির মধ্যে  প্রয়োজনীয় ট্যাগ এবং লিংক যুক্ত করা যায়।

অগমেন্টেড রিয়েলিটি

এই প্রযুক্তি আপনার ছবির সাথে নানান ধরনের ফিল্টার ও স্টিকার ব্যবহার করে সম্পূর্ণ একটি ভিন্ন আঙ্গিকে ছবিগুলোকে সাজিয়ে তোলার সুবিধা দেয়।

ফেসবুক শপ সেটআপ প্রক্রিয়া  

প্রথমে আপনাকে e-commerce manager সেটআপ করতে হবে, যা আগে থেকেই প্রতিটি ফেসবুক একাউন্টের সাথে থাকে। এরপরে ফেসবুক ক্যাটালগ সেটআপ করতে হবে।

এটি করার জন্য facebook.com/commerce_manager এই লিংক ভিজিট করুন।


উপরের ছবির মত একটি স্ক্রিন আসবে সেখানে “create commerce account” বাটনে ক্লিক করুন। এবার ফেসবুক আপনাকে দুটি অপশন দিবে।

 

আপনি যদি সম্পূর্ণ নতুন হয়ে থাকেন তবে বাম পাশে “Get started for facebook” এই বাটনে ক্লিক করবেন।আর যদি  আপনার একটি ই-কমার্স প্লাটফর্ম থাকে তবে ডানপাশের “Get started” বাটনে ক্লিক করুন। 

এবারে ফেসবুক আপনাকে তিনটি প্রয়োজনীয় অপশন দেবে যা ই কমার্স শপ ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজন হবে।
এখানে একটি ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার, ট্যাক্স এবং পেমেন্ট ইনফর্মেশন, শপ প্রিফারেন্স এবং পলিসি যোগ করতে বলা হবে। (বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়)

নেক্সট বাটনে ক্লিক করে পরের ধাপে যেতে হবে।

আপনার কমার্স একাউন্ট তৈরি করতে বলা হবে। এজন্য বিজনেস ইনফরমেশনে যেয়ে “Set Up” বাটনে ক্লিক করুন।

এবার আপনার কমার্স অ্যাকাউন্টের জন্য নাম লিখুন ও নেক্সট বাটনে ক্লিক করুন।


এবার আপনার যে বিজনেস পেজের জন্য শপটি চালু করতে চান সেই পেজটি সিলেক্ট করে দিন।


এবারে ফেসবুক আপনার বিজনেস ম্যানেজার একাউন্টটি কানেক্ট করতে বলবে। সেটি সিলেক্ট করে “Finish Setup” বাটনে ক্লিক করলে এই ধাপের কাজ শেষ।

এবারে আপনার প্রোডাক্ট এবং সেটিংস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলা হবে

এখান থেকে (উপরের চিত্র) প্রোডাক্ট এবং সেটিংস এর নিচে “Get Started” বাটনে ক্লিক করলে নিচের ছবির মত “add your product” পেজ আসবে। এখান থেকে আপনার প্রোডাক্টগুলো কমার্স অ্যাকাউন্টের সাথে যোগ করতে পারবেন।

যদি আপনার ইতিপূর্বেই প্রোডাক্ট ক্যাটালগ তৈরি করা থাকে তবে সেখান থেকে প্রোডাক্ট অ্যাড করতে পারবেন। আর যদি সেটি না থাকে তবে ক্রিয়েট নিউ ক্যাটালগ অপশনটি বেছে নিয়ে নেক্সট বাটনে ক্লিক করুন। 
এই ধাপে আপনার ফেসবুক শপের জন্য শিপিং রিলেটেড তথ্য প্রদান করতে বলা হবে। সকল তথ্য আপডেট করার পরে নেক্সট বাটনে ক্লিক করে পরের ধাপে যাবেন। 
এবারে রিটার্ন পলিসি সংক্রান্ত তথ্য আপডেট করতে বলা হবে। কত দিনের মধ্যে প্রোডাক্ট রিটার্ন গ্রহণ করবেন উল্লেখ করতে হবে এবং কাস্টমার সার্ভিস প্রদানের জন্য একটি ইমেইল দিতে বলা হবে। 
সব শেষে এই ধাপে আপনার ব্যাংক একাউন্ট যোগ করতে বলা হবে। যেখানে আপনার বিক্রয় করা প্রোডাক্টের জন্য পেমেন্ট গ্রহন করবেন। (এই অপশনটি বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য নয়)

ব্যাংক একাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য যোগ করার পরে  আপনি কি সেল করছেন সেই সংক্রান্ত তথ্যে দিতে হবে।

আপনার বিজনেসের ধরন অনুযায়ী ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে দিবেন। এরপর নেক্সট বাটনে ক্লিক করবেন।

এখানে আপনার ফিজিক্যাল শপের তথ্য গুলো দিতে হবে। যেমন, শহরের নাম, ট্যাক্স রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিতে হবে। 

যদি আপনার ফিজিক্যাল শপ না থাকে তবে “skip for now” বাটনে ক্লিক করে এড়িয়ে যান। 
এখানে আপনার ট্যাক্স ও রিপ্রেজেন্টেশন সংক্রান্ত তথ্য গুলো চাওয়া হবে। যথাযথ ভাবে তথ্য গুলো পূরণ করে পরবর্তী ধাপে চলে যান।

এবার আপনার ব্যাংক সংক্রান্ত তথ্য গুলো যথাযথ ভাবে পূরণ করার পরে এই ধাপের সেটআপ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।

 

নিজের ইকমার্স ওয়েবসাইট তৈরী করুন মাত্র ৫ মিনিটে

ব্যবহারে সহজ

কোডিং এর ঝামেলা নেই

খরচ সাধ্যের মধ্যে

সাইন আপ

 

প্রোডাক্ট সেটআপ পর্ব

এখান থেকে “Go to commerce manager” এই বাটনে ক্লিক করুন।

(উপরের চিত্রে) এখানে বামপাশের কলাম থেকে “Inventory” অপশনটি বেছে নিন।


উপরের চিত্রের মত একটি স্ক্রিন আসবে সেখান থেকে “Add Product” এ ক্লিক করুন।


এখানে ফেসবুক আপনাকে তিনটি অপশন দিবে। আপনি ম্যানুয়ালি প্রডাক্ট অ্যাড করতে পারেন অথবা একসাথে সবগুলো প্রোডাক্ট অ্যাড করতে পারেন অথবা কানেক্ট ফেইসবুক পিক্সেল অপশনটি নির্বাচন করতে পারেন।

যদি আপনার ৫০ টির বেশি আইটেম থাকে সেক্ষেত্রে Use data feeds এবং connect facebook pixels অপশন ব্যবহার করুন। 

আর আপনার প্রোডাক্ট যদি ৫০ টির কম হয় তবে ম্যানুয়ালি প্রোডাক্ট অ্যাড করুন। 


প্রোডাক্ট অ্যাড করা খুব সহজ। ছবি, নাম, ডিসক্রিপশন, ওয়েবসাইট লিংক, সেল প্রাইস, অ্যাভেলেবিলিটি, ইনভেন্টরি ইত্যাদি প্রয়োজনীয় তথ্য  দিয়ে প্রোডাক্ট অ্যাড করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন। 


একই প্রক্রিয়ায় আপনি আরো প্রোডাক্ট অ্যাড করতে পারবেন।

প্রোডাক্ট অ্যাড করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেলে আপনার ফেসবুক শপটি দেখতে “view shop” বাটনে ক্লিক করুন ।


আপনার ফেসবুক শপটি উপরের চিত্রের মত দেখা যাবে। যেখানে বামদিকের কলামে shop নামে একটি নতুন ট্যাব যোগ হয়ে যাবে।

এবং ডানদিকের কাভার পিকচারের নিচে “manage your catalog” নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন যেখান থেকে আপনার প্রোডাক্ট ক্যাটালোগ গুলো ম্যানেজ করতে পারবেন।

পরিশেষে,

ফেসবুক শপ ফিচারটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য আশীর্বাদ। ই-কমার্স ওয়েবসাইটে খরচ না করেই কাস্টমারদের ই কমার্স ওয়েবসাইটের অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য এই ফিচার অনন্য। ইকোসিস্টেম তবে এটি শুধুমাত্র ফেসবুকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। 

আপনি কি এখনো বিজনেসের জন্য ফেসবুক শপ ফিচারটি চালু করেন নি? তবে এখুনি সেটআপ করে ফেলুন আপনার ফেসবুক শপ আর বেশি বেশি সেল করুন। 

আরো পড়ুনঃ

অনলাইন স্টোরের সেলস বাড়াতে ৩৮ টি আকর্ষণীয় ‘অফার’ আইডিয়া   

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট

আপনার মূল্যবান মতামত দিন

মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না। আবশ্যক ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত *

আগের মন্তব্য গুলো পড়ুন

সবার আগে মন্তব্য করুন