কীভাবে আপনার ব্র্যান্ডের অথেনটিক সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি তৈরি করবেন

কীভাবে আপনার ব্র্যান্ডের অথেনটিক সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি তৈরি করবেন

অনেকেই মনে করেন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে ভালো করতে হলে ভাইরাল হওয়াটা জরুরী। এতে ব্র্যান্ড এর পরিচিতি সাময়িকভাবে বাড়ালেও আপনার সেলস বাড়বে এমন নিশ্চয়তা নেই। 

সুদীর্ঘ সময়কাল ধরে অডিয়েন্স এর কাছে আপনার ব্র্যান্ডের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে ভাইরাল হওয়ার চেয়ে উত্তম পন্থা ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি। বিশেষ করে, ছোট পরিসরের বিজনেসের ক্ষেত্রে ভাইরাল হওয়ার চেয়ে পেইজের অথেন্টিসিটি বা বিশ্বস্ততা বাড়ানোর চেষ্টা করাই শ্রেয়, যাতে করে আপনি কাস্টমার ধরে রাখতে পারেন। 

চলুন জেনে নেই- কিভাবে আপনার ব্র্যান্ডের জন্য একটি অথেনটিক সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি তৈরি করবেন- এই ব্যাপারে বড় বড় উদ্যোক্তা এবং সোশ্যাল মিডিয়া এক্সপার্টরা কি বলছেন:

১. আপনার অডিয়েন্স এর জন্য উপযুক্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম বেছে নিন

প্রতিটা বিজনেসের অডিয়েন্সের ধরন যেমন আলাদা, ঠিক তেমনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোর বৈশিষ্ট্যও আলাদা। বিজনেস এর প্রচারের জন্য টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, ফেইসবুক, টুইটার, স্ন্যাপচ্যাট, লিংকডইন ও পিন্টারেস্ট সহ অসংখ্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। তবে সব প্লাটফর্মেই আপনার ব্র্যান্ড এর জন্য কার্যকরী এমনটি না।    

কোন কোন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আপনার অডিয়েন্স সবচেয়ে বেশি সেটা খুঁজে বের করে আপনি সেই প্ল্যাটফর্মের দিকেই অধিক মনোযোগী হন। বিশেষজ্ঞদের মতে বর্তমানে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য টিকটক, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম সবচেয়ে কার্যকরী প্ল্যাটফর্ম।

২. কোন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া আপনার ব্র্যান্ডের জন্য উপযোগী?

কোন কোন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে আপনার ব্র্যান্ড এর উপস্থিতি থাকবে সেটা নির্ধারণ করার পর এবার আপনাকে চিন্তা করতে হবে আপনি কি ধরনের কনটেন্ট তৈরি করবেন? 

ভেবে দেখুন- আপনার লক্ষ্য কি, আপনার অডিয়েন্স কারা এবং আপনি আপনার ব্র্যান্ডকে কিভাবে উপস্থাপন করতে চাচ্ছেন। যেমন ধরুন:আপনার ব্র্যান্ড যদি হয়ে থাকে রান্নার উপকরণ এর, তাহলে কি আপনি অডিয়েন্সকে সেই উপকরণগুলো ব্যবহার করে কিভাবে রান্না করা যায় সেটার ভিডিও দেখাবেন? নাকি শুধু রান্নার রেসিপি শেয়ার করবেন? 

আপনার ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট আকর্ষণীয়ভাবে অডিয়েন্সের সামনে তুলে ধরতে আপনি ব্লগ, অডিও কিংবা ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন। এরপর সেই কনটেন্টের ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে আপনার ব্র্যান্ডের উপস্থিতি নিশ্চিত করুন। 

আপনি অবশ্যই একই সাথে একাধিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন, যেমন আপনি টিকটক এ একটা রান্নার ভিডিও শেয়ার করলেন পাশাপাশি সেই রান্নার ছবিটা আপলোড করে দিলেন ইনস্টাগ্রামে। আর আপনার বিজনেসের রিয়েল টাইম আপডেট শেয়ার করার জন্য বেছে নিলেন ফেসবুক।  

৩. আপনার ব্র্যান্ড এর সঠিক পরিচিতি তুলে ধরুন

আপনার ব্র্যান্ডের এবং আপনার নিজের স্টোরি আপনার অডিয়েন্সের সামনে নিয়ে আসুন। এক্ষেত্রে অবশ্যই অথেনটিক তথ্য অডিয়েন্সের সাথে শেয়ার করবেন। আপনার কমিউনিটিতে স্বচ্ছতা বজায় রাখুন। শুধুমাত্র মনোযোগ আকর্ষণের জন্য কোন ধরনের ভুল তথ্য শেয়ার করবেন না। 

আপনি কে, কোত্থেকে উঠে এসেছেন এবং কিভাবে আপনার ব্র্যান্ডকে দাঁড় করিয়েছেন তার পেছনের সত্যিকার গল্প সবার সামনে তুলে ধরুন। 

প্রত্যেক সফল ব্যক্তির পেছনের সংগ্রামের গল্প নিয়ে মানুষের মাঝে কৌতুহল কাজ করে। তাই আপনার নিজের গল্প শেয়ার করলে অডিয়েন্স এর আপনার সাথে এটাচমেন্ট তৈরি হবে। কিন্তু সে গল্প অবশ্যই সত্য এবং বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে। তাহলেই আপনি আস্তে আস্তে আপনার ব্র্যান্ডের জন্য একটি অথেন্টিক সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি তৈরি করতে পারবেন।

৪. অডিয়েন্স এর সাথে লাইভে আসুন

ব্র্যান্ডের অথেন্টিসিটি বাড়ানোর আরেকটি চমৎকার মাধ্যম হলো লাইভ সম্প্রচার। অনেক ক্ষেত্রেই আগে থেকে রেকর্ড করা ভিডিও কিংবা ছবির প্রতি কাস্টমাররা পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেনা। তাই লাইভে এসে তাদের সব প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেওয়া এবং আপনার প্রোডাক্ট এর খুঁটিনাটি তাদেরকে দেখানোর মাধ্যমে সহজেই তাদের আস্থা অর্জন করতে পারেন। 

লাইভে আপনি সরাসরি আপনার ফলোয়ারদের সামনে বসে তাদের সকল জিজ্ঞাসা, সন্দেহ দূর করতে পারেন! শুধু তাই নয়, এতে করে আপনার ব্র্যান্ডের সাথে তাদের এটাচমেন্টও বাড়বে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অথেন্টিসিটি বাড়ানোর জন্য  উদ্যোক্তারা টিকটক লাইভে এসেই তাদের অর্ডারগুলো প্যাকেজিং করছেন। 

৫. অডিয়েন্স কি দেখতে বেশি পছন্দ করে তা জানার চেষ্টা করুন

কোন ধরনের কন্টেন্ট আপনার অডিয়েন্স পছন্দ করে কিংবা তারা কোন প্রোডাক্ট দেখতে চায়, সে সম্পর্কে তাদেরকে প্রশ্ন করুন। দর্শকদের থেকে ভোট নেওয়ার জন্য টিকটক, ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুক পোলিং (Poll) ফিচার চালু করেছে। এছাড়াও কিভাবে আপনার বিজনেস পলিসি আরও উন্নত করা যায় কিংবা আপনার ব্র্যান্ডের সার্ভিস সম্পর্কে অডিয়েন্সের কোন মতামত আছে কিনা সেটাও জানার চেষ্টা করুন ফিডব্যাক নেয়ার মাধ্যমে। 

প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে পোলের মাধ্যমে আপনি অডিয়েন্স এর ভোট গণনা করতে পারবেন। যে ধরনের কনটেন্ট অডিয়েন্স পছন্দ করে আপনি সে ধরনের কনটেন্ট বেশি তৈরি করার চেষ্টা করুন। অথবা যে ধরনের প্রোডাক্ট পেতে তারা আগ্রহী সে ধরনের প্রোডাক্ট বেশি বেশি নিয়ে আসুন। 

যখন আপনি অডিয়েন্সের চাহিদা ও মতামতের প্রতি গুরুত্ব দিবেন তখন আপনি তাদের কাছে আরও বেশি বিশ্বস্ত হয়ে উঠবেন। আপনার ব্র্যান্ডের প্রতি তাদের আগ্রহ আরো বেড়ে যাবে।

৬. কাস্টমার রিভিউ শেয়ার করুন

আপনার ব্র্যান্ড এর কাস্টমারদের জন্য আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে রিভিউ কিংবা মতামত দেওয়ার অপশন রাখুন। অতঃপর আপনার কাস্টমারদের দেওয়ার রিভিউ এবং মতামত আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন। এতে করে আপনার পেইজের অথেন্টিসিটি বৃদ্ধি পাবে কেননা অনেকেই কোন নতুন ব্র্যান্ডকে বিশ্বাস করার আগে পুরনো কাস্টমারদের অভিজ্ঞতা যাচাই করেন। 

আপনার প্রোডাক্ট কোয়ালিটি এবং সার্ভিস যদি ভালো হয় তাহলে অবশ্যই কাস্টমাররা ভালো অভিজ্ঞতাই ব্যক্ত করবেন। আর সেই ভালো রিভিউ যখন আপনি অডিয়েন্স এর সামনে তুলে ধরবেন তখন স্বাভাবিকভাবেই আপনার ব্র্যান্ডের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে। 

কোন কাস্টমার যদি আপনাকে ইনবক্সে রিভিউ দেন সেটা শেয়ার করার পূর্বে অবশ্যই তার অনুমতি নেওয়া উচিত। আর কোন কাস্টমার যদি তার পরিচয় গোপন রেখে রিভিউ শেয়ার করতে চান, সেটা নিশ্চিত করা আপনার দায়িত্ব। 

 

৭. একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে ক্রস- পোস্ট করুন

এক সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে আপলোড করা কনটেন্ট অন্য প্লাটফর্মে শেয়ার করুন, হতে পারে এটি আপনার সেলস বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে। 

যেমন ধরুন, টিকটকে হাই পারফর্মিং কোন ভিডিও আপনি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করতে পারেন। এতে করে দুটি কাজ হবে, প্রথমত -একই কনটেন্ট এর মাধ্যমে আপনার একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এক্টিভ থাকলো, দ্বিতীয়ত- আপনার প্রোডাক্টের সেলস ও বেড়ে গেল। এছাড়াও এর মাধ্যমে আপনার নির্দিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মের ফলোয়ার সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে। 

আসলে প্রত্যেকটা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এর ধরণ আলাদা। একই কন্টেন্টের পারফরম্যান্স প্ল্যাটফর্ম ভেদে ভিন্ন হবে। কারণ ভিন্ন প্লাটফর্মের অডিয়েন্স ভিন্ন। তাই আপনি একই কন্টেন্ট একাধিক প্লাটফর্মে শেয়ার করে দেখতে পারেন কোন প্লাটফর্মে সেটির অধিক সেলস জেনারেট করছে।

আরো পড়ুনঃ 

বিশ্বের সেরা ৬টি ব্র্যান্ডের অনন্য কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স এর গল্প

৮. প্রফেশনাল হোন, একটিভ থাকার চেষ্টা করুন

আপনি একটি অথেন্টিক সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি তখনই তৈরি করতে পারবেন যখন আপনি কাস্টমারের প্রতি প্রফেশনাল বিহেভিয়ার দেখাবেন। এইজন্য আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটিভ থাকতে হবে, নিয়মিত কাস্টমারের মেসেজ চেক করতে হবে, অল্প সময়ের মধ্যে মেসেজ এর রিপ্লাই দিতে হবে। যদি আপনার পক্ষে সব সময় একটিভ থাকা সম্ভব না হয় তাহলে পেইজের জন্য মডারেটর রাখুন, তারপরও কাস্টমারকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করাবেন না। 

কাস্টমারের মেসেজ এর উত্তর দেওয়ার সময় অবশ্যই সুন্দর ও মার্জিত ভাষা ব্যবহার করতে হবে, ধৈর্য সহকারে তাদের কথা শুনতে হবে। আপনার ব্যবহারেই আপনার ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠবে এবং কাস্টমারের সাথে একটা মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং তৈরি হবে। 

৯. আপনার পোস্ট গুলোকে নির্দিষ্ট ব্যাচ এ ভাগ করুন, সময় বাঁচান !

প্রতিদিন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য কন্টেন্ট তৈরি করা এবং পোস্ট করা আসলেই অনেক সময় সাপেক্ষ এবং কষ্টকর ব্যাপার, বিশেষ করে তখন যখন আপনার বিজনেসের সম্পূর্ণ দায়িত্বই আপনার নিজের ঘাড়ে! অনেক সময় অতিরিক্ত ব্যস্ততার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে পোস্ট আপলোড করা মিস ও হয়ে যেতে পারে। 

তাই সময় বাঁচানো এবং কষ্ট কমানোর জন্য আপনার পোস্টগুলোকে নির্দিষ্ট ব্যাচে ভাগ করে ফেলতে পারেন। সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট দিনে আপনি সব ফটোসেশন কিংবা ভিডিও ধারণ শেষ করে ফেলতে পারেন। তারপর পরবর্তী এক অথবা দুই সপ্তাহের সকল কন্টেন্ট আপলোড করে নির্দিষ্ট সিডিউল সেট করে দিতে পারেন। 

বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলো সিডিউলিং এর জন্য বিভিন্ন ফিচার যোগ করেছে। সেগুলো ব্যবহার করে আপনি নিজে সবসময় একটিভ না থাকা সত্ত্বেও নিয়মিত পোস্ট আপলোড নিশ্চিত করতে পারবেন। যখন আপনার অডিয়েন্স নির্দিষ্ট সময়ে আপনার কনটেন্ট দেখতে পাবে, তখন আপনার ব্র্যান্ডের প্রতি তাদের সুধারণা বৃদ্ধি পাবে।

১০. সর্বোপরি কনটেন্ট এর মান বৃদ্ধি করুন

আপনার ব্র্যান্ড কতটা অথেনটিক সেটার সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো আপনার কনটেন্ট। অডিয়েন্স আপনার কনটেন্ট দেখেই আপনার সম্পর্কে ধারনা করবে। তাই কনটেন্ট কোয়ালিটিতে কোন ধরনের কম্প্রোমাইজ নয়। সংখ্যায় কম হলেও সর্বোচ্চ মান ধরে রাখার চেষ্টা করুন।

তাছাড়া এংগেজমেন্ট চেক করার জন্য কনটেন্টের ধরণ চেঞ্জ করে দেখতে পারেন। একেক সময় একেক টাইপের কনটেন্ট আপলোড করে দেখুন, কোন টাইপ কনটেন্ট অডিয়েন্সের বেশি রেসপন্স পাচ্ছে। 

পরিশেষে,  

আপনার ব্যক্তিত্ব এবং আপনার প্রচেষ্টার সমন্বয় হলো আপনার ব্র্যান্ড। আপনি যা, তাই আপনার অডিয়েন্সের সামনে তুলে ধরুন। প্রফেশনাল সার্ভিস দিন, কাস্টমারের প্রতি লয়াল থাকুন এবং অথেনটিক তথ্য শেয়ার করুন। তাহলে আপনার ব্র্যান্ডের অথেনটিক সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি আপনাই তৈরি হবে।

Better keep yourself clean and bright; you are the window through which you must see the world. 

– George Bernard Shaw

 

ব্র্যান্ড পজিশনিং দ্বারা কাস্টমারদের মনে ব্র্যান্ডের ইউনিক ইমেজ তৈরীর কৌশল

ব্র্যান্ড পজিশনিং দ্বারা কাস্টমারদের মনে ব্র্যান্ডের ইউনিক ইমেজ তৈরীর কৌশল

ইফেকটিভ ব্র‍্যান্ড পজিশনিং এর কারণে ইলেকট্রিক গাড়ির ব্র‍্যান্ড নিয়ে আলোচনা হলে টেসলার নাম কেন শুরুর দিকে থাকে? একটি  ব্র্যান্ডকে শূন্য থেকে সাকসেসফুল পজিশনে নিয়ে যেতে ব্র‍্যান্ড পজিশনিং আবশ্যিক। SME বিজনেস গুলো এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় না। ব্র্যান্ড পজিশনিং এর গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝাতে গিয়ে স্বনামধন্য বিজনেস আইকন ওয়ারেন বাফেট বলেছিলেন, “It takes 20 years to build a reputation and five minutes to ruin it.”

আজকের লেখায় থাকছে ব্র্যান্ড পজিশনিং কি, এটি কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ এবং কিভাবে আপনারা ব্র্যান্ড পজিশনিং করতে পারবেন সে সম্পর্কিত ডিসকাশন।

ব্র্যান্ড পজিশনিং কি?

শুরুতেই জানবো ব্র্যান্ড পজিশনিং বলতে কি বোঝানো হয়। একদম সহজ বাংলায় ব্র্যান্ড পজিশনিং হচ্ছে কাস্টমারদের মাইন্ডে নিজের ব্র্যান্ডের একটি কনসেপ্ট বা ইমেজ ক্রিয়েট করে দেওয়া, যাতে করে সেটির মাধ্যমেই কাস্টমাররা ওই ব্র‍্যান্ডটিকে চিনতে পারেন। 

আপনাদের এখন মনে হতে পারে ব্র্যান্ড পজিশনিং বলতে হয়তো কোন ব্র্যান্ডের লোগো, ট্যাগলাইন কিংবা মার্কেটিংকে বোঝানো হয়ে থাকে। কিন্তু আসলে ব্যাপারটি সেরকম নয়। 

ব্র্যান্ড পজিশনিং হচ্ছে এমন একটি প্রসেস যেটির মাধ্যমে কোনো একটি ব্র্যান্ডকে সেটির যে কম্পিটিটর ব্র্যান্ডগুলো রয়েছে সেগুলো থেকে সম্পূর্ণ ডিফারেন্ট ভাবে কাস্টমারদের সামনে প্রেজেন্ট করা হয়। এই কাজটি করা হয় সে ব্র‍্যান্ডের প্রোডাক্টের ইউনিক ফিচার ও বেনিফিট হাইলাইট করার মাধ্যমে। 

একটি ব্র্যান্ড যখন সাকসেসফুলি ব্র্যান্ড পজিশনিং করতে পারে, তখন সেই ব্র্যান্ড কাস্টমারদের কাছে প্রোপার ভ্যালু ও ক্রেডিবিলিটি পায়।  তখন সেই ব্র‍্যান্ডের রেপুটেশন ও রেভিনিউও সমানতালে বাড়তে থাকে।

উদাহরণের সাহায্যে বোঝার চেষ্টা করি

চলুন ছোট্ট একটি উদাহরণের সাহায্যে ব্র্যান্ড পজিশনিংয়ের মূল আইডিয়াটি বোঝার চেষ্টা করি। কোকাকোলা আমাদের সবার প্রিয় সফট ড্রিংক? এই কোকাকোলা যখন প্রথম লঞ্চ করা হয়, তখন মার্কেটে আর অন্য কোনো কোলা বেজড সফট ড্রিংক পাওয়া যেতোনা। 

তাই স্বাভাবিকভাবেই যখন কোকাকোলা মার্কেটে আসে, তখন তা কম সময়েই কাস্টমারদের মন জয় করে নেয়। কোকাকোলা তখন নিজের ব্র‍্যান্ড পজিশনিংয়ের স্ট্র‍্যাটেজি এমনভাবে ডেভেলপ করতে শুরু করে, যাতে করে টার্গেটেড কাস্টমারদের মনে পারমানেন্টলি এই ব্র‍্যান্ডের একটি ইমেজ সেট হয়ে যায়। 

এর ইমপ্যাক্ট কি? 

আজ এত বছর পরেও দোকানে কোলা বেজড ড্রিংক খোঁজার সময় আমরা সবসময় কোকাকোলা ই খুঁজি। কারণ কোকাকোলা সেটির ব্র‍্যান্ড পজিশনিংয়ের মাধ্যমে আমাদের কাছে নিজেদের একটি স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করতে পেরেছে। আমরা এখন বিলিভ করি কোকাকোলার চাইতে বেটার টেস্ট ও কোয়ালিটির সফট ড্রিংক অন্য কোনো ব্র‍্যান্ড তৈরি করেনা৷ তাই কোকাকোলা ছাড়াও অন্য আরো অনেক সফট ড্রিংক ব্র‍্যান্ড মার্কেটে  অ্যাভেইলেবল থাকলেও অধিকাংশ কাস্টমার কোকাকোলাই বেছে নেই৷ কি? বুঝতে পারলেন ব্র‍্যান্ড পজিশনিং একটি ব্র‍্যান্ডকে সাকসেসফুল করে তুলতে কতটুকু পাওয়ারফুল রোল প্লে করে?

ব্র্যান্ড পজিশনিং কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ? 

প্রথমত ব্র্যান্ড পজিশনিং অন্যান্য কম্পিটিটর ব্র‍্যান্ডের তুলনায় নিজের ব্র্যান্ডটি কেন বেটার প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস অফার করে সেটি টার্গেটেড কাস্টমারদের কাছে প্রেজেন্ট করে। কাস্টমাররা বুঝতে পারেন যে এই ব্র্যান্ডের প্রোডাক্টগুলো ইউনিক এবং এগুলো নিশ্চিন্তে পারচেজ করা যেতে পারে। 

এতে করে ব্র্যান্ড ভ্যালু যেমন বাড়ে, তেমনি ভাবে আগের তুলনায় অনেক বেশি কাস্টমারের কাছে রিচ করা যায়। শুধু তাই নয়, ব্র্যান্ড পজিশনিংয়ের মাধ্যমে কোন ব্র্যান্ডের প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজিও জাস্টিফাই  করা সম্ভব হয়। 

কিভাবে? 

আপনি ও আপনার কম্পিটিটর ব্র্যান্ড উভয়ের প্রোডাক্ট সেইম। ধরুন, প্রোডাক্টটি হচ্ছে মেয়েদের ফেসওয়াশ। যদি আপনার ব্র্যান্ডের ফেসওয়াশ ফেস ক্লিন করার পাশাপাশি স্কিনের বিভিন্ন প্রবলেম যেমনঃ একনি বা হাইপারপিগমেন্টেশন দূর করতে পারে যা আপনার কম্পিটিটর ব্র্যান্ডের ফেসওয়াশ পারে না, তাহলে আপনার ব্র্যান্ডের ফেসওয়াশই বেশিরভাগ কাস্টমাররা কিনবে৷

কারণ আপনি আপনার কম্পিটিটরের তুলনায় নিজের প্রোডাক্টে এমন কিছু ইউনিক ফিচার কাস্টমারদের অফার করছেন, যা তাদেরকে এডিশনাল বেনিফিট দিচ্ছে।

আবার যদি আপনার প্রোডাক্টের প্রাইস অন্য ব্র্যান্ডগুলোর প্রোডাক্টের তুলনায় বেশি হয়, তাহলে কাস্টমাররা মনে করেন আপনার ব্র‍্যান্ডের প্রোডাক্টের কোয়ালিটি বাকি ব্র‍্যান্ডগুলোর তুলনায় অনেক ভালো। একারণেই প্রাইস কিছুটা বেশি হলেও তারা বেশি প্রাইসেই প্রোডাক্টটি পারচেজ করে। একটি ব্র্যান্ডকে স্ট্রং ও স্টেবল পজিশনে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাস্টমারদের মনে আপনার ব্র্যান্ডের পজিশন কোথায় সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।

ব্র‍্যান্ড পজিশনিং স্ট্র্যাটেজির প্রকারভেদ

ব্র্যান্ড পজিশনিং করার জন্য স্পেসিফিক স্ট্র্যাটেজি ফলো করতে হয়। তবে সব ব্র্যান্ড কিন্তু একই ধরনের ব্র্যান্ড পজিশনিংয়ের স্ট্র্যাটেজি ফলো করেনা। বরং ব্র্যান্ডের ধরণ এবং কি ধরনের প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস কাস্টমারদের অফার করা হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে ব্র্যান্ড পজিশনিং বিভিন্ন রকমের হতে পারে। যেমন- 

১। কাস্টমার সার্ভিস পজিশনিং স্ট্র‍্যাটেজি

কাস্টমার সার্ভিস পজিশনিং স্ট্র্যাটেজি হচ্ছে যখন কোনো ব্র্যান্ড সেটির কাস্টমার সার্ভিস সিস্টেম ডেভেলপ করার মাধ্যমে নিজের ব্র্যান্ডের ইউনিক পজিশনিং করে। এই স্ট্র্যাটেজিতে কাস্টমারদেরকে সবসময় প্রায়োরিটি দেয়া হয় এবং তাদের যে কোন প্রবলেম বা কোয়েরি সবচেয়ে কম সময় সলভ করার চেষ্টা করা হয়,  যাতে করে কাস্টমারদের মনে সেই ব্র্যান্ড সম্পর্কে  পজিটিভ ইম্প্রেশন তৈরি হয়। 

যেমনঃ ই-কমার্সের জন্য বিখ্যাত প্ল্যাটফর্ম আমাজন সবসময় টপ নচ কাস্টমার সার্ভিস প্রোভাইড করে থাকে। এ কারণেই সারা বিশ্বের বহু মানুষ কেনাকাটা করার জন্য আমাজনকে চোখ বন্ধ করে ভরসা করে থাকেন।

২৷ কোয়ালিটি বেজড পজিশনিং স্ট্র্যাটেজি

যখন ব্র্যান্ড পজিশনিংয়ের স্ট্র্যাটেজি কোয়ালিটি বেজড হয়, তখন একটি ব্র্যান্ড সেটির প্রোডাক্টের কোয়ালিটি মেইনটেইন করতে বেশি ফোকাস করে থাকে। যেসব ব্র্যান্ডে কোয়ালিটি বেজড পজিশনিং স্ট্র্যাটেজি ফলো করা হয়ে থাকে, তাদের টার্গেটেড কাস্টমার সাধারণত এমন মানুষ হয়ে থাকেন, যারা বেশি প্রাইস দিয়ে হলেও কোয়ালিটিসম্পন্ন প্রোডাক্ট পারচেজ করতে দ্বিধাবোধ করেননা। এ কারণে এই স্ট্র‍্যাটেজি ফলো করা ব্র‍্যান্ডের প্রোডাক্টগুলো বেশ প্রাইসি হয়ে থাকে। 

যেমনঃ আমরা যদি জনপ্রিয় ফ্যাশন ও লাইফ স্টাইল ব্র‍্যান্ড আড়ংয়ের দিকে তাকাই, তাহলে দেখতে পাবো আড়ংয়ের প্রোডাক্টের প্রাইস কিছুটা বেশি হলেও কিন্তু এই ব্র্যান্ডের কাস্টমারের অভাব নেই। কারণ এটি সবসময় হাই কোয়ালিটির আউটফিট এবং অন্যান্য প্রোডাক্ট যেমনঃ জুতা, ব্যাগ, জুয়েলারি, হোম ডেকোর আইটেম বা স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টস কাস্টমারদের প্রোভাইড করে থাকে।

 ৩। সোশ্যাল মিডিয়া পজিশনিং স্ট্রাটেজি

সোশ্যাল মিডিয়া পজিশনিং স্ট্র্যাটেজিতে একটি ব্র্যান্ড সেই সকল সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলো পজিশনিংয়ের জন্য ব্যবহার করে, যেগুলো সেই ব্র্যান্ডের টার্গেটেড অডিয়েন্স সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে থাকে। টার্গেট অডিয়েন্সদের ব্যবহার করা সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেল আইডেন্টিফাই করার পর সেই চ্যানেলগুলোতে ব্র‍্যান্ডের প্রোফাইল ক্রিয়েট করা হয়। তারপর সেই প্রোফাইলে কোয়ালিটিসম্পন্ন কনটেন্ট পোস্ট করা হয়, যাতে করে  যারা পটেনশিয়াল কাস্টমার তাদেরকে অ্যাট্রেক্ট করা সম্ভব হয়।  

তারপর সেখান থেকে ধীরে ধীরে সেল জেনারেট হওয়া শুরু হয়৷ টার্গেটেড কাস্টমারদের কোনো ব্র্যান্ডের সাথে এনগেইজ করার জন্য এই স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করা হয়। যেমনঃ ডাভ সাবানের নামতো সবাই শুনেছেন। ডাভ নিজের ব্র্যান্ড পজিশনিংয়ের জন্য বিভিন্ন গ্রুপকে টার্গেট করে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন ক্যাম্পেইন রান করে থাকে। একারণেই ডাভ এত জনপ্রিয় এবং এর কাস্টমারের সংখ্যা এত বেশি।

 

৪। প্রাইস বেজড পজিশনিং স্ট্র্যাটেজি

একটি ব্র্যান্ড সেটির প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিসকে অন্যান্য কম্পিটিটরের তুলনায় সবচেয়ে অ্যাফোর্ডেবল প্রমাণ করার জন্য প্রাইস বেজড পজিশনিং স্ট্র‍্যাটেজি ব্যবহার করে থাকে। এই স্ট্র‍্যাটেজি সঠিকভাবে কাজে লাগানো গেলে সাকসেস রেট খুব বেশি হয়, কারণ অ্যাফোর্ডেবল প্রাইসের প্রোডাক্ট সবাই ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। 

কিন্তু একই সাথে এখানে একটি বড় রিস্ক থাকে। সেটি হলো যখন প্রোডাক্টের প্রাইস কম থাকে, তখন সেটির কোয়ালিটি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। অনেক সময় আপনারা বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে যে কম টাকায় অনেকগুলো আইটেমের  অফার দেখতে পান, সেটি প্রাইস বেজড পজিশনিং স্ট্র্যাটেজির এক্সাম্পল৷ এসব খাবারের দাম অ্যাফোর্ডেবল ঠিকই, কিন্তু খাবারের কোয়ালিটি কতটুকু মেইনটেইন করা হয় সেই বিসয়ে কাস্টমারদের মনে সন্দেহের উদ্রেগ হতে পারে।

ব্র্যান্ড পজিশনিং কিভাবে করা যায়? 

১। নিজের বর্তমান পজিশনিং আইডেন্টিফাই করা

সঠিকভাবে ব্র্যান্ড পজিশনিং করা কখনোই সম্ভব নয় যদি একটি ব্র‍্যান্ড বুঝতেই না পারে যে সেটি বর্তমানে কোন পজিশনে রয়েছে। কারণ বর্তমান পজিশন বুঝে সে অনুযায়ী পজিশনিংয়ের স্ট্র্যাটেজি বিল্ডআপ করতে হয়। একারণে শুরুতেই বোঝার চেষ্টা করুন আপনার ব্র্যান্ডকে কাস্টমার কিভাবে দেখে। 

এখন প্রশ্ন হলো এটি বুঝবেন কিভাবে? 

এটি বোঝার জন্য শুরুতেই আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কারা তা ডিফাইন করুন। টার্গেট অডিয়েন্স হচ্ছে সেসব মানুষ যাদেরকে টার্গেট করে আপনার ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট ডিজাইন করা হয়। 

এরপর আপনার কাস্টমার কারা সেটি আইডেন্টিফাই করুন এবং দেখুন যে তারা আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের সাথে যাচ্ছে কিনা। একইসাথে  কাস্টমারদের সামনে আপনার ব্র্যান্ড ভ্যালু বা ইমেজ কতটুকু সেটিও বোঝার চেষ্টা করুন। কাস্টমার ফিডব্যাক বা সার্ভে দ্বারা বুঝতে পারবেন যে আপনার বর্তমান ব্র্যান্ড পজিশনিং কতটুকু শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে।

২। কম্পিটিটর অ্যানালাইসিস করা

ইফেকটিভ ভাবে ব্র্যান্ড পজিশনিং করতে হলে যে কাজটি অবশ্যই করতে হবে সেটি হচ্ছে কম্পিটিটর অ্যানালাইসিস। এটি করতে হলে আপনার ব্র্যান্ডের যে কম্পিটিটর ব্র‍্যান্ডগুলো রয়েছে সেগুলোর মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি, সোশাল মিডিয়া প্রেজেন্স,  কাস্টমার সার্ভিস ইত্যাদি সম্পর্কে রিসার্চ করুন৷  

এক্ষেত্রে নিজ ও  কম্পিটিটর ব্র্যান্ডগুলোর SWOT অ্যানালাইসিস করা আবশ্যক৷ এটি করার মাধ্যমে নিজের ও কম্পিটিটরদের স্ট্রেন্থ, উইটনেস, অপোরচুনিটি ও থ্রেট  বুঝতে পারবেন। তারপর সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে তুলনা করে বুঝতে পারবেন যে আপনার ব্র্যান্ডের পজিশন ঠিক কোথায়।

৩। নিজের ব্র্যান্ডের ইউনিক দিকগুলো আইডেন্টিফাই করা

কম্পিটিটর অ্যানালাইসিস করার পর আপনি  আইডিয়া পেয়ে যাবেন আপনার ব্র‍্যান্ডের পজিশন সম্পর্কে। তাই এরপরের স্টেপটি হচ্ছে নিজের ব্র্যান্ডের ইউনিক ফিচারগুলো ফাইন্ড আউট করে ফেলা। সবসময় মনে রাখবেন ব্র্যান্ড পজিশনিং করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেপটি হচ্ছে নিজের ব্র্যান্ডের যে ইউনিক ফিচারগুলো রয়েছে সেগুলো কাস্টমারদের সামনে প্রেজেন্ট করা৷ কারণ ওই ইউনিক ফিচারগুলোর মাধ্যমেই কাস্টমারদের মনে সেই ব্র্যান্ডের কনসেপ্ট বা ইমেজ ক্রিয়েট হয়৷  

এক্ষেত্রে হতেই পারে যেগুলো আপনার কম্পিটিটরের উইকনেস সেগুলোই হয়তো আপনার ব্র্যান্ডের স্ট্রেন্থ। যদি এমন হয় তাহলে সেই স্ট্রেন্থ কাজে লাগাতে হবে। এই ধাপে একইসাথে ডিসাইড করে ফেলুন যে কোন ধরণের ব্র‍্যান্ড পজিশনিংয়ের স্ট্র‍্যাটেজি ফলো করবেন। যে চার ধরণের স্ট্র‍্যাটেজির ব্যাপারে উল্লেখ করেছি চাইলে সেখান থেকে নিজের স্ট্রেন্থ অনুযায়ী একটি বেছে নিতে পারেন।

৪। ব্র্যান্ড পজিশনিং স্টেটমেন্ট ক্রিয়েট করা

প্রশ্ন হচ্ছে, “ব্র্যান্ড পজিশনিং স্টেটমেন্ট কি? ” ব্র্যান্ড পজিশনিং স্টেটমেন্ট  এক ধরণের স্পেশাল ডকুমেন্ট। এই ডকুমেন্টে কোনো একটি ব্র‍্যান্ডের পজিশনিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমন কিছু তথ্য বিদ্যমান থাকে। এটি  কোম্পানির মিশন, ভিশন এবং ফিউচার কন্ট্রিবিউশন বিষয়ে কাস্টমারদের পরিষ্কার তথ্য দেয়। 

ব্র‍্যান্ড পজিশনিং স্টেটমেন্টে কোনো ব্র‍্যান্ডের টার্গেট অডিয়েন্স কারা সে সম্পর্কে ডিটেইলে মেনশন করা হয়। পাশাপাশি সেই ব্র‍্যান্ডের প্রোডাক্টের ইউনিক ফিচার ও কিভাবে সেই প্রোডাক্টটি কাস্টমারদের বেনিফিট এনে দিতে পারে সেগুলোও ইনক্লুড করা হয়৷ একইসাথে এই অফার করা বেনিফিটগুলোর অথেন্টিসিটি নিশ্চিত করে।এই স্টেটমেন্ট বানানোর সময় একজন পটেনশিয়াল কাস্টমারের মনে সেই ব্র্যান্ড সম্পর্কে যেসব প্রশ্ন আসতে পারে সেগুলো মাথায় রেখেই এই স্টেটমেন্ট ডিজাইন করা হয়।

৫। ব্র‍্যান্ড পজিশনিংয়ের জন্য কাজ শুরু করা 

ব্র্যান্ড পজিশনিং একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এর গাইড লাইন একবার রেডি হয়ে যাবার পরে সে গাইডলাইন ফলো করে স্টেপ বাই স্টেপ কাজ করতে হবে। প্রতিটি স্টেপ এর জন্য কেপিআই নির্ধারণ করবেন।  নির্দিষ্ট সময় পর পর ব্র্যান্ডের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পেতে কৌশল ওগাইড লাইন রিভিউ করতে পারেন।  খেয়াল রাখবেন আপনার ব্রান্ডের কার্যক্রম যেন কোনোভাবেই আপনার কমিটমেন্টকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে।

পরিশেষে

এখন ব্র্যান্ড পজিশনিং সাকসেসফুল কিনা সেটি কিভাবে বুঝবেন? এটি বোঝার জন্য কাস্টমারদের দিকে তাকাতে হবে। যদি দেখতে পান কাস্টমাররা আপনার ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট আগের চাইতে বেশি পারচেজ করছে, তাহলে বুঝতে হবে আপনার ব্র্যান্ড পজিশনিং সাকসেসফুল। এছাড়াও যদি দেখতে পান ব্র্যান্ডের মার্কেটিং ক্যাম্পেইনগুলো আগের থেকে বেশি সাকসেস পাচ্ছে, তাহলেও ব্র্যান্ড পজিশনিং সঠিক পথে আছে  বলে ধরে নেয়া হয়।

ব্র্যান্ড পজিশনিং নিয়ে আমেরিকান উদ্যোক্তা ও লেখিকা Lisa Gansky এর এই উক্তিটি ব্র্যান্ড পজিশনিং এর মর্মার্থ কে যথার্থ ভাবে উপস্থাপন করে,  “A brand is a voice and a product is a souvenir”

কেস স্টাডি: ফেসবুক অ্যাড দ্বারা একটি ই-কমার্স ব্র্যান্ড কিভাবে মিলিয়ন ডলার সেল করেছিলো

কেস স্টাডি: ফেসবুক অ্যাড দ্বারা একটি ই-কমার্স ব্র্যান্ড কিভাবে মিলিয়ন ডলার সেল করেছিলো

প্রতিটি ই-কমার্স ব্র্যান্ড চায় তাদের মার্কেটিং টিম যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিজনেসটিকে বড় করে তুলতে পারে। এটি শুনতে খুবই সহজ মনে হলেও বাস্তবিক অর্থে এটি করা  অত্যন্ত কঠিন একটি প্রক্রিয়া। 

যখন প্রশ্ন আসে ফেসবুকের মাধ্যমে একটি ই-কমার্স ব্র্যান্ডের সেল বাড়ানোর  প্রক্রিয়ার কথা, সেখানে মূল আলোচনায় চলে আসে এর বিপরীতে কি পরিমান অর্থ খরচ করতে হয়েছে সেটি? 

আজকে এমনই একটি ই-কমার্স বিজনেসের ফেসবুক মার্কেটিং কেস স্টাডি নিয়ে আলোচনা করবো, যারা দাবি করে ফেসবুক এডের মাধ্যমে ৫.৪ গুণ বেশি সেল নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।  তারা এ পর্যন্ত প্রায় ১.৬ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি সেল করেছে এবং এটি এখনো চলমান।

এই কেস স্টাডিতে দেখানো হয়েছে বিগত ১২ মাসে কোন কৌশল ফলো করে তারা এই রেজাল্ট নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে এবং সেই একই কৌশল ফলো করে অন্য কাস্টমারদের জন্য আরও ৪.৫ মিলিয়ন ডলার পরিমাণ তারা  বিক্রি করেছে ।  

ই-কমার্স মার্কেটিং কেস স্টাডিতে রয়েছে,

  • ৯২০০০ কাস্টমারকে নিয়ে তৈরি একটি স্ট্রাকচার এবং কিভাবে সে ক্যাম্পেইনের জন্য অ্যাড বাজেট পার-ডে ৩০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২০০০ ডলার এ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।  
  • ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে প্রবেশের জন্য ক্যাম্পেইনের জন্য ডিটেইলস প্রসেস।  
  • এবং প্রথম দিন থেকেই সেল পাবার জন্য কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে সে বিষয়টি। 

অ্যাড খরচ একই রেখে তারা কিভাবে ১১৮ শতাংশ সেল বাড়াতে সক্ষম হলো? শুনবো তাদের থেকে। 

এজেন্সি socialshepherd.com কে হায়ার করার পূর্বে ক্লাইন্ট ভিন্ন মার্কেটিং এজেন্সি দ্বারা ফেসবুকে অ্যাড দিয়ে আসছিলো। তারা সেখান থেকে সেল পাচ্ছিলো না এমন বিষয় নয়, কিন্তু তাদের ক্যাম্পেইন স্ট্রাকচারে কিছু ভুল থাকায় তারা চেষ্টা করেও এই চেয়ে বেশি ফলাফল নিয়ে আসতে পারছিল না। 

আর সেখানেই এজেন্সি socialshepherd.com তার দক্ষতার প্রমাণ দেয়। তারা যখন ব্র্যান্ডটিকে অনবোর্ড করে তারপরেই সেলের পরিমাণ প্রায় ১১৮ শতাংশ বেড়ে যায়।

এটি সম্ভব করতে তারা ফাইভ স্টেপ স্ট্র্যাটেজি নিয়েছিলো। 

তারা …  

  1. ই-কমার্স ফেসবুক অ্যাড ফানেল স্ট্রাকচার পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো।  
  2. টার্গেটিং গুলোকে আরো বেশি প্রিসাইজ করেছিলো।  
  3. অ্যাড সেটস এক্সক্লুশন সঠিক নিয়মে করেছে।   
  4. অ্যাডগুলোকে প্রফিটেবল করার জন্য স্কেলিং প্রসেস শুরু করা করেছিলো।  
  5. এবং তারা  ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ এবং লোকালাইজেশন এর উপর গুরুত্ব দিয়েছিলো।   

কিভাবে তারা এটি বাস্তবায়ন করলো, চলুন জানি তাদের অভিজ্ঞতা , 

একটি ব্র্যান্ডের তিন ধরনের কাস্টমার থাকে, 

  1. যারা ব্র্যান্ড সম্পর্কে জানেনা, 
  2. যাদের ব্র্যান্ড সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা রয়েছে এবং 
  3. যারা ব্র্যান্ডের লয়াল কাস্টমার। 

এই তিন ধরনের কাস্টমারের ওপর নির্ভর করে তারা  অ্যাড বাজেট ভাগ করেছিলো  তিন ভাবে। 

  1. ৮৫% বাজেট টপ অফ দা ফানেলেঃ এই বাজেট তাদের জন্য যারা ব্যান্ড সম্পর্কে ইতিপূর্বে জানেনা এবং তাদেরকে আওয়ার করার জন্য এ বাজেট খরচ করা হয়। 
  2. ১০% বাজেট ছিল মিডিল অফ দা ফানেলেঃ এই বাজেট সেই সকল মানুষদেরকে এঙ্গেজ রাখার জন্য যারা ব্র্যান্ড সম্পর্কে মাত্র জেনেছে এবং আরও তথ্য পাবার জন্য তারা চেষ্টা করছে। 
  3. ৫% বাজেট ছিল বোটম অফ  দা ফানেলেঃ অর্থাৎ যারা  রিপিট পারচেস করার পরিকল্পনা করছে। 

এটি ছিলো তাদের  ফেসবুক এড ফানেলের স্ট্রাকচার। 

সেলস ফানেলের উপর নির্ভর করে তাদের অডিয়েন্স টার্গেটিং ?

সবগুলো অডিয়েন্স ওয়েবসাইটে পাঠানো হলেও শুধুমাত্র ওয়েবসাইট ট্রাফিক এর উপর নির্ভর করে সবগুলো অডিয়েন্সকে ট্র্যাক করা হয়নি। তারা ট্রাকিং করেছে কাস্টমারদের বিহেভিয়ার।

আরো পড়ুনঃ

কিভাবে ফেসবুক অ্যাড এর জন্য হাই পারফর্মিং কোল্ড অডিয়েন্স গ্রুপ খুঁজে পাবেন

তারা তিন ধরনের ফানেল থেকে ভিন্ন ভিন্ন প্যারামিটারে এনগেজমেন্ট ট্র্যাক করেছে। কিভাবে?  

টপ অফ দা ফানেল টার্গেটিং

টপ অফ ফানেল সম্পর্কে আমরা ইতিপূর্বে জেনেছি যারা ব্র্যান্ড সম্পর্কে ইতিপূর্বে জানেনা তাদের জন্যই এই ফানেলের সমস্ত কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই স্টেজে মার্কেটিং করার কয়েক রকমের পদ্ধতি রয়েছে, যেমন ব্রড টার্গেটিং, কাস্টমার লিস্ট এর উপর নির্ভর করে লুকালাইক অডিয়েন্স ইত্যাদি। 

লুকালাইক অডিয়েন্সের ক্ষেত্রে তারা সর্বদা ১ থেকে ১০ শতাংশ অডিয়েন্সকে বেছে নিয়েছে। তারা স্পেসিফিক অডিয়েন্সকে রিচ করতে কম অডিয়েন্স সিলেকশন রেঞ্জ যতটা পারা যায়  কম রাখার চেষ্টা করেছে। 

তারা এই টার্গেটগুলো তৈরি করেছে  তিনটি গ্রুপের ওপর নির্ভর করে,

  • প্রথমতঃ যারা অলরেডি কেনাকাটা করে ফেলেছে 
  • দ্বিতীয়তঃ যারা শপিং কার্টে প্রোডাক্ট যোগ করেছে এবং 
  • তৃতীয়তঃ যারা ওয়েব সাইটের কোন বা কোন কনটেন্ট ভিউ করেছে। 

লুকালাইক অডিয়েন্সদের সবচেয়ে ইফেক্টিভ অডিয়েন্স হিসেবে মনে করা হয়। কারণ বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে অন্য সকল অডিয়েন্সদের মধ্যে লুকালাইক সবচেয়ে বেশি ইফেক্টিভ যা সিমিলার অডিয়েন্সদের ডাটা পর্যালোচনা করে একই ধরনের নতুন কাস্টমারকে খুঁজে পেতে সাহায্য করে। 

এই স্টেজে তারা  চেষ্টা করেছে  ক্যাম্পেইন স্ট্রাকচারকে ক্লিন এবং মিনিমাল রাখার জন্য, যাতে করে খুব সহজেই উইনিং অ্যাড সেট গুলো খুঁজে পেতে সহজ হয়। টপ অব দ্যা ফাইনাল এর ক্ষেত্রে প্রতিটি অ্যাড সেট আলাদা ভাবে তৈরি করে প্রতিটির জন্য ক্রিয়েটিভ মাল্টিপল দিতে হয়। 

যেমনঃ প্রতিটি অ্যাড সেটের জন্য একটি কারজাল, তিনটি সিঙ্গেল ইমেজ এবং একটি ভিডিও যার তিনটি আলাদা থাম্বনিল ভ্যারিয়েশন থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

ডায়নামিক অ্যাড এর মাধ্যমে ফেসবুক বিভিন্ন রকম কম্বিনেশনে একটি এড অডিয়েন্সকে দেখাতে থাকে এবং যার মধ্য থেকে কাস্টমারদের পছন্দের এডে সে এঙ্গেজ হয় এবং এই ভ্যারিয়েশন গুলো ফেসবুক অটোমেটিকভাবে অ্যালগরিদম থেকে তথ্য নিয়ে করতে থাকে। 

মিডিল অফ দা ফানেল টার্গেটিং 

এই স্টেজের টার্গেটিং নির্ভর করে টপ অফ দা ফানেলের টার্গেটিং করার পরে এঙ্গেজ অডিয়েন্সের উপরে যেমনঃ 

  • আপনার ভিডিও অ্যাড যারা ২৫ শতাংশ দেখেছে এমন অডিয়েন্সের ৩০ দিনের এঙ্গেজমেন্ট 
  • অথবা ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে বিগত ৩০ দিনে যারা এঙ্গেজ ছিলো 
  • অথবা বিগত ৩০ দিনে যারা আপনার ওয়েব সাইট বা পেইজ ভিজিট করেছে 

এই সময়ে এদেরকে নিয়ে এমন কিছু ক্রিয়েটিভ তৈরি করতে হয় যা তাদের প্রোডাক্ট কেনাকাটা করতে উৎসাহিত করে,socialshepherd.com এই কাজ সঠিক উপায়ে করে। মনে রাখা ভালো  বন্ধুদের রেফারেন্স, অথবা রিভিউ অত্যন্ত এই স্টেজে অতি গুরুত্বপূর্ণ।

 

বটম অফ দা ফাইল টার্গেটিং

এটি স্টেজে সবাইকে টার্গেট করা যাবে না। যারা আপনার প্রোডাক্ট মাল্টিপল টাইম দেখেছে, কন্টেন গুলোর সাথে এঙ্গেজ ছিলো এবং ওয়েবসাইটের শপিং কার্ট এ প্রোডাক্ট অ্যাড করেছে কিন্তু পারচেস সম্পন্ন করে নাই এমন অডিয়েন্সদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

তারপরেও কেউ কেনার আগে আপনাকে প্রশ্ন করবেনা সেটি ভাবার কারণ নেই। কাস্টমারদের শেষ মুহূর্তও প্রশ্ন থাকে। এই স্টেজে দুর্দান্ত অফার এবং ভালুএডিশন প্রোডাক্টের সবচেয়ে বেশি কার্যকর ফিচার যা কাস্টমারদের পারচেজ সম্পন্ন করাতে প্রোভক করে।

অডিয়েন্স এক্সক্লুশন 

তারা যখন টপ অব দ্যা ফানেলে একটি কন্টেন প্রোমট করেছে  তখন সেটির সাথে যারা এঙ্গেজ হচ্ছে পরবর্তী ক্যাম্পেইনে যদি আবার টপ অফ দা ফাইনাল প্রমোশন চালায় তবে সম্ভবনা থাকে একই অডিয়েন্স বারবার এটি দেখতে পাবে।  

এ সকল ক্ষেত্রে টপ অব দ্যা ফানেল থেকে সেই এঙ্গেজড অডিয়েন্সদের এক্সক্লুড করে দিলে সেই অ্যাড আরও বেশি ইফেক্টিভ হয়। 

অফার ডিজাইনের ক্ষেত্রেও একই কাজ করতে হয়। আপনি যখন অফার ডিজাইন করছেন তখন অলরেডি এঙ্গেজড অডিয়েন্সদের এক্সক্লুড করে অফারটি প্রমোট করেন, তবে ইউনিক কাস্টমার পাবার সম্ভাবনা বাড়বে। 

আর এটি না করে অ্যাড সেট তৈরি করলে অডিয়েন্স অভারলাপ করবে।

অ্যাড স্কেলিং প্রসেস 

ই-কমার্স বিজনেসে প্রতিবার অ্যাড পরিচালনা করার সময় তারা  টার্গেটিং গুলোকে অল্প অল্প করে পরিবর্তন করেছে  যেমন, লুকালাইক অডিয়েন্সে নির্ধারণ করেছিলো  ০ টু ১০% এরপরে আমরা সেটি ১০ টু ২০%, পরেরবার ২০ টু ৩০% এভাবে। 

একইভাবে তারা প্রতিবার টপ অব দ্যা ফানেল টার্গেটিং করার সময় সেটি থেকে মিডিল অব দ্যা ফানেলের অডিয়েন্সকে বাদ দিয়েছে। একই সাথে বাজেট  ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করেছে। 

কারণ একই গ্রুপে যখন একাধিকবার অ্যাড পরিচালনা করা হয়, তখন তার সিপিসি বাড়তে থাকে। আর এভাবেই তারা  ধীরে ধীরে  আরো বেশি ইফেক্টিভ উপায়ে অ্যাডটিকে স্কেলিংআপ করেছে।

ফাইন টিউন অ্যাড কপি 

তারা যখন অডিয়েন্স সিলেকশন আরো বড় করেছে  তখন অডিয়েন্স সাইজ যত বড় হয়েছে,  ততো নতুন ধরনের কাস্টমার আপনার ব্র্যান্ডের সাথে ইন্টারএ্যাক্ট করেছে। সে ক্ষেত্রে পুরনো এড কপিগুলো তাদের পছন্দ নাও হতে পারে। তাই এড কপিগুলো পরিবর্তন করেছে  প্রয়োজন অনুযায়ী। 

অ্যাড কপিগুলো পরিবর্তনের জন্য কি ধরনের মেসেজ তাদেরকে দিবেন এটি নির্ভর করবে তারা কি পছন্দ করছে তার ওপরে। এবং একটি বোঝার জন্য সহজ পদ্ধতি হচ্ছে তারা পূর্ববর্তী এড গুলোর নিচে কি ধরনের কমেন্ট করেছিল, তারা কি জানতে চেয়েছিল এবং তারা কি প্রত্যাশা করছে সেগুলো খেয়াল করা।  এবং আমরা সেটি অনুসরন করে নতুন এড কপি তৈরি করেছি। অডিয়েন্স সেটি পছন্দ করেছে। 

টেস্ট টেস্ট এবং টেস্ট 

অ্যাড টার্গেটিং এবং অ্যাড কপিগুলো প্রতিটি ক্যাম্পেইনে সফলভাবে কাজ নাও করতে পারে। সেক্ষেত্রে কোন অডিয়েন্স কোন ধরনের মেসেজ পছন্দ করছে বা কোন টার্গেট অডিয়েন্স আপনার ব্র্যান্ডের জন্য বেশি ইফেক্টিভ মনে হচ্ছে সেটি পরীক্ষা করতে হবে প্রতিনিয়ত। তারা  অ্যাড কপি ও টার্গেট অডিয়েন্স টেস্ট করার দিকে মনযোগ দিয়েছিলো। 

সেখান থেকে উইনিং টার্গেট গ্রুপ এবং অ্যাড কপি আলাদা করে  পরবর্তী এড ক্যাম্পেইন পরিচালনা করার সময় ব্যবহার করেছে যা তাদের আরও ইফেক্টিভ এবং প্রফিটেবল এড ক্যাম্পেইন তৈরি করতে সাহায্য করেছে।  

টেস্টের জন্য বার্ন করা বাজেট মোটেও বাজে খরচ নয় বরং সেটি আপনাকে আরো সুনির্দিষ্টভাবে রেজাল্ট পেতে সহায়তা করে।

পরিশেষে

একটি ই-কমার্স ব্র্যান্ডের চারগুণ রিটার্ন অফ ইনভেসমেন্ট প্রত্যাশা করা মোটেও কাল্পনিক কোনো বিষয় নয়। আপনি যদি সঠিকভাবে অ্যান্ড স্ট্রাকচার তৈরি করেন এবং এড ক্যাম্পেইন গুলোকে প্রতিনিয়ত অপটিমাইজ করে সঠিক টার্গেট অডিয়েন্স দের কাছে নিয়ে যেতে পারেন। ভাবছেন আপনি এই কাজটি করতে পারবেন কি না ?  আপনিও এমন প্রত্যাশা করতেই পারেন।

৪ টি অনলাইন মার্কেটিং সাকসেস স্টোরি যা ব্র্যান্ড তৈরিতে অনুপ্রেরনা যোগায়

৪ টি অনলাইন মার্কেটিং সাকসেস স্টোরি যা ব্র্যান্ড তৈরিতে অনুপ্রেরনা যোগায়

সফলতা পেতে চাইলে সফলদের দিকে তাকাতে হয়। আজ আপনাদের সাথে এমনই ৪ টি মার্কেটিং সাকসেস স্টোরি শেয়ার করবো যা অনলাইন মার্কেটিং বিষয়ে আপনাকে নতুন ভাবে চিন্তা করতে সাহায্য করবে।   

সাফল্য এত সহজ বিষয় নয় যতটা সহজ আমরা মনে করি. লেখাপড়া, জীবন অথবা বিজনেস আপনি যেখানেই সফল হতে চাইবেন, তার বিপরীতে আপনাকে প্রচুর শ্রম দিতে হবে।

প্রশ্ন আসে – শুধু পরিশ্রম করলেই কি সফলতা আসবে? উত্তর: না! আপনাকে সঠিক উপায়ে পরিশ্রম করতে হবে। 

আমরা এমন কিছু ব্র্যান্ডের সাকসেস স্টোরি নিয়ে আলোচনা করবো, যারা তাদের ব্র্যান্ডকে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন ক্রমাগত পরিবর্তন, পরিশ্রম এবং ট্রেন্ডকে ফলো করে। 

Kylie Cosmetics

 

 

কাইলি জেনার বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ড Kylie Cosmetics এর প্রতিষ্ঠাতা। বিশ্ব বিখ্যাত ম্যাগাজিন Forbs এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী কাইলি জেনার ২০০৮ সালের বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ বিলেনিয়ার। 

যদিও এই তথ্য নিয়ে কিছুটা মতবিরোধ আছে তারপরও ধারনা করা হয়  তার মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার। 

কিভাবে তিনি শুরুটা করলেন? 

গেইম অফ পার্সোনাল ব্র্যান্ডি

একটি ফ্যামিলি রিয়েলিটি শো থেকে তার এগিয়ে চলা শুরু।  ব্যক্তিগত রিয়ালিটি শো Keeping Up with the Kardashians তাকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে আনতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে। 

একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায় তিনি সেই শো এর জন্য প্রতি এপিসোডে ৫ লক্ষ ডলার পারিশ্রমিক নিতেন। 

তিনি তার ব্র্যান্ডের স্ট্যাটিজিক মার্কেটিং এক্টিভিটিস এর অংশ হিসাবে তিনি পুমার সাথে কলাবরেশন করেন। এটি তার ইনস্টাগ্রাম একাউন্টকে ওয়ার্ল্ডের টপ ফাইভ পপুলার ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট এর মর্যাদা নিয়ে এসে দেয়। 

বর্তমানে তিনি বিয়োন্সি, নাইকি এবং লিওনেল মেসির চেয়েও এগিয়ে রয়েছেন ফলোয়ার এর দিক থেকে।

পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং কেইলি জেনারের ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায় উন্নতির একটি অন্যতম স্ট্র্যাটেজিক ভিউ পয়েন্ট।  তার প্রমোদ ভ্রমণ এবং লাক্সারি প্রোডাক্টের শো অফ ধীরে ধীরে তার ব্র্যান্ড ইমেজকে ওয়ার্ল্ড এর অন্যতম লাক্সারি ব্র্যান্ড হিসেবে তৈরি করতে সহায়তা করেছে। 

কেইলি জেনার ওয়ার্ল্ডের মধ্যে কসমেটিক এন্ড ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে একজন শক্তিশালী নাম, যার ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট ২১৫ মিলিয়নের ও বেশি ফলোয়ার রয়েছে। 

কেইলি জেনার এর সফলতার সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াতে তার শক্ত অবস্থান। কিন্তু অনেক উদ্যোক্তা মনে করেন শুধুমাত্র ব্র্যান্ড পেইজের পপুলারিটি ব্র্যান্ড বিল্ডিংএর শেষ কথা তবে এই ধারনা ভুল।  

যদি কেইলি জেনারের দিকে খেয়াল করি, তবে একটা বিষয় অত্যন্ত পরিষ্কার ভাবে বোঝা যায়, সোশ্যাল মিডিয়ার ফ্যান ফলোয়ার ও তার পার্সোনাল ব্র্যান্ড ইমেজ কেইলি জেনারের বিজনেসের উত্থানের জন্য সবচেয়ে যে বিষয়টি শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছে। 

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও এমন অনেক পার্সোনাল ব্র্যান্ড আমরা খুঁজে পায়। যাদের বিজনেসের  উত্থানে  পার্সোনাল ব্র্যান্ডি ভূমিকা রেখেছে।  

জিম শার্ক 


জিম শার্ক একটি ব্রিটিশ ক্লথিং মেনুফেকচারিং কোম্পানি। তারা ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের জন্য স্পোর্টস ক্লথ তৈরি করে থাকেন। যেমনঃ লেগিংস, টি-শার্ট, স্পোর্টস ব্রা, হ্যাট, ক্যাপ ইত্যাদি। তাদের প্রোডাক্ট বিশ্বের ১৩১  টি দেশে সেল করা হয়। 

জিম শার্কের প্রতিষ্ঠাতা বেন ফ্রান্সিস একটি নির্দিষ্ট টার্গেট অডিয়েন্সকে নিয়ে কাজ শুরু করেন। তিনি ১৮ থেকে ২৫ বছরের এমন ছেলে মেয়েদের টার্গেট করেছেন, যারা ফিজিক্যাল ফিটনেস ভালোবাসে। 

বেন ফ্রান্সিস শুধুমাত্র প্রোডাক্ট সেল করার উদ্দেশ্যে তৈরি করেননি, তিনি টার্গেট অডিয়েন্সদের ফিজিক্যাল ফিটনেসে উৎসাহিত করেছেন।

“It takes zero talent to work hard and zero talent to stay humble. If you get those things right, you will always do well in your journey.”

Steve Hewitt, Gymshark’s CEO

বিশ্বে ফিটনেস মার্কেট শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত, তারপরেও Influencer Marketing স্ট্রাটেজি এই বিজনেসের জন্য দারুণ প্রভাব বিস্তার করে। 

medium.com এর একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ৪৯ শতাংশ কনজিউমার ইনফ্লুয়েন্সারদের রিকমেন্ডেশন এর ওপরে নির্ভর করে এবং ৪০ শতাংশের বেশি কাস্টমার পারচেজ করে ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউবে তাদের পোস্ট দেখে। 

আর ঠিক এই কারনে ইনফ্লুয়েন্সার কোলাবরেশনের জন্য জিম শার্ক ইন্ডাস্ট্রির অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে ছিল। বেন ফ্রান্সিস এবং তার বন্ধুরা এমন সব মানুষদের খুঁজে বের করা শুরু করলো যারা বডিবিল্ডিং এর জন্য বিখ্যাত। যেমন, Lex Griffin and Chris Lavado

বেন ফ্রান্সিস প্রোডাক্টের ফ্রী সিম্পল তাদের পাঠালো এবং তাদের অনুরোধ করলো সেগুলো পরে ভিডিও তৈরি করে সোশ্যাল আসতে।  

বেন ফ্রান্সিস এই বিষয়ে তার একটি ভিডিওতে বলেন,  

“At the time, no one else was doing [influencer marketing]. It came totally naturally to us because we were just fans of the guys.”

জিম শার্ক  ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং ডেভলপ করার জন্য কন্টিনিয়াসলি সেই সকল সেলিব্রেটিদের প্রোডাক্ট স্যাম্পল পাঠাচ্ছিল যারা ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে অনেক বেশি পপুলার। তাদের এই কৌশল জিম শার্ক ব্র্যান্ডটিকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়।  

জিম শার্ক এর কন্টাক্ট মার্কেটিং এর কিছু উদাহরণ,

এছাড়াও জিম শার্ক অফিশিয়াল ব্লগের মাধ্যমে তাদের কনজিউমারদের  সাথে একটি কমিউনিকেশন ব্রিজ তৈরি করেছিল। ব্লগে হেলদি লাইফ স্টাইল, ফুড রেসিপি, ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি সংক্রান্ত হাই কোয়ালিটি আর্টিকেল শেয়ার করার মাধ্যমে আরও বেশি ট্রাফিক তাদের ওয়েবসাইটে নিয়ে আসছিল।

এটি তাদের ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস তৈরি করে এবং ফলাফল হিসেবে তাদের পজিটিভ সেলস গ্রোথ নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়।

ফিটনেস ইন্ডাস্ট্রির জন্য কন্টেন্ট মার্কেটিং প্ল্যান খুব সিম্পল। কিছু নির্দিষ্ট টপিক এর ওপরে আপনি যদি নিয়মিত কাজ করে যান তাহলে দিন শেষে কাঙ্খিত ফলাফল পাবেন।  

Ikea

আমাদের রুমে থাকা সোফাটি কি দিয়ে তৈরি বা কিভাবে তৈরি এই বিষয়ে আমাদের খুব বেশি আগ্রহ নেই। কিন্তু তারপরেও আমাদের প্রায় প্রত্যেকের রুমে একটি সোফা সেট রয়েছে। 

তাহলে কিভাবে একটি ফার্নিচার কোম্পানি তাদের প্রোডাক্ট এর অ্যাডভার্টাইজ করবে যা তাদের বিজনেস বাড়াতে সাহায্য করবে? 

এই জায়গাতেই বিশ্বের এই সেরা ফার্নিচার প্রস্তুতকারক কোম্পানি বাজিমাত করেছে। তারা বুঝতে পেরেছে সাধারণ প্রচলিত পন্থায় ফার্ণিচারের বিজ্ঞাপন কাস্টমার খুব বেশি আকৃষ্ট করে না।  

প্রয়োজন কাস্টমারের সমস্যাগুলো সমাধান করা এবং সমস্যার সমাধান গুলো ইন্টারেস্টিং উপায়ে অডিয়েন্সদের সামনে তুলে ধরা। তাই তারা অ্যাডভান্স টেকনোলজি ট্রেন্ডস ফলো করার পরিকল্পনা করে অডিয়েন্সদের সাথে এঙ্গেজ হওয়ার জন্য। 

তাদের একটি বিজ্ঞাপন “স্কয়ার মিটার চ্যালেঞ্জ” এই ভিডিওতে দেখানো হয়েছে কিভাবে ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসা পরিবারগুলো একটা রুমের মধ্যে তাদের সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অরগানাইজ ভাবে রাখতে পারে।

ভিডিও দেখুন, 

Square Metre Challenge 

 

অর্থাৎ কাস্টমার যেন তাদের রুমের প্রতিটি স্কয়ার মিটার ইফেক্টিভলি ব্যবহার করতে পারেন এবং তাদের এই ভিডিওগুলো সিরিজ আকারে তাদের ইউটিউব চ্যানেল, ব্লগ পোস্ট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে গেছে। 

Augmented Reality (AR)

Ikea তাদের প্রোডাক্ট মার্কেটিং করার জন্য অগমেন্টেড রিয়েলিটি কে ব্যবহার করেছে। এই টেকনোলজি কয়েকটি ছবিকে একসাথে জুড়ে আপনার সামনে তিনি 3D ভার্চুয়াল ইমেজ হিসেবে উপস্থাপন করতে পারে। 

যেখানে আপনি একটি পার্টিকুলার ফার্নিচার আপনার রুমে বাস্তবে কেমন দেখাবে সেটি ফিল করতে পারবেন। এছাড়াও 3D ইমেজ আপনাকে রিয়েল সাইজ এর ধারণা দিবে। 

Ikea  এই  অগমেন্টেড রিয়েলিটি অ্যাপ কাস্টমারদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে তোলে এবং তাদের পছন্দ কে সহজতর করে তোলে। আর এভাবেই একটি বোরিং ইন্ডাস্ট্রির মার্কেটিং ও এডভারটাইজিং কে টেকনোলজির সাহায্যে আরও বেশি ইন্টারেস্টিং করে তুলতে সক্ষম হয়। 

এটি তাদের সেলস অনেকগুলে বাড়িয়ে তোলে।    

 

 

রোলেক্স

রোলেক্স বিশ্বের অন্যতম লাক্সারি ব্র্যান্ডের মধ্যে অন্যতম যারা লাক্সারি ঘড়ি তৈরির জন্য বিখ্যাত। আপনারা জেনে খুশি হবেন এই লাক্সারি সুইস ব্র্যান্ড ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি তাদের মার্কেটিং প্ল্যানে যুক্ত করে। 

কিভাবে তারা ব্র্যান্ড পারসোনালিটি তৈরি করেছে? 

কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকেই তাদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর নির্বাচনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে। যেহেতু তাদের ব্র্যান্ড লাক্সারি এবং লাইফ স্টাইলকে প্রমোট করে, তাই তারা ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে বেছে নিয়েছে বিখ্যাত টেনিস তারকা রজার ফেদেরারকে।

কিন্তু কেন তারা এতো সেলিব্রেটি থাকতে টেনিস তারকা রজার ফেদেরারকে বেছে নিলেন? 

 

রজার ফেদেরার খেলার মাঠের বাইরে অত্যন্ত ক্লাসি এবং স্টাইলিশ একজন মানুষ। তার ইমেজ এই বিখ্যাত ব্র্যান্ডের সাথে যায়। 

রোলেক্স ১৯৩০ সালে থেকে মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানের সময় পর্বতারোহীদের স্পন্সর করেছে। এছাড়াও ব্র্যান্ডের লোগো মোটরস্পোর্টস, ইয়টিং ইভেন্টে স্পন্সর করে তাদের ব্র্যান্ড ভিজিবিলিতি বজায় রাখে। 

এইভাবে রোলেক্স তার দর্শন এবং মূল্যবোধের প্রতি কোন ছাড় না দিয়ে তাদের মার্কেটিং কার্যক্রম চালিয়ে যান।

Rolex Social Media Channels

রোলেক্স তাদের ব্র্যান্ডের কোর মেসেজ মাথায় রেখে মডার্ন মার্কেটিং স্ট্রাটেজিকে বেছে নিয়েছে।

ইনস্ট্রাগ্রামে রোলেক্স ঘড়ির গুলোর ছবি শোকেস করার মাধ্যমে আরো বেশি ডিটেলস এবং ডিজাইন এলিমেন্ট গুলো ভিন্ন ভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে প্রেজেন্টে করেছে। 

ইমেজগুলো মডার্ন স্টাইলে তৈরি করা যা সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে দারুণভাবে ম্যাচ করছে। 

কনটেন্ট মার্কেটিং-এ ক্ষেত্রে রোলেক্স ভাষাগত ব্যবহারের দিকে গুরুত্ব দিয়েছে। যেহেতু এটি একটি লাক্সরি ব্র্যান্ড তাই তারা অনেক সফিস্টিকেটেড ভকাবুলারি ব্যবহার করে যা কিনা হেরিটেজ এবং ট্র্যাডিশন কে ফলো করে। 

এছাড়াও তাদের মিনিমালিস্টিক ক্লাসিক ফ্রন্ট এবং ব্যাকগ্রাউন্ড কালার এর এক্সক্লুসিভনেস আরো বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে। এই মুহূর্তে তাদের ফেসবুক ফলোয়ারের সংখ্যা ৭.৫ মিলিয়নেরও বেশি।

ব্র্যান্ড তৈরির জন্য শুধু অ্যাড দিলেই হয় না। প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় এখানে গুরুত্বপূর্ণ আর রোলেক্স তাদের সেই কাজটি খুব ভালভাবেই করতে সক্ষম হয়েছে। 

পরিশেষে, 

কেস স্টাডি গুলো থেকে আপনি অনুপ্রেরণা নিতে পারেন কিভাবে ব্র্যান্ড বিল্ডিং এর জন্য নতুন কৌশল অবলম্বন করবেন। কাস্টমারদের সমস্যার জায়গাগুলো ফোকাস করে কন্টেন্ট তৈরি করে তাদের সাথে  কমিউনিকেট করবেন। যা আপনার বিজনেসের ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস তৈরীর ক্ষেত্রে আরো সুবিধা প্রদান করে।

আর্টিকেল থেকে যা শিক্ষা নেবার আছে, 

লেসন ১ঃ  অপারচুনিটি সাপোর্ট। 

নিজের পারিবারিক আর্থিক সুবিধা কেইলি জেনারকে একটি বড় জায়গায় নিজেদের সাহায্য করেছে।  অন্যভাবে বললে, কেইলি জেন তার পারিবারিক সুবিধাকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছেন, যেটা সবাই পারে না।  

লেসন ২ঃ  পার্সোনাল ব্র্যান্ড ইমেজ ম্যাটার। 

কেইলি জেনার বিজনেস ব্র্যান্ডের বাইরে নিজের পার্সোনাল ব্র্যান্ড ইমেজ ক্রিয়েট করতে পেরেছেন এবং তার ব্র্যান্ড ইমেজকে বিজনেসের জন্য কাজে লাগিয়েছেন।  

লেসন ৩ঃ পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেয়া। 

 আপনি যদি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের মাধ্যমে লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন, যে অবস্থানে থেকে শুরু করেন না কেন কেউ আপনাকে থামিয়ে রাখতে পারবে না। 

লেসন 8ঃ  বিজনেসের জন্য সঠিক নিস মার্কেট খুঁজে বের করা জরুরি। 

লেসন ৫ঃ  ট্রেন্ড এবং টেকনোলজি সম্পর্কে আপডেট । 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য ট্রেন্ড এবং টেকনোলজি দুটিই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে তার চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ আপনার বিজনেসের ভ্যালু ও কোম্পানির ইমেজ। 

লেসন ৬ঃ  কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসা। 

কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড প্রতিনিয়ত উন্নত হচ্ছে। প্রতিযোগিতার এই সময়ে আপনাকে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। প্রয়োজন অনুসারে দরকারি চ্যানেলগুলোতে উপস্থিত থাকতে হবে, যাতে করে আপনি একটি বড় অডিয়েন্স গ্রুপকে রিচ করতে পারেন। 

আমরা বিশ্বাস করি উপরে উল্লেখিত কেস স্টাডি গুলো থেকে অনুপ্রানিত হয়ে ও শিক্ষা নিয়ে বিজনেসের ইমপ্রুভমেন্ট এর জন্য কাজ করেন তবে নিশ্চিতভাবে আপনি সফলকাম হবেন। 

ফেসবুক অ্যালগরিদম কিভাবে কাজ করে এবং এর ৮ টি বেস্ট প্র্যাকটিস ২০২২

ফেসবুক অ্যালগরিদম কিভাবে কাজ করে এবং এর ৮ টি বেস্ট প্র্যাকটিস ২০২২

ফেসবুক অ্যালগরিদম কিভাবে কাজ করে জানেন কি? ফেসবুক পেজে পোস্ট করছেন কিন্তু সেটি বেশি মানুষকে রিচ করছে না অথবা অডিয়েন্স সেটির সাথে এঙ্গেজ হচ্ছে না, এমন সমস্যার মধ্য দিয়ে বর্তমানে প্রায় সবাই যাচ্ছেন।  

কিভাবে আমরা এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে পারি? এই সমস্যা কাটিয়ে উঠার উপায় কি? আমাদের কি কি বিষয়ে জানতে হবে? সে ব্যাপারে আমরা অনেকেই সঠিক তথ্য গুলো জানিনা। 

কিন্তু ফেসবুক নির্ভর বিজনেস পরিচালনার ক্ষেত্রে এই তথ্যগুলো আপনার জানা থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন, যদি সফল হতে চান। 

বর্তমানে ফেসবুক নির্ভর বিজনেস পরিচালনা আগের থেকে কঠিন হয়ে গেছে। এই সময়ে একটা পোস্ট করলে একটি মাত্র ০.০৭% অডিয়েন্স এঙ্গেজ করে এবং আপনি যদি ফেসবুক অ্যাড এর মাধ্যমে পোস্ট রিচ করাতে চান সেক্ষেত্রেও বেশকিছু জটিল হিসাব নিকাশ করতে হয়। 

এবং এই পরিবর্তনগুলো সমসাময়িক সময়ে এসেছে। যদিওবা এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া কিন্তু সময়ের সাথে তা আরো বেশি জটিলতর হয়ে যাচ্ছে। 

ফেসবুক বিশ্বের সবচেয়ে বড় সোশ্যাল মিডিয়া। তাই এটিকে ব্যবহার না করে বিজনেস’ প্রচারণার কথা চিন্তা করাটা সময় উপযোগী নয়। 

তাই চলুন জেনে নেয়া যাক ফেসবুক অ্যালগোরিদমের সেই সকল বিষয়গুলো যা এই প্ল্যাটফর্মটিকে আরো ভালোভাবে বুঝতে ও ব্যবহার করতে সাহায্য করবে। 

ফেসবুক অ্যালগরিদম কি? 

সহজ কথায় ফেসবুক অ্যালগরিদম হচ্ছে সেই প্রসেস যার মাধ্যম দিয়ে একজন ব্যক্তি যখন তার ফেসবুক ফিডে স্ক্রলিং করে তখন তার ইন্টারেস্ট এর উপর নির্ভর করে ফেসবুক তার সবচেয়ে পছন্দের পোস্টগুলোকে সবার আগে এবং তার পরে পর্যায়ক্রমে বাকি পোস্টগুলো তাকে দেখাতে থাকে।

এবং ফেসবুকের ২.৯ বিলিয়ন অডিয়েন্স প্রত্যেকেই তার নিজ নিজ ইন্টারেস্ট এর উপর নির্ভর করে পোস্ট দেখতে পায় এবং এটি প্রত্যেকবার ঘটে যখন একজন ব্যক্তি তার নিজ ফিডে প্রবেশ করে।

এক কথায় ফেসবুকের অ্যালগরিদম নির্ধারণ করে কোন ধরনের পোস্ট, কিভাবে এবং কখন একজন ব্যক্তি তার নিউজফিডে দেখতে পাবে। 

যে কথাটি অবশ্যই মনে রাখা জরুরী সেটি হচ্ছে ফেসবুকের উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যবহারকারীদের জন্য এই যোগাযোগ মাধ্যমকে নিরাপদ, রিলেভেন্ট এবং ভ্যালুয়েবল করে তোলা। 

বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে পরিবর্তন আনা হয়েছে কোন বিষয়গুলো কিভাবে ব্যবহারকারীরা দেখবে এবং এটি বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন করা হয়েছে। 

সময়ের সাথে ফেসবুক অ্যালগোরিদমের পরিবর্তন

ফেসবুকের অ্যালগরিদম প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। কোম্পানি “ফেসবুক” বর্তমান নাম মেটা, তাদের একটি টিম প্রতিনিয়ত ফেসবুকের অ্যালগরিদমকে পরিবর্তন করে আসছে যাতে এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটিকে ব্যবহারকারীদের জন্য আরও বেশি কার্যকর ও নিরাপদ করে তোলা যায়। 

এরই ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় তারা ইন্টারেস্ট থেকে বেশকিছু কিওয়ার্ড রিমুভ করেছে এবং কিছু নতুন কিওয়ার্ড যুক্ত করেছে।  

সংক্ষেপে দেখি নেয়া যাক সময়ের সাথে ফেসবুকের পরিবর্তনগুলো। 

সাল ২০০৯

ফেসবুকে সেই সকল পোষ্ট গুলোকে নিউজফিডের প্রথম স্থান করে দেওয়া হতো যে সকল পোস্টগুলা অডিয়েন্সরা সবচেয়ে বেশি লাইক করতো।

সাল ২০১৫

এই বছরে এসে ফেসবুক অতিমাত্রায় প্রমোশনাল পোস্টগুলোকে ডাউন গ্রেড করে অর্থাৎ সেসকল পোস্টগুলোর রিচ কমিয়ে দেয়।  যা অডিয়েন্স দেখতে পছন্দ করে সেগুলো দেখানোর জন্য নিউজফিডে সি ফাস্ট নামে একটি নতুন অপশন চালু করে।

সাল ২০১৬

এসময়ে ফেসবুক আবারো তাদের অ্যালগোরিদমে পরিবর্তন নিয়ে আসে এবং সেই সকল পোষ্ট গুলাকে রাঙ্ক করা হয় যে সকল পোস্টে একজন অডিয়েন্স সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করে। 

সাল ২০১৭

এবারে ফেসবুক তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নতুন একটি ফিচার চালু করে সেটি হচ্ছে রিএকশন ইমোজি।  এবং তাদের অ্যালগোরিদমে আবারও পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়। এ সময় ভিডিওকে গুরুত্ব দেয়া হয়।  সেই সকল ভিডিওগুলোকে বেশি মাত্রায় সবাইকে দেখানো হয় যে ভিডিওগুলা অডিয়েন্স প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দেখছে। 

সাল ২০১৮

এবারে ফেসবুক আরো একবার তাদের অ্যালগোরিদমে পরিবর্তন নিয়ে আসে এবং সেই সকল পোস্ট গুলাকে প্রোমট করে যে সকল পোস্ট কনভারসেশন স্টার্ট করে এবং অডিয়েন্সের জন্য মিনিংফুল। 

সাল ২০১৯

এই বছরে এসে ফেসবুক তাদের অ্যালগোরিদমে পরিবর্তন করে এবং ১ থেকে ৩ মিনিট পর্যন্ত দীর্ঘ ভিডিও ভিউ হয় এমন ভিডিওগুলো কে অডিয়েন্স পছন্দ করছে বলে তারা মনে করে।  

একই সাথে কোন একজন অডিয়েন্সের বন্ধুবান্ধব অথবা কানেকশনে যারা রয়েছে তারা যে পোষ্ট গুলো দেখছে সে পোষ্ট গুলো একজন অডিয়েন্সকে দেখার জন্য পরামর্শ দেয়।

সাল ২০২০

এই বছরে ফেসবুক অডিয়েন্সদের ডাটার উপর তাদের(ব্যবহারকারির) নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করার চিন্তা করে।  ফেসবুক সেই সকল পোষ্ট গুলোকে রাঙ্ক করে যে সকল পোষ্ট সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এবং মিথ্যা নয়। 

সাল ২০২১

এবারে ফেসবুক অডিয়েন্সদের ডাটার ওপর ব্যবহারকারীদের আরো বেশি নিয়ন্ত্রণ এনে দেয়।  একজন অডিয়েন্স যা দেখতে পছন্দ করে সেগুলো শুধুমাত্র তাকে দেখানো হয় এবং যা সে দেখতে অপছন্দ করে সেগুলোর না দেখার জন্য ফেসবুককে কমান্ড দিতে পারে।  

২০২১ সালের পরিবর্তনগুলোকে বুঝতে হলে নিচের লিংকে ক্লিক করে ভিডিওটি দেখুন। 

https://www.facebook.com/Engineering/videos/264352435037706/

2022 সালে ফেসবুক অ্যালগরিদম কিভাবে কাজ করছে

বর্তমান সময়ে ফেসবুক অ্যালগরিদমকে সেইভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেখানে একজন অডিয়েন্স তার পছন্দের কনটেন্ট গুলো দেখবে এবং কনটেন্টগুলো হতে হবে ইনফরমেটিভ। 

এবং তারা আরো বলেন নিউজ ফিড নামে আর কিছু থাকবে না। তার পরিবর্তে তারা শুধুমাত্র এটিকে ফিড নামে পরিচিত করায়। 

একজন অডিয়েন্স ফিডে কী দেখবে আর কি দেখবে না তার তিনটি প্রধান সিগন্যাল এর উপর নির্ভর করে।

একঃ কে পোস্ট করেছে

অডিয়েন্স যে পোস্টগুলো দেখতে পাবে সেগুলো হচ্ছে,  সে আসলে কার পোস্টগুলো বেশি দেখছে তার ওপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয়।  এটি হতে পারে তার বন্ধু পোস্ট করেছে, হতে পারে কোন একটি বিজনেস পেজে থেকে পোস্ট হয়েছে।

আপনি সেই সোর্সের পোস্টগুলো বেশি দেখবেন সেই সোর্সের পোস্ট বেশি বেশি ফিডে আসতে থাকবে। 

দ্বিতীয়তঃ টাইপ অফ কনটেন্ট

অডিয়েন্স কোন ধরনের কনটেন্ট দেখতে বেশি পছন্দ করছে। এটি কি শুধুমাত্র লেখা অথবা ছবিসহ লেখা নাকি ভিডিও?  সে যে ধরনের কনটেন্ট বেশি দেখতে পছন্দ করবে তাকে সেই ধরনের কনটেন্ট বেশি বেশি দেখানো হবে। 

তৃতীয়তঃ পোষ্টের এঙ্গেজমেন্ট

যে পোস্টগুলো সবচেয়ে বেশি লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার পাবে সেই পোস্টগুলি একজন অডিয়েন্সের বেশি বেশি দেখার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।

এছাড়া আরো অসংখ্য জটিল গাণিতিক হিসাব নিকাশ রয়েছে কিন্তু সহজভাবে বলতে গেলে ওপরের এই তিন পদ্ধতি দ্বারা অডিয়েন্সের জন্য নির্ধারিত হয় সে কোন পোস্ট দেখবে এবং কোন গুলো দেখবে না।

একই সাথে কোন একটি পোস্ট যদি ফেসবুক থেকে সাজেস্ট করে এবং সেটি যদি সে পছন্দ না করে তবে সেটি সে হাইড করে ফেলতে পারবে। 

এর বাইরেও কিছু কমন নিষিদ্ধ পোস্ট যেমন, নগ্নতা, ভায়োলেন্স, অথবা সেনসিটিভ ইনফর্মেশন রিলেটেড পোস্টগুলো ফেসবুক অডিয়েন্সদের দেখানোর জন্য নিরুৎসাহিত করে। 

যে 8 টি উপায়ে ফেসবুকের অ্যালগরিদমকে আপনার জন্য কার্যকরী করে তুলতে পারেন

বুঝতে হবে আপনার অডিয়েন্স কি দেখতে চায়

আপনার বিজনেস পেজের পোষ্টগুলো সবার কাছে পৌঁছে দিতে এবং তার সাথে অডিয়েন্স দের এনগেজমেন্ট আরো বাড়িয়ে তুলতে আপনাকে গুরুত্ব দিতে হবে আপনার অডিয়েন্স ঠিক কোন ধরনের পোষ্ট দেখতে পছন্দ করছে।

এক্ষেত্রে দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ আপনার পোষ্টগুলো অবশ্যই হতে হবে মিনিংফুল এবং ইনফরমেটিভ। 

এবং এই বিষয়টি বোঝার জন্য আপনি অডিয়েন্স ইন্সাইটস ব্যবহার করতে পারেন অথবা বিভিন্ন ধরনের পোস্ট আপনার পেজে দেবার মাধ্যমে সেখানে কারা এবং কিভাবে এঙ্গেজ হচ্ছে সেটি তুলনামূলক পার্থক্য গুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারেন।  

যে ধরনের পোস্টের সাথে আপনার অডিয়েন্স সবচেয়ে বেশি এঙ্গেজ হবে এবং লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার এর মাধ্যমে সেটিকে সাপোর্ট করবে সে ধরনের পোস্ট বেছে নিবেন। 

সঠিক এবং সত্য তথ্য দেবার চেষ্টা করুন

ফেসবুক অথেন্টিক এবং একুরেট ইনফরমেশনগুলো কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বের সাথে প্রচার করে।  তাই যখন পোস্ট করবেন তখন পোস্টগুলোর অথেন্টিসিটি নিশ্চিত করার জন্য সঠিক রেফারেন্স এর সহায়তা নিবেন।

হেডলাইন গুলো  লিখবেন যা পড়ে ভিতরে কি সম্পর্কে বলা হয়েছে সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা আপনার অডিয়েন্স পায়। যদি হেডলাইনে সাথে ভেতরের কন্টেন্ট মিল না থাকে তাহলে সেগুলো অথেন্টিক হিসেবে ফেসবুক মনে না।

ভুয়া তথ্য, মিস ল্যান্ডিং ইনফর্মেশন, ডিপফেক ভিডিও, মেডিকেল ইনফরমেশন, পলিটিক্স ইত্যাদি তথ্য প্রচারের ক্ষেত্রে সাবধান থাকবেন।  

কারন আপনার ভুল তথ্যের কারণে আপনার পেজের কোয়ালিটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।  এবং সেক্ষেত্রে ফেসবুক যদি আপনার পেজের রিচ কমিয়ে দেয়। রিচ পূর্বের অবস্থায় নিয়ে যেতে আপনাকে যথেষ্ট কষ্ট করতে হবে এবং আপনি আদৌ সফল হবেন কিনা সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

ফেসবুকের অ্যালগরিদমকে ম্যানুপুলেট করবেন না

অনেকেই বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ফেসবুক এর অ্যালগরিদম কে ম্যানুপুলেট করার মাধ্যমে তাদের পোস্টগুলো বেশি পরিমাণে রিচ করার পরিকল্পনা করেন এক্ষেত্রে সাবধান।  ফেসবুক এর অ্যালগরিদম এর বিপরীতে কাজ করার চিন্তাও করবেন না। চেষ্টা করবেন ফেসবুক এর অ্যালগরিদম এর সাথে মানিয়ে কাজ করার জন্য।  

আপনি যদি ফেসবুকের নিয়ম কানুন, তাদের যে কমিউনিটি পলিসি রয়েছে সেগুলোতে যথাযথভাবে মেনে চলে পোস্ট করেন তবে ফেসবুকের রেস্ট্রিকশন থেকে নিরাপদে থাকবেন এবং আপনার পেজের জন্য সর্বোচ্চ এবং এঙ্গেজমেন্ট পাবেন। 

 

অডিয়েন্সের সাথে এঙ্গেজ থাকুন 

আপনি যত বেশি অডিয়েন্সের সাথে এঙ্গেজ থাকবেন তত বেশি আপনার পোস্ট রিচ করবে।  আপনার পোস্ট গুলোকে ফেসবুক ততবেশি মিনিংফুল এবং অথেন্টিক মনে করবে এবং সেগুলোর ডিস্ট্রিবিউশন বাড়িয়ে দিবে।  

কেউ যদি আপনার পেজে কমেন্ট করে তবে আপনি তার কমেন্টের রিপ্লাই করুন।  কেউ যদি আপনাকে মেসেঞ্জারে কোন কিছু জানতে চায় তবে তার উত্তর দিন।

এমন ধরনের  পোস্ট করুন যে পোস্টগুলো পড়ে আপনার অডিয়েন্স কমেন্ট করার জন্য আগ্রহী হয়ে ওঠে।  ফেসবুক পেজের জন্য ইনফরমেটিভ আর্টিকেল লিখুন ছোট-বড় কোন ধরনের আর্টিকেল আপনার অডিয়েন্স পছন্দ করছে সেগুলো খুজে বের করুন।

অডিয়েন্সদেরকে একে অপরের সাথে এঙ্গেজ হতে সাহায্য করুন

আপনি এমন ধরনের পোস্ট আপনার পেজে করার চেষ্টা করবেন যে ধরনের পোস্টগুলো একজন অডিয়েন্স তার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পছন্দ করে এবং সে বিষয়গুলো নিয়ে তারা কথা বলে।

এই কৌশলের মাধ্যমে ফেসবুক সিগনাল পাবে যে আপনার পোস্টগুলো তাদের জন্য তথ্যবহুল এবং তারা সেটা পছন্দ করছে এবং অন্যদেরকেও সেটি পড়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছে।  এই সিগন্যালটি ফেসবুকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্ট্রং সিগন্যাল। 

ফেসবুক রিল এবং স্টোরি ব্যবহার করুন

 

ফেসবুক সাম্প্রতিক সময়ে  রিল এবং স্টোরি প্রমোট করছে।  তাই আপনার পোস্টগুলো স্টোরি’তে শেয়ার করুন ফেসবুকের জন্য ছোট ছোট ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করুন। 

ফেসবুক রিল এবং স্টোরি ডিজাইন করা হয়েছে নতুন ধরনের কনটেন্টগুলো ডিসকভার করার জন্য অর্থাৎ যখন একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর নতুন একটি কনটেন্ট তৈরি করছে সে যদি সেটি তার রিল এবং স্টোরিতে শেয়ার করে তবে সেই পোস্টগুলা ট্রাকশন বেশি পাবে।

বেসিক পোস্টগুলো থেকে সরে যাবেন না

সব সময় যে চোখধাঁধানো গ্রাফিক ডিজাইন অথবা দারুন ভিডিও কনটেন্ট এর মাধ্যমে অডিয়েন্সদের এঙ্গেজ রাখতে হবে ব্যাপারটা এমন নয়। সাধারণ দু-এক লাইন লেখার মাধ্যমে আপনি ওদেরকে রাখতে পারেন। দেখা গেছে এমন অনেক অডিয়েন্স রয়েছে যারা শুধুমাত্র লেখা পড়তে পছন্দ করে। 

ফেসবুক পোস্টে রিচ বাড়ানোর জন্য শেয়ারের আশ্রয় নিন

বিশেষ করে ফেসবুকের বিজনেস পেজগুলোর জন্য শেয়ার একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যাল। তাই আপনি যখনই নতুন পোস্ট করছেন সেগুলো শেয়ার করার জন্য আপনার বন্ধুকে বা অফিসের এমপ্লয়ীদের বলুন। 

কারণ আপনার বন্ধু অথবা অফিসের এমপ্লয়ীরা যখন তাদের নিজের ফিডে এবং তাঁর বন্ধুদের সাথে এগুলো শেয়ার করবে তখন ফেসবুক মনে করবে সেই পোস্ট গুলো অডিয়েন্স পছন্দ করছে এবং সেগুলোর ডিসট্রিবিউশন বাড়িয়ে দিবে বাড়িয়ে দিবে। 

তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন এমন কোনো একাউন্ট থেকে পোস্ট শেয়ার করবেন না যে একাউন্ট ফেক। 

পরিশেষে

আপনাকে প্রতিনিয়ত ফেসবুকের অ্যালগরিদমের চেঞ্জ গুলোকে নজরে রাখতে হবে এবং ফেসবুকের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে তাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড কি বলে এবং কোন পোস্টগুলো ফেসবুক অ্যালগরিদম বেশি বেশি প্রমোট করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে সেই বিষয়গুলো। 

যখন এইগুলো আপনি জানবেন তখন এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারবেন।

মনে রাখবেন  কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে আবশ্যিকভাবে যা কিছু নিষেধ তা এড়িয়ে যাবেন এবং যা কিছু করতে উৎসাহিত করা হয় সেগুলো বেশি বেশি করবেন। 

 

প্রো সেলারদের মতো প্রোডাক্ট লঞ্চ মার্কেটিং ক্যাম্পেইন কিভাবে করবেন

প্রো সেলারদের মতো প্রোডাক্ট লঞ্চ মার্কেটিং ক্যাম্পেইন কিভাবে করবেন

Olipop নামে একটি হেলদি সোডা ব্র্যান্ড যখন একটি প্রোডাক্ট লঞ্চ করেন, তখন মাত্র ১৫ মিনিটে ৩০ হাজার ডলার সমমূল্যের সেলস করতে সক্ষম হন। 

যারা অনলাইন নির্ভর ব্যবসা পরিচালনা করেন তাদের জন্য নিউলি লঞ্চ হওয়া প্রোডাক্টের রেগুলার সেলস ধরে রাখাটাই যেখানে চ্যালেঞ্জিং সেখানে ওলিপপ ব্র্যান্ডের এই অভাবনীয় অর্জন নিঃসন্দেহে ঈর্ষণীয়। 

কিন্তু কীভাবে আপনি তাদের মতো সাফল্য পেতে পারেন? জানবো সেই বিষয়ে।  

প্রথমে আমাদের জানতে হবে প্রোডাক্ট লঞ্চ বিষয়টি আসলে কি। এটি একটি সমন্বিত মার্কেটিং কার্যক্রম যার মাধ্যমে একটি নতুন প্রোডাক্টকে মার্কেটে পরিচিত করানো হয়। 

একটি বুদ্ধিদীপ্ত প্রোডাক্ট লঞ্চিং মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের মধ্যে পুরনো কাস্টমারদের এঙ্গেজ করার বিষয়টি থাকতে হয়, একই সাথে নতুন কাস্টমারের কাছে পৌঁছানোর ব্যাপারটিকে লক্ষ্য রাখতে হয় এবং অবশ্যই প্রোডাক্টের জন্য তারা যাতে আরজেন্সি ফিল করে সেটি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরী। 

যখন নতুন এবং পুরনো উভয় ধরনের অডিয়েন্সের সংমিশ্রণ একটি মারকেটিং ক্যাম্পেইন পরিচালিত হয় তখন সেই ক্যাম্পেইন থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা পাবার সম্ভাবনা থাকে। 

কিভাবে প্রোডাক্ট লঞ্চিং ক্যাম্পেইন ডিজাইন করবেন যা হাইপ তৈরি করবে?

মার্কেটে যখন একটি নতুন প্রোডাক্ট আসে তখন কেবল মাত্র সেল করার চিন্তা বাদ দিয়ে কিভাবে প্রোডাক্টকে টার্গেট অডিয়েন্সদের সামনে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করা যায় সেই দিকে মনোযোগী হতে হবে। 

ক্যাচি ট্যাগ লাইন আকর্ষণীয় গ্রাফিক দারুন সব ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে প্রোডাক্টটির প্রতি কাস্টমারদের আগ্রহ তৈরি করতে হবে। 

প্রোডাক্ট লঞ্চিংয়ের দিন তারিখ নির্ধারণ

সফলভাবে প্রোডাক্ট লঞ্চিং এর প্রথম ধাপটি হচ্ছে, একটি সুনির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা যখন প্রথমবারের মতো আপনি একটি প্রোডাক্ট কাস্টমারদের সামনে নিয়ে আসতে চলেছেন। 

এবারে সেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সকল ধরনের মার্কেটিং মেটিরিয়ালগুলো তৈরি করে ফেলতে হবে, যেন ডে-ওয়ান থেকেই সকল মার্কেটিং অ্যাসেট নিয়ে পুরোদমে মার্কেটে মুভ করতে পারেন। একই সাথে প্রতিটি মার্কেটিং চ্যানেলে আপনার সরব উপস্থিতি নিশ্চিত হয়। 

মার্কেটিং চ্যানেলগুলো নির্ধারণ করুন

চ্যানেল নির্ধারণ করার প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যখন আপনি একটি প্রোডাক্ট আপনার কাস্টমারদের সামনে নিয়ে যেতে চলেছেন, তখন চিন্তা করবেন আপনার কাস্টমারেরা কোন মিডিয়াগুলো বেশি ব্যবহার করছে। 

এর উপরে নির্ভর করবে প্রোডাক্ট লঞ্চিং এর জন্য কোন মার্কেটিং চ্যানেলগুলোকে আপনি পছন্দ করবেন। ধরুন আপনার প্রোডাক্ট যদি হয় কসমেটিক্স তবে আপনার টার্গেট অডিয়েন্স ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে। 

এসএমএস মার্কেটিং 

ওলিপপ এর ১৫ মিনিটে ৩০ হাজার ডলার সেল করার পেছনে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছিল এসএমএস মার্কেটিং।  এসএমএস মার্কেটিং দ্রুততম সময়ের মধ্যে বড় অডিয়েন্স গ্রুপকে রিচ করার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী পদ্ধতি।

 এর ইনবক্স ও ওপেন রেট ইমেইল এর চেয়ে অনেক বেশি। সরাসরি কাস্টমার মোবাইল ফোনে নোটিফিকেশন আকারে এটি গ্রহন করে, ফলে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস তৈরি করার জন্য এই মাধ্যমটি অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে।

বর্তমানে মার্কেটে এমন অনেক বাল্ক  এসএমএস প্লাটফর্ম রয়েছে যারা আপনাকে একটি চমৎকার ইন্টারেক্টিভ ড্যাশবোর্ড এর মাধ্যমে ক্যাম্পেইন সংক্রান্ত সকল প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সরবরাহ করে। যেমন, কতজন ওপেন করেছে, কতজন ক্লিক করেছে ইত্যাদি। বিশেষ করে যে কোনো মারকেটিং ক্যাম্পেইনে জন্য ক্লিক রেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাট্রিক্স। 

ইমেইল মার্কেটিং 

সাধারণত লং ফর্মের কন্টেন্টগুলো কাস্টমারদের সাথে শেয়ার করতে আদর্শ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে এটিকে বিবেচনা করা হয়। ইমেইল মার্কেটিংয়ের অডিয়েন্স স্মার্ট হিসাবে পরিচিত। এর মূল কারণটি হচ্ছে এখানে অডিয়েন্স বেশি সময় নিয়ে এঙ্গেজ থাকে। তারা প্রোডাক্ট ও সার্ভিস সম্পর্কে সময় নিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করে। 

যেসকল অডিয়েন্স নিয়মিতভাবে মার্কেটিং ক্যাম্পেইন ওপেন করে এবং ক্লিক করার মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য জানে স্বাভাবিকভাবেই তাদের ইন্টারেস্ট লেভেল অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি। অপরদিকে এই প্লাটফর্মের এনগেজমেন্ট কী ফ্যাক্টরগুলো বিশদভাবে পরিমাপ যোগ্য। 

ইমেইল ওপেন রেট,  ক্লিক রেট, ইন্টারেস্ট লেভেলের পাশাপাশি ডেমোগ্রাফিক ডেটাগুলো ট্র্যাক করা সম্ভব হয়। এর ফলে আরো স্পেসিফিকভাবে কাস্টমারদের জন্য প্রোডাক্টের কমার্শিয়াল কন্টেন্ট তৈরি করা যায়। 

কাস্টমারদের সাথে আপনার ব্র্যান্ডের কমিউনিকেশিন যত বেশি স্পষ্ট হবে ততবেশি কনভার্শন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। 

বিশেষ করে প্রোডাক্ট লঞ্চ করার সময় এ প্লাটফর্মটিকে আপনি পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন। 

সোশ্যাল মিডিয়া 

বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের জন্য একটি প্লাটফর্ম। ভিন্ন ভিন্ন দেশের প্রেক্ষিতে সে দেশের মানুষ ভিন্ন ভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। 

আপনি আপনার দেশের প্রেক্ষিতে সে দেশের মানুষের কোন সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে উপস্থিত সবচেয়ে বেশি তা খুঁজে বের করুন এবং প্রোডাক্ট লঞ্চ করার সময় সেই মিডিয়াগুলোকে গুরুত্ব দিন। 

প্রথমবারের মতো একটি প্রোডাক্ট সবার সামনে নিয়ে আসার জন্য ইন পারসন ইভেন্ট অরগানাইজ করতে পারেন। যার ফলে একটি গেট-টুগেদারকে প্রমোট করার মাধ্যমে বেশি সংখ্যক মানুষকে একটি জায়গাতে নিয়ে আসা এবং তাদের সামনে সরাসরি প্রোডাক্টগুলো উপস্থাপন করা সহজ। 

তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং দারুণভাবে চর্চা হচ্ছে, যেখানে কোনো একটি নির্দিষ্ট সেক্টরের এক্সপার্ট তাদের ফ্যান ফলোয়ারদের কাছে কোন একটি ব্র্যান্ডের রিকুয়েস্ট তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস উপস্থাপন করেন। 

ফলে দ্রুততম সময়ে খুব সীমিত বাজেটে একটি বড় সংখ্যক পোটেনশিয়াল অডিয়েন্স গ্রুপ ক্রিয়েট করা যায়। যেমন ধরুন টেক রিভিউ যারা রয়েছেন তাদের একটি নির্দিষ্ট ফ্যান ফলোয়ার গ্রুপ রয়েছে।

এখন কোন একটি মোবাইল ব্র্যান্ড যখন প্রথমবারের মতো একটি ফোন লঞ্চ করে তখন সেই টেক রিভিউয়ারকে দিয়ে সেটি রিভিউ করায়। ফলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পটেনশিয়াল অডিয়েন্সদের কাছে মেসেজটি পৌঁছে যায়। 

প্রোডাক্ট লঞ্চিং এর সবগুলো অ্যাসেট একসাথে করা 

কোন একটি প্রোডাক্ট লঞ্চ করার আগে আপনাকে এর জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ একত্রিত রাখতে হবে, যেন প্রথম থেকেই পূর্ণশক্তিতে আপনি প্রত্যেকটি মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উপকরণ সমানভাবে ডিস্ট্রিবিউট করতে পারেন। 

  • সেজন্য আপনি কি যে সকল প্রোডাক্ট লঞ্চ করতে চলেছেন তার লিস্ট,
  • যেসকল মাধ্যমে প্রোডাক্টগুলো লঞ্চ করবেন সে মাধ্যমগুলোর অ্যাকসেস 
  • তাদের কাছে মেসেজটি পৌঁছাতে চান অর্থাৎ টার্গেট অডিয়েন্স রিসার্চ 
  • কি মেসেজ দিতে চান অর্থাৎ কমিউনিকেশন 
  • আপনার প্রোডাক্ট অন্যদের থেকে কেন আলাদা অর্থাৎ ইউএসপি 
  • এবং পরিশেষে প্রোডাক্টের চমৎকার ফটোগ্রাফি এবং ভিডিওগ্রাফি 

সবগুলো একত্রিত করবেন এর পরের ধাপ হচ্ছে এটিকে অরগানাইজ করে রাখা। কোন প্রোডাক্ট গুলো কোন কোন ধাপে লঞ্চ করতে চান সেটি ক্যালেন্ডার অনুসারে সঠিক সময়ে সঠিক ভাবে করতে পারেন। এতে করে আপনি কাজের ফোকাস থেকে দূরে সরে যাবেন না এবং সমন্বিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী প্রোডাক্ট লঞ্চ ক্যাম্পেইন তৈরি করতে সক্ষম হবেন। 

 

কাস্টমারদের মধ্যে এক্সাইটমেন্ট তৈরি করা 

বর্তমান সময়ে অনেকেই মোবাইল কোম্পানির বিজ্ঞাপন গুলো খেয়াল করে দেখবেন। প্রথমে তারা একটি নতুন মডেল লঞ্চ করার ঘোষণা দেয়। এরপরে ডিজাইন এবং ধাপে ধাপে স্পেসিফিকেশন ইত্যাদি নিয়ে কথা বলে। কিন্তু তখনও প্রোডাক্টটির মডেল প্রকাশ করে না। 

এরপর একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে প্রোডাক্ট লঞ্চ করার জন্য এবং তার আগে দিয়ে প্রি-লঞ্চিং সকল ধরনের ম্যাটেরিয়াল সবগুলো ডিস্ট্রিবিউট করা হয়। এতে করে টার্গেট অডিয়েন্সদের মধ্যে প্রোডাক্ট রিলেটেড কিউরিসিটির জন্ম হয়। তারা জানতে চায় ঠিক কি হতে চলেছে। এমন কি প্রোডাক্ট তারা হাতে পেতে চলেছে যা আগের থেকে অনেক বেশি চমকপ্রদ? এই প্রশ্ন মনে জাগে।  

নির্ধারিত সময়ে সেই ব্র্যান্ড তাদের প্রোডাক্ট এর মডেল এবং প্রাইস সবার সামনে প্রকাশ করে। এতে করে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই একটি বড় পরিমাণের এক্সাইটিং অডিয়েন্সদের সামনে প্রোডাক্টটি হাজির হয় এবং ইনস্ট্যান্ট সেলের পরিমাণ বেড়ে যায়।  কারণ এক্সাইটমেন্ট মানুষকে অনেক সিদ্ধান্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে নিতে সাহায্য করে। যেমনটি সম্প্রতিক সময়ে OPPO মোবাইলের ক্যাম্পেইনে আমরা খেয়াল করেছি।

 

স্পেশাল এডিশন 

২০২১ সালের ডিসেম্বরে OLIPOP তাদের  ব্ল্যাকবেরি ভ্যানিলা নামে তাদের একটি নতুন ফ্লেভার লঞ্চ করে এবং তারা বলে এটি লিমিটেড এডিশন। এই সেগমেন্ট তারা আর পরবর্তী সময়ে কখনও লঞ্চ করবে না। এতে করে ভ্যানিলা লাভাররা সেটি টেস্ট করার জন্য পাগল হয়ে ওঠে। 

যেহেতু এটি লিমিটেড এডিশন তাই অনেকে এটি মিস করতে চায় না। অর্থাৎ হারানোর ভয়ে তাদের মধ্যে জন্ম নেয় এবং খুব দ্রুততম সময়ে এগুলো সোল্ড আউট হয়ে যায়। 

তারা দারুন একটি পোস্টার ডিজাইন করার মাধ্যমে প্রোডাক্টের প্রতি কাস্টমারদের আকর্ষণকে আরো তীব্র করে তোলে যেমনটি আপনারা ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন। 

সবগুলো সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রোডাক্ট লঞ্চিং প্রমোশন 

আপনি যখন পরিকল্পিতভাবে প্রোডাক্ট লঞ্চিং এর জন্য রেডি তখন নির্ধারিত সময়ের এক থেকে দুই সপ্তাহ আগে থেকেই প্রত্যেকটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রোডাক্ট লঞ্চিং ডেট বা ইভেন্ট নিয়ে প্রমোশন করতে থাকবেন। 

যেটি কাস্টমারদের রিচ করার জন্য অত্যন্ত ইফেক্টিভ একটা পদ্ধতি এবং এই কাজটি তাদের নতুন ফ্লেভার লঞ্চ করার সময় করা হয়। যার ফলে তারা দ্রুততম সময়ে বড় পরিমাণ সেল করতে সক্ষম হয়। 

প্রোডাক্ট লঞ্চিং 

এবারে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আপনি প্রথমবারের মতো একটি প্রোডাক্ট লঞ্চ করতে চলেছেন। আপনার যতগুলো চ্যানেল রয়েছে সবগুলো চ্যানেল একসাথে প্রোডাক্টিভ লঞ্চ করবেন। এটি আপনাকে সর্বোচ্চ এঙ্গেজমেন্ট নিয়ে এসে দিবে। 

ফলাফল পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা 

প্রোডাক্ট লঞ্চিং শেষ হলেই কি কাজ শেষ?  না এরপরেই মুল কাজটা শুরু। 

আপনাকে প্রতিনিয়ত সবগুলো চ্যানেলের কী ম্যাট্রিক্স গুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে দেখতে হবে আপনি সঠিক দিকে এগোচ্ছেন কিনা। যখনই কোনো একটি চ্যানেলে এনগেজমেন্টের ঘাটতি লক্ষ্য করবেন অথবা পর্যাপ্ত রিচ করতে পারবেন না তখন কিভাবে সেটি অপ্তটমাইজ করলে কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হবেন সেটি খুঁজে বের করবেন। 

প্রতিটি সোশ্যাল মিডিয়ার নিজ নিজ অ্যানালিটিক্স ধরেছে, এছাড়াো গুগোল অ্যানালিটিক্যাল ওপর নির্ভর করতে পারেন এটি আপনাকে একটি ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ প্রদান করবে। 

পরিশেষে 

প্রোডাক্ট লঞ্চিং অপরিকল্পিত উপায় হলে আপনাকে তার জন্য মূল্য পরিশোধ করতে হবে। একটি পরিকল্পিত সমন্বিত প্রোডাক্ট লঞ্চিং পদ্ধতি আপনাকে স্বল্প সময়ে বেশি পরিমাণ সেলের নিশ্চয়তা প্রদান করে। আর এ কারণেই বিশ্বের নামিদামি ব্র্যান্ডগুলো প্রোডাক্ট লঞ্চিং-কে একটি গুরুত্বপূর্ণ টাস্ক  হিসাবে গ্রহণ করে। 

আপনার ব্র্যান্ডটি ছোট-বড়-মাঝারি যাই হোক না কেন, প্রোডাক্ট লঞ্চিং অবশ্যই পরিকল্পিত উপায়ে হতে হবে। 

কিভাবে ফেসবুক অ্যাড এর জন্য হাই পারফর্মিং কোল্ড অডিয়েন্স গ্রুপ খুঁজে পাবেন

কিভাবে ফেসবুক অ্যাড এর জন্য হাই পারফর্মিং কোল্ড অডিয়েন্স গ্রুপ খুঁজে পাবেন

বিজনেসের ফেসবুক অ্যাড এর জন্য নতুন অডিয়েন্স খুঁজে পেতে স্ট্রাগল করছেন? আপনি কি এমন একটি প্রসেস খুঁজছেন যেটি দ্বারা স্টেপ বাই স্টেপ কোয়ালিটি প্রস্পেক্ট টার্গেট করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবেন? তবে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। 

আমরা আলোচনা করবো কিভাবে আপনি আপনার বিজনেসের জন্য high-performance অডিয়েন্স গ্রুপ খুঁজে পেতে পারেন যারা আপনার বিজনেসের ভবিষ্যৎ কাস্টমার হবার পথে সব চেয়ে বেশি এগিয়ে থাকবে। 

কোল্ড অডিয়েন্স টার্গেটিং এর পরিবর্তনের ফলাফল

IOS 14  আপডেট আসার পর থেকেই ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে অডিয়েন্স টার্গেটিং-এ একটি ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তনের দ্বারা ফেসবুকের অনেকগুলো টার্গেটিং আর সফল ভাবে কাজ করছে না।

এছাড়াও সম্প্রতি ফেসবুক তাদের অ্যাড ম্যানেজারের টার্গেটিং অপশনে অনেকগুলো টার্গেটিং রিমুভ করে দিয়েছে। এমন অবস্থায় বিজনেসের জন্য অডিয়েন্স টার্গেটিং সাম্প্রতিক সময়ে অনেক চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে।

কিন্তু এতে হতাশ হবার কিছু নেই, বায়ার পারসনা তৈরি করার মাধ্যমে ক্রিয়েটিভলি অর্ডিয়েন্স ডিফাইন করলে সেটি আইডিয়াল কাস্টমার খুঁজে পেতে সাহায্য করে। 

এছাড়াও যদি আপনি বেশ কয়েক মাস বা বছর যাবৎ ফেসবুক নির্ভর বিজনেস পরিচালনা করে থাকেন, তবে ফেসবুকের মাধ্যম দিয়েই আদর্শ কাস্টমার খুঁজে পাওয়া অনেকটা সহজ হয়। এছাড়াও ফেসবুক অ্যাডের জন্য প্রতিনিয়ত পরীক্ষা চালানোর কোনো বিকল্প নেই। 

প্রোডাক্ট ও সার্ভিস এর সাথে রিলেটেড কম্প্লিমেন্টারি ইন্টারেস্ট

প্রথমে আপনাকে পরিষ্কার হতে হবে আপনি আপনার কাস্টমারদের সম্পর্কে কি জানেন, কাস্টমার কোথায় বসবাস করে, তাদের বয়স কেমন, জেন্ডার কি, তারা কোন দেশের।

এরপরে খুঁজে বের করতে হবে খুব কমন কিছু ইন্টারেস্ট যেগুলো দ্বারা আপনার কাস্টমারদের টার্গেট করতে পারেন। 

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আপনি যদি লিপ গ্লস বিক্রি করে থাকেন তবে আপনার কাস্টমারদের জন্য কমন ইন্টারেস্ট হতে পারে “বিউটি প্রোডাক্টস”। 

ব্রড অদিয়েন্সের থেকে যেভাবে চারটি নিউ কোল্ড অডিয়েন্স গ্রুপ তৈরি করবেন

ফেসবুকের অ্যাড ম্যানেজার ওপেন করে অডিয়েন্স অপশনে ক্লিক করুন এবং সেখান থেকে ডিটেলস টাগেটিং সিলেক্ট করে নিন।  এবারে কোন এরিয়ার কাস্টমারদের আপনি টার্গেট করতে চান সেটি নির্ধারণ করুন। আপনি যত সুনির্দিষ্ট লোকেশন নির্ধারণ করতে পারবেন তত ভালো।  

কিন্তু আপনি চাচ্ছেন একটি বড় অডিয়েন্স গ্রুপকে টার্গেট করতে তাহলে, এবার আপনাকে একটু বড় চিন্তা করতে হবে। 

ধরুন, আপনি একটি ছোট শহরে লোকাল বিজনেস পরিচালনা করেন। তাহলে আপনি ১০ মাইলের পরিবর্তে ২০ মাইল রেডিয়াস ব্যবহার করবেন।

যদি সুনির্দিষ্ট এরিয়ার বাইরে আপনার বড় অডিয়েন্স গ্রুপ কে নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে হয় তাহলে শুধুমাত্র টাকা, সিলেট বা চিটাগাং এর বাইরে পুরো বাংলাদেশকে সিলেক্ট করতে পারেন। 

এবারে আপনার অডিয়েন্সদের জেন্ডার এবং এইজ রেঞ্জ সিলেক্ট করে নিবেন। 

পরবর্তী ধাপে অডিয়েন্সের এই গ্রুপের ওপর নির্ভর করে চারটি আলাদা অডিয়েন্স তৈরি করবেন। 

যেমন উদাহরণস্বরূপ, আপনি স্পোর্টস ব্র্যান্ড এর জন্য চারটি আলাদা কোল্ড অদিয়েন্স গ্রুপ তৈরি করবেন।

প্রথম গ্রুপ, ২৮ থেকে ৪০ এবং ইন্টারেস্ট হিসেবে কলেজ বাস্কেটবল এবং কলেজ ফুটবল সিলেক্ট করলেন। গ্রুপের নাম দিলেন ফিমেল – ২৮ থেকে ৪০ – কলেজ স্পোর্টস।

এবারের দ্বিতীয় গ্রুপ, সেটির জন্য বয়সসীমা ৪১ থেকে ৫০ এবং জেন্ডার ফিমেল।  গ্রুপের নাম দিলেন ফিমেল – ৪১ থেকে ৬৫ – কলেজ স্পোর্টস। 

এবারের তৃতীয় গ্রুপ, এই গ্রুপের বয়স নির্ধারণ করলেন ২৮ থেকে ৪০ এবং ইন্টারেস্ট চেঞ্জ করে দিলেন গলফ। গ্রুপের নাম দিলেন ফিমেল – ২৮ থেকে ৪০- গলফ। 

এবং চতুর্থ গ্রুপের জন্য অডিয়েন্সের বয়স ২১ থেকে ৬৫ নির্ধারণ করলেন এবং ইন্টারেস্ট দিলেন গলফ। গ্রুপের নামকরণ করলেন ফিমেল – ২১ থেকে ৬৫ – গলফ। 

এভাবে আপনি চারটি আলাদা কোল্ড অডিয়েন্স গ্রুপ তৈরি করে নিতে পারবেন। 

কাস্টমার লিস্টের উপর নির্ভর করে চারটি কোল্ড অডিয়েন্স তৈরি করুন

আপনার কাছে যদি কাস্টমারদের ফোন নাম্বার বা ইমেইল থাকে। তবে তার একটি CSV ফাইল ব্যবহার করে লুকালাইক অডিয়েন্স তৈরি করা যায়। এই পদ্ধতিতে ফেসবুক আপনার দেয়া তথ্যের ওপর নির্ভর করে তাদের ডেটাবেজ থেকে সিমিলার এট্রিবিউটের কাস্টমার খুঁজে বের করে। এতে করে খুব সহজেই আপনার কাস্টমারদের মতো আরো নতুন কাস্টমার ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া যায়। 

এজন্য আপনাকে অ্যাড ম্যানেজারের অডিয়েন্স অপশনে গিয়ে কাস্টমার লিস্টে আপনার CSV ফাইলটি আপলোড করতে হবে। আপলোড করার পরে ক্রিয়েট লুকালাইক অডিয়েন্স নামে একটা অপশন আসবে সেখানে ক্লিক করলে একটি উইন্ডো ওপেন হবে তখন সেখানে লুকালাইক অপশন সিলেক্ট করে দিতে হবে।

এবারে আপনাকে বেছে নিতে হবে কত পার্সেন্ট লুকালাইক অডিয়েন্স তৈরি করতে চান। ফেসবুক আপনাকে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত সিমিলার কাস্টমার খুঁজে বের করা অপশন দেয়। 

প্রথমে আপনি ১% নির্ধারণ করবেন এবং এর নাম দিবেন বিডি ১% লুকালাইক  কাস্টমার লিস্ট।  প্রথম গ্রুপটি তৈরি হয়ে গেলে আগের পদ্ধতিতে কাস্টমার লিস্ট ০% টু ২% লুকালাইক সিলেক্ট করে নিবেন, যার নাম দিবেন বিডি ২% কাস্টমার লিস্ট।

একইভাবে ০% টু ৩% এবং ০% টু ৪%  লুকালাইক অডিয়েন্স তৈরি করে নিবেন। আর এভাবেই আপনার কাস্টমার লিস্ট এর উপর নির্ভর করে চারটি আলাদা কোল্ড অডিয়েন্স তৈরি হয়ে যাবে। 

ওয়ার্ম প্রস্পেক্টের উপর নির্ভর করে চারটি কোল্ড অডিয়েন্স তৈরি করুন

আপনার ফেসবুকের কোল্ড অডিয়েন্সের উপর নির্ভর করে আপনি খুব সহজেই আলাদা চারটি অডিয়েন্স গ্রুপ তৈরি করতে পারেন। সে জন্য প্রথমে যেটি করতে হবে, আপনি কোন ইভেন্টের জন্য লুকালাইক অডিয়েন্স তৈরি করতে চান সেটি নির্ধারণ করবেন। 

এটি হতে পারে ওয়েব ট্রাফিকের ওপরে অথবা হতে পারে কোন একটি high-performance ভিডিওর উপরে অথবা হতে পারে পেজ এনগেজমেন্টের উপরে। 

মনে করুন আমরা ওয়েবসাইট ট্রাফিকের উপর নির্ভর করে কোল্ড অডিয়েন্স গ্রুপ তৈরি করতে চাই।

তাহলে অডিয়েন্স থেকে ক্রিয়েট ওয়েবসাইট কাস্টম অডিয়েন্স অপশনটি বেছে নিবেন, সেখান থেকে ইভেন্ট হিসেবে সিলেক্ট করবেন ভিজিটর বাই টাইম স্পেন্ড এবং কত পার্সেন্ট টাইমের জন্য অডিয়েন্স সিলেক্ট করতে চান সেই পার্সেন্টেজ নির্ধারণ করবেন। এরপরে কতদিনের ওয়েবসাইট ট্রাফিক আপনি ট্র্যাক করতে চান সেটি নির্ধারণ করবেন। 

যেমন ধরুন, ইভেন্ট হিসেবে আমি ধরে নিয়েছি ওয়েবসাইট ভিজিটর, টাইম স্পেন্ড পার্সেন্টেজ ২৫% এবং রিটেনশন ১৮০ দিন। 

এবারে অডিয়েন্স অপশনে গিয়ে সিলেক্ট লুকালাইক অডিয়েন্স ক্রিয়েট করবো এবং সেটির একটি নাম দিবো। ধরুন, নাম দিলাম ০% টু ১% ওয়েবসাইট ভিজিট। 

এভাবে ০% টু ২% , ০% টু ৩%  এবং ০% টু ৪% লুকালাইক অডিয়েন্স ক্রিয়েট করবো বেসড অন ওয়েবসাইট ভিজিটর। 

তাহলে এভাবে আমাদের ওয়েবসাইট ট্রাফিকের উপর নির্ভর করে চারটি আলাদা কোল্ড অডিয়েন্স গ্রুপ তৈরি হয়ে গেল।

 

দুটি সুপার লুকালাইক অডিয়েন্স তৈরি করার নিয়ম

এবারে আমরা পূর্বে যে চারটি লুকালাইক অডিয়েন্স তৈরি করেছি কাস্টমার লিস্ট এর উপর নির্ভর করে সেই চারটি অডিয়েন্স গ্রুপকে একসাথে করে একটি সুপার লুকালাইক গ্রুপ তৈরি করবো এবং এরিয়া ও জেন্ডার নির্ধারণ করার পর সেটির একটি নাম দিয়ে সেভ করবো। 

একইভাবে ওয়েবসাইট ট্রাফিকের উপর নির্ভর করে যে চারটি অডিয়েন্স তৈরি করেছি সেই চারটি অডিয়েন্স গ্রুপকে কম্বাইন্ড করে একটি লুকালাইক অডিয়েন্স তৈরি করবো। আগের মতো একইভাবে এরিয়া ও জেন্ডার সিলেক্ট করে একটি নাম দিবো। এভাবে আমাদের দুটি সুপার লুকালাইক গ্রুপ তৈরি হয়ে যাবে। 

এবারে অডিয়েন্সগুলোকে CBO ক্যাম্পেইন দ্বারা টেস্ট করতে হবে

এখন খুঁজে বের করতে হবে আমরা যে অডিয়েন্স গ্রুপগুলো তৈরি করলাম তার মধ্যে সবথেকে ভালো পারফর্ম করে কোনটি। সেটির করতে ক্যাম্পেইন বাজেট অপটিমাইজেশন অন করে দিতে হবে। এই ক্যাম্পেইনের জন্য একটি বাজেট নির্ধারণ করতে হবে এবং অবশ্যই বাজেটটি হতে হবে হেলদি এমাউন্টের। 

প্রতিটি আলাদা ইন্টারেস্টের জন্য আমরা আলাদা আলাদা অ্যাড সেট তৈরি করবো এবং প্রতিটি অ্যাড সেটের জন্য স্পেন্ড লিমিট সেট করে দিবো। অ্যাড সেটের জন্য মিনিমাম স্পেন্ডিং লিমিট  ২৫ ডলার সেট করে ক্যাম্পেইনটি পাবলিশ করে দিব।

ক্যাম্পেইনটি ৫ থেকে ৭ দিন রান করার পরে আমরা এর পারফর্মেন্স পর্যালোচনা করে সহজেই খুঁজে বের করতে পারবো কোন অডিয়েন্স গ্রুপটি আমাদের জন্য high-performance অডিয়েন্স গ্রুপ। 

পরিশেষে,

ফেসবুক বিজনেসের জন্য সবচেয়ে জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হচ্ছে একট বা একাধিক হাই পারফরম্যান্স গ্রুপ খুঁজে বের করা যে গ্রুপের অডিয়েন্সরা আমাকে সবচেয়ে বেশি বিজনেস এনে দিবে।  এবং সেটি করতে হলে আপনাকে সবগুলো অডিয়েন্স গ্রুপকেই একই সাথে টেস্ট করতে হবে এবং সেখান থেকে খুঁজে বের করতে হবে সেরা পারফর্মেন্স গ্রুপকে। 

প্রোডাক্টের মনস্তাত্ত্বিক মূল্য নির্ধারণের ৫ টি দুর্দান্ত কৌশল

প্রোডাক্টের মনস্তাত্ত্বিক মূল্য নির্ধারণের ৫ টি দুর্দান্ত কৌশল

কোন একটি প্রোডাক্ট এর মূল্য দিয়ে আমরা সাধারণত সেই প্রোডাক্টের কোয়ালিটি সম্পর্কে ধারণা পায়। কিন্তু মূল্য নির্ধারণ কৌশলকে কখনো কখনো এই হিসাব-নিকাশের বাইরে মনস্তাত্ত্বিক কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এবং এই মনস্তাত্ত্বিক কৌশলগুলো কাস্টমারদের কেনাকাটার সিদ্ধান্তে বড় ধরনের প্রভাব বিস্তার করে।

আর ঠিক এই কারণেই একজন কাস্টমার সুপারশপে গিয়ে এমন একটি প্রোডাক্ট খুঁজে বের করেন যার পূর্বমূল্য ৫০০ টাকা ছিল বর্তমানে ডিসকাউন্ট দিয়ে সেটি ৩০০ টাকায় নেমে এসেছে।  

অথচ খেয়াল করলে দেখা যায় কাস্টমারের সেই খুঁজে নেওয়া প্রোডাক্টটি যেটি ডিসকাউন্টে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেটির মূল বিক্রয় মূল্য আসলেই ৩০০ টাকা। কিন্তু কাস্টমার বাইরের সেই সাধারণ ৩০০ টাকা মূল্যের প্রোডাক্ট কেনার চেয়ে সুপারশপের ডিসকাউন্টে টাকায় পাওয়া প্রোডাক্টকে বেশি গুণগত মানসম্পন্ন মনে করেন।

অর্থাৎ কাস্টমারের কেনাকাটার সিদ্ধান্তে একই সাথে গাণিতিক হিসাব নিকাশ ও মনস্তাত্ত্বিক কৌশল সমানভাবে প্রভাব বিস্তার করছে। 

আমরা এই আর্টিকেলে আলোচনা করবো প্রোডাক্ট প্রাইসিং বা মূল্য নির্ধারণের মনস্তাত্ত্বিক কৌশলগুলো কিভাবে কাজ করে ও আপনার বিজনেসের সেটি কীভাবে ব্যবহার করবেন সেই প্রসঙ্গে।

মনস্তাত্ত্বিক মূল্য নির্ধারণ কৌশল কি? 

মনস্তাত্ত্বিক মূল্য নির্ধারণ কৌশল এমন একটি পদ্ধতি যেখানে কাস্টমারের কেনাকাটা সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে তাকে আরো বেশি কেনাকাটা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়।

এবং এই কৌশলের মূল লক্ষ্য হচ্ছে  কাস্টমারদের মনে এমন একটি ধারনার শক্ত অবস্থান তৈরি করা যেখানে কোন একটি প্রোডাক্ট কেনার সময় তিনি উপলব্ধি করেন যে তিনি লাভবান হয়েছেন অথবা সেরা প্রোডাক্টটি কিনেছেন। অন্যকথায় তার মনে ধারনার জন্ম দেয়া যে, তিনি যেখানে ইনভেস্ট করেছেন সেটি প্রফিটেবল। 

মনস্তাত্ত্বিক মূল্য নির্ধারণ কৌশল কেন ইফেক্টিভ? 

সাধারণত কাস্টমাররা খুব কমই জানেন কোন প্রোডাক্টের মুল্য আসলে কত হওয়া উচিত। তারা কোনো একটি প্রোডাক্টের কি মূল্য হওয়া উচিত সেটি নির্ণয় করেন একই ধরনের অন্য একটি প্রোডাক্টের সাথে তুলনা করে।  

আর তাই তারা যখন বুঝতে পারে কোন একটি প্রোডাক্ট অন্যদের থেকে কম দামে পাচ্ছেন অথবা বেশি দামের প্রোডাক্ট ছাড়ে কিনতে পারছেন, সে ক্ষেত্রে ভালো একটি ডিল পাবার জন্য সে নিজেকে লাভবান মনে করতে থাকেন। 

মনস্তাত্ত্বিক মূল্য নির্ধারণ কৌশল মানুষের ব্রেইনকে বিভ্রান্ত করে, আর সেই কারণে ১২ সংখ্যার চেয়ে ১১.৯০  সংখ্যাকে অনেক কম মনে হয় বস্তুত মূল্যমানের দিক দিয়ে তাদের মধ্যে ব্যবধান খুবই  নগণ্য।

কাস্টমাররা যখন উপলব্ধি করেন কোন একটি প্রোডাক্ট সে সেরা মূল্যে কিনতে পারছে এবং যার কোয়ালিটি ভালো, ঠিক তখনই সেই প্রোডাক্ট কেনার জন্য আগ্রহী হয়ে ওঠে। আর মনস্তাত্ত্বিক মূল্য নির্ধারণ কৌশলের মূলমন্ত্র হচ্ছে কাস্টমারদের সেই উপলব্ধি অনুভব করতে সাহায্য করা।

মনস্তাত্ত্বিক মূল্য নির্ধারণের ৫ টি কৌশল

চার্ম প্রাইসিং ও অড-ইভেন প্রাইসিং

এই মূল্য নির্ধারণ কৌশলে একটি  রাউন্ড ফিগার অ্যামাউন্টকে পয়সার হিসেবে ভেঙে ফেলা হয় যেমন ২০ কে  লেখা হয় ১৯.৯৯।   এতে করে কাস্টমার উচ্চারণ করে ১৯ কিন্তু পয়সাকে তারা বেশিরভাগ সময়ে উচ্চারণ করে না । 

 ফলে  এটি শুনতে কম মনে হয়।  এটিকে বলা হয় চার্ম প্রাইসিং।  ই-কমার্স সহ সব ধরনের বিজনেস এই এই প্রাইসিং এর ব্যবহার প্রচুর লক্ষ্য করা যায়। 

একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে কাস্টমাররা সাধারণত কোন একটি মূল্যে শেষে জোড় নাম্বারের চেয়ে বিজোড় নাম্বার উল্লেখিত প্রাইস গুলো কে সবচেয়ে বেশি বেছে নিয়েছে। 

অনলাইন ফুড রিটেলের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে অ্যামাজনের প্রায় ৭০% প্রোডাক্টের মূল্য শেষ হয়েছে ৯  সংখ্যা দিয়ে। বিশেষ করে ফ্রেশ ফ্রুট জাতীয় প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

এছাড়াও ই-কমার্স বিজনেসের অন্যান্য সেক্টরে এই বেজোড় সংখ্যা ব্যবহারের কৌশল বেশ লক্ষণীয়। যেমন, নিচের একটি হাউজহোল্ড অ্যাপ্লায়েন্স বিক্রয়কারী ই-কমার্স সাইটে দেখা যাচ্ছে।

কৃত্রিম সময় সীমাবদ্ধতা

মাত্র একদিন! আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি! আগে আসলে আগে পাবেন ! কাস্টমারদের মধ্যে তাত্ক্ষণিকতার অনুভূতি তৈরি করতে কৃত্রিম সময়ের সীমাবদ্ধতা ব্যবহার করে। 

কয়েক ঘন্টার মধ্যে শেষ হওয়া এক দিনের ইভেন্ট গ্রাহকদের দ্রুত কেনাকাটা করতে উত্সাহিত করে – কাস্টমার মনে করেন তাদের প্রিয় প্রোডাক্ট গুলি বিক্রি হওয়ার আগে কিনতে হবে। 

যদিও একটি বিজনেসের ওয়েবসাইটে বলা হয়ে থাকে যে অফারটি শেষ হচ্ছে, সত্যটি হলো এটি কয়েক ঘন্টার মধ্যে পুনরায় সেট হবে এবং চলতে থাকবে। কৌশলটি হলো গ্রাহকদের বিশ্বাস করানো যে সমাপ্তি আসন্ন তাই তারা যেন দ্রুত কেনাকাটা করেন।

সংখ্যাতত্ত্ব 

আপনি যদি পুরানো প্রবাদটি জানেন, “একটির মধ্যে ছয়টি, অন্যটির আধ ডজন”, সংখ্যাটি আসলে একই রকম। কাস্টমার এমন বিকল্প সংখ্যা পছন্দ করে যা তাদের কাছে সহজে বোধগম্য। উদাহরণস্বরূপ, পাস্তার একটি বাক্স ৫০% ছাড়ের কিনতে পারবেন যদি আপনি দুটি একসাথে কিনে থাকেন। অন্যভাবে, পাস্তার বাক্স একটি কিনুন, একটি বিনামূল্যে পান। 

একটি কিনুন, একটি বিনামূল্যে বিকল্প পান এই কৌশলে ভাল বিক্রি হয়, যদিও গণিত ঠিক একই। গ্রাহকরা মনে করেন এটি একটি ভাল চুক্তি।

প্রাইস ফিগার 

আপনি কি জানেন যে কোনও মূল্য যেভাবে প্রদর্শিত হয় তা আপনার গ্রাহকদের সে সম্পর্কে অনুভবকে প্রভাবিত করতে পারে? 

সহজ করে বলি, পয়সার অংক বাদ দিয়ে উপস্থাপন করা মূল্যগুলোকে কাস্টমার মনে করে যে তারা কম অর্থ ব্যয় করছে। প্রকৃতপক্ষে, টাকা ১২ কে তারা ১২.০০ এর চেয়ে সস্তা মনে করে, কারণ নম্বরটি নিজেই দীর্ঘ নয়। 

উপরন্তু, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি নিবন্ধ অনুসারে, এমনকি ডলারের বা টাকার চিহ্নগুলিও ক্রেতাদের “অর্থ প্রদানের ব্যথা” অনুভব করতে ট্রিগার করতে পারে। সেরা পন্থা হচ্ছে ডলারের বা টাকার চিহ্নগুলি এবং পয়সার অংককে সরিয়ে দেয়া।

ফ্ল্যাট রেট বায়াস 

ফ্ল্যাট রেট জিনিসগুলিকে আরও সহজ করে তোলে, এটি সত্য। মনে করুন, আপনি ছুটিতে যাওয়ার প্ল্যান করছেন। এখন যে রিসোর্ট খরচের হিসাব আলাদা করে উপস্থাপন করছে তার চেয়ে যে রিসোর্ট প্যাকেজ আকারে উপস্থাপন করছে সেটিকে সস্তা মনে হবে ।

ফ্ল্যাট রেট সবসময় সস্তা মনে হয় যদিও সেটি ব্যয়বহুল। উইলিয়াম পাউন্ডস্টোনের প্রাইসলেস-এ উদ্ধৃত করা গবেষণায় এটি সত্য বলে মনে করা হয়েছে: “ভোক্তারা ফ্ল্যাট হার পছন্দ করে, এমনকি যখন তারা আরও বেশি খরচ করে।

 

মনস্তাত্ত্বিক মূল্য এবং মার্কেটিং 

আপনি যে আইটেমগুলি বিক্রি করেন তার দাম কত হওয়া উচিত তা নির্ধারণ করার জন্য যদিও মনস্তাত্ত্বিক মূল্য একটি লাভজনক উপায় হতে পারে, তবে এটি আপনার ব্র্যান্ডের মার্কেটিং কৌশলের অংশও হতে পারে। 

উদাহরণস্বরূপ, বেলেজ নিজেকে একটি “সাশ্রয়ী মূল্যের আধুনিক আসবাবপত্র” ব্যবসা হিসাবে বিজ্ঞাপন দেয়। তার মিশন উচ্চ মানের মডার্ন আইটেম যা সাশ্রয়ী প্রাইসে বিক্রয় করা। 

বেলেজ ব্র্যান্ড তার গ্রাহকদের কাছে একটি স্পষ্ট মেসেজিং সিগন্যাল দেয় যে, কাস্টমার ভালো আসবাবপত্র পাচ্ছেন সেরা মূল্যে। আপনি যদি সাশ্রয়ী মূল্যের আইটেম সরবরাহকে কেন্দ্র করে কোনও ব্যবসা শুরু করার কথা বিবেচনা করেন তবে আপনার ব্র্যান্ডিং কৌশলে এই পদ্ধতি ব্যবহার করুন। 

এরপরে, আমরা এমন তিনটি মনস্তাত্ত্বিক মূল্যপদ্ধতি নিয়ে আলচনা করবো যা মার্কেটিং কৌশল হিসাবে আরও বেশি কাজ করে। কীভাবে উচ্চ মূল্যের পয়েন্টগুলি উচ্চ মানের, মূল্যের স্বচ্ছতা এবং পে-ওভার-টাইম কে সমর্থন করে। 

উচ্চমূল্যে গুণমানের সংকেত হিসাবে কাজ করে 

একটি বিজনেস যেভাবে তার প্রোডাক্টগুলির মূল্য নির্ধারণ দেয় তা গ্রাহকের গুণমানের উপলব্ধিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

হাই প্রাইস এমন ধারণা দেয় যে কোনও আইটেমের মান বেশি, এমনকি যদি এটি একই প্রস্তুতকারকের বা একই উপকরণ দ্বারা তৈরি হয়। 

এটি একটি জনপ্রিয় কৌশল যা দ্বারা বিজনেসগুলো তাদের প্রোডাক্টগুলিকে বিলাসবহুল বা ডিজাইনার আইটেম হিসেবে সংকেত দেওয়ার জন্য ব্যবহার করে। গ্রাহকরা একটি ব্যয়বহুল দামের ট্যাগ দেখেন এবং অনুমান করেন যে আইটেমগুলি সম্ভাব্য সর্বোচ্চ মানের। 

বিপরীতভাবে, সস্তা আইটেমগুলি সংকেত দেয় যে তারা গুণমানের দিক থেকে কম – এমনকি যদি সেটি নাও হয়। 

প্রাইসলেস-এ, পাউন্ডস্টোন উল্লেখ করেছেন যে লস এঞ্জেলেসের হলিউড বোল কনসার্ট ভেন্যুটি এক ডলারের বিনিময়ে তার গ্রীষ্মকালীন কনসার্টের টিকিট বিক্রি করে। উপরের দিকের আসনগুলি শহরের দৃশ্য, মূল সূর্যাস্ত ভালো মত দেখার সুযোগ করে দেয় এবং নীচের দিকের আসনগুলিও একই দৃশ্য দেখার জন্য উপযুক্ত কিন্তু সেই সিটগুলো প্রায়শই খালি থাকে, কারণ কম দামের ট্যাগ মানুষকে বিশ্বাস করায় যে আসনগুলি ভালো না। 

মূল্যের স্বচ্ছতা গ্রাহকের মনে আস্থা তৈরি করে

আরেকটি উপলব্ধি হচ্ছে মূল্যের স্বচ্ছতা, যেখানে আপনি আপনার প্রোডাক্টের প্রতিটি উপাদান (কাঁচামাল, শ্রম, শিপিং) ইত্যাদি উল্লেখ করেন যা সেই প্রোডাক্ট সম্পর্কে কাস্টমারকে ইতিবাচক অনুভুতি দেয়।

কিস্তি সুবিধা প্রোডাক্ট কেনার বাঁধা দূর করে

এমন কিছু প্রোডাক্ট রয়েছে যার মূল্যমান বেশি। এ সকল ক্ষেত্রে আপনি যদি ইএমআই এর ব্যবস্থা করেন তবে সে সকল প্রোডাক্ট কেনার জন্য কাস্টমারদের বাধাগুলো দূর হয়ে যায় অর্থাৎ একটি ১০,০০০ টাকা দামের প্রোডাক্ট কেনার জন্য প্রতিমাসে ১,০০০ টাকা করে প্রদান করার মাধ্যমে ১০ মাসে প্রোডাক্ট কিনতে পারে।  উচ্চমূল্যের প্রোডাক্ট সেল করার ক্ষেত্রে ইএমআই ফ্যাসিলিটিজ অত্যন্ত কার্যকর হিসেবেই প্রতীয়মান হয়েছে। 

পরিশেষে, 

একজন কাস্টমার ভিন্ন ভিন্ন প্রোডাক্ট কেনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম আচরণ করে থাকেন। এক্ষেত্রে সকল প্রোডাক্ট সেল করার জন্য একই ধরনের কৌশল ব্যবহার করা কখনো ঠিক হবে না। 

সেজন্য আপনাকে নিয়মিত পরীক্ষা করে যেতে হবে, ঠিক কোন কৌশলগুলো কোন ধরনের প্রোডাক্ট কেনার ক্ষেত্রে কাস্টমারদের প্রভাবিত করে। আর এভাবেই আপনি খুঁজে পাবেন আপনার প্রোডাক্ট সেল করার জন্য সঠিক মনস্তাত্ত্বিক মূল্য নির্ধারণ কৌশল। 

ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিজনেসের জন্য কম খরচের মার্কেটিং আইডিয়া

ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিজনেসের জন্য কম খরচের মার্কেটিং আইডিয়া

বিগ ব্র্যান্ড কোম্পানিগুলোর সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বাজেট থাকে বড়,  আর সেই বড় বাজেটের শক্তিতে তারা খুব সহজেই বিশাল একটি অডিয়েন্সকে রিচ করতে পারে। কিন্তু ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মার্কেটিং বাজেট লিমিটেড। ফলে তাদের পক্ষে টাকা খরচ করে বড় অডিয়েন্স গ্রুপকে রিচ করা সম্ভব হয় না।

এমন পরিস্থিতিতে স্ট্র্যাটেজিক মুভমেন্ট ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ মার্কেটিং মেথড।

কিন্তু এই ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের যথেষ্ট  ক্রিয়েটিভ হতে হয়। তাদের এমন কিছু অভিনব উপায় বের করতে হবে যা কাস্টমারদের অ্যাটেনশন গ্রাব করে। 

আমরা এমনই কিছু অভিনব মার্কেটিং আইডিয়া নিয়ে কথা বলবো যা উদ্যোক্তাগন কম খরচে করতে পারেন যা পোটেনশিয়াল অডিয়েন্স গ্রুপকে রিচ করে। 

সোশ্যাল মিডিয়া কম্পিটিশনের আয়োজন

বর্তমান সময়ে বিজনেসের মার্কেটিংয়ে সোশ্যাল মিডিয়া গুলোর ব্যবহার দারুন ভাবে লক্ষণীয়। এই প্রতিযোগিতায় ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামের পাশাপাশি টিকটক, ইউটিউব সমানতালে ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে।

কিন্তু সামাজিক মাধ্যমের দ্বারা অডিয়েন্স রিচ করা আগের মতো এতটা সহজ নয়। উদাহরণস্বরূপ, ফেসবুকে করা একটি পোস্ট ফেসবুক অডিয়েন্সদের মাত্র ৫.২% কে রিচ করে। আর তাই পেইড মার্কেটিং করার প্রয়োজন পড়ে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর জন্য টাকা খরচ না করে যদি অডিয়েন্সের এঙ্গেজ করতে চান?  তবে প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারেন।

এই প্রতিযোগিতায় কুইজ অথবা ফানপ্লের মাধ্যমে অডিয়েন্সদের যুক্ত হবার জন্য উৎসাহিত করবেন। স্বাভাবিকভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষ কথা বলতে চায়, অংশগ্রহণ করতে চায়। ফলে তারা কুইজ অথবা এ ধরনের ইভেন্টের সাথে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যুক্ত হয়।

প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের জন্য আপনি পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখবেন, এই পুরস্কার অডিয়েন্সদের কুইজে উৎসাহিত করবে। 

পুরস্কারের মূল্যমান যত বেশি হবে অডিয়েন্স ততবেশি আগ্রহের সাথে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে।

এতে করে পেইড মার্কেটিং এর জন্য খরচ কম করে অধিক পরিমাণে পোটেনশিয়াল অডিয়েন্সেস রিচ করতে পারবেন। 

মনে হতে পারে পুরস্কারের জন্য টাকা খরচ হচ্ছে?  কিন্তু এটি মার্কেটিং বাজেটের একটি অংশ এবং তা অবশ্যই পেইড মার্কেটিংয়ের খরচের তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণ কম।

কোম্পানির প্রতিযোগিতার ধরন অডিয়েন্সের ক্যারেক্টারস্টিক্স অনুসারে ও পুরস্কার বিজনেসের অর্থনৈতিক সামর্থ্য অনুযায়ী হবে। 

নিচের চিত্রে খেয়াল করুন কিভাবে লোকা ফুড একটি ইনস্টাগ্রাম কনটেস্ট আয়োজন করেছেন।

 

ইউজার জেনারেটেড কনটেন্ট

ইউজার জেনারেটেড কনটেন্ট ছোট-বড় সব ধরনের বিজনেসের জন্য গেম চেঞ্জার। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় এর প্রভাব অত্যন্ত বেশি। 

একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় 79% কাস্টমার User-Generated কন্টেন দ্বারা দারুণভাবে প্রভাবিত।

ইউজার জেনারেটেড কনটেন্ট এর মাধ্যমে একজন কাস্টমার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিজেই প্রমোট করে। প্রোডাক্টের সাথে ছবি তুলে অথবা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্র্যান্ডের নামে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে তাদের এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করে।

যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া কাস্টমারদের এঙ্গেজমেন্ট কি ম্যাট্রিক্স ফলে এই ধরনের কনটেন্ট খুব দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও যে ব্যাক্তি তার নিজ সোশ্যাল মিডিয়ায় এটি শেয়ার করছে তার কানেকশনের বন্ধুরা এটি দেখতে পায়।

ফলে পেইড মার্কেটিংয়ে এক টাকা খরচ না করে কাস্টমারদের রিচ ও এঙ্গেজ করা যায়।

ভিডিও টিউটোরিয়াল

বিশেষ করে টেক কোম্পানিগুলোতে মার্কেটিং এর জন্য ভিডিও টিউটোরিয়াল সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হতে দেখা যায়।  যেখানে একজন রিভিউয়ার কোন একটি প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের রিভিউ করে থাকেন এবং এটি বায়ারদের জন্য কতটুকু ভালো বা খারাপ তা বিশ্লেষণ করেন। একই সাথে প্রোডাক্টের বিভিন্ন ফিচার নিয়েও তারা কথা বলেন।

আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস যদি এমন হয়, তাহলে আপনিও সেটির ভিডিও টিউটোরিয়াল তৈরি করে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন।

ভাইরাল টপিক

আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়ত এমন সব ঘটনা ঘটছে যত ইন্টারেস্টিং কখনোবা শিক্ষণীয় অথবা বিস্ময়কর। আপনি যদি একজন ক্রিটিভ মাইন্ড হয়ে থাকেন তবে টপিকগুলোকে ব্যবহার করে বিজনেস এর মার্কেটিং করতে পারেন। 

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় বেশ কিছুদিন আগে বাংলাদেশ একটি লোকাল ফার্নিচার কোম্পানি একটি হাস্যকর বিজ্ঞাপন তৈরী করে চারিদিকে সাড়া ফেলে দিয়েছিল।

বিজ্ঞাপনটি নিতান্ত ভাবেই অপরিকল্পিত এবং কোন প্রকার গভীর চিন্তা ছাড়াই নির্মিত।

কিন্তু সেটি হঠাৎ করেই ভাইরাল হয়ে যায়। হ্যাঁ, আমি কাকলি ফার্নিচারের কথা বলছি।

এবং পরবর্তীতে তাদের এই বিজ্ঞাপনের হাস্যরস কে কাজে লাগিয়ে অনেক ব্র্যান্ড মিম মার্কেটিং করেছেন। ট্রেন্ডি টপিকগুলোর ইনস্ট্যান্ট রিটার্ন অনেক বেশি ফলে খুব সহজেই এটি অডিয়েন্সদের দৃষ্টিগোচর হয়। কিন্তু মনে রাখবেন এটি দীর্ঘ মেয়াদে কার্যকর নয়। 

চোখ রাখুন আপনার আশেপাশে কি ঘটছে সেগুলোর উপর। যদি এমন কোন টপিক আপনার চোখে পড়ে যা অডিয়েন্স পছন্দ করছে, তবে তার সাথে রিলেট করে মার্কেটিং ক্যাম্পেইন প্ল্যান করতে পারেন।

কাস্টমার ফিডব্যাক

আপনার বিজনেসের লয়াল কাস্টমার হলো আপনার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। তারা আপনার বিজনেস নিয়ে কি চিন্তা করছে,  সেটি আপনার নিজের জানা এবং আপনার ভবিষ্যৎ কাস্টমারদের সেটি জানানো অত্যন্ত প্রয়োজন।

কাস্টমারদের মতামত সংগ্রহ করুন এবং সেটি রিভিউ আকারে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রদর্শন করুন। কেননা কাস্টমার রিভিউ বিজনেসের জন্য ট্রাস্ট ফ্যাক্টর।

লোকাল ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড

অ্যাওয়ার্ড একটি প্রতিষ্ঠান ক্রেডিবিলিটি এবং অথরিটি ক্রিয়েট করে। এটি কাস্টমারদের মেসেজ দেয় যে আপনি তাদের যা অফার করছেন সেটি সেরাদের সেরা।

বিজনেস রিলেটেড যেসকল অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত হয় সেগুলোতে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করুন। বাংলাদেশে সরকারি এবং বেসরকারি উভয় প্রতিষ্ঠান এমন কিছু অ্যাওয়ার্ড প্রতিযোগিতার আয়োজন করে যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করে।  

এছাড়া প্রোডাক্ট ইনোভেশন, নিউ বিজনেস মডেল ইত্যাদি বিষয়ের ওপর অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আয়োজন হয়ে থাকে।

আপনি সেই প্রতিযোগিতাগুলোর অংশগ্রহণ করুন এবং আপনার অর্জিত অ্যাওয়ার্ড কাস্টমারদের সম্মুখে উপস্থাপন করুন।

এতে কাস্টমার আপনাকে চিনবে, আপনার সক্ষমতা সম্পর্কে জানতে পারবে। এতে আপনার ওপর তাদের আস্থা এবং বিশ্বাস তৈরি হবে। একই সাথে একটি বড় মঞ্চে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন হয় বলে বড় অডিয়েন্স গ্রুপ আপনি খুব সহজেই রিচ করতে পারবেন।

 

লোকাল ইভেন্টগুলো এটেন্ড করুন

আপনার আশেপাশে যে সকল লোকাল ইভেন্টগুলো হচ্ছে সেগুলোর এটেন্ড করুন।

যেমন লোকাল ফেয়ার, সাপ্তাহিক মার্কেট, নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট ইত্যাদি।

লোকাল এই ইভেন্টগুলোতে প্রচুর পরিমাণে স্থানীয় কাস্টমারের সমাবেশ ঘটে। ফলে আপনি খুব সহজেই একটি ছোট পরিসরের মধ্যে মোটামুটি একটি বড় ধরনের অডিয়েন্সকে রিচ করতে পারবেন।

সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার

 

আপনার প্রোডাক্ট ও সার্ভিসের জন্য কোন ধরনের অডিয়েন্স সবচেয়ে বেশি ইফেক্টিভ সেটি আগে নির্ধারণ করতে হবে। এর পরে যেসকল সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সারদের নিকটে আপনার বিজনেসের  জন্য উপযুক্ত অডিয়েন্স রয়েছে তাদের খুঁজেবের করতে হবে। 

এবারে সেই ইনফ্লুয়েন্সের এর মাধ্যমে আপনার প্রোডাক্ট রিভিউ করান অথবা প্রমোট করেন। এতে করে খুব সহজেই একজনের সোশ্যাল পাওয়ার কে কাজে লাগিয়ে বড় ধরনের অডিয়েন্স গ্রুপ রিচ করতে পারবেন।

রেফারেল প্রোগ্রাম 

রেফারাল প্রোগ্রাম গ্রোথ মার্কেটিং এর একটি শক্তিশালী উদাহরণ। যেখানে একজন পটেনশিয়াল কাস্টমার আরো কয়েকজন পোটেনশিয়াল কাস্টমারকে নিয়ে আসে।

রেফারেল প্রোগ্রামের একজন কাস্টমার তার অফার বর ডিসকাউন্ট কোড টি অন্য কারো সাথে শেয়ার করলে যখন নতুন কাস্টমার কোন কিছু কেনাকাটা করবে তখন যিনি রেফার করেছেন তিনিও বেনিফিটেড হবেন।

এ ধরনের মার্কেটিং প্রোগ্রামগুলোতে কাস্টমার নিজে বেনিফিট পাবার জন্য নতুনদের মধ্যে সে প্রোডাক্ট প্রমোশন করে তাও আবার বিনামূল্যে। 

ক্রস বিজনেস প্রমোশন

ধরুন আপনার বইয়ের বিজনেস রয়েছে। তাহলে আপনি যদি কোন একটি স্টেশনারি বিজনেসের সাথে মার্জ হয়ে মার্কেটিং করেন বা তাদের অডিয়েন্স রিচ করেন সক্ষম হন। তাহলে আপনি আপনার বিজনেসের জন্য আইডিয়াল অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাতে পারবেন।

কারণ যারা বইয়ের প্রতি আগ্রহ রাখে তাদের স্টেশনারি প্রোডাক্টও দরকার হয়।

একইভাবে স্টেশনারি বিজনেস বুক ছেলেদের অডিয়েন্সের মধ্যে তার বিজনেসের প্রমোশন করতে পারে।

এই প্রক্রিয়ায় আপনি খুব সহজেই টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌছাতে পারবেন এবং তার জন্য আপনাকে খুব বেশি পরিমাণে অর্থ ব্যয় করার প্রয়োজন হবে না।

পরিশেষে

বিজনেস এর মার্কেটিং করার অর্থ এই নয় আপনাকে প্রচুর অর্থ খরচ করতে হবে বা  দামি দামি এজেন্সির সাথে যুক্ত হয়ে বিগ বাজেটের অ্যাড তৈরি করতে হবে।

আপনি যদি আপনার অডিয়েন্সদের খুব ভালোভাবে জেনে থাকেন তবে তারা কি পছন্দ করে, কি করলে তাদের এটেনশন পাবেন এবং কোথায় প্রমোশন করলে অডিয়েন্স রিচ করতে পারবেন সেটি খুঁজে বের করা আপনার জন্য সহজ।

আর এভাবেই আপনার নতুন উদ্যোগটি সবার মাঝে পৌঁছে দিতে সক্ষম হবেন।

 

রেফারেল মার্কেটিংঃ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এগিয়ে থাকার সিক্রেট

রেফারেল মার্কেটিংঃ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এগিয়ে থাকার সিক্রেট

মানুষ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তার আশেপাশের মানুষ দ্বারা প্রভাবিত হয়। হতে পারে সে তার বন্ধু, প্রতিবেশী অথবা কোন একজন  সেলিব্রেটি। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে রেফারেল মার্কেটিং সেলস বৃদ্ধি করার জন্য সেরা একটি পদ্ধতি।  

এর কারণ হচ্ছে এই পদ্ধতিতে মানুষ অন্যের কথায় প্রভাবিত হয়ে ক্রয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। রেফারেল মার্কেটিং word-of-mouth এর আরেকটি রূপ। 

রেফারেল মার্কেটিং কি

সহজ ভাষায় বলতে গেলে রেফারেল মার্কেটিং হচ্ছে  একজন ক্রেতা যখন তার ক্রয় পরবর্তী অভিজ্ঞতা শেয়ারের মাধ্যমে আর একজনকে কেনাকাটায় উৎসাহিত করে এবং এটি অবশ্যই একটি কমিশনের ভিক্তিতে। 

সাধারণত আমরা যখন কোন মুভি দেখি বা রেস্টুরেন্টে যাই অথবা কোনো ব্র্যান্ডকে বেছে নিতে চাই, ঠিক সেই মুহুর্তে আশেপাশের মানুষ বা বন্ধুদের পরামর্শ আমাদের প্রয়োজন হয়। কারণ  আমরা জানতে চাই উল্লেখিত বিষয়ে কারো কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে কিনা।  

যদি তাদের অভিজ্ঞতা  ইতিবাচক তবে আমরা খুব সহজেই বিষয়গুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি।  আর এ কারণেই এটি সেরা মার্কেটিং মেথড। 

রেফেরেন্স মার্কেটিং কেন এত পাওয়ারফুল

মূলত তিনটি কারণে রেফারেল মার্কেটিং অত্যন্ত পাওয়ারফুল একটি মার্কেটিং স্ট্র্যাটিজি। 

সুপার লেজার টার্গেটিং

একটি সফল  ক্যাম্পেইনে দুটি বিষয় থাকতে হয়, প্রথমত গ্রেট মেসেজ এবং লেজার টার্গেটিং।  

আদর্শ কাস্টমারদের কাছে যখন আমরা সফলভাবে মার্কেটিং মেসেজটি পৌঁছে দিতে সক্ষম হই, তখন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বেচাকেনার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।

প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল করার জন্য আমাদের অনেকেরই ফেসবুক অ্যাড ক্যাম্পেইন চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। যখন ফেসবুকে আমরা একটি অ্যাড চালিয়ে থাকি তখন প্রতিদিনই লক্ষ্য করি অ্যাডের খরচ কিভাবে বাড়তে থাকে। অনেক সময় এই অ্যাড ক্যাম্পেইন গুলো আমাদের ইতিবাচক ফলাফল এনে দেয়, আবার অনেক সময় সেগুলো ব্যর্থ হয়।

কিন্তু রেফারেল মার্কেটিং প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের সেল নিয়ে আনতে একটি অব্যর্থ পদ্ধতি, কারণ এখানে একজন প্রকৃত ক্রেতা এমন আরেকজনকে রেফার করে যার সেই প্রোডাক্টটির ডিমান্ড রয়েছে এবং সেটি কেনার জন্য সে আদর্শ প্রস্পেক্ট। একই সাথে সেই ব্যক্তিকে সেটি কেনার জন্য কনভেন্স করতেো পারেন।  

কারণ রেফারাল মার্কেটিংয়ের একটি উপাদান হচ্ছে যখন একজন ক্রেতা অন্য আরেকজন সম্ভাব্য ক্রেতাকে কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কেনার জন্য  রেফার করে এবং রেফারেন্সে প্রস্পেক্ট  কোন একটি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কেনে তখন তার বিপরীতে সেই রেফারার একটি কমিশন অথবা ডিসকাউন্ট পায়। 

অর্থাৎ  এই মার্কেটিং ক্যাম্পেইন তখনই সফল হবে যখন সত্যিকার অর্থে কেউ একজন  প্রোডাক্ট বা সার্ভিসটি কেনাকাটা করবে। 

ট্রাস্ট ফ্যাক্টর

আমরা এমন কারো কাছ থেকে কখনোই কেনাকাটা করি না যাদের আমরা বিশ্বাস করি না। আর রেফারেল মার্কেটিং বিশ্বাসযোগ্যতাকে  সেলিং ফ্যাক্টর হিসেবে ব্যবহার করে। 

রেফারেন্স মারকেটিং কখনো অপরিচিত মানুষদের দ্বারা করা হয় না,  এই পদ্ধতিতে এমন সকল মানুষদের ব্যবহার করা হয় যারা আপনার খুব পরিচিত বা ক্রেতা যাদেরকে  অনুসরণ করেন অথবা যাদেরকে তারা পছন্দ করেন। 

তাই এ কারণে একটি গবেষণায় উঠে এসেছে রেফারেল মার্কেটিং সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য মার্কেটিং এর একটি অন্যতম পদ্ধতি। 

কিন্তু রেফারেল মার্কেটিং মানেই শুধু আত্মীয়ও, বন্ধু বা যাদের আপনি অনুসরণ করেন তাদের বিশ্বাসযোগ্যতার বাইরেও  এর আরো অনেক ফ্রম রয়েছে। যেমন, 

  • ফ্রেন্ডস এবং ফ্যামিলি
  • নিউজ পাবলিশার
  • সেলিব্রেটি
  • ব্লগ ও  আর্টিকেল বা  চ্যানেল
  • রিভিউ
  • টেস্টিমোনিয়াল

কাস্টোমার রিচ

কিছুদিন আগেও সাধারন একজন ক্রেতার অডিয়েন্স রিচ করার ক্ষমতা অত্যন্ত কম এবং সীমাবদ্ধ ছিল।  কিন্তু বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে এই সীমাবদ্ধতা অসীমতায় পরিণত হয়েছে।  

মানুষ চাইলেই এখন একটি ফেসবুক পোস্টের  মাধ্যমে দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে খুব সহজেই পৌঁছে যেতে পারে। 

আর এটি রেফারেল মার্কেটিংকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। যেখানে একজন সেলিব্রেটি তার একটি পোষ্টের মাধ্যমে মুহুর্তেই তার সমস্ত ফ্যান ফলোয়ার্স থেকে শুরু করে সারাবিশ্বে দ্রুততম সময়ে তার মেসেজটি পৌঁছে দিতে পারেন। ফলে দিন দিন রেফারেল মার্কেটিং এর ব্যবহার বাড়ছে। 

রেফারেল মার্কেটিং এর উদাহরণ

রেফারেল মার্কেটিংয়ের এত গুরুত্ব একটি বোঝার জন্য আমরা এমন কিছু উদাহরণ দেখবো যা আপনাকে স্পষ্ট একটি ধারণা দেবে এই মার্কেটিং পদ্ধতি এবং তার ব্যবহার সম্পর্কে। 

 

সেবা বন্ধু । Sheba.xyz

Sheba.xyz  কে আমরা সকলেই চিনি,  এটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ একটি সার্ভিস প্ল্যাটফর্ম।  এই প্ল্যাটফর্মের খুব জনপ্রিয় একটি রেফারেল প্রোগ্রাম হচ্ছে সেবা বন্ধু।  

যেখানে আপনাকে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে ও সেটিতে সাইন আপ করতে হবে এবং সেই অ্যাপের মাধ্যমে আপনার পরিচিত বন্ধু বান্ধবকে রেফার করতে হবে তার ফোন নাম্বার ওর নাম ব্যবহার করে। ফোন নাম্বারটি অবশ্যই সঠিক হতে হবে।

এরপরে যখন আপনার বন্ধু সেই রেফার করা লিংকটি ব্যবহার করে এই অ্যাপটি ব্যবহার শুরু করবে এবং সেখান থেকে অর্ডার করবে ঠিক তখনই আপনি একটি কমিশন পাবেন যেটির পরিমাণ ১০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। 

Repto | Online Education Center in Bangladesh


এটি বাংলাদেশি একটি এডুকেশনাল প্ল্যাটফর্ম যারা বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক কোর্স অনলাইনে সেল করে।  Repto এর রয়েছে একটি রেফারাল প্রোগ্রাম।  সেজন্য আপনাকে এই এডুকেশনাল প্লাটফর্মে  প্রথমে একাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে, তাহলে আপনি একটি রেফারেল লিংক পাবেন। যেটি আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধব বা মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারবেন। 

এবারে আপনার রেফার করা লিংকটি ব্যবহার করে কেউ যখন এই প্লাটফর্ম থেকে কোন একটি কোর্স কিনবে তখন আপনি একটি ক্রেডিট পাবেন।  সর্বোচ্চ ২০০ ক্রেডিট পর্যন্ত পাবার সুযোগ রয়েছে যেখানে প্রতি ক্রেডিট অর্থাৎ ১ টাকা  সমমান। 

Pathao | Motorcycle, Cars Ride and Online Courier

পাঠাও বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং সার্ভিস হিসেবেই অধিক জনপ্রিয়।  এছাড়াও তাদের রয়েছে কুরিয়ার সার্ভিস এবং ফুড সার্ভিস।  খুব অল্প সময়ে রাইড শেয়ারিং কোম্পানিটি বাংলাদেশের অত্যন্ত পপুলার হয়ে উঠেছে।  তাদেরও রয়েছে রেফারেল প্রোগ্রাম। 

বিভিন্ন সময়ে এসএমএস এর মাধ্যমে তারা কিছু রেফারেল কোড অফার করে। আপনি আপনার পরিচিত বন্ধু মহলে অথবা নিকট আত্মীয়দের সাথে সেটি শেয়ার করতে পারেন।  আপনার রেফার করা কোড ব্যবহার করে তারা যদি  রাইড শেয়ারিং সার্ভিস গ্রহণ করে তবে সর্বোচ্চ ৫০% পার্সেন্ট পর্যন্ত ডিসকাউন্ট আপনি পেতে পারেন। 

Uber Bangladesh | On-Demand Car Hiring Service Dhaka

উবার একটি গ্লোবাল রাইড শেয়ারিং সার্ভিস, পাশাপাশি উবার অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং এটি তাদের সার্ভিস কোয়ালিটির জন্য সমাদৃত। বাংলাদেশের বাইরে ও বিভিন্ন দেশে উবারের সার্ভিসটি এক দশক ধরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। 

ইন্টারন্যাশনাল এই রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাম্পেইনের পাশাপাশি রয়েছে রেফারেল প্রোগ্রাম,  যেখানে খুব সহজেই আপনি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত ডিসকাউন্ট পেয়ে যেতে পারেন।

সেজন্য আপনাকে উবার অ্যাপটি পরিচিত বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের মধ্যে রেফার করতে হবে এবং তারা যখন সে অ্যাপটি ব্যবহার করে রাইড শেয়ারিং সার্ভিসটি গ্রহণ করবে তখন আপনি পরবর্তী তিনটি রাইডে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ডিসকাউন্ট পেয়ে যাবেন।

পরিশেষে,

রেফারাল প্রোগ্রাম হিতে বিপরীত হতে পারে যদি না আপনার সার্ভিস কোয়ালিটি ভালো না হয়। তাই রেফারাল প্রোগ্রাম ইম্প্লেমেন্ট করার আগে অবশ্যই সার্ভিস কোয়ালিটি উন্নত করার দিকে মনোযোগী হবেন।  

রেফারাল প্রোগ্রাম সফল করতে হলে কেন একজন ক্রেতা অন্য একজনকে সেটি রেফার করবেন তার কারণ দিতে হবে এবং সেটি অবশ্যই টাকার মূল্যমানে।

তাই রেফারেল প্রোগ্রামটি এমনভাবে ডিজাইন করবেন যাতে যে রেফার করছে সে কোন না কোন উপায়ে আর্থিক ভাবে মূল্যায়িত হয়।  আপনার বিজনেসের জন্য কি কোন রেফারেল প্রোগ্রাম রয়েছে? যদি থাকে তবে সেটি কি?  আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। 

লাইক-ফলো দিয়ে সাথে থাকুন

ক্যাটাগরি

জনপ্রিয় পোস্ট