ডিজিটাল প্রযুক্তি কি? এর ব্যবহার, সুবিধা ও অসুবিধা

ডিজিটাল প্রযুক্তি কি? এর ব্যবহার, সুবিধা ও অসুবিধা

বর্তমান যুগে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ ও কার্যকর করেছে। তাই এই প্রযুক্তি সম্পর্কে যথাযথ ধারনা থাকা প্রয়োজন। সেই সাথে এর সঠিক ব্যবহার জানতে হবে। প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক, ডিজিটাল প্রযুক্তি কি? ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল তথ্য প্রক্রিয়াকরন, সংরক্ষণ ও স্থানান্তর করা হয়। 

ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সব তথ্যকে 0 ও ১ নম্বরে রূপান্তর করা হয়। এরপর তথ্যকে সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার এবং বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যতিত আমাদের দৈনন্দিন কাজ করা অসম্ভব। যোগাযোগ, ব্যবসা- বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা এবং বিনোদন সব কিছুই ডিজিটাল প্রযুক্তি দ্বারা পরিচালিত হয়। 

আমাদের বাক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে ডিজিটাল প্রযুক্তি ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। বাক্তিগত জীবনে আপনজনের সাথে যোগাযোগ করা থেকে শুরু করে অফিসের জটিলতর কাজ, সকল কিছুর জন্যই ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার স্পষ্ট। ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তারা ডিজিটাল মার্কেটিং, ই-কমার্স ও অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম উন্নত করেছে। যার ফলে তারা দেশের সীমানা অতিক্রম করে অন্যান্য বিভিন্ন দেশে তাদের ব্যবসা পরিচালন করছে। এছাড়াও আমরা প্রতিদিন মোবাইল ব্যাংকিং, চিকিৎসা, বিনোদন ও অন্যান্য কাজে ইন্টারনেট ও বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করি।

ডিজিটাল প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রসমূহ 

ডিজিটাল প্রযুক্তিগুলো সম্পর্কে আমাদের যথাযথ ধারনা থাকা একান্ত প্রয়োজন। এর ফলে আমরা আমাদের সকল কাজকে সহজে ও স্বল্প সময়ে শেষ করতে পারব। চলুন এবার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। 

ইন্টারনেট

ইন্টারনেট এর মাধ্যমে কম্পিউটারকে একে অপরের সাথে সংযুক্ত থেকে তথ্য আদান-প্রদান করা হয়। এই নেটওয়ার্ক সিস্টেম সারা বিশ্বের মানুষকে সংযুক্ত করে। ডিজিটাল প্রযুক্তির অন্যান্য ক্ষেত্রসমূহ ব্যবহার করতেও বেশিরভাগ সময়ে ইন্টারনেট এর সাথে সংযুক্ত থাকতে হয়। ইন্টারনেট ব্যবহার আমাদের জীবনে বিপ্লব এনেছে। এর মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে আমরা জ্ঞান অর্জন করতে পারি। ইন্টারনেট এর মাধ্যমে আমরা সহজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করতে পারি, ই-মেইল পাঠাতে পারি, ঘরে বসেই অনলাইনে শপিং ও ব্যাংকিং লেনদেনগুলো করতে পারি।বিশেষ করে ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য ইন্টারনেট এর বিকল্প নেই।

কম্পিউটার

কম্পিউটার আমাদের পেশাগত ও শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কম্পিউটারে বিভিন্ন সফটওয়্যার ও টুল ব্যবহার করে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাজ করে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগ কাজ কম্পিউটারের উপর নির্ভরশীল। এছাড়াও ডিজাইন ও প্রোগ্রামিং সহ নানা সৃজনশীল কাজ করতে কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়।

মোবাইল ফোন

মোবাইল ফোনকে আমরা ব্যক্তিগত সহকারী বলতে পারি। শুরুতে মোবাইল ফোন দিয়ে শুধুমাত্র ফোন কল ও টেক্সট করা যেতো। স্মার্ট ফোনের আবির্ভাবের পর থেকে এটি দিয়ে কম্পিউটারের মতো সকল কাজ করা যায়। মোবাইল ফোনের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশানের মাধ্যমে এই ডিজিটাল যুগের ব্যবসায়িরা সার্ভিস প্রদান করে। ই-কমার্স, স্বাস্থ্যসেবা, এবং শিক্ষা গ্রহণের মত গুরুত্বপূর্ণ সার্ভিসগুলো মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পেতে পারি। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার ও অনন্যা সামাজিক যোগাযোগগুলোর মাধ্যমে আমরা এক মুহূর্তে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে থাকা মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারি এবং নিজেদের মতামত আদান-প্রদান করতে পারি। বর্তমানে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো অনলাইন ব্যবসায় উদ্যোক্তাদের জন্য একটি অন্যতম প্ল্যাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরদের পণ্য ও সেবার বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য এই মাধ্যমগুলো বেছে নেয়। 

ফেসবুক মোবাইল ইন্টারফেস

ক্লাউড কম্পিউটিং

ক্লাউড কম্পিউটিং- এ ইন্টারনেট এর মাধ্যমে রিমোট সার্ভার ব্যবহার করে ডেটা সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ করা হয়। এটির  ব্যবহারকারীরা যেকোনো স্থান থেকে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে তাদের ফাইল এবং অ্যাপ্লিকেশনে অ্যাক্সেস করতে পারেন। এই তথ্যের ভাণ্ডার ব্যবসায়ের খরচ কমিয়ে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।  এটি তথ্যের নিরাপত্তা, ব্যাকআপ এবং স্কেলিংয়ের সুবিধাও প্রদান করে। 

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে মেশিন বা কম্পিউটার সিস্টেমকে মানুষের মত চিন্তা ও কাজ করার সক্ষম করা হয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মেশিন ও কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য বিশ্লেষণের কাজ করে। রোবটিক্স, চ্যাটবট, ফেইস রিকগনাইজেশন ইত্যাদি হলো কিছু এআই এর উদাহরণ। এআই চিকিৎসা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। এর মাধ্যমে এসকল ক্ষেত্রে দ্রুত ও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় যার ফলে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 

ইনফর্মেশন টেকনোলজি

ইনফর্মেশন টেকনোলজির মাধ্যমে ব্যবসা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোতে যোগাযোগ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা সহজ হয়। এটি বিশ্বব্যাপী তথ্যের দ্রুত প্রবাহ নিশ্চিত করে। হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, নেটওয়ার্কিং, এবং ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের সমন্বয়ে আইটি কাজ করে। 

ব্যবসায় ডিজিটাল প্রযুক্তি

ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সফটওয়্যার, ই-কমার্স, ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, এবং কম্পিউটার নেটওয়ার্কের ব্যবহার করা হয়। এই বিজনেস টেকনোলজি এর মাধ্যমে ব্যবসার কাজগুলো উন্নতভাবে করে ভালো সেবা দেওয়া হয়। ইনফর্মেশন টেকনোলজি।  ইআরপি (এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং) সফটওয়্যার, সিআরএম (কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট) সিস্টেম, এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এগুলো বিজনেস টেকনোলজি এর উদাহরণ।

একটি মেয়ে ফেসবুক লাইভ দিয়ে পণ্য বিক্রি করছে

বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা 

বর্তমানে বাংলাদেশে ই-কমার্স ও ফ্রীলান্সিং ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কলকারখানায়  অটোমেশন, অফিসে ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমসহ এসকল প্রযুক্তি আমাদের দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের অর্থনীতিকে ক্রমান্বয়ে সমৃদ্ধ করছে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো দূরত্ব অনেক কমিয়ে এনেছে। মুহূর্তের মধ্যেই আমরা ফেইসবুক ও  ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে সকলের আপডেট জানতে পারি। আমরা বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে অডিও, ভিডিওসহ অন্যান্য মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারি। 

ইন্টারনেট এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ব্যবসায়ীরা সহজেই তাদের পণ্য এবং সেবা বাজারজাত করতে পারছেন।  ই-কমার্স ওয়েবসাইট যেমন দেশীকমার্স, দারাজ, চালডাল ইত্যাদির মাধ্যমে অনলাইনে পণ্য বিক্রি হচ্ছে । এছাড়া, ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম যেমন বিকাশ, রকেট ইত্যাদি ব্যবহার করে লেনদেন করা সহজ হয়েছে।

আমরা করোনাভাইরাস মহামারির সময় শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার স্পষ্টভাবে দেখেছি। অনলাইন ক্লাস ও ডিজিটাল লাইব্রেরি এখন শিক্ষা গ্রহণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম। এমনকি ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা বিশ্বের অন্যান্য ছাত্র শিক্ষকের সাথেও সংযোগ হতে পারি। 

সরকারি অনেক সেবা এখন অনলাইনে গ্রহণ করা যায়। ই-পাসপোর্টঅনলাইন ট্যাক্স প্রদান এর মতো সেবাগুলো জনগণ স্বল্প সময়ে করতে পারি। 

বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের জীবন এখন ডিজিটাল প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল। প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে সহজ ও গতিশীল করেছে। আমরা মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে সহজেই টাকা লেনদেন করতে পারি। অনলাইনে স্বাস্থ্য পরামর্শের মাধ্যমে ঘরে বসেই স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পারছি। সোশ্যাল মিদিয়াগুলো ব্যবহার করে সবার  সাথে সহজে যোগাযোগ করছি।

ডিজিটাল প্রযুক্তিতে দক্ষতা বৃদ্ধি 

ডিজিটালাইজেশনের যুগে ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ডিজিটাল প্রযুক্তির অবদানে অনেক নতুন ব্যবসায় এর আবির্ভাব হয়েছে। ডিজিটাল দক্ষতার প্রসার হলে দেশের বেকারত্ব দূর করা সম্ভব হবে। আমাদের দেশে ফ্রিলান্সের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া এর অন্যতম উদাহরণ। এখন সহজেই অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করা যায়।   ডিজিটাল মার্কেটিং এর দক্ষতা থাকলে ব্যবসায়িরা পণ্য ও সেবার প্রচার  সহজে করতে পারেন। সরকারি ও বেসরকারি সেবাগুলো গ্রহণ করতে ডিজিটাল দক্ষতা দরকার। 

ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধি করতে ডিজিটাল টুলগুলোর ব্যবহার শিখতে হয়। মাইক্রোসফট অফিস, গুগল ডকস, এবং গুগল অ্যানালিটিকস এর মতো টুলগুলো ব্যবসায়ের কাজে ব্যবহৃত হয়। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে সেলস ও মার্কেটিং করার দক্ষতা থাকলে ব্যবসায়ের প্রচার সহজ হয়।   

ডিজিটাল টুল এবং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে দক্ষতা অর্জনের জন্য কার্যকর টিপস 

  •  নতুন ডিজিটাল টুল শিখার জন্য ধৈর্যের সাথে নিয়মিত অনুশীলন করা।  
  • অনলাইনের প্ল্যাটফর্ম থেকে কোর্স ও টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে টুলগুলো শিখা। Coursera, Udemy, এবং DataCamp এর মতো ওয়েবসাইটে ডিজিটাল  টুল এর বিস্তারিত টিউটোরিয়াল আছে।  
  • সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখা।
  • Stack Overflow ও  Reddit এর মতো ফোরামে যোগ দিয়ে যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য সহায়তা নেওয়া।
  • নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাথে সংযুক্ত হওয়া। এর  ফলে তাদের থেকে পরামর্শ নিয়ে ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধি করা যায়। 
  • প্রযুক্তিগুলোর নতুন আপডেট সম্পর্কে জানা। নতুন ফিচারগুলো শিখলে নিজকে সময়ের সাথে দক্ষ করা সম্ভব। 

ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে জড়িত চ্যালেঞ্জ এবং সেগুলোর সমাধান

ডিজিটাল বিভাজন ও বৈষম্য

বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি এখনো সহজলভ্য নয়। বয়স্ক জনগোষ্ঠী এবং অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের মধ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারনা কম। এগুলো ডিজিটাল বিভাজন সৃষ্টির কারণ। ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে গ্রামীণ এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ ও ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া, বিনামূল্যে বা কম খরচে প্রযুক্তি শিক্ষা প্রদান করতে হবে। 

বিপদজনক হ্যাক হওয়া সাইটে ব্রাউজ করছে একজন

সাইবার নিরাপত্তা 

বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনের অগ্রগতির সাথে সাথে সাইবার অপরাধ বাড়ছে। তথ্য চুরি ও অনলাইন জালিয়াতির মতো সমস্যা আমরা প্রায় দেখতে পাচ্ছি।  এই সমস্যা  সমাধানে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এনক্রিপশন, মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন, এবং নিয়মিত সিস্টেম আপডেট অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি সরকারকে সাইবার অপরাধ দমন এবং আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে কঠোর হতে হবে।ডিজিটাল প্রযুক্তি অপব্যবহার

সোশ্যাল মিডিয়ায় অসত্য তথ্য ছড়ানো, অনলাইন হয়রানি এবং সাইবার বুলিং-এর মতো সমস্যা ডিজিটাল প্রযুক্তির অপব্যবহারের উদাহরণ।  ডিজিটাল প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে ব্যবহারকারীদেরকে প্রযুক্তির সুফল এবং কুফল সম্পর্কে শিক্ষা দিতে হবে। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার শেখা এবং সাইবার বুলিং-এর মতো অপব্যবহার থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে সকলকে সচেতন হতে হবে।

পরিশেষ

বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে ডিজিটাল দক্ষটা বৃদ্ধির প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির যথাযথ প্রশিক্ষণ নিতে হবে। নতুন উদ্যোগ ও স্টার্টআপকে সমর্থন দিয়ে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন উৎসাহিত করা জরুরি। সেই সাথে সাইবার নিরাপত্তা ও প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

ই-কমার্স সফটওয়্যার কী? কত প্রকার এবং ব্যবহার

ই-কমার্স সফটওয়্যার কী? কত প্রকার এবং ব্যবহার

ই-কমার্স সফটওয়্যার সলিউশন মূলত অনেকগুলো সফটওয়্যার অ্যাপের সেট যা আপনাকে অনলাইনে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বেচাকেনায় সাহায্য করে। ওয়েবসাইট তৈরি থেকে কাস্টমারদের কেনাকাটার প্রক্রিয়া প্রতিটি স্টেপ এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে  খুব সহজে ম্যানেজ করা যায়। 

ই-কমার্স সফটওয়্যারের প্রকারভেদ

বিজনেসের ধরন এবং বাজেটের উপর নির্ভর করে মার্কেটে তিন ধরনের ই-কমার্স সলিউশন আমরা দেখতে পাই।যেমন, 

  1. Software-as-a-Service (SaaS)  (সফটওয়্যার-এজ-এ-সার্ভিস)
  2. Platform-as-a-Service (PaaS) (প্ল্যাটফর্ম-এজ-এ-সার্ভিস)
  3. On-premise platform (অন-প্রিমাইস প্ল্যাটফর্ম)

একটি ই-কমার্স সফটওয়্যারের মূল্য অনেকগুলি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন, বিজনেসের ধরন, কি ধরনের সফটওয়্যার আপনি পছন্দ করছেন, কত ট্রাফিক আপনার ওয়েবসাইটে আসতে পারে এবং কি কি ফিচার আপনি চান। 

যত বেশি ফিচার আপনি চাইবেন তার জন্য অতিরিক্ত পয়সা আপনাকে গুনতে হবে। কিন্তু আপনি চাইলে আপনার ই-কমার্স ব্যবসার জন্য শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় ফিচারগুলো বেছে নিতে করতে পারেন তাতে আপনার খরচ অনেকটাই কমে আসবে।

সার্ভিস হিসেবে ই-কমার্স সফটওয়্যারঃ Software-as-a-Service (SaaS)

SaaS হলো এমন একটি মডেল যেখানে সফটওয়্যার ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয় এবং ব্যবহারকারীকে এটি ইনস্টল বা রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয় না। এটি সাধারণত সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক হয়। উদাহরণস্বরূপ shopify, Microsoft 365 বা Google Workspace SaaS এর উদাহরণ। এখানে ব্যবহারকারীরা সফটওয়্যারটিকে সরাসরি ব্রাউজার থেকে অ্যাক্সেস করে এবং কাজ সম্পন্ন করে।

দেশীকমার্সও একটি SaaS  যেখানে আপনাকে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সাবস্ক্রিপশন ফি দিয়ে ই-কমার্স ব্যবসা সফটওয়্যারটি দিয়ে করাতে পারবেন।  

যারা দ্রুততম সময়ে প্রফেশনাল গ্রেডের ই-কমার্স সফটওয়্যার ব্যবহার করতে চান, তাদের জন্য Software-as-a-Service (SaaS)  সলিউশন সবচেয়ে কার্যকরী পদ্ধতি।  কারণ এখানে ই-কমার্স বিজনেসের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ফিচার এবং সুবিধা নিয়ে রেডিমেড একটা সিস্টেম থাকে।

ই-কমার্স সফটওয়্যার

প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ই-কমার্স সফটওয়্যারঃ Platform-as-a-Service (PaaS)

PaaS হলো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে ডেভেলপাররা তাদের অ্যাপ্লিকেশন তৈরি এবং পরিচালনা করতে পারেন, কিন্তু তাদের হার্ডওয়্যার, অপারেটিং সিস্টেম, বা অবকাঠামো পরিচালনার দরকার হয় না।

উদাহরণস্বরূপ, Heroku বা Google Cloud App Engine PaaS এর উদাহরণ। ডেভেলপাররা এখানে কোড লিখে সরাসরি ডেপ্লয় করতে পারেন, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্ভার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় রিসোর্সগুলি পরিচালনা করে।

যদি আপনার কোড লিখার সক্ষমতা এবং এই  টেকনোলজি বোঝার দক্ষতা থাকে তাহলে চাইলে এই  অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে  প্রয়োজনীয় ই-কমার্স সফটওয়্যার কাস্টমাইজেশন করতে পারেন। Amazon Web Services (AWS এই টেকনোলজির উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

এই টেকনোলজির আপনাকে কোড কাস্টমাইজেশনের স্বাধীনতা প্রদান করে কিন্তু ইনফ্রাস্ট্রেকচরের জন্য থার্ড পার্টি ডিপেন্ডেন্সি রেখে।

নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে ই-কমার্স সফটওয়্যারঃ On-premise platforms

On-premise প্ল্যাটফর্ম হলো এমন একটি সিস্টেম যা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সার্ভার এবং অবকাঠামোর উপর পরিচালিত হয়। এখানে সমস্ত সফটওয়্যার এবং ডেটা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব স্থানে বা ডেটা সেন্টারে হোস্ট করা হয়। 

উদাহরণস্বরূপ, অনেক বড় কোম্পানি নিজেদের ERP (Enterprise Resource Planning) সিস্টেম যেমন SAP বা Oracle এর মতো সিস্টেমগুলোকে অন-প্রিমাইস প্ল্যাটফর্মে পরিচালনা করে। এই সফটওয়্যার সিস্টেম অত্যন্ত ব্যবহুল শুধুমাত্র বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এগুলো ব্যবহার করে থাকে।

ই-কমার্স সফটওয়্যার কেন প্রয়োজন?

ই-কমার্স সফটওয়্যার মুলত অনলাইন ব্যবসায় সময়, শ্রম এবং টাকা বাচায়। এরই সাথে এটি ক্রেতাদের কেনাকাটার প্রক্রিয়া আরও সহজ ও সমৃদ্ধ করে ব্যবসায় বিক্রয় এবং লাভ বাড়াতে সহায়তা করে।

একজন উদ্যোগতা ই-কমার্স সফটওয়্যার ব্যবহার করে অনলাইন ব্যবসা পরিচালনা করছেন

ইজি অনলাইন বিজনেস

একটি রেডি ইকমার্স সল্যুশন  ব্যবহার করে দ্রুততম সময়ে আপনি একটি প্রফেশনাল ইকমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে বিজনেস শুরু করে পারেন। অথবা নিজস্ব টেকনিক্যাল এক্সপার্টিজ থাকলে নিজের চাহিদামাফিক কাস্টম সল্যুশন তৈরি করে নিতে পারেন যা আপনাকে নিয়ন্ত্রিত অনলাইন বিজনেস পরিচালনায় সহায়তা করে।

ব্যবসা পরিচালনার দক্ষতা বৃদ্ধি করে

এটি উদ্যোক্তার ব্যবসার মজুদ, বিক্রি এবং ডেলিভারি ট্র্যাকিং গুলোকে সহজ করে। যা তার ব্যবসায়িক দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জন

গ্রাহকরা তাদের অর্ডার সাথে-সাথে সবসময় ট্র্যাক করতে পারে, বিভিন্ন পেমেন্ট মেথড ব্যবহার করে পেমেন্ট করার সুবিধা পায়, যা তাদের ক্রয় অভিজ্ঞতাকে  উন্নত করে।

বড় মার্কেট টার্গেট করার সুবিধা

এটি আপনাকে দেশী-বিদেশি ক্রেতাদের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করে, মার্কেট সাইজ বড় হয়, ফলে ব্যবসার বিক্রি বাড়ে।

ব্যবসা পরিচালনার খরচ সাশ্রয়

ইকমার্স বিজনেসে লোকবল কম দরকার হয়, এছাড়াও ফিজিক্যাল স্টোরে অনেকগুলো ফিক্সড এক্সপেন্স থাকে কিন্তু  ইকমার্স সফটওয়্যার পরিচালনায় শুধু ইন্টারনেট ও সফটওয়্যার সাবস্ক্রিপশন (SAAS এর ক্ষেত্রে) এবং মেইনটেনেন্স চার্জ (কাস্টম সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে) ব্যতিত অন্য কোনো খরচ নেই।

বহুমুখী মার্কেটিং সুবিধা

ইকমার্স সফটওয়্যার আপনাকে  ইমেইল মার্কেটিং, এসএমএস মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া, এসইও এবং অন্যান্য টুল ব্যবহার করার সুবিধা দেয়। এতে বিজনেসের প্রচার বাড়ে। কথায় আছে, প্রচারেই প্রসার।

স্কুটিতে চড়ে প্রোডাক্ট ডেলিভারি দিতে যাচ্ছে একজন ডেলিভারিম্যান

একনজরে ই-কমার্স সফটওয়্যারের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি

মার্কেটিং টুল: ইকমার্স ওয়েবসাইট ডিজাইন করা হয় এমন ভাবে যা আপনাকে এর ওয়েবসাইট বিল্ডার, ফর্ম, ল্যান্ডিং পেজ, এ/বি টেস্টিং, এবং ডাইনামিক কন্টেন্ট ইত্যাদি ব্যবহার করে আরও বেশি গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো সাহায্য করে একইসাথে কাস্টমারের ক্রয় অভিজ্ঞতাকে  উন্নত করে।

সেন্ট্রাল  ডাটাবেজ: আপনার ওয়েবসাইটের সকল ডেটার সহজ অ্যাক্সেস প্রদান করে ডেটাগুলোকে সহজবোধ্য উপায়ে উপস্থাপনা করে। এতে বিজনেসের বর্তমান পরিস্থিত অনুযায়ী পরবর্তী সিধান্তগুলো সঠিক ভাবে নেয়া সম্ভবহয়। যেমন: কত ভিজিটর সাইটে আছে, কোন প্রোডাক্টগুলি বেশি সেল হচ্ছে, কতগুলো কাস্টমার রয়েছে, তারা কী পরিমাণ অর্থের কেনাকাট করেছেন ইত্যাদি।

ড্র্যাগ এন্ড ড্রপ ওয়েবসাইট বিল্ডার: SaaS সল্যুশনগুলো আপনাকে নিজের মতো করে ওয়েবসাইটের ফ্রন্টএন্ড ডিজাইন করার সুবিধা প্রদান করে এরজন্য কোন টেকনিক্যাল নলেজের দরকার নেই। এছাড়াও কিছু ওয়েবসাইট বিল্ডিং প্লাটফর্ম রেডি টেমপ্লেট ব্যবহার করে আপনার পছন্দমত  অনলাইন স্টোর তৈরি এবং কাস্টমাইজ করতে দেয়। যেমন: deshicommerce.com একটি ড্র্যাগ এন্ড ড্রপ ওয়েবসাইট বিল্ডার।

অটোমেটিক চেকআউট: গ্রাহকদের জন্য ক্রয় প্রক্রিয়াগুলো সিমপ্লিফাইড হয় আর সেলারদের জন্য কাস্টমারদের অর্ডার ও শিপিং প্রসেসগুলো আরও বেশি ম্যানেজেবল হয়।

ডেটা অ্যানালিটিক্স: কাস্টমার বিহেভিয়ার বুঝতে এবং আপনার অফারগুলি তাদের জন্য  ইফেক্টিভলি অপ্টিমাইজ করতে সহায়তা করে।

একটি মানসম্মত ই-কমার্স সফটওয়্যার ব্যবহারের খরচ

একটি  মানসম্মত ই-কমার্স সফটওয়্যার তৈরির অথবা ব্যবহারের খরচ নির্ভর করে এর ফিচার রিকোয়ারমেন্ট, টেকনোলজি এবং আপনার সাইটের জন্য কী পরিমাণ স্টোরেজ ও ব্যান্ডউইথের প্রয়োজন সেগুলির উপর।

উদাহরণস্বরূপ, নতুন ই-কমার্স ব্যবসার জন্য দেশীকমার্সের মাসিক মাত্র ৫০০ টাকা হতে ৪০০০ টাকার প্যাকেজের ই-কমার্স সফটওয়্যার রয়েছে। আপনার ব্যবসা চাহিদামাফিক প্ল্যান নিতে এবং পরে পরিবর্তনও করতে পারবেন।

ট্যাবে অনলাইন শপ ভিজিট করছে

আপনার বিজনেসের জন্য  সঠিক ই-কমার্স সফটওয়্যার নির্বাচনে করণীয়

কী ধরনের ই-কমার্স সল্যুশন আপনার ব্যবসার জন্য আদর্শ সেটি নির্ভর করে অনেকগুলি বিষয়ের উপরে, তার মধ্যে অন্যতম আপনার বিজনেসের ধরন ও আকার।

যেমন, দেশীকমার্স ই-কমার্স সফটওয়্যারটি সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং ব্যবসা পরিচালনার দক্ষতা বৃদ্ধির করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি ব্যবহার করে আপনি ১ মিনিটের মধ্যে একটি কমপ্লিট অনলাইন স্টোর সেট আপ করে ফেলতে পারবেন।

এটি এমনভাবে ডিজাইন করা যাতে আপনি ব্যবসার চালচিত্র সহজে বুঝতে পারেন ও কোন টেকনিক্যাল চ্যালেঞ্জ নিয়ে চিন্তা না করে প্রোডাক্ট সোর্সিং, মার্কেটিং এবং বিক্রির উপর আরও বেশি মনোনিবেশ করতে পারেন।

আপনি নতুন ব্যবসা শুরু করছেন অথবা আপনার ব্যবসা গ্রোথ স্টেজে রয়েছে? আপনি একটি প্রফেশনাল ইকমার্স সল্যুশন খুঁজছেন? দেশীকমার্স আপনাকে ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি থেকে শুরু করে পণ্য ডেলিভারির ব্যবস্থা করা পর্যন্ত সহায়তা করে।

বাংলাদেশি সেরা জনপ্রিয় ই-কমার্স ওয়েবসাইট তালিকাসহ রিভিউ

বাংলাদেশি সেরা জনপ্রিয় ই-কমার্স ওয়েবসাইট তালিকাসহ রিভিউ

২০২০ সালের করোনা বৈশ্বিক মহামারীর থেকে বাংলাদেশে ই-কমার্সের অভূতপূর্ব বৃদ্ধির যুগের প্রবেশ করেছে। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের প্রসার কারণে অনলাইন শপিং এখন বাংলাদেশের মানুষের দৈনন্দিন জীবনে অংশ।

বিশেষ করে মানুষের হাতে হাতে এখন এন্ড্রেয়েড স্মার্টফোন থাকায় বাংলাদেশি ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলোর ব্যবসা শুধুমাত্র শহরের নয়, গ্রামেও পৌঁছে যাচ্ছে। এ ধরনের সাইটের মাধ্যমে যে কোনো পণ্য কেনাকাটা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী হয়ে উঠেছে।

তবে, অনলাইন কেনাকাটার জন্য বিশ্বাসযোগ্য ও জনপ্রিয় সাইট বেছে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে বাংলাদেশের কিছু জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত ই-কমার্স সাইটের তথ্য তুলে ধরা হলো।

জনপ্রিয় বাংলাদেশি সাধারন ই-কমার্স সাইট

daraz logo

daraz.com.bd 

দারাজ বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বহুদেশিক মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস। দেশী বিদেশী অসংখ্য দোকানদার তাদের পণ্য এখানে বিক্রি করে। দারাজে ইলেকট্রনিক্স, ফ্যাশন, হোম অ্যাপ্লায়েন্সসহ বিভিন্ন পণ্যের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে।

দারাজ ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ৩,৬০০,০০০

 

ajkerdeal logo

ajkerdeal.com 

আজকের ডিল একটি বাংলাদেশি ই-কমার্স মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস। এর উদ্যোগক্তা বিডি জবস এর প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর। এখানে ইলেক্রনিক্স, ফ্যাশন, হোম অ্যাপ্লায়েন্সসহ নানা পণ্যের সমাহার রয়েছে।

আজকের ডিল ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ২১৮,০০০ 

অথবা লোগো

Othoba.com

অথবা একটি সার্বিক ই-কমার্স ওয়েবসাইট তারা বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রি করে থাকে। 

অথবা ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ২৯৭,০০০ 

লাইফ স্টাইল ও ফ্যাশনের জন্য অনলাইন শপিং ওয়েবসাইট

আড়ং লোগো

Aarong.com

আড়ং বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইথনিক ফ্যাশন ব্র্যান্ড। শাড়ি-কাপড়, সালওয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবী, অলংকারসহ নানা ফ্যাশন আইটেম এখানে পাওয়া যায়। এই ব্রিক অ্যান্ড ক্লিক শপ বাংলাদেশি কারিগরদের হাতে তৈরি পণ্যের জন্য বিখ্যাত।

আড়ং ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ১৩৪,০০০ 

 

মুদি বাজার সদাই এর জনপ্রিয় বাংলাদেশি ই-কমার্স সাইট

চাল ডাল লোগোChaldal.com

চালডাল একটি মুদি বাজার সেবার ই-কমার্স সাইট, যা তাজা ফলমূল, শাকসবজি, দুগ্ধজাত পণ্য ও অন্যান্য গৃহস্থালি সদাই সরবরাহ করে।

চাল ডাল ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ২৬৫,০০০ 

স্বপ্ন লোগো

Shwapno.com 

স্বপ্ন এসিআই গ্রুপের চেইন সুপার সপ। এড়াও তাজা ফলমূল, শাকসবজি, দুগ্ধজাত পণ্য ও অন্যান্য গৃহস্থালি সদাই অনলাইনে বিক্রি করে। 

স্বপ্ন ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ১০৯,০০০ 

 

কসমেটিক্স এবং রূপচর্চা

সাজগোজ লোগো

Shajgoj.com

সাজগোজ তুলনামুক নুতন হলেও বেশ অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে ফেলেছে। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কসমেটিক্স এবং রুপচর্চার ই-কমার্স শপ। অনলাইন স্টোরের পাশাপাশি ঢাকা শহরের বিভিন্ন অভিজাত জায়গায় তাদের দোকান রয়েছে। 

সাজগোজ ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ২৯৪,০০০

 

বাংলা শপারস লোগো

BanglaShoppers.com

বাংলা সপার আরেকটি জনপ্রিয় কসমেটিক্স শপ। তাদের ত্বক-সুরক্ষা, সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং পারফিউম এর সমৃদ্ধ সংঘ্রহ রয়েছে।

বাংলা সপারস ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ৪৮,৪০০ 

 

 

ঔষধ এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক ই-কমার্স সাইট

আরোগ্য লোগো

www.arogga.com

আরোগ্যতে সব ধরনের ঔষধ, স্বাস্থ্যরক্ষা এবং রূপচর্চা কিনতে পাওয়া যায়। তারা কমদামে দ্রুত পণ্য পৌঁছে দেবার দাবি করে।

আরোগ্য ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ৬৪০,০০০ 

কম্পিউটার, গেজেট এবং ইলেকট্রনিক্সের জন্য অনলাইন শপিং সাইট

স্টারটেক লোগো

startech.com.bd

স্টারটেক বাংলাদেশর সুনামধারি কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, ল্যাপটপ, গেমিং ডিভাইস ও ইলেকট্রনিক্সের ব্রিক-এন্ড-কিল্ক স্টোর। অর্থাৎ তাদের মার্কেটে শোরুম আছে আবার অনলাইনেও পণ্য বিক্রি করে। মুলত বিক্রি পরবর্তী গ্রাহক সেবার মাধ্যমে তারা সুনাম অর্জন করেছে।

স্বপ্ন ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ১,৮০০,০০০ 

 

রায়ান্স লোগো

www.ryans.com

রায়ান্স কম্পিউটার বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো কম্পিউটার এবং আই টি প্রোডাক্টের শপ। তাদের আগারগাওনের বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে সুবিশাল শোরুম দোকানের পাশাপাশি সমৃদ্ধ অনলাইন শপও আছে।

রায়ান্স ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ৪১৮,০০০

পিকাবু লোগো

pickaboo.com

পিকাবু একটি জনপ্রিয় অনলাইন ইলেকট্রনিক্সের শপিং সাইট। এখানে মোবাইল ফোন, গেজেট, হোম অ্যাপ্লায়েন্সস এবং নানা ধরনের ইলেকট্রনিক্স এক্সেসরিস কিনতে পাওয়া যায়।

পিকাবু ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ৩৭৩,০০০

অনলাইনে বই এবং ষ্টেশনারী কেনাকাটা 

রকমারি লোগো

rokomari.com

রকমারি আরেকটি পরিচিত অনলাইন বুকস্টোর, যেখানে বিভিন্ন ধরণের বই যেমন- ফিকশন, নন-ফিকশন, অ্যাকাডেমিক টেক্সট পাওয়া যায়। বই ছাড়াও রকমারি স্টেশনারি ও অন্যান্য শিক্ষাসামগ্রী পাওয়া যায়।

রকমারি ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ১,৮০০,০০০

বই বাজার লোগো

BoiBazar.com

বই বাজারে বাংলা ও ইংরেজি বইয়ের সংগ্রহ রয়েছে। বিশেষ করে বাংলা সাহিত্য এবং স্কুল, কলেজের লেখাপড়ার বই এখানে পাওয়া যায়।

বই বাজার ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ২৭,৫০০

কাস্টমার থেকে কাস্টমার ই-কমার্স শপ

বিক্রয় লোগো

Bikroy.com

বিক্রয় ডট কম বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্র্যি বি-টু-বি ব্যবহৃত পণ্যের অনলাইন শপ। মানুষজন তাদের মোবাইল ডিভাইস থেকে গাড়ি সব কিছুই এখানে ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে।

বিক্রয় ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ১,২০০,০০০

ক্লিক বিডি লোগো

 

ClickBD.com

ক্লিকবিডি আরেকটি ক্লাসিফায়েড ব্যবহৃত পণ্যের ই-কমার্স দোকান। গ্রাহকরা তাদের পুরনো পণ্য এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে

ক্লিকবিডি ডট কমের মাসিক গড় অর্গানিক ভিজিটরঃ ১৯,৩০০

 

কেনাকাটার জন্য বাংলাদেশি ই-কমার্স ওয়েবসাইট বেছে নেওয়ার বিবেচ্য বিষয়সমূহ

১. পণ্যের সংগ্রহ: নিশ্চিত করুন যে সাইটটি তে আপনার প্রয়োজনীয় পণ্যগুলি নিয়মিত বিক্রি করে থাকে।

২. মূল্য নির্ধারণ: যেকোনো পণ্য কেনার আগে বিভিন্ন সাইটের মূল্য তুলনা করুন।

৩. শিপিং খরচ ও ডেলিভারি সময়: শিপিং চার্জ ও আনুমানিক ডেলিভারি সময় ভালো করে দেখে নিন।

৪. পেমেন্ট অপশন: বিক্রেতা যাই দাবি করুক না কেন, কেনাকাটার সব সময় আপনার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও সুবিধাজনক পেমেন্ট পদ্ধতির সাইট নির্বাচন করুন।

৫. ফেরত ও রিফান্ড নীতি: সাইটের ফেরত ও রিফান্ড নীতি ভালো করে পর্যালোচনা করুন। 

নিরাপদ অনলাইন শপিং এর জন্য অতিরিক্ত টিপস

নিরাপদে অনলাইন শপিং করার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। আপনি ব্যক্তিগত ভাবে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নিতে পারেন।

  • পণ্য কেনার আগে গ্রাহকের রিভিউ পড়ুন।
  • অত্যন্ত আকর্ষণীয় ডিল সম্পর্কে সতর্ক থাকুন।
  • আপনার অনলাইন শপিং অ্যাকাউন্টের জন্য শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
  • অনলাইন লেনদেনের জন্য পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
  • আপনার সফটওয়্যার ও অপারেটিং সিস্টেম আপডেট রাখুন।

পরিশেষ

বাংলাদেশে জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলো বেছে নেওয়ার জন্য উপরের বিষয়গুলো বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। দারাজ, পিকাবু, রকমারি, চালডাল এবং স্টারটেক এর মত সাইটগুলোতে কেনাকাটা করলে আপনি সুবিধাজনক ও নিরাপদ অনলাইন শপিং অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারবেন। তাই এই সাইটগুলো ঘুরে দেখুন এবং বেছে নিন আপনার পছন্দের বাংলাদেশি ই-কমার্স ওয়েবসাইট।

নিরাপদে অনলাইন শপিং | বাংলাদেশে ই-কমার্স কেনাকাটার গাইড

নিরাপদে অনলাইন শপিং | বাংলাদেশে ই-কমার্স কেনাকাটার গাইড

বাংলাদেশে অনলাইন শপিং দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ঘরে বসে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার সুবিধা অনেকেই গ্রহণ করছেন। তবে ই-কমার্স কেনাকাটায় সুবিধার সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে কিছু নিরাপত্তা ঝুঁকিও। ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, আলেশা মার্ট এবং ধামাকা শপিং শুধু এই ৪ টি প্রতিষ্ঠান লোভনীয় অফার দিয়ে গ্রাহকের ৬০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে

নিরাপদে অনলাইন শপিং করার জন্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি। আজকের এই গাইডে আমরা আলোচনা করব আপনি কিভাবে বাংলাদেশে নিরাপদে অনলাইনে কেনাকাটা করতে পারেন।

নির্ভরযোগ্য অনলাইন শপ নির্বাচন

বাংলাদেশে নিরাপদে অনলাইন কেনাকাটা করার প্রথম ধাপ হল একটি ভালো অনলাইন শপ নির্বাচন করা। অনলাইন শপ যদি নিরাপদ না হয় তাহলে আর কোন ভাবেই ই-কমার্স শপিং নিরাপদ করা সম্ভব নুয়।

সুনামধারি ব্র্যান্ডেড অনলাইন শপ

বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক ব্র্যান্ডের সপ চালু হয়েছে। যেমন জুতার ক্ষেত্রে বাটা, এপেক্স সুনামের সাথে বহু বৎসর যাবত ব্যবসা করে আসছে। তাদের পণ্য দামে কিছু বেশি হলেও এইসব অনলাইন দোকান থেকে কেনাকাটা করা তুলনামুকভাবে নিরাপদ। 

আপনি যদি নন-ব্র্যান্ড পণ্য কিনতে চান তাহলে বহুল পরিচিত পুরানো ই-কমার্স ওয়েবসাইট যেমন ইলেক্রনিক্স এর ক্ষেত্রে স্টারটেক, রায়নাস ইত্যাদি থেকে পণ্য কেনার চেষ্টা করা তুলনামূলকভাবে অধিক নিরাপদ।

প্রফেশনাল ওয়েবসাইট ডিজাইন ও পরিষ্কার যোগাযোগ তথ্য 

প্রথমেই দেখে নিতে হবে ওয়েবসাইটের ডিজাইন পরিস্কার এবং পেশাদার কিনা। ভাঙ্গা-চোরা ওয়েবসাইট পেশাদারিত্বের অভাব প্রকাশ করে। এতে বোঝা যায় তারা গ্রাহক ও ব্যবসা সম্পর্কে কতটুকু আন্তরিক। 

এছাড়াও, সাইটে স্পষ্টভাবে যোগাযোগের তথ্য প্রদান করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করুন। প্রথমবারের মত যেকোনো অনলাইন শপ থেকে কেনাকাটা করার আগে ফোন দিয়ে কথা বলুন। তাদের কথা যদি বিন্দুমাত্র সন্দেহজনক লাগে তাহলে, ঐ অনলাইন শপ থেকে নিরাপদ দূরত্ব থাকুন। 

গ্রাহক পর্যালোচনা ও রেটিং  

স্বতন্ত্র প্ল্যাটফর্মে (যেমনঃ গুগল বিজনেস) গ্রাহকের মতামত ও রেটিং দেখে নিন। এটি আপনাকে ওয়েবসাইটটির বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করতে সাহায্য করবে। রিভিউ যাচাইয়ের ক্ষেত্রে নতুন রেটিং এর প্রতি অধিক গুরুত্ব দিন। কারন অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান শুরুতে ভালো করলেও পরে গ্রাহক সেবায় পিছিয়ে পরে। 

নিরাপত্তা সার্টিফিকেট

ওয়েবসাইটটির URL বারে SSL এনক্রিপশন সার্টিফিকেট রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করুন। এই শংসাপত্রটি সাইটটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। পেশাদার ই-কমার্স ওয়েবসাইটে এই নিরাপত্তা সার্টিফিকেট অবশ্যই থাকবে। যদি না থাকে তাহলে ঐ ওয়েবসাইট থেকে কেনাকাটা করা হতে বিরত থাকাই শ্রেয়।

ব্রাউজারের এড্রেস বারের পাশে এস এস এল সার্টিফিকেটের আইকন

আপনার অনলাইন শপিং লেনদেন নিরাপদ করুন

ব্যক্তিগতভাবে অনলাইন শপিংকে আপনি নিজে আরও নিরাপদ করে তুলতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে লিরাপদ কেনাকাটা করার জন্য কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। সে সম্পর্কে নিচে কিছু টিপস ও আলোচনা করা হল।

শক্তিশালী ও অনন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার  

অনলাইন শপিং অ্যাকাউন্টের জন্য শক্তিশালী ও বিভিন্ন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। নতুন পাসওয়ার্ড সেট করার সময় বড়-ছোট হাতের অক্ষর, নাম্বার ও সংকেত মিলয়ে নুন্যতম ৮ অক্ষরের পাসওয়ার্ড দিন। কখনও ডিকশনারিতে পাওয়া যায় শুধুমাত্র এমন একটি শব্দ দিয়ে পাসওয়ার্ড সেট করবেন না।

একই পাসওয়ার্ড বিভিন্ন সাইটে ব্যবহার করবেন না। গুরুত্বপূর্ণ পাসওয়ার্ড মনে রাখার জন্য একটি নোটবুকে লিখে রিখে রাখতে পারেন।

পাবলিক ওয়াই-ফাই এড়িয়ে চলুন  

কফি শপ, এয়ারপোর্ট এর মত পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে কখনোই অনলাইন লেনদেন করবেন না। সেখানে অনেক ব্যবহারকারি একই অরক্ষিত নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। এই ব্যবহারকারিদের মধ্যে হ্যাকার থাকার সম্ভবনাও আছে। এটি আপনার তথ্য চুরির ঝুঁকি বাড়ায়।

বিপদজনক হ্যাক হওয়া সাইটে ব্রাউজ করছে একজন

সন্দেহজনক অফার এড়িয়ে চলুন

যেসব অফারগুলো খুব বেশি লোভনীয় মনে হয়, সেগুলো থেকে সাবধান থাকুন। অনেক সময় এগুলো প্রতারণামূলক হতে পারে। মাত্র ৫০,০০০ টাকায় আসল আইফোন ১৪ দিয়ে কোনভাবেই ব্যবসায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। কেই যদি এই অসম্ভব কিছু দাবি করে তাহলে নিশ্চিতভাবেই প্রতারক।

মনে রাখবেন অফার যদি অবিশ্বাস্য হয় তাহলে, বিশ্বাস না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

অনলাইন শপিং পেমেন্ট মেথড

অনলাইন শপগুলোতে সাধারনত বিভিন্ন ধরনের পেমেন্ট ব্যবস্থা থাকে। নিরাপদে কেনাকাটা করার জন্য  আপনার জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক পদ্ধতি বেছে নিতে হবে।  

ক্যাশ অন ডেলিভারি (COD)

ক্যাশ অন ডেলিভারি একটি নিরাপদ পেমেন্ট মেথড হতে পারে কারণ আপনি পণ্য হাতে পাওয়ার পরে ভালো করে দেখে টাকা প্রদান করবেন। বাংলাদেশের অনলাইন সেলার দের মধ্যে পেশাদারিত্তের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তাই ক্যাশ অন ডেলিভারিকেই সবচেয়ে নিরাপদ পেমেন্ট মাধ্যম বলা যায়। তবে এতে কিছু অসুবিধাও থাকতে পারে, যেমন অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান যেমন ফুডপান্ডা ক্যাশ অন ডেলিভারির জন্য অতিরিক্ত চার্জ আদায় করে।

মোবাইল ওয়ালেট ও পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার 

বিকাশ, নগদ, রকেট ইত্যাদি মোবাইল ওয়ালেট ও নিরাপদ পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এটি দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করে। মোবাইল ওয়ালেটগুলো বহু বছর ধরে বাংলাদেশে সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছে, এরা যথেষ্ট নিরাপদ বলেই গ্রাহকের আস্থা এবং সুনাম অর্জন করেছে।

ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড ব্যবহার

অনলাইন কেনাকাটার জন্য আলাদা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করুন। এতে যদি কোনো নিরাপত্তা সমস্যা হয়, তবে আপনার মূল অ্যাকাউন্ট রক্ষা পাবে। ডেবিট কার্ড দিয়ে অনলাইনে কেনাকাটা না করাই ভালো। কারন ডেবিট কার্ডের সাথে আপনার ব্যাংক একাউন্টের সংযোগ থাকে। ডেবিট কার্ডের কোনো নিরাপত্তা সমস্যা হলে আপনার ব্যাংকের সমস্ত টাকা ঝুকিতে পরে যাবে।

ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করার সময় PCI DSS (Payment Card Industry Data Security Standard) মেনে চলা ওয়েবসাইটে লেনদেন করুন। অনেক বড়-বড় ই-কমার্স শপ এবং অ্যাপ আপনকে ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডের নাম্বার এবং পিন-পাসওয়ার্ড সেভ করে রাখতে বলবে। কিন্তু এসব বড় সাইটের নিরাপত্তা ভেদ করে গ্রাহকের ডাটা চুরি নতুন ঘটনা নয়। নিরাপদ থাকার জন্য এসব সাইটে কার্ডের নাম্বার এবং পিন-পাসওয়ার্ড সেভ না করে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।

অনলাইনে কেনাকাটা করার জন্য ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড থেকে দিয়ে পেমেন্ট করছে

রিটার্ন ও রিফান্ড পলিসি যাচাই করুন

বাংলাদেশে প্রত্যেক ই-কমার্স ওয়েবসাইটে রিটার্ন এবং রিফান্ড নীতি থাকা আইনত বাধ্যতামূলক। কোন পণ্য কেনার আগে ওয়েবসাইটটির রিটার্ন ও রিফান্ড পলিসি ভালোভাবে দেখে নিন। কোন পণ্য রিটার্ন করা যাবে, কত দিনের মধ্যে করা যাবে এবং কীভাবে রিফান্ড পাওয়া যাবে তা স্পষ্টভাবে জানুন। ওয়েবসাইটে যদি রিটার্ন ও রিফান্ড পলিসি না থাকে তাহলে ওখান থেকে না কেনাই শ্রেয়। কারন স্পষ্টত ওই বিক্রেতা আইনের ব্যপারে শ্রদ্ধাশীল না, তাই সে গ্রাহকের সেবা ও নিরাপত্তায় শ্রদ্ধাশীল হবে এমন ভাবার কন কারন নেই।

 

 

ব্যক্তিগতভাবে ই-কমার্স শপিং এ সতর্কতা অবলম্বন করুন

ব্যক্তিগতভাবে আপনি অনলাইন কেনাকাটায় সতর্কতা অবলম্বন করলে অনেক বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

ফিশিং ইমেইল ও ওয়েবসাইট থেকে সাবধান 

ফিশিং ইমেইল ও ওয়েবসাইট থেকে সাবধান থাকুন। এসব ইমেইল বা সাইটগুলি সাধারণত বৈধ অনলাইন শপের মতো হুবহু দেখতে হয় এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার চেষ্টা করে। যেমন daraz.com.bd কে কপি করে daraz.co বা অন্য কোন সাইট আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার চেষ্টা করতে পারে।

প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান  

অনলাইনে কেনাকাটা করার সময় প্রয়োজনীয় তথ্য ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না। যেই তথ্যের ব্যবহারে পরিষ্কার কোন কারন নেই সেই তথ্য চাওয়ারও কোন কারন নেই।

ওটিপি ব্যবহার

ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা অটিপি আপনার অনলাইন শপিং অ্যাকাউন্টকে নিরাপদ করে তুলবে। যেসব ই-কমার্স ওয়েবসাইটে অটিপি ব্যবস্থা আছে সেই সব ই-কমার্স শপ তুলনামুকভাবে বেশি নিরাপদ।

অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারিত হলে করনীয়

অনলাইন শপিংয়ের সময় প্রতারণার শিকার হলে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। প্রতারিত হলে আপনি নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন:

প্রমাণ সংরক্ষণ করুন

প্রতারণার শিকার হলে প্রথমে সমস্ত প্রমাণ সংগ্রহ এবং সংরক্ষন করুন। যেমন অর্ডার ইমেইল, পেমেন্টের রসিদ, মেসেজ, এবং পণ্যের ছবি। এগুলো পরবর্তীতে অভিযোগ দায়েরের সময় প্রয়োজন হবে।

অর্থ ফেরতের জন্য বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করুন

প্রতারণার শিকার হলে প্রথমেই সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স সাইটের গ্রাহক সেবায় যোগাযোগ করুন। তাদেরকে আপনার সমস্যা সম্পর্কে জানিয়ে অর্থ ফেরত অথবা পণ্য পরিবর্তনের দাবি করুন। অনেক সময় সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।

ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করুন

যদি বিক্রেতার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে সমাধান না হয়, তাহলে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। বাংলাদেশের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (DNCRP) এই ধরনের অভিযোগ গ্রহণ করে থাকে। আপনি তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে অভিযোগ ফর্ম পূরণ করতে পারেন অথবা [email protected] ইমেইলে অভিযোগ পাঠাতে পারেন।

পুলিশের কাছে জিডি (জেনারেল ডায়েরি) করুন

প্রতারণার পরিমাণ বড় হলে বা যদি অর্থ ফেরত না পান, তাহলে স্থানীয় থানায় গিয়ে অথবা অনলাইনের একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন। জিডির মাধ্যমে পুলিশ আপনার অভিযোগ রেকর্ড করবে এবং তদন্ত শুরু করবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ প্রকাশ করুন

অনেক সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ প্রকাশ করলে ই-কমার্স সাইটগুলো দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায়। আপনার প্রতারণার অভিজ্ঞতা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজে স্ট্যাটাস এবং দিয়ে পাবলিক গ্রুপে পোস্ট দিয়ে শেয়ার করুন এবং সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স সাইটটিকে বা পেজকে ট্যাগ করুন।

কাস্টমার রিভিউ ও ফোরামে অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন

গুগল বিজিনেসে এবং অন্যান্য অনলাইন শপিং সাইটগুলোর রিভিউ সেকশনে আপনার প্রতারণার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন। এতে অন্যরা সতর্ক হবে এবং আপনিও আপনার সমস্যার সমাধান পেতে পারেন।

পরিশেষ

নিরাপদ অনলাইন শপিং নিশ্চিত করতে হলে উপরোক্ত টিপসগুলি মেনে চলুন। অনলাইনে কেনাকাটা করতে গেলে সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি। প্রতারণার শিকার হলে দ্রুত এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে আপনার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

সঠিক তথ্য ও সতর্কতার মাধ্যমে আপনি অনলাইন শপিংয়ের সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন এবং প্রতারণার শিকার হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারবেন। নিরাপদে অনলাইন শপিং করুন এবং নির্ভয়ে আপনার পছন্দের পণ্য কিনুন।

ফেসবুক এবং ওয়েবসাইটে ই-কমার্স ব্যবসা এর সুবিধা ও অসুবিধা?

ফেসবুক এবং ওয়েবসাইটে ই-কমার্স ব্যবসা এর সুবিধা ও অসুবিধা?

কামাল একজন ফেসবুক সেলার – ফেসবুক এর মাধ্যমে তিনি ফ্যাশন আইটেম বিক্রি করেন।  ইদানিং ব্যবসা নিয়ে কামাল বেশ দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন। ফেসবুকে তার একটি ভালো কাস্টমার বেজ আছে, বিক্রিও বেশ ভালোই হয়।

কিন্তু আজকাল ফেসবুক হুটহাট করে পলিসি, অ্যালগরিদম বদলে ফেলে – মাঝে মাঝে পেজ রেস্ট্রিক্ট করার ওয়ার্নিংও দেয়। যদি পেজে কোন একটা ঝামেলা হয়, তাহলে তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই ফেসবুকের উপর ইদানিং আগের মত আর ভরসা করতে পারছেন না কামাল। 

এই সমস্যা সমাধানে কামাল ফেসবুক সেলারদের মধ্যে জনপ্রিয় কিছু গ্রুপ এ পোস্ট দিলেন । তার মতো যারা ফেইসবুক কেন্দ্রিক ব্যবসা করেন তাদের সাথে কথাবার্তা বললেন। সবারই এক কথা – “ভাই, নিজের একটা ওয়েবসাইট করতে হবে।একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট থাকলে ব্যবসার উপর নিয়ন্ত্রণ, সুনাম আর বিক্রি বাড়ে। তবে ওয়েবসাইটে ব্যবসা করতে হলে কিছু সময় এবং টাকা বিনিয়োগের প্রয়োজন।”    

টাকা-পয়সা খরচ করতে বা ওয়েবসাইট নিয়ে সময় দিতে কামালের কোন সমস্যা নেই, কিন্তু নিজস্ব ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানালে আসলেই কি তার কোন লাভ হবে? নাকি শুধুমাত্র ফেসবুকের উপর ভরসা করাই সঠিক কৌশল?

শুধু কামাল নন, সারা দুনিয়া জুড়ে লাখ-লাখ ব্যবসা এই দুশ্চিন্তা মধ্যে দিন যাপন করছে। তাই, আজ আমরা ফেসবুক পেজ আর ই-কমার্স ওয়েবসাইটের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করবো। এর সাথে ধরনা দেবার জন্য চেষ্টা করবো – আপনার ব্যবসার ক্ষেত্রে কোন মাধ্যম অধিক লাভজনক ও কার্যকর। 

ই-কমার্স ব্যবসা

শুরুতেই বলে নেই, ই-কমার্স ব্যবসা কি জিনিস? মূলত ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল প্রযুক্তি এর মাধ্যমে পণ্য ও সেবার ক্রয়-বিক্রয় ইত্যাদি করাকেই ই-কমার্স বলে। ইলেকট্রনিক কমার্সকে, অনেকে আবার ই-বাণিজ্যও বলে। বাংলাদেশ ফেসবুকের উপর ব্যবসায়িরা অধিক নির্ভর করেলও, উন্নত বিশ্বে নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই বেশির ভাগ ই-কমার্স ব্যবসা করা হয়ে থাকে। 

ফেইসবুক পেজ বা স্টোরে ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা

ফেইসবুক পেজ নতুন উদ্যোক্তাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। দ্রুত ন্যূনতম বা আপাত দৃষ্টিতে বিনা খরচে কাস্টমারদের কাছে  প্রোডাক্ট পৌঁছে দেয়াই এর প্রধান আকর্ষণ।। এটা বললে ভুল হবে না যে, অনেক অভিজ্ঞ ব্যবসাও প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করছে।

ফেসবুক শপ বা কমার্স (Facebook shops, commerce) তুলনামূলকভাবে নতুন। বিক্রেতাদের চাহিদার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ২০২০ সালে ফেসবুক শপস আত্মপ্রকাশ করেছিল। যারা মার্কেটপ্লেসের ইতিমধ্যেই অনেক বড় এবং ফেসবুক ব্যবহারকারী বেসের সুযোগ ব্যবহার করতে চায় – তাদের টার্গেট করে ফেসবুক এই সুবিধাটি নিয়ে আসে।

এটির উদ্দেশ্য ছিল বাণিজ্যিক বিক্রেতাদের বৃহত্তর ভলিউমে মার্চেন্ডাইজিং এবং অর্ডার পরিচালনার জন্য আরও উপযুক্ত চ্যানেলে নিয়ে যাওয়া।

একটি ফেসবুক শপ হল একটি স্টোরফ্রন্ট, যেখানে বিক্রয়ের জন্য আলাদা-আলাদা পণ্য পেজ, সম্পূর্ণ পণ্য ক্যটাগরি পেজ এবং একটি শপিং কার্ট থাকে। কিন্তু এটি শুধুমাত্র Facebook ইকোসিস্টেমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আবার প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল এবং লম্বা। ক্রেতাকে এখনও পণ্য খুঁজে পেতে এবং অর্ডার করার জন্য বেশ কয়েক যায়গায় ঘুরতে হয়। উপরন্তু ক্রেতাদের খুঁজে পেতে আপনাকে ফেসবুকে পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে হবে। বিজ্ঞাপন ছাড়া পণ্যের বিক্রি সম্ভবনা খুবই সীমিত।

Facebook শপ একটি ভাল প্ল্যাটফর্ম এবং আজ, ৫০ মিলিয়নেরও বেশি ছোট এবং মাঝারি ব্যবসার পেজ রয়েছে যারা ব্যবসা চালানোর জন্য Facebook স্টোরের উপর নির্ভর করে।

যাইহোক, যদি আপনি একটি নাম, ব্র্যান্ড তৈরি করতে এবং ব্যবসার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চান তবে একটি Facebook স্টোর আপনার ব্যবসার পুরো কৌশল হতে পারে না। মার্কেটিং, বিক্রয় এবং মুনাফা অর্জনের অনেকগুলো উপায়ের মধ্যে, এটি মাত্র একটি।

ফেসবুক শপে অনলাইন ব্যবসার সুবিধা

  1. ব্রড রিচঃ ফেসবুকের বিশাল ইউজার বেস আছে, যা আপনার ব্যবসাকে বিস্তৃত করতে সাহায্য করবে। ফেসবুকের ইউজার বেজই এর মুল আকর্ষণ। যদিও এখন টিকটকের মত নতুন নতুন সোশ্যাল ফেসবুক কে বেশ চেলেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
  2. বিনামুল্যে ব্যবহারঃ ফেসবুক পেজ বিনা মুল্যে সেটআপ ও ব্যবহার করা যায়। ক্ষুদ্র ব্যবসা স্বল্প খরচে চালু করার জন্য এটি একটি ভাল মাধ্যম।
  3. কাস্টমারের সাথের সরাসরি যোগাযোগঃ ক্রেতা-বিক্রেতা ফেসবুকে সরাসরি কথা বলতে পারে। কাস্টমারের জিজ্ঞাসার উত্তর সঠিক ও সময় মত দিতে পারলে বিক্রির সম্ভবনা অঙ্ক বৃদ্ধি পায়।
  4. ফেসবুক ইন্সাইটস ও আন্যালিটিক্সঃ ফেসবুক নিজে থেকেই ফ্রিতে অনেক ইন্সাইটস ও আন্যালিটিক্স দেয়। তাই আপনার থার্ড পার্টি আন্যালিটিক্স টুল ব্যবহার করার প্রয়োজন পরে না।
  5. ফেসবুক-ইন্সটাগ্রামঃ মেটা বিজিনেস সুইট দিয়ে একসাথে দুইটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম ম্যানেজ করা যায়। তাতে ব্যবসা ম্যনেজ করা সহজতর হয় সাথে সাথে সময়ও কম লাগে।
  6. ফেসবুক লাইভঃ ফেসবুক লাইভ করে সেল করা যায়। এখন অনলাইনে বিক্রির জন্য, বিশেষ করে মেয়েদের কাছে এটি বেশ জনপ্রিয়। একজন দক্ষ লাইভ প্রেজেন্টার আপনার বিক্রি বহুগুন বারিয়ে দেবার সম্ভবনা সৃষ্টি করে।
  7. ই-কমার্স ইন্টিগ্রেশনঃ ফেসবুক শপের সাথে দেশীকমার্স (DeshiCommerce)  বা  শপিফাই (Shopify) এর মত সুনামধারী ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো সহজেই ইন্টিগ্রেড করা যায়। আপনি নিজের ওয়েবসাইটে প্রোডাক্ট আপ করলে ফেসবুকে অটোমেটিক আপ হয়ে যাবে।

ফেসবুক স্টোরে অনলাইন ব্যবসার অসুবিধা

  1. ফেসবুক পেজ বন্ধ, অ্যাড একাউন্ট বাতিলঃ ফেসবুকে পেজের মাধ্যেম ব্যবসা সম্পূর্ণ ফেসবুকের মন-মর্জির উপর নির্ভরশীল। ফেসবুক পলিসি পরিবর্তনের কারনে যেকোনো দিন, বিনা কারণে পেজ বন্ধ, অ্যাড একাউন্ট বাতিল হয়ে যেতে পারে।
  2. সীমিত অর্গানিক সেলঃ ফেসবুকে নিয়মিত পেইড অ্যাড ছাড়া বিক্রি করে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা খুবই দুরহ। ডলার খরচে অতিরিক্ত ভ্যাট আর হুটহাঁট  অ্যাড রেস্ত্রিকশনের কারনে অনেক ব্যবসায়ী পেইড অ্যাড করতে পারে না।
  3. নেগেটিভ কমেন্ট-রিভিউঃ ফেসবুকে পেজ থেকে কোন পন্য না কিনেই শত্রুতা বশত, যে কেউই আজে বাজে কমেন্ট অথবা নেগেটিভ রিভিউ দিতে পারে। যা আপনার ব্যবসার জন্য খুবই ক্ষতির কারন হতে পারে।
  4. কম্পিটিশনঃ ফেসবুকে এখন সেলার সংখ্যা অনেক বেশি। প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, আপনার পেজে ভিজিটর এসে কোন প্রোডাক্টে ইন্টারেস্ট দেখালে ফেসবুক তাকে আপনার ব্যবসার প্রতিযোগীর পেইড বিজ্ঞাপন দেখিয়ে সেই সেলারের পেজে নিয়ে যায়।
  5. খরচঃ ফেসবুক সেটআপ করতে কোন খরচ না লাগলেও ব্যবসার মার্কেটিং করতে আপনাকে প্রচুর খরচ করতে হবে।
  6. কাস্টমার প্রাইভেসিঃ সত্যি বলতে ফেসবুকে কাস্টমারের কোন প্রাইভেসি নেই। ফেসবুক আপনার কাস্টমারের সকল তথ্য বিক্রি করে। তাই আজকাল অনেক সচেতন কাস্টমার ফেসবুক থেকে কেনা হতে বিরত থাকে।
  7. সীমিত কাস্টমাইজেশনঃ ফেসবুকে কাস্টমাইজেশন করার সুযোগ এবং অন্যদের হতে নিজেকে আলাদা করার সুযোগ নেই বললেই চলে। সব পেজ দেখতে একই রকম তাই ব্রান্ড ইমেজ তৈরি করে ইম্প্রেস করার কোন সুযোগ নেই।
  8. সীমিত সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO): শুধুমাত্র ফেসবুক পেজ দিয়ে ব্যবসা করলে গুগলের মত সার্চ ইঞ্জিন হতে কাস্টমার আসার সম্ভবনা একদম সীমিত। (আসলে নেই)

ফেসবুকের সমন্বয়হীন পলিসি পরিবর্তন সম্পর্কে কিছু বিশেষ দ্রষ্টব্য 

ব্যবহারকারিদের তথ্য বিক্রি, প্রাইভেসি নষ্ট এবং ইউরোপ-আমেরিকান প্রচলিত আইন লঙ্ঘনের কারনে, ২০১৮ সালে ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। বেশ কয়েক বছর মামলা চলার পর, ২০২২ সালে ফেসবুক দোষ স্বীকার করে প্রায় ৭২৫ মিলিয়ন ডলার, যার বর্তমান বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ৭.৮৮ হাজার কোটি টাকা জরিমানা দেয়। 

মামলার পর থেকে ফেসবুক তাদের টপ ম্যনেজমেন্টে বিশাল রদবদল আনে। এমনকি কোম্পানি নাম ফেসবুক  পরিবর্তন করে মেটায় (Meta) রুপান্তর হয়। এরপর থেকে ফেসবুক পেজগুলোর উপর নজরদারি অনেকগুন বেড়ে যায়। এই নজরদারি প্রায় পুরোটাই করে কম্পিউটার। কিন্তু কম্পিউটার বাংলাদেশের ভাষা বা সংস্কৃতি বোঝে না। তাই প্রায়ই ভুল করে ভালো-ভালো পেজ এবং অ্যাড আকাউন্ট কে বিনা দোষে রেস্ট্রিক্ট করে ফেলে। 

এই ভুলের বিরুদ্ধে আপিল করার পর মানুষ নয়, আবার সেই কম্পিউটারই রিভিউ করে এবং ফলস্বরূপ আজীবন রেস্ট্রিক্ট (Permanent ban) করা হয়। এরপর একজন ব্যবসায়ীর আর কিছুই করার থাকে না। অনেক চতুর ব্যক্তি এই সময় ব্যবসায়ীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভুল বোঝায় এবং বিভিন্নভাবে আকাউন্ট রেস্ট্রিক্ট ঠিক করার চুক্তি নেয়। তারা বিশাল অঙ্কের টাকাও প্রতারণার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আদায় করে। 

আমরা এত দিনের অভিজ্ঞতা থেকে নিশ্চিতভাবে বলতে পারি পার্মানেন্ট রেস্ট্রিক্ট করা আকাউন্ট উদ্ধার করার এখনও পর্যন্ত কোন সাধারন সমাধান নেই। আমেরিকান আদালতে মামলা করে হয়তো আপনি উদ্ধার করতে পারেন।

সত্যি বলতে, অতি বৃহৎ বিজ্ঞপন দাতা, আমেরিকান-ইউরোপিয়ান নাগরিক এবং ক্ষমতাশালী ছাড়া ফেসবুক সরাসরি কাস্টমার সাপোর্ট দেয়ার ঘটনা এখন খুবই বিরল। আসলে আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকলে ফেসবুক কাউকেই এখন আর তাদের প্রতিষ্ঠানের সত্যিকারের মানব কর্মচারী দিয়ে সাপোর্ট দেয় না। 

এখন এমন একটা অবস্থা দাঁড়িয়েছে যে, ফেসবুকের কম্পিউটারের বিন্দুমাত্র সন্দেহ হলে, বিশেষ করে বাংলাদেশি আকাউন্টের ক্ষেত্রে কোন বাছ-বিচার ছাড়াই যে কাউকেই ব্যান অথবা রেস্ট্রিক্ট করে ফেলে। আমেরিকায় এটাকে এখন ক্যান্সেল কালচার (Cancel culture) বলা হয়।

নিজস্ব ওয়েবসাইটে ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা

অনেক ছোট-বড়, মাঝারি ব্যবসা শুধুমাত্র ফেসবুক পেজের উপর নির্ভর না করে নিজস্ব ই-কমার্স ওয়েবসাইট দিয়ে অনলাইন ব্যবসা করে। অর্থাৎ তারা ব্রান্ড ইমেজ, অধিক বিক্রি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ফেসবুক পেজের সাথে সাথে ই-কমার্স ওয়েবসাইট দিয়েও ব্যবসা করেন।

সেই ক্ষেত্রে ফেসবুক পেজ একমাত্র ব্যবসার উপায় হয় না, বরং অনেকগুল মার্কেটিং মিডিয়ার একটিতে রুপান্তরিত হয়। সকল মিডিয়া হতে ভিজিটর ওয়েবসাইটে যায় এবং সেখান থেকে কেনা কাটা সম্পন্ন করে।

ওয়েবসাইট দিয়ে ই-কমার্স ব্যবসার মডেল
ওয়েবসাইট দিয়ে ই-কমার্স ব্যবসার মডেল

 

 

ওয়েবসাইটে ই-কমার্স ব্যবসার সুবিধা

  1. সম্পূর্ণ মালিকানাঃ ই-কমার্স ওয়েবসাইটের সম্পূর্ণ মালিকানা উদ্যোগতক্তার। শুধুমাত্র আপনি ছাড়া ওয়েবসাইট কেউ বন্ধ পারবে না।
  2. ব্যবসার নিরাপত্তা এবং নিয়ন্ত্রণ: ব্যবসার নকশা, কার্যকারিতা এবং গ্রাহকের অভিজ্ঞতার উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয় ই-কমার্স ওয়েবসাইট। ক্রয়-বিক্রয় ছাড়াও ব্যবসার অনন্য কাজে ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
  3. স্থায়ী রেপুটেশন এবং অথোরিটিঃ ই-কমার্স ওয়েবসাইটের রেপুটেশন এবং অথোরিটি একবার তৈরি হয়ে গেলে পেইড মার্কেটিং ছড়াই ভালো বিক্রি হয়। বাংলাদেশের স্টারটেক এবং রায়ান্স কম্পিউটার এর উদাহরণ। রেপুটেড ওয়েবসাইট থাকার কারনে কোন বিজ্ঞাপন ছাড়াই অনলাইন এবং অফলাইনে তাদের প্রচুর পণ্য বিক্রি হয়।
  4. একাধিক কাস্টমার সোর্সঃ ই-কমার্স ওয়েবসাইট ফেসবুক পেজের ইকোসিস্টেমের মত আবদ্ধ নয়। তাই একাধিক সোর্স থেকে কাস্টমার আসে। সোশ্যাল মিডিয়া, সার্চ ইঞ্জিন, ফোরাম, ইউটিইব এবং অ্যাডসহ সব ধরনের মাধ্যম থেকে ভিজিটর ই-কমার্স ওয়েবসাইটে নিয়ে আসা যায়।
  5. কাস্টমাইজেশনঃ ই-কমার্স ওয়েবসাইট একদম নিজের ইচ্ছে মত সাজিয়ে নেয়া যায়। আপনার রুচি, পছন্দ ই-কমার্স ওয়েবসাইটকে কম্পিটিশন থেকে আলাদা করে গ্রাহকদের কাছে তুলে ধরতে পারে।
  6. সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন(SEO) ইকমার্স ওয়েবসাইটগুলি সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপ্টিমাইজ করা যেতে পারে, অর্গানিক ট্র্যাফিক এবং দৃশ্যতা বৃদ্ধি করে।
  7. ব্র্যান্ড ইমেজ এবং সুনাম: একটি ডেডিকেটেড ওয়েবসাইট ব্যবসাগুলিকে তাদের ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি এবং নিয়ন্ত্রণ করতে দেয় কোনো তৃতীয় পক্ষের প্ল্যাটফর্মের সীমাবদ্ধতা ছাড়াই।
  8. গ্রাহক ডেটার মালিকানা: সংগ্রহ করা সমস্ত ডেটা মার্কেটিং কৌশলগুলির জন্য মূল্যবান ইন্সাইট প্রদান করে। এই ডাটা কোন ভাবেই কম্পিটিশনের কাছে যায় না।
  9. ইন্টিগ্রেশন: ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলি ইমেল মার্কেটিং সফ্টওয়্যার, কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট (CRM) সিস্টেম এবং অ্যানালিটিক্স টুলের মতো বিভিন্ন টুল এবং পরিষেবার সাথে ব্যবহার করা যায়।
  10. পেশাদারিত্ব: একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকা একটি ব্যবসায় বিশ্বাসযোগ্যতা এবং পেশাদারিত্ব প্রকাশ করে। কাস্টমারের কাছে গ্রহণযোগ্যতা এবং সুনাম বৃদ্ধি পায়।
  11. কোন প্রত্যক্ষ প্রতিযোগিতা নেই: আপনার ওয়েবসাইটে শুধুমাত্র আপনার পণ্য দেয়া থাকবে এবং কোন প্রতিযোগী পণ্য পাশাপাশি প্রদর্শিত হবে না। তাই কাস্টমার আপনার ওয়েবসাইট থেকে প্রতিযোগীর দোকানে চলে যাবার কোন সম্ভবনা নেই বললেই চলে।

ওয়েবসাইটে ই-কমার্স ব্যবসার অসুবিধা

  1. প্রাথমিক খরচ: একটি ডেডিকেটেড ই-কমার্স ওয়েবসাইট সেট আপ করা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা ফেসবুক শপগুলির তুলনায় প্রাথমিক দিকে সাধারনত খরচ বেশি হয়।
  2. প্রযুক্তিগত জ্ঞান: ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলির সেটআপ এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ফেসবুক শপের চেয়ে বেশি প্রযুক্তিগত জ্ঞানের প্রয়োজন। তবে কিছু কিছু SaaS ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম যেমন দেশী কমার্সে টেকনিক্যাল অথবা কোডিং নলেজ ছাড়াই ই-কমার্স ব্যবসা করা যায়।
  3. সময় বিনিয়োগ: একটি ই-কমার্স সাইট চালানো সময়সাপেক্ষ হতে পারে, নিয়মিত আপডেট এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।
  4. কাস্টমার ধরা: একটি নতুন ই-কমার্স সাইটে ট্র্যাফিক ড্রাইভিং প্রায়ই শুরুতে বেশি মার্কেটিং এবং SEO প্রচেষ্টার প্রয়োজন পরে।
  5. ডোমেইন এবং ওয়েব হোস্টিং ম্যানেজ করাঃ ডোমেইন নেম এবং ওয়েব হোস্টিং এর জন্য আপানকে ফি দিতে হয়। তবে দেশীকমার্স (DeshiCommerce) বা শপিফাই (Shopify) এর মত SaaS ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোতে আপনাকে ওয়েব হোস্টিং এর জন্য আলাদা ফি দিতে হয় না এবং হোস্টিং ম্যানেজ করার ঝামেলাও নেই।

কাদের জন্য কখন ফেসবুক অথবা নিজস্ব ই-কমার্স ওয়েবসাইট বেশি ভালো?

উপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায় সব প্ল্যাটফর্মেরই ভালো-মন্দ দিক আছে। তাই আপনার অবস্থান আর পরিস্থিতিই নির্ধারন করবে আসলে কোনটি আপনার জন্য বেশি ভালো। আমরা কিছু সাধারন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা এবং সাজেশন দিব।

যখন ফেসবুক পেজে শপ বা স্টোরে অনলাইন ব্যবসা করা ভালো

  1. মার্কেট টেস্ট এবং ব্যবসা শুরু করার জন্যঃ বলতে গেলে বিনা খরচে প্রাথমিক পর্যায়ে ফেসবুকে সেল করা যায়। তাই মার্কেট টেস্টিং এবং ব্যবসা শুরু করার জন্য এটি একটি ভালো প্ল্যাটফর্ম।
  2. ক্ষুদ্র লোকাল ব্যবসাঃ আপনার ব্যবসা যদি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়। যেমন স্থানীয় রেস্টুরেন্ট, বিউটি পার্লার, ছোট ফ্যাশন বুটিক হাউস তাহলে ফেসবুক পেজই আপনার ব্যবসার জন্য উপযুক্ত মাধ্যম।
  3. সীমিত বাজেটঃ আপনা ব্যবসার বাজেট যদি সীমিত হয় তাহলে ফেসবুকে থাকাই উত্তম।
  4. সাইড অথবা সখের ব্যবসাঃ ব্যবসা যদি আপনার মুল আয়ের সোর্স না হয় তাহলে ফেসবুক পেজই ভালো। কারন আপনি যেকোনো সময় ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারেন।
  5. সিজনাল ব্যবসাঃ আপনার ব্যবসা যদি সিজনাল হয়, যেমন গ্রীষ্মকালে আম বিক্রি। তাহলে সারা বছর ই-কমার্স ওয়েবসাইট পরিচালানা আপনার জন্য সঠিক কৌশল নয়।

যখন নিজস্ব ওয়েবসাইটে ই-কমার্স শপ বা স্টোরে অনলাইন ব্যবসা করা ভালো

  1. পেশাদার ব্যবসায়ী আপনি যদি ব্যবসার ব্যপারে সিরিয়াস হন এবং ব্যবসা আপনার আয় রোজগারের প্রধান সোর্স হয়। তখন ই-কমার্স নিজস্ব ওয়েবসাইটে ই-কমার্স শপ বা স্টোর খুলে অনলাইন ব্যবসা করা আপনার জন্য ভালো। 
  2.  ব্র্যান্ড ইমেজ এবং সুনাম তৈরিঃ যদি নিজের ব্যবসার ব্র্যান্ড তৈরি করা আপনার লক্ষ হয়ে থাকে, তাহলে আপনাকে ই-কমার্স ওয়েবসাইটে ব্যবসা করতেই হবে। কোন ফেসবুক পেজ সেলারকে ক্রেতারা ব্র্যান্ড মনে করে না। 
  3. ব্যবসাকে বড় করাঃ ব্যবসাকে বড় করার সুযোগ রাখতে হলে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ভালো। কারন এতে অপারেশন অটোমেশন করে স্কেল আপ করার সুযোগ থাকে। যেটা আপনি ফেসবুকে কখনই পাড়বেন না।
  4. দীর্ঘস্থায়ী ব্যবসাঃ ব্যবসাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে ই-কমার্স ওয়েবসাইটে ব্যবসা করা ভালো। কারন এতে ব্যবসার উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রন এবং নিরাপত্তা স্থাপিত হয়।
  5. কাস্টমাইজেশনঃ আপনার যদি কাস্টমাইজ করে, আকর্ষণীয় স্টোর ডিজাইন দিয়ে কাস্টমারদের ইম্প্রেস করার ইচ্ছে থাকে, তাহলে ওয়েবসাইটই একমাত্র উপায়।
  6. বিশ্বাস যোগ্যতাঃ একটি ফেসবুক সেলার হতে ই-কমার্স ব্যবসার বিশ্বাস যোগ্যতা বেশি। তাই কাস্টমারের আস্থা অর্জন এবং ভালো ইম্প্রেশন তৈরি করতে ওয়েবসাইট আবশ্যক।
  7. অর্গানিক সেলঃ অর্গানিক বিক্রির উদ্দেশ্য থাকলে ই-কমার্স ওয়েবসাইটে ব্যবসা করা উত্তম। কারন এতে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) করে ভালো অর্গানিক সেল করার সুযোগ থাকে।
  8. একাধিক পেইড অ্যাড মিডিয়াঃ শুধু মাত্র ফেসবুক পেইড অ্যাডের অপর ভরসা না করতে চাইলে, ই-কমার্স ওয়েবসাইটে ব্যবসা করতে হবে। তখন আপনি গুগল, ইউটিউব, টিকটক, ফেসবুকসহ সব যায়গায় অ্যাড দিয়ে বিক্রি বাড়াতে পাড়বেন।

পরিশেষ

ফেসবুক স্টোর বা অন্য কোন সোশ্যাল মিডিয়া স্টোর মূলত আপনাকে তাদের প্ল্যাটফর্মে আপনার পণ্য এবং পরিষেবাগুলিকে প্রদর্শন করতে দেয়। এটি বিক্রয় অর্জনের একটি কার্যকর উপায়। কিন্তু, এর সম্পূর্ণ উপযোগিতা বিচারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। 

ফেসবুক পরিচিত প্ল্যাটফর্ম এবং বিনামূল্যে পাওয়া যায় বলে, আমরা একে অতিরিক্ত মূল্যায়ন করার প্রবণতা রাখি। তারা যদি একদিন বন্ধ হয়ে যায়? আপনার অভিযোগ করার অধিকার থাকবে না। মনে রাখবেন, আপনি সেই প্ল্যাটফর্মের একজন ব্যবহারকারী, শেয়ারহোল্ডার বা মালিক নন। তারা আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে, বা ক্ষতির প্রতি দায়বদ্ধ নয়। অবশেষে, আপনি প্রচুর সংখ্যক গ্রাহক হারাবেন এবং রাতারাতি ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।

অনেক সফল ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মতো আপনি আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক পাঠাতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে পারেন। তারপরে আপনি গ্রাহকদের তালিকা রাখতে পারেন এবং প্রয়োজনে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

অন্য কারো প্ল্যাটফর্মে ব্যবসা গড়ে তোলার চেয়ে নিজের কিছুতে বিনিয়োগ করা বেশী যুক্তি সংগত। এই কারণেই আমরা প্রত্যেক ব্যবসার মালিককে এমন একটি ওয়েবসাইটে বিনিয়োগ করার জন্য সুপারিশ করি, যা একটি স্থায়ী শক্তিশালী ডিজিটাল উপস্থিতি নিশ্চিত করে, যা অনলাইনে আপনার ব্যবসার ব্র্যান্ডিং ও বিক্রি বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।

দেশী-কমার্সের ই-কমার্স ওয়েবসাইট (e-commerce website) তৈরি, অপারেশন ম্যানেজ এবং মার্কেটিংসহ সকল ধরনের সহায়তা দিয়ে থাকে। আপনি যে কোন প্রয়োজন বা জিজ্ঞাসায় আমাদের যোগাযোগ করতে পারেন +8801766 681318 নম্বরে অথবা [email protected] ই-মেইল ঠিকানায়।

ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ বিশ্লেষণ

ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ বিশ্লেষণ
বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রনালয় জাতীয় ডিজিটাল কমার্স(সংশোধিত) নীতিমালা ২০২০ এর পদক্রম অনুসারে ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১’ (Digital Commerce Operation Guidelines 2021) প্রনয়ন করে। 

বিশেষ উল্লেখ্য যে, এই নির্দেশিকাটি ‘জাতীয় ডিজিটাল কমার্স(সংশোধিত) নীতিমালা ২০২০’ এর পরিবর্ধন। অর্থাৎ ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১’ এর মাধ্যমে আগের নীতিমালাটি বাতিল হয়নি বড়ং আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।

এই নির্দেশিকা ২০২১ এর ৪ জুলাই হতে কার্যকর করা হয়েছে, অর্থাৎ ৩ জুলাই, ২০২১ এর পরবর্তীতে বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে সকল ই-কমার্স সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১’ এবং ‘জাতীয় ডিজিটাল কমার্স(সংশোধিত) নীতিমালা ২০২০’ অনুসারে হতে হবে, অন্যথায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা পদক্ষেপ নিতে পারে। 

তাই সকল ই-কমার্স উদ্যোক্তার এই নির্দেশিকা সম্পর্কে সঠিক ধারণা অর্জন করা উচিৎ।

ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ প্রনয়নের উদ্দেশ্য

বাংলাদেশে ই-কমার্স একটি উদয়মান খাত। ই-কমার্স ব্যবসা প্রসারের রয়েছে অপার সম্ভাবনা। কিন্তু কতিপয় অসৎ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডের কারনে ই-কমার্সের উপর গ্রাহকের আস্থা বিনষ্ট হচ্ছিলো। উপরন্তু, সৎ ব্যবসায়ীদের সুনাম ও ব্যবসা হুমকির সম্মুখীন হয় প্রতারকদের কারনে।

তাই, ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা স্থাপন করে ক্রেতা ও বিক্রেতা সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্যই এই নীতিমালাটি প্রণয়ন করা হয়েছে। 

এই নির্দেশিকার উদ্দেশ্যগুলো ধারাসহ দেয়া নিচে হলঃ

“২.২.১ ডিজিটাল কমার্স পরিচালনায় স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা ও জবাব্দিহিতা নিশ্চিত করা।

২.২.২ ডিজিটাল ব্যবসার প্রসারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।

২.২.৩ ডিজিটাল ব্যবসায় শৃঙ্খলা আনয়নের মাধ্যমে ভোক্তার আস্থা বৃদ্ধি ও অধিকার নিশ্চিতের

ব্যবস্থা গ্রহন করা।

২.২.৪ প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা।” 

ডিজিটাল ব্যবসা ও ই-কমার্স সংক্রান্ত সংজ্ঞা

এই নির্দেশিকাতে মার্কেটপ্লেস, পণ্য, ওয়ারেন্টি, গ্যারান্টি, ভেজাল পণ্য, নকল পণ্য, ডিজিটাল ওয়ালেট এবং লটারিসহ অন্যান্য মূল ধারনাগুলো স্পষ্ট ভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।

ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ তে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কার্যক্রমের বলতে বোঝানো হয়েছে, “ কোন পণ্য বা সেবা দুই বা ততোধিক স্তর বিশিষ্ট নেটওয়ার্ক সৃষ্টির মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট কমিশন বা লভ্যাংশ বা অন্য কোন সুবিধা প্রদানের পরিকল্পনা বা প্রতিশ্রুতির আওতায় পরিচালিত বিপনন কার্যক্রম।” 

পারসোনাল রিটেইল অ্যাকাউন্ট নম্বার (PRA) সম্পর্কে বলা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক নম্বর ইস্যু করবে এবং বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক গুলো খুচরা বিক্রেতাদের ব্যাংকিং ও ট্রান্সেকশন সেবা এই অ্যাকাউন্ট নম্বর এর বিপরীতে দিবে।

ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী 

নির্দেশিকাটি তিনটি অধ্যায়ে বিভক্ত এবং এতে সর্বমোট ৭৮ টি ধারা-উপধারা রয়েছে। আমরা এখানে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী আলোচনা করবো। আপানর যদি এর বাইরে কিছু জানার থাকে তাহলে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন অথবা আমাদের ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়।

ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন (UBID) নম্বর

ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন (UBID) নম্বর সব ধরনের ডিজিটাল কমার্স ব্যবসার জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফেসবুক পেজ অথবা নিজের ই-কমার্স ওয়েবসাইট যে ভাবেই অনলাইন ব্যবসা করা হোকনা কেন। আপানকে UBID নিবন্ধন করে নিতে হবে। 

সুসংবাদ হল আপনি অনলাইনেই UBID রেজিস্ট্রেশনের জন্য দরখাস্ত করতে পারবেন। এর জন্য কোন আবেদন ফি নেই। আবেদন করার ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে আপনাকে ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন (UBID) নম্বর দেয়া হবে। আপনি নিচের দেয়া লিংকে আবেদন করতে পারবেন।

ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন (UBID) নম্বর আবেদন করুন।

বাধ্যতামূলক ডিজিটাল ব্যবসা নিবন্ধন ও পরিদর্শন

ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন (UBID) অথবা নম্বর পারসোনাল রিটেইল অ্যাকাউন্ট নম্বার (PRA) যেকনো দুইটির একটি এবং তার সাথে ট্রেড লাইসেন্স, TIN, ভ্যাট নিবন্ধন ও প্রদর্শন করতে হবে। নিবন্ধন ও পরিদর্শন মার্কেটপ্লেস, ফেসবুক বা ওয়েবসাইটসহ সব ধরনের ডিজিটাল ব্যবসার জন্য বাধ্যতামূলক।

অনুমূদিত, নিষিদ্ধ এবং বিধিবদ্ধ পণ্য ও সেবাসমূহ

বাংলাদেশে আইনের আওতায় প্রচলিত সকল বৈধ পণ্য ও সেবা ই-কমার্স ব্যবসার মাধ্যেমে বিক্রয় করা যাবে। দেশের সংশ্লিষ্ট সকল প্রচলিত আইন ডিজিটাল ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

মাল্টি লেভেল মার্কেটিং বা নেটওয়ার্ক ব্যবসা, জুয়া, নেশা দ্রব্য, বিস্ফোরক দ্রব্য অথবা অন্য কোন অবৈধ পণ্য বা সেবা বিক্রয় করা যাবে না। ভেজাল, নকল, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বিক্রয় করা যাবে না। 

কপিরাইট বা মেধাস্বত্ব নিয়ম মেনে পণ্য বা সেবা বিক্রয় করতে হবে।

চিকিৎসা এবং ঔষধ সামগ্রী বিক্রয়ের জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহন করতে হবে। দাহ্য পদার্থ যেমন জলানি তেল, কেমিক্যাল ইত্যাদি পণ্য বিক্রয়ের জন্য বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহন করতে হবে। যেকোনো ধরনের লটারি বা র‍্যাফেল ড্র আয়োজন করার পূর্বে অনুমোদন নিতে হবে।

কোন ধরনের অর্থ ব্যবসা অথবা অর্থের বিকল্প ব্যবস্থা যেমন ক্যাশব্যাক, গিফট ভাউচার, ডিজিটাল ওয়ালেট ব্যবস্থা চালু বা পরিচালনা করার পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে অনুমতি গ্রহন করতে হবে।

 

 

ব্যাক্তিগত তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, নিরাপত্তা ও ব্যবহার সম্মতি

ওয়েবসাইটে বিশেষ কোন সফটওয়্যার যেমন গুগল আনালিটিক্স, ফেসবুক পিক্সেল অথবা কুকি থাকলে ক্রেতাদের আগেই অবহিত করতে হবে।

ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হলে টার্মস এন্ড কন্ডিশন পড়া নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন হলে চেক বক্স দিতে হবে। ( এটি এখনই বাধ্যতামূলক করা হয়নি, তবে দেশের বাইরের ক্রেতা থাকলে এবং অদুর ভবিষ্যতের জন্য করে রাখা উত্তম। কারন এখন অপশনাল হলেও অদূর ভবিষ্যতে এটি বাধ্যতামূলক করার সম্ভবনা প্রবল।)

ব্যবসায় স্বচ্ছতার জন্য ৬ বছর পর্যন্ত ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত সকল তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে।

পণ্যের মজুদ, ক্রয়-বিক্রয়, ডেলিভারি পদ্ধতি, পরিবর্তন, ফেরত এবং রিফান্ড

বাংলা ভাষায় পণ্যের ক্রয়-বিক্রয়, পণ্য পরিবর্তন ও ফেরত, মুল্য ফেরত তার সাথে ডেলিভারি পদ্ধতি ও সময় ও অন্যান্য শর্তাবলী লিপিবদ্ধ করে প্রদর্শন করতে হবে। প্রয়োজনে ইংরেজিসহ একাধিক ভাষায়ও এসব তথ্য দেয়া থাকতে পারে কিন্তু বাংলায় অবশ্যই তথ্য প্রদর্শন করতে হবে। 

সকল পণ্যের মজুদ সংখ্যা প্রদর্শন করতে হবে। পণ্য মজুদ সংখ্যা বিক্রয়ের সাথে সাথে হাল নাগাদ হতে হবে। পণ্য আউট অফ স্টক(out of stock) হলে তা প্রদর্শন করতে হবে এবং কোনভাবেই বিক্রয় মুল্য/পেমেন্ট নেয়া যাবে না।

নিত্য পণ্য বা খাদ্য সামগ্রী যা গণনা করা যায় না তাতে স্টকের পরিবর্তে “Available for delivery” কথাটি লিখতে হবে।

সম্পূর্ণ মুল্য পরিশোধের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পণ্য ডেলিভারি পারসন অথবা ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।

যদি পণ্য নিজের স্টকে না থাকে তাহলে মুল্যের ১০% এর অতিরিক্ত অগ্রিম রাখা যাবে না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এসক্রো সার্ভিসের মাধ্যমে ১০০% মুল্য অগ্রিম নেয়া যাবে।

ক্রেতা-বিক্রেতা একই শহরের হলে অর্ডার গ্রহনের ৫ দিনের মধ্যে এবং ভিন্ন শহর অথবা গ্রামে হলে ১০ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি করতে হবে।

নিত্য পণ্য, পচনশীল দ্রব্যের ক্ষেত্রে ডেলিভারির সময় আরও কম হবে এবং ক্রেতাকে আগে থেকেই পরিস্কার ভাবে অবহিত করতে হবে।

পণ্যের সাথে মুদ্রিত বিল বা রসিদ দিতে হবে। রসিদে প্রদেয় ও প্রদত্ত ভ্যাট বা ট্যাক্স (যদি থাকে) উল্লেখ্য করতে হবে।

পণ্যের রেটিং ও রিভিউ, অভিযোগ ও প্রতিকার 

পণ্য অথবা সেবার রেটিং অথবা রিভিউ ব্যবস্থা থাকতে হবে। কোন ফেক রেটিং বা রিভিউ দেয়া যাবে না। ক্রেতার দেয়া রিভিউ মুছা বা ডিলিট করা যাবে না।

অভিযোগ গ্রহন করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা থাকতে হবে। ফোন নম্বর, ইমেইল ও অন্যান্য অভিযোগের মাধ্যম সুস্পষ্টভাবে উল্লেক্ষ্য করতে হবে।

অভিযোগ প্রাপ্তির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ক্রেতার সাথে যোগাযোগ করে সমাধান করতে হবে।

অনিবার্য দৈব্য কারনে (Force majeure) অর্ডার দেয়া পণ্য ডেলিভারি সম্ভব না হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্রেতাকে জানাতে হবে এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সম্পূর্ণ টাকা রিফান্ড করতে হবে। কোনভাবেই ক্রেতাকে টাকা ফেরত দেবার পরিবর্তে অন্য পন্য কিনতে বাধ্য করা যাবে না।

বিক্রেতা ১০ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দিতে ব্যর্থ হলে, যেই মাধ্যমে (যেমন বিকাশ, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক ট্রান্সফার) পণ্যের অগ্রিম মুল্য সংগ্রহ করা হয়েছে, সেই মাধ্যমে ক্রেতাকে ফেরত দিতে হবে।

ক্যাশবেক বা মুল্য ছাড় এর ঘোষিত অর্থ বিক্রয় সেবা সম্পন্ন হওয়ার পর বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের ওয়ালেটে রাখা যাবে না।

পরিশেষ

এই সকল নির্দেশিকা উদ্যোগক্তাদের জন্য কিছুটা ঝামেলাপূর্ণ মনে হতে পারে কিন্তু ই-কমার্স ব্যবসা বিকাশের জন্য এটি একটি সময় উপযোগী পদক্ষেপ। আপানি যেই মাধ্যমেই ই-কমার্স অথবা ডিজিটাল কমার্স ব্যবসা করে থাকেন না কেন নির্দেশিকা মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। 

আমরা আপনাকে গেজেটেড ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ নিজে পড়ার জন্য এবং এর আরও নিখুত ব্যাখ্যার জন্য উকিলের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার জন্য সুপারিশ করছি। নিচের দেয়া লিংকে যেয়ে আপনি গেজেট টি পড়তে পারবেন। বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নির্দেশিকার গেজেট Bangladesh Digital eCommerce Operation Guideline 2021

খুশির সংবাদ হল আপনি যদি দেশী-কমার্স দিয়ে ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনা করলে কমপ্লায়েন্স সংক্রান্ত সকল ধরনের সহায়তা দেয়া হয়। উপরন্তু দেশী-কমার্সের সফটওয়্যার সিস্টেম এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে সর্বোচ্চ পরিমান বিক্রেতার সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। তাই আপনি দেশী-কমার্স দিয়ে ভাবনামুক্ত ব্যবসা করতে পাড়বেন। দেশী-কমার্স ফ্রী তে টেস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।

আপানর যদি ই-কমার্স সংক্রান্ত কিছু জানার থাকে তাহলে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন অথবা আমাদের ইমেইল করুন [email protected] ঠিকানায়।

*দায়বর্জন-বিবৃতি: এই নিবন্ধে প্রকাশিত বিশ্লেষণ এবং মতামত সম্পূর্ণরূপে নিজস্ব এবং শিক্ষাগত উদ্দেশ্যে লেখা। সরকারি আইন এবং বিধিবদ্ধ নির্দেশিকা সরকারি কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যার উপর নির্ভরশীল। বিষয়বস্তুর উপর মতামতের জন্য দেশীকমার্সকে দায়ী করা যাবে না।

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার (Google tag manager) এর কাজ ও ব্যবহার

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার (Google tag manager) এর কাজ ও ব্যবহার
ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করলে অথবা ইন্টারেস্ট থাকলে আপনি হয়তো গুগল ট্যাগ ম্যানেজার (GTM) এবং ফেসবুক পিক্সেল সম্পর্কে শুনে থাকবেন। গুগল ট্যাগ ম্যানেজার এডভান্স লেভেলের মার্কেটিঙের কাজে সহায়তা করবে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রফেশনাল কাজ করতে চাইলে গুগল ট্যাগ ম্যানেজার (GTM) সম্পর্কে আপনার অবশ্যই ধারনা রাখা উচিৎ।

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার (GTM) কি?

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার (GTM) একটি বিনামূল্যের সার্ভার সাইড ট্যাগিং টুল, যা ওয়েবসাইটের কোড পরিবর্তন না করেই মার্কেটিং ট্যাগ ইনস্টল, সংরক্ষণ ও পরিচালনা করে।

মার্কেটিং ট্যাগ হলো ছোট ছোট কোড (code snippets) যা ব্যবহারকারীর ক্রিয়াকলাপ ট্র্যাক করে এবং ডেটা সংগ্রহ করে। মার্কেটিং ট্যাগের সবচেয়ে সাধারণ উদাহরণ হলো গুগল ট্যাগ, যা Google Analytics এবং Google এর অন্যান্য পণ্যগুলি ইনস্টল করতে ব্যবহৃত হয়।

অন্যান্য উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে Google Analytics ইভেন্ট কোড, Google Ads conversion scripts, মেটা পিক্সেল কোড এবং রি-মার্কেটিং ট্যাগ।

Google tag manager sample code

গুগল অ্যানালিটিক্স ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম গুলিতে ডেটা সংগ্রহ ও অন্যান্য কাজ করার জন্য ওয়েবসাইটের কোডে এই জাতীয় ট্যাগ((উপরের ছবি) রাখতে হবে। 

ট্যাগগুলি বা অন্যান্য ওয়েবসাইট উপাদান ভুলে যাওয়ার, হারানোর বা ভাঙ্গার ঝুঁকি থাকে প্রতি বার কোড পরিবর্তন ও সংযোজনের সময়।

ওয়েবসাইট কোডের পরিবর্তে GTM তার সফ্টওয়্যার থেকে মার্কেটিং ট্যাগগুলি ইনস্টল, পরিচালনা এবং স্থাপন করার অনুমতি দিয়ে এই সমস্যাগুলি হ্রাস করে। যখন প্রয়োজন তখনই সফ্টওয়্যারটি ওয়েবসাইটে ছোট ছোট কোড এবং মার্কেটিং ট্যাগ প্রয়োগ করে।

তাই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় হঠাৎ করে ওয়েবসাইট অচল হবে না।

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার কি জন্য ব্যবহার করা হয়?

ট্যাগ ম্যানেজার যেকোনো ধরনের ইভেন্ট বা ব্যবহারকারীর আচরণ ট্র্যাক করতে দেয়।

এখানে সাধারণভাবে ট্র্যাক করা কিছু ইভেন্ট এর উদাহরণ রয়েছে:

  • লিঙ্ক ক্লিক(Link clicks)
  • বাটন ক্লিক(Button clicks)
  • ফর্ম জমা (Form submissions)
  • রূপান্তর (Conversions)
  • শপিং কার্ট পরিত্যাগ (Shopping cart abandonment)
  • কার্টে আইটেম যোগ করা (Adding items to cart)
  • কার্ট থেকে আইটেম সরানো (Removing items from cart)
  • ফাইল ডাউনলোড (File downloads)
  • স্ক্রোল আচরণ (Scroll behavior)
  • ভিডিও ভিউ (Video views)
  • কল টু অ্যাকশন (CTA) পারফরম্যান্স (Call to action performance)
  • বিষয়বস্তুর সারণী (TOC) ক্লিক (Table of contents clicks)
  • কাস্টম ঘটনা (Custom events)

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার কিভাবে কাজ করে?

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার একটি মাত্র ছোট জাভাস্ক্রিপ্ট কোড দিয়ে কাজ করে। আপনার সাইটে কোড যোগ করে আপনি যে সমস্ত ট্যাগ পরিচালনা করতে চান তার জন্য এটি একটি আধার হিসাবে কাজ করে।

যখন একজন ব্যবহারকারী একটি ট্যাগ ট্রিগার করে (যেমন, একটি লিঙ্কে ক্লিক করে বা একটি পৃষ্ঠা লোড করে), GTM কোডটি পুনরুদ্ধার করে ওয়েবসাইটের কোডে প্রয়োগ করে। তারপর, GTM ট্যাগটি কার্যকর করে।

অন্য কথায়, যখন একজন ব্যবহারকারী ট্রিগার করে GTM শুধুমাত্র একটি ট্যাগ প্রয়োগ করে এবং এক্সিকিউট করে । এটি একটি ওয়েবসাইটে কোডের মোট পরিমাণ হ্রাস করে এবং বাস্তবায়ন ত্রুটির ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

ট্যাগগুলি কখন ছোট ছোট কোড চালাতে হবে তা নির্ধারণ করতে অন্যান্য GTM উপাদানগুলি যেমন ট্রিগার এবং ভেরিয়েবল এর সাথে কাজ করে।

ট্যাগ (Tags) কি?

ট্যাগ হল বিশ্লেষণ, মার্কেটিং, এবং সাপোর্ট প্ল্যাটফর্মের ছোট ছোট কোড যা সাইট ও অ্যাপের সাথে একীভূত হয়ে কাজ করে।

যেমন Google Analytics এ, ওয়েবসাইট ভিজিটরদের তথ্য সংগ্রহ করতে ট্যাগ ব্যবহার করে।

এই ক্ষেত্রে, Google ট্যাগ সাইট থেকে তথ্য একটি সংযুক্ত Google Analytics সম্পত্তিতে পাঠাতে দেয়।

GTM-এর মাধ্যমে কোড না লিখেই ট্যাগ তৈরি, পরিচালনা এবং প্রকাশ করতে পারেন৷

choose tag type

ট্যাগের উদাহরণ

নিম্নে কিছু সাধারণ ট্যাগের উদাহরণ। এই টুল ও প্ল্যাটফর্মগুলি প্রায়ই GTM-এর সাথে ইনস্টল করা হয়:

  • গুগল বিশ্লেষক (Google Analytics)
  • গুগল বিজ্ঞাপন রূপান্তর ট্র্যাকিং (Google Ads conversion tracking)
  • পেজ ইম্প্রুভ (PageImprove)
  • ক্রেজি এগ (Crazy Egg)
  • হটজার (Hotjar)
  • ইমপ্যাক্ট হিরো (ImpactHero)
  • পিনইন্টারেস্ট ট্যাগ (Piniterest tag)
  • লিঙ্কডইন অন্তর্দৃষ্টি (LinkedIn Insight)
  • টুইটার ইউনিভার্সাল ওয়েব ট্যাগ (Twitter Universal Web Tag)
  • ফেসবুক/মেটা পিক্সেল (Facebook/Meta Pixel)
  • স্প্লিট সিগন্যাল (Split Signal)
  • এপিকিউএস (Appcues)
  • হাবস্পট (HubSpot)
  • ইন্টারকম (Intercom)
  • মিক্সপ্যানেল (Mixpanel)
  • সেলস ফোর্স (Salesforce)
  • কাস্টম ইভেন্ট এবং ট্র্যাকিং (Custom events and tracking)

ট্রিগার (Triggers) কি?

কখন ট্যাগ গুলি ফায়ার করা উচিত তার নির্দেশাবলী হলো ট্রিগার  ।

পেজ ভিউস (page views), ফর্ম জমা এবং লিঙ্ক ক্লিক ট্রিগারগুলির উদাহরণ। যখন একজন ব্যবহারকারী একটি পৃষ্ঠা দেখেন বা একটি লিঙ্কে ক্লিক করেন, তখন সংশ্লিষ্ট ট্যাগটি ফায়ার হবে।

প্রতিটি ট্যাগে একটি ট্রিগার বরাদ্দ করতে হবে যাতে ট্যাগ ম্যানেজার জানতে পারে কোন পরিস্থিতিতে কোন ট্যাগটি ফায়ার করতে হবে।

গুগল অ্যানালিটিক্সের মতো অ্যানালিটিক্স প্ল্যাটফর্মগুলি সাধারণত ট্রিগার হিসাবে পেজ ভিউ ব্যবহার করে। আপনি ব্যবহারকারীর ভিজিট করা প্রতিটি পৃষ্ঠা থেকে বিশ্লেষণ করা তথ্য চান।

বিকল্পভাবে, আপনি শুধুমাত্র একটি রূপান্তর ট্র্যাকিং ট্যাগ চালু করতে চাইতে পারেন যখন একজন ব্যবহারকারী তাদের কার্টে একটি আইটেম রাখে। অথবা সম্ভবত যখন তারা চেকআউট প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করে।

যখন প্রতিটি ট্যাগের নির্দিষ্ট ঘটনা ঘটে, তখন এর ট্রিগার ট্যাগটিকে ফায়ার করতে বলে।

অন্যথায়, সেই ট্যাগটি ফায়ার হবে না এবং GTM কোড স্নিপেট (snippet) চালাবে না।

আপনি কখন ট্যাগগুলি ফায়ার করতে চান তা নির্দিষ্ট করতে ট্রিগার গুলিতে ফিল্টার যুক্ত করতে পারেন।

উদাহরণস্বরূপ, আপনি কেবল চেকআউট পৃষ্ঠাগুলিতে ট্যাগ ফায়ার করতে চাইতে পারেন।

এই ক্ষেত্রে, আপনি একটি ফিল্টার যোগ করতে পারেন যা ট্যাগটিকে শুধুমাত্র URL-এ “/চেকআউট/” থাকলেই ফায়ার করতে বলে ।

একটি ট্যাগে একাধিক ট্রিগার থাকতে পারে।

GTM triggers

ট্রিগারের উদাহরণ

এখানে কিছু সর্বাধিক ব্যবহৃত ট্রিগার রয়েছে:

  • পৃষ্ঠা দর্শন (Page views)
  • লিঙ্ক ক্লিক (Link clicks)
  • বাটন ক্লিক (Button clicks)
  • ফর্ম জমা (Form Submissions)
  • স্ক্রোল গভীরতা (Scroll depth)
  • পেইজে কাটানো সময় (Time spent on page)
  • কাস্টম ইভেন্ট (Custom event)

ভেরিয়েবল (Variables) কি?

ভেরিয়েবল হল অতিরিক্ত তথ্যের টুকরো যা GTM-কে ট্যাগ বা ট্রিগার ফায়ার করার প্রয়োজন হতে পারে। এটি ট্যাগ বা ট্রিগারকে কি করতে হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করতে সাহায্য করে।

উদাহরণ স্বরূপ, “Constant” এবং “Google Analytics Settings” হল সাধারণ ভেরিয়েবল। উভয়ই সাধারণত Google Analytics অ্যাকাউন্ট আইডি (যেমন, ইউনিভার্সাল অ্যানালিটিকসে “ট্র্যাকিং আইডি” এবং GA4-এ “পরিমাপ (measurement) আইডি” সংজ্ঞায়িত করতে ব্যবহৃত হয়।

আপনি যখনই একটি Google Analytics ট্যাগ তৈরি করবেন, আপনাকে ট্র্যাকিং বা পরিমাপ আইডি লিখতে হবে। এটি ক্লান্তিকর হতে পারে, কারণ বেশিরভাগ সময়ই আমরা এই আইডিগুলি মুখস্থ রাখিনা। এর পরিবর্তে, আপনি একটি ভেরিয়েবল তৈরি করতে পারেন যা কেবল আপনার আইডি সংরক্ষণ করে।

তারপর, যখনই আপনি একটি নতুন ট্যাগ তৈরি করেন যার জন্য এই তথ্যের প্রয়োজন হয়, তখন কেবল আপনার তৈরি ভেরিয়েবলটি যোগ করলেই হবে।

GTM Variables

ভেরিয়েবলের উদাহরণ

নিম্নে সাধারণ কিছু ভেরিয়েবল:

  • ধ্রুবক (Constant)
  • গুগল এনালিটিক্স সেটিংস (Google Analytics settings)
  • URL এ ক্লিক করুন (Click URL)
  • আইডি ক্লিক করুন (Click ID)
  • ক্লাস ক্লিক করুন (Click class)
  • পৃষ্ঠা URL (Page URL)
  • ফর্ম আইডি (Form ID)
  • স্ক্রোল গভীরতা থ্রেশহোল্ড (Scroll depth threshold)

গুগল ট্যাগ ম্যানেজারের সুবিধা

যদিও ট্যাগ ম্যানেজারের জন্য কিছু প্রযুক্তিগত জ্ঞান প্রয়োজন, তবুও এটি বিপণনকারীদের (marketers) প্রচুর সময় ও সংস্থান(resources) বাঁচায়। এটি বিনামূল্যে করা যায়।

এখানে কিছু সুবিধা আছে:

  • ডেভেলপারদের উপর নির্ভরতা হ্রাস: ডেভেলপারদের সহায়তা ছাড়াই দ্রুত ও  সহজভাবে বিপণন ট্যাগ যোগ এবং পরিচালনা করা যায়।
  • পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ডিবাগিং: একটি লাইভ সাইটে যাওয়ার আগে পূর্বরূপ দেখা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ডিবাগ করা যায়। এই বৈশিষ্ট্যটি ত্রুটি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এবং একটি লাইভ বা স্টেজিং সাইটে পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করে।
  • ব্যবহারকারীর অনুমতি নিয়ন্ত্রণ: শুধুমাত্র অনুমোদিত ব্যক্তিরা মার্কেটিং সেটআপে পরিবর্তন করতে বা অনুমোদন করতে পারে।
  • সংস্করণ: যেকোনো পরিবর্তন করার পরপরই  GTM কোডের একটি নতুন সংস্করণ ও লগ তৈরি করে। ফলে অতীত এবং বর্তমান পরিবর্তনসমূহ দেখতে এবং প্রয়োজনে পূর্ববর্তী সংস্করণগুলিতে ফিরে যাওয়া যায়৷
  • কর্মক্ষেত্র: GTM একে অপরের অগ্রগতি ওভাররাইট না করেই দলের সদস্যদের একসাথে কাজ করার জন্য একাধিক কর্মক্ষেত্র তৈরি করে।
  • অনেক জনপ্রিয় টুলের সহজ কনফিগারেশন: কমিউনিটি টেমপ্লেট গ্যালারি থেকে কোড স্নিপেট বা বিদ্যমান টেমপ্লেটগুলি (যেমন, Google Analytics, Pinterest, Google Ads, ইত্যাদির জন্য) ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের কোডে সহজে টুল এবং ট্র্যাকিং ট্যাগ যোগ করা যায়।
  • ট্যাগ স্টোরেজ এবং ব্যবস্থাপনা: Google ট্যাগ ম্যানেজার মার্কেটিং ট্যাগ এবং ট্র্যাকিং কোডগুলিকে এক জায়গায় একত্রিত করে এবং প্রয়োজনমতো ওয়েবসাইট কোডে ইনজেক্ট করে। যা কম ত্রুটি সহ সরঞ্জাম এবং ট্র্যাকিং কোডগুলি যোগ করতে, সরাতে এবং আপডেট করতে দেয়।

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার বনাম গুগল অ্যানালিটিক্স

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার এবং গুগল অ্যানালিটিক্স ভিন্ন দুটি টুল যা একসাথে ব্যবহার করে ওয়েব অ্যানালিটিক্স ও ব্যবহারকারীর আচরণ সম্পর্কে রিপোর্ট পাওয়া যায়।Google ট্যাগ ম্যানেজার হল একটি ট্যাগ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম যা মার্কেটিং ট্যাগ ও  থার্ড-পার্টির ছোট ছোট কোড সংরক্ষণ ও পরিচালনা করে। ট্যাগ ম্যানেজারে কোনো বিশ্লেষণ বা প্রতিবেদন নেই। অন্যদিকে, Google Analytics হল বিশ্লেষণ, রূপান্তর ট্র্যাকিং(conversion tracking) এবং প্রতিবেদনের জন্য ব্যবহৃত সফ্টওয়্যার।

google analytics 4

আপনি একটি ওয়েবসাইটে Google Analytics ইনস্টল এবং স্থাপন করতে GTM ব্যবহার করতে পারেন। 

Google Analytics সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন এখানে।

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার কিভাবে সেট আপ করবেন

Google ট্যাগ ম্যানেজার সেট আপ করতে, আপনার Google অ্যাকাউন্টে লগ ইন করুন এবং ট্যাগ ম্যানেজার (tag manager) এ যান।

আপনার ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের জন্য অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে “create account” ক্লিক করুন।

GTM create account

একটি “Account Name” লিখুন এবং আপনার দেশ নির্বাচন করুন। আপনার এক বা একাধিক ওয়েবসাইটের জন্য Google প্রতিটি ব্যবসার জন্য শুধু একটি অ্যাকাউন্ট তৈরির প্রস্তাব করে। আপনার কোম্পানির নাম আপনার অ্যাকাউন্টের নাম হতে পারে।

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার সেটআপ

এরপর, একটি  “container name” লিখুন।

GTM container setup

আপনার কন্টেইনার হল কোডের সেই টুকরো যা আপনি Google ট্যাগ ম্যানেজার দিয়ে কাজ করাতে আপনার ওয়েবসাইটে যোগ করবেন। আপনি সাধারণত প্রতি ওয়েবসাইটে একটি কন্টেইনার ব্যবহার করবেন। তাই আপনার ওয়েবসাইটের নাম বা URL হতে পারে আপনার কন্টেইনারের নাম।

তারপর, আপনার “Target Platform” নির্বাচন করুন। ওয়েবসাইটের জন্য,”Web” নির্বাচন করুন। “Create” এ ক্লিক করে আপনার ট্যাগ ম্যানেজার অ্যাকাউন্ট ও  আপনার প্রথম কন্টেইনার তৈরি করুন।

এরপরে, আপনি দুটি পপ-আপ দেখতে পাবেন।

GTM target platforms

প্রথমটি হল গুগল সেবার শর্তাবলী। পৃষ্ঠার নিচে বক্সে টিক চিহ্ন দিয়ে শর্তাবলীতে সম্মত হন। এর জন্য আপনার স্ক্রিনের উপরের ডান দিকের কোণায় “Yes”  ক্লিক করুন ।

দ্বিতীয় পপ-আপ ছোট ছোট কোড (code snippets) দেখায় যা GTM ইনস্টল করতে আপনার সাইটে যোগ করতে হবে।

GTM code snippet

 

বিঃদ্রঃ: আপনি যদি ওয়েবসাইটের কোড পরিবর্তন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করেন তবে একজন ডেভেলপারকে জিজ্ঞাসা করুন।

 

প্রথম কোড স্নিপেট তথ্য বের করতে JavaScript ব্যবহার করে। আপনার ওয়েবসাইটের পৃষ্ঠাগুলির <head> বিভাগে যতটা উপরে সম্ভব স্নিপেটটি রাখুন।

GTM header code

দ্বিতীয় স্নিপেট একটি HTML iframe। আপনার ওয়েবপৃষ্ঠাগুলিতে প্রথম <body> ট্যাগের পরেই সেই কোডটি রাখুন।

এটার মত:

GTM body code

(HTML iframe উপাদানটি অপশনাল, অর্থাৎ এটি না দিলেও গুগল ট্যাগ ম্যানেজার কাজ করবে। কিন্তু আপনি <body> এর মধ্যে HTML iframe কোড টি দিয়ে রাখলে যে ব্যবহারকারীরা তাদের ব্রাউজারে জাভাস্ক্রিপ্ট বন্ধ করলে GTM তখনও কাজ করে।)

একবার আপনি অ্যাকাউন্ট সেট আপ করে এবং দুইটি কোড স্নিপেট সঠিকভাবে ইনস্টল করার পরে, আপনি Google ট্যাগ ম্যানেজার ব্যবহার শুরু করতে প্রস্তুত।

 

 

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার কিভাবে ব্যবহার করবেন

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার কিভাবে ব্যবহার করতে হয়, আপনার সাইটে কিভাবে Google Analytics 4 প্রপার্টি কানেক্ট করতে হয় সে সম্পর্কে নিম্নে বর্ণনা করা হল।

প্রো টিপ: আপনার বিশ্লেষণকে ডবল হিট নিবন্ধন করা থেকে বিরত করতে, আপনি গুগল ট্যাগ ম্যানেজার ইনস্টল করে এবং এগিয়ে যাওয়ার আগে আপনার ওয়েবসাইট থেকে মূল Google Analytics কোড সরিয়ে ফেলা নিশ্চিত করুন।

শুরু করতে, আপনার গুগল ট্যাগ ম্যানেজার অ্যাকাউন্ট এ লগ ইন করুন।

নতুন ট্যাগ তৈরি করতে “নতুন ট্যাগ” বা “একটি নতুন ট্যাগ যোগ করুন”  ক্লিক করুন।

add new tag

আপনার ট্যাগের জন্য একটি নাম দিন।

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার নেম

এরপর, “ট্যাগ কনফিগারেশন” এ ক্লিক করুন।

tag configuration

এবং  তালিকা থেকে “Google Analytics: GA4 কনফিগারেশন” নির্বাচন করুন ।

tag type

আপনার GA4 প্রপার্টির জন্য পরিমাপ আইডি (measurement Id) দিন। বিকল্পভাবে, ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য আপনার পরিমাপ আইডি (measurement Id) রাখার জন্য একটি ভ্যারিয়েবল (variable) তৈরি করতে পারেন।

GA4 configuration

ট্রিগারিং” বক্সে ক্লিক করুন।

Triggering

এবং পপ আপ যে তালিকা থেকে  “(All Pages)” নির্বাচন করুন।

তারপর “Save” এ ক্লিক করুন। 

আপনার কর্মক্ষেত্র ওভারভিউ পৃষ্ঠায় (workspace overview page) ফিরে যান এবং নতুন পরিবর্তন পরীক্ষা করতে Preview” তে  ক্লিক করুন।

GTM preview

পরবর্তী স্ক্রিনে আপনার ওয়েবসাইটের URL লিখুন এবং একটি নতুন উইন্ডোতে আপনার সাইট খুলতে এবং পরীক্ষা ও ডিবাগিং করতে Connectক্লিক করুন।

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার অ্যাসিস্ট্যান্ট

একবার আপনি যুক্ত হয়ে গেলে, আপনার সাইটটি একটি নতুন পপ-আপে খুলবে; আপনার উইন্ডোর নিচের ডান কোণায় ট্যাগ অ্যাসিস্ট্যান্ট দিয়ে। সেই উইন্ডোটি খোলা রাখুন এবং প্রিভিউ পৃষ্ঠায় ফিরে যান। প্রিভিউ পৃষ্ঠায় বলা উচিত, “Connected!”

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার connected

Continue” তে ক্লিক করার পর  প্রিভিউ উইন্ডোতে আপনার ট্যাগগুলি ডিবাগ করা শুরু করুন।

preview window

আপনি আপনার ওয়েবসাইট চালানোর সময় প্রতিটি পৃষ্ঠায় আপনার তৈরি নতুন GA4 কনফিগারেশন ট্যাগ ফায়ারিং দেখতে পাবেন। এর মানে আপনার ট্যাগ বাস্তবায়ন সফল হয়েছে।

যখন আপনি ডিবাগিং সম্পন্ন করবেন, নতুন খোলা উইন্ডোগুলো বন্ধ করুন এবং আপনার পৃষ্ঠার ওভারভিউতে ফিরে যান। এবং  আপনার পরিবর্তন জমা দিতে Submit” এ ক্লিক করুন।

গুগল ট্যাগ ম্যানেজার সাবমিট

আপনার পরিবর্তনের বর্ণনামূলক Version Name” এবং Version Description দিতে ভুলবেন না।

সবশেষে, আপনার লাইভ ওয়েবসাইটে আপনার পরিবর্তনগুলি কার্যকর করতে এবং GA4 সক্ষম করতে Publish” এ ক্লিক করুন। এটা আপনার ওয়েবসাইটে আপনার কনটেইনারের একটি নতুন সংস্করণ প্রকাশ করবে। আপনি এবং অন্যান্য ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইট নেভিগেট করার সাথে সাথে আপনার GA4 সম্পত্তির “Realtime”  তথ্য রিপোর্টে দেখতে পাবেন।

demo site google analytics

প্রো টিপ: আপনার ট্যাগগুলি প্রকাশ করার আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ডিবাগ করার জন্য সর্বদা “প্রিভিউ” ফাংশন ব্যবহার করুন। গুগল ট্যাগ ম্যানেজার সম্পর্কে আপনার কোন মতামত অথবা জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট করুন।

গুগল অ্যানালিটিক্স (Google Analytics) কি? শেখা ও ব্যবহার।

গুগল অ্যানালিটিক্স (Google Analytics) কি? শেখা ও ব্যবহার।
গুগল অ্যানালিটিক্স (Google Analytics) হল সর্বাধিক জনপ্রিয় ডিজিটাল অ্যানালিটিক্স টুল। আজকাল ডেটা সংগ্রহ করা অনেক সহজ। কিন্তু, ডেটা তখনই মূল্যবান হয় যখন আপনি আপনার ওয়েবসাইট ও ব্যবসার উন্নতির জন্য ডেটাভিত্তিক সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করা শুরু করেন।

Google Analytics কি?

Google Analytics হল Google এর একটি ওয়েব বিশ্লেষণ সেবা যা ওয়েবসাইট ট্র্যাফিক ট্র্যাক করে ও রিপোর্ট করে। এটি একটি বিনামূল্যের ওয়েবসাইট ট্র্যাকিং টুল ও প্ল্যাটফর্ম, যা ব্যবহারকারীরা কীভাবে আপনার ওয়েবসাইটের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট (interact) করে তার ডেটা সংগ্রহ করে। একবার ডেটা সংগ্রহ করা হলে, গুগল অ্যানালিটিক্স ডেটাকে সহজে বোধগম্য ইন্টারেক্টিভ রিপোর্টে (interactive reports) সাজায়, যা আমরা প্ল্যাটফর্মে দেখতে পাই। বর্তমানে Google Marketing Platform ব্র্যান্ডের মধ্যে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে এবং এটি ওয়েবসাইট পরিমাপের জন্য সবচেয়ে গৃহীত টুল হিসাবে অব্যাহত রয়েছে।

নিজে দেখতে ভিজিট করুন https://analytics.google.com/

Google Analytics এর একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

ওয়েবসাইট এর ডেটা সবসময় সুন্দর ও বোঝা সহজ ছিল না। মূলত, যদি লোকেরা জানতে চায় যে তাদের সাইটে কি ধরনের ট্র্যাফিক পেয়েছে, তবে তাদের সার্ভার লগ পড়তে হবে। সার্ভার লগ সাইটে ঘটে যাওয়া প্রতিটি কাজের জন্য তথ্যের একটি তালিকা বের করে দেবে। তথ্যটি মূল্যবান প্রমাণিত হলেও, এটি বোঝা কঠিন ছিল।

জিনিসগুলিকে কিছুটা সহজ করার জন্য কোম্পানিগুলি লগ ফাইলগুলি সংকলন করতে এবং প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন তৈরি করতে শুরু করে। Urchin নামে একটি কোম্পানি লগ ফাইলের রিপোর্ট তৈরি করে এবং খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। Google ২০০৫ সালে Urchin কিনে নেয় এবং Google Analytics তৈরি ও ব্র্যান্ডিং করার প্রক্রিয়া শুরু করে।

Google Analytics

গুগল অ্যানালিটিক্স (Google Analytics) ছিল প্রথম প্ল্যাটফর্ম। এটি একটি সহজ ভিজ্যুয়ালাইজেশন টুল ছিল যা লগ ফাইলের ডেটা সহজে পড়ার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এটি আজকে আমরা যে প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করি তার অনুরূপ, কিন্তু অনেক কম ডেটার। কারণ, তখন Google ব্যবহারকারীদের সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ ও বিক্রি করেনি।

Universal Analytics

ইউনিভার্সাল অ্যানালিটিক্স(Universal Analytics) ২০১৪ সালে বিটা (beta) থেকে বেরিয়ে আসে এবং মানদন্ডে পরিণত হয়। ব্যবহারকারীদের ডিভাইসে বৈচিত্র্য প্রসারের কারণে ইউনিভার্সাল অ্যানালিটিক্স অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। ইন্টারনেট এবং ডিভাইস জুড়ে ব্যবহারকারীদের ট্র্যাক করার প্রয়োজনের হয়  মোবাইল ডিভাইস ও ট্যাবলেটের উত্থানের কারণে। ২০২১ সাল পর্যন্ত, ইউনিভার্সাল অ্যানালিটিক্স ছিল পছন্দের প্ল্যাটফর্ম। 

Google Analytics 4

২০২০ সালের অক্টোবরে Google Analytics প্ল্যাটফর্মের নতুন সংস্করণ প্রকাশ করা হয় Google Analytics 4 নামে। Google Analytics 4 হল একটি বিশ্লেষণ সেবা যা আপনাকে আপনার ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ জুড়ে ট্রাফিক এবং ব্যস্ততা পরিমাপ করতে সক্ষম করেGA4 হল অ্যাপ+ওয়েব বৈশিষ্ট্যগুলির একটি নতুন সংস্করণ এবং এটি সমস্ত ডেটাকে এক ধারায় নিয়ে আসে। GA4 মেশিন লার্নিং (machine learning) এর উপর অনেক বেশি নির্ভর করে এবং ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বিশ্লেষণের (predictive analytics) মাধ্যমে বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস দিতে সাহায্য করে। GA4 ইউনিভার্সাল অ্যানালিটিক্স থেকে পূর্ববর্তী ডেটা নিয়ে আসে না।

Google Analytics কিভাবে কাজ করে?

Google Analytics আপনার ওয়েবসাইট পরিদর্শনকারী লোকেদের সংখ্যা পরিমাপ করতে এবং রিপোর্ট করতে কুকিজের (cookies) উপর নির্ভর করে। কুকিজ(cookies) হল ব্রাউজারে সংরক্ষিত ছোট তথ্যের অংশ। ব্যবহারকারীদের আলাদা করার জন্য Google Analytics কুকিতে ছদ্ম/বেনামী শনাক্তকারী রয়েছে। Google Analytics কুকিতে থাকা তথ্য সংগ্রহ করে, এটিকে অন্যান্য বিশদ বিবরণের সাথে একত্রিত করে এবং তারপর Google এর সার্ভারে পাঠায়, যেখানে ডেটা প্রসেস করে রিপোর্ট করা হয়।

Google Analytics এর নতুন সংস্করণ, Google Analytics 4 বা GA4 নামে পরিচিত, এখনও কুকিজের উপর নির্ভর করে, কিন্তু Google বলেছে যে তারা এটিকে কুকি ছাড়া কাজ করার জন্য ডিজাইন করেছে। এটি কীভাবে কাজ করবে তার বিশদ বিবরণ এখনও দুর্লভ, তবে এটি সম্ভবত Google Analytics ট্যাগ মৌলিক বিবরণ সংগ্রহ করবে বলে মনে হচ্ছে। তাই আজ, অনন্য ব্যক্তিদের এবং তাদের আচরণ সম্পর্কে শনাক্ত করতে ও রিপোর্ট করতে গুগল অ্যানালিটিক্স প্রধানত জাভাস্ক্রিপ্ট ট্র্যাকিং কোড (JavaScript tracking code) এবং কুকিজের সংমিশ্রণ ব্যবহার করে । 

আপনার ওয়েবসাইট থেকে Google Analytics-এ যেকোনো ডেটা পেতে, আপনাকে প্রথমে আপনার সাইটে ট্যাগটি স্থাপন করতে হবে। যখন সেই ট্যাগ সঠিকভাবে স্থাপন করা হয়, Google Analytics তখন ডেটা সংগ্রহ করা শুরু করবে। ডেটা তারপর ম্যাট্রিক্স ও মাত্রা (metrics & dimensions) নিয়ে গঠিত রিপোর্টে রাখা হয়।

আপনি প্লাটফর্মে যে সংখ্যাগুলি পাবেন ম্যাট্রিক্স (metrics) তা তৈরি করে । একটি সংখ্যা দিয়ে পরিমাপ করা যেতে পারে যে কোনো একটি মেট্রিক. ব্যবহারকারীর সংখ্যা, ক্রয়ের সংখ্যা, রূপান্তরের মান, সাইটে গড় সময় ইত্যাদি।

কিভাবে মেট্রিক্স বিভক্ত করা যেতে পারে তা হলো মাত্রা (dimensions)। উৎস অনুসারে ব্যবহারকারীর সংখ্যা, ল্যান্ডিং পৃষ্ঠার মাধ্যমে সাইটে গড় সময়, ডিভাইসের প্রকার অনুসারে রূপান্তরের সংখ্যা ইত্যাদি।

Google Analytics কেন ব্যবহার করবেন ?

Google Analytics সম্পর্কে সম্ভবত সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হল এটি বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন। একটি ওয়েবসাইট থাকলেই যে কেউ এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করতে পারে। যার ফলে ব্যবহারকারীদের একটি বৃহত্তর সম্প্রদায় তৈরি হয়েছে যারা তথ্য ও নির্দেশিকা শেয়ার করে। গুগল অ্যানালিটিক্স কীভাবে ব্যবহার করতে হয় সে সম্পর্কে প্রচুর সংস্থান (resources) রয়েছে, এটি সমস্ত স্তরের ব্যবহারকারীদের জন্য ব্যবহার করা সহজ করে তোলে।

এটি আরেকটি সুবিধা হল Google Analytics যেকোনো দক্ষতার বিশ্লেষকদের জন্য সহায়ক। গুগল অ্যানালিটিক্সের সাহায্যে, আপনি আপনার সাইটের পারফরম্যান্সে আরও মৌলিক স্তরের বিশ্লেষণ অর্জন করতে পারেন, তবে উন্নত বিশ্লেষণের সুযোগও রয়েছে। কোন মার্কেটিং চ্যানেলগুলি আপনার সাইটে ট্রাফিক চালায় সে সম্পর্কে আপনি শুধু তথ্যই পাবেন না, তার সাথে আপনি এটিও দেখতে পারেন যে ব্যবহারকারীরা দিনের বিভিন্ন সময়ে কোন সাইট থেকে এসেছেন, তারা কোন ল্যান্ডিং পৃষ্ঠায় এসেছেন এবং তাদের জন্য পৃষ্ঠাটি লোড হতে কত সময় লেগেছে৷

এছাড়াও, Google আমাদের সাইটে যে তথ্য ট্র্যাক করছে তা কৌশলগত পরিকল্পনার জন্য অত্যন্ত উপকারী। গুগল অ্যানালিটিক্সের সংখ্যাগুলি ব্যবহার করে, আপনি কেবলমাত্র অন্তর্দৃষ্টির উপর নির্ভর করার বিপরীতে ডেটা-চালিত কৌশল সহ আপনার সাইটে পরিবর্তন করতে সক্ষম হবেন।

অবশেষে, বিপণনকারী হিসাবে, আমরা প্রচুর Google টুল ব্যবহার করি: অনুসন্ধান কনসোল, Google বিজ্ঞাপন, ডেটা স্টুডিও, Google ট্যাগ ম্যানেজার, Google অপ্টিমাইজ এবং আরও অনেক কিছু। এই সমস্ত কিছু Google Analytics-এর সাথে নির্বিঘ্নে একত্রিত হয়।

Google Analytics কিভাবে সেটআপ করবেন ?

Google Analytics দিয়ে কাজ শুরু করা সহজ। শুধু Google এর মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম ওয়েবসাইট দেখুন, এবং শুরু করতে বোতামে ক্লিক করুন। আপনাকে আপনার Google অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে বলা হবে।

এর পরে, আপনাকে আপনার Google Analytics অ্যাকাউন্টের নাম দিতে হবে এবং আপনার ওয়েবসাইট সম্পর্কে বিশদ লিখতে হবে। তারপরে আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটে ট্র্যাকিং কোডটি ইনস্টল করতে বলা হবে। এর জন্য আপনাকে 

Google Analytics>Admin>Data Streams> Add Streams বাটন ক্লিক করে আপনার প্রপার্টির ধরন যথাঃ Web, iOS app, Android app select করতে হবে। এরপর Google Analytics আপানর জন্য একটি ট্র্যাকিং কোড তৈরি করে দিবে যা আপনার ওয়েবসাইটে ইন্সটল করতে হবে। 

google analytics add data streams demo
গুগল অ্যানালিটিক্স (Google Analytics) add data streams ডেমো অ্যাকাউন্ট

সাধারণত তিন ভাবে এটি ইন্সটল করা যায়।

১। ওয়েবসাইটের সকল পেজের হেডার সেকশনে কোড কপি পেস্ট করে।

<head>

এখানে ট্র্যাকিং কোডটি পেস্ট করুন

</head>

২।Google ট্যাগ ম্যানেজার ব্যবহার করা যায়। কিভাবে গুগল ট্যাগ ব্যবহার করতে হয় সেই সম্পর্কে পরে আর বিশদ আলোচনা করা হবে।

৩। CMS(কন্টেন্ট ম্যনেজমেন্ট সিস্টেম) ভিত্তিক বা অন্যান্য ওয়েবসাইট প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করলে আপনাকে ট্র্যাকিং আইডি প্রবেশ করার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা দেয়া হবে। সেখানে কপি পেস্ট করতে হবে। যেমন দেশীকমার্স দিয়ে বানানো ওয়েবসাইটে  ট্র্যাকিং আইডি প্রবেশ করতে দেয়ার জায়গা আছে। যাতে আপনি সহজেই Google Analytics বা অনান্য পিক্সেল কোড ইন্সটল করতে পারবেন। যেমন, আপনি দেশীকমার্সে গুগল এনালিটিক্স, গুগল ট্যাগ ম্যানেজার, ফেসবুক বা পিক্সেল আইডি বসাতে পারবেন।

 

DeshiCommerce google tag manager install
দেশী কমার্সে ট্র্যাকিং কোড ইন্সটল করার জায়গা।

ট্র্যাকিং কোড ইন্সটল হওয়ার সাথে সাথেই Google Analytics আপনার ওয়েবসাইটে আসা লোকজনের তথ্য সংগ্রহ করে। তারপরে আপনি পূর্বে-কনফিগার করা প্রতিবেদনগুলি ব্যবহার করতে পারেন এবং ব্যবহারকারীরা কীভাবে আপনার ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত হয় তা বোঝার জন্য কাস্টম প্রতিবেদন তৈরি করতে পারেন।

 

Google Analytics থেকে কি রিপোর্ট পেতে পারেন?

Google Analytics 4-এ বেশ কয়েকটি ডিফল্ট রিপোর্ট (default reports) রয়েছে, যা আপনি আপনার ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা বোঝার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। আপনি ডিফল্ট রিপোর্টগুলিও কাস্টমাইজ (customize) করতে পারেন এবং আপনার পছন্দমতো নিজস্ব প্রতিবেদন তৈরি করতে পারেন। এখানে কয়েকটি প্রতিবেদনের উদাহরণ রয়েছে:

১. Acquisition Reports (অধিগ্রহণ প্রতিবেদন)

অধিগ্রহণ প্রতিবেদনে লোকেরা আপনার ওয়েবসাইট কীভাবে খুঁজে পায় সে সম্পর্কে বিশদ বিবরণ অন্তর্ভুক্ত করে। ডিফল্টরূপে, প্রতিবেদনগুলি আপনাকে ‘ডিফল্ট চ্যানেল গ্রুপিং’ দেখায়। উদাহরণস্বরূপ, Google এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন থেকে আপনার সমস্ত বিনামূল্যের ট্র্যাফিক রিপোর্টগুলিকে ‘অর্গানিক অনুসন্ধান’ হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হবে। এই শীর্ষ-স্তরের ভিউ ছাড়াও, আরও বিবরণ দেখার জন্য আপনি প্রতিবেদনগুলি সামঞ্জস্য করতে পারেন আপনার ওয়েবসাইট খুঁজে পেতে ব্যক্তিগত উৎসের উপর ভিত্তি করে।

২. Engagement Reports (এনগেজমেন্ট রিপোর্ট)

এনগেজমেন্ট রিপোর্টে আপনার ওয়েবসাইটে লোকেরা যে পৃষ্ঠাগুলি দেখেছে সেগুলির বিবরণ এবং সংগৃহীত অন্যান্য ইভেন্টগুলি অন্তর্ভুক্ত করে। আপনি যদি রূপান্তরগুলি (conversions) ঠিক করে থাকেন তবে আপনি Google Analytics-এ পাঠানো ইভেন্টগুলির জন্য মোট রূপান্তর এবং আয় দেখতে পাবেন৷

৩. Monetization Reports (নগদীকরণ প্রতিবেদন)

আপনি একবার ই-কমার্স ট্র্যাকিং প্রয়োগ করার পরে, আপনি নগদীকরণ প্রতিবেদনে লোকেদের কেনা পণ্যগুলির বিশদ বিবরণ দেখতে পাবেন। আপনার ওয়েবসাইটের উপর নির্ভর করে, লোকেরা তাদের কার্টে (cart) কতবার আইটেম যোগ করে, এবং চেকআউট প্রক্রিয়া শুরু করে ইত্যাদির বিবরণ পাঠাতে পারেন।

৪. Demographic Reports (ডেমোগ্রাফিক রিপোর্ট)

জনসংখ্যার প্রতিবেদনগুলি আপনাকে আপনার শ্রোতা সদস্যদের ভৌগলিক অবস্থান এবং তাদের ভাষা বুঝতে দেয়। আপনি যদি Google Signals চালু করে থাকেন তবে আপনি তাদের বয়স, লিঙ্গ এবং আগ্রহের ক্ষেত্রগুলি সম্পর্কে দেখতে পাবেন (যা Google Ads-এ টার্গেটিং বিকল্পগুলির সাথে সারিবদ্ধ)।

৫. Technology Reports (প্রযুক্তি রিপোর্ট)

আপনি প্রযুক্তি রিপোর্ট (technology reports) ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইটে আসার জন্য লোকেরা যে ডিভাইসগুলি ব্যবহার করছেন সে সম্পর্কে রিপোর্ট করতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে ব্রাউজার, অপারেটিং সিস্টেম, স্ক্রিন রেজুলেশন এবং আরও অনেক কিছু।

৬. Advertising Reports (বিজ্ঞাপন রিপোর্ট)

Google Analytics 4-এ ‘Advertising‘-এ নেভিগেট করে অ্যাট্রিবিউশন রিপোর্টগুলি (attribution reports) পাওয়া যায়। এই রিপোর্টগুলি আপনাকে দেখায় যে লোকেরা বিভিন্ন মার্কেটিং টাচপয়েন্টের (marketing touchpoints) সাথে জড়িত থাকে আপনার ওয়েবসাইটে আসার আগে। এটি আপনার মার্কেটিং কার্যক্রমকে আরও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে।

Google Analytics একটি শক্তিশালী ডিজিটাল বিশ্লেষণ টুল। লোকেরা কীভাবে আপনার ওয়েবসাইটের সাথে জড়িত তা বুঝতে পারলে, আপনি গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সহায়তা পাবেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করতে পারেন, নেভিগেশন উন্নত করতে পারেন এবং আপনার দর্শকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় জিনিস তৈরি করতে পারেন।

কিভাবে গুগল অ্যানালিটিক্স (Google Analytics) শিখে সার্টিফিকেট নিতে হয়?

গুগল অ্যানালিটিক্স শেখার জন্য গুগলের ফ্রি কোর্স আছে। যে কেই চাইলেই ফ্রি তে শিখে সার্টিফিকেট নিতে পারবেন। তবে আপানকে অবশ্যই পরীক্ষা পাশ করতে হবে।

গুগল অ্যানালিটিক্স শেখার জন্য আপনাকে নিচের লিঙ্কে যেয়ে সাইন আপ করতে হবে।

গুগল এনালিটিক্স সার্টিফিকেট

৭ টি সেরা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) টুল

৭ টি সেরা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) টুল
আজ আমরা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং করার ৭ টি সেরা টুল সম্পর্কে ধারনা দেবার চেষ্টা করবো। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং করার পদ্ধতি এবং কৌশল সম্পর্কে গত সপ্তাহে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা Search Engine Marketing (SEM) ৭ টি সেরা টুল হল

  1. হাবস্পট অ্যাড ট্র্যাকিং সফটওয়্যার – HubSpot’s Ad Tracking Software
  2. এসএমইরাশ – SEMrush
  3. গুগল ট্রেন্ডস – Google Trends 
  4. কি ওয়ার্ড টুল ডট আইও – Keywordtool.Io
  5. গুগল অ্যাডস কি ওয়ার্ড প্লান্যার – Google Ads Keyword Planner
  6. স্পাইফু – SpyFu 
  7. ওয়ার্ড স্ট্রিম WordStream

1.হাবস্পটের বিজ্ঞাপন ট্র্যাকিং সফটওয়্যার (HubSpot’s Ad Tracking Software)

কেউ মজা করার জন্য বিজ্ঞাপনে খরচ করে না। বিজ্ঞাপনে খরচ করা হয় কারণ এতে লিড তৈরি(generate leads) হয় যা থেকে ব্যাবসায় মুনাফা হয় ৷ HubSpot বিজ্ঞাপন টুল আপনার নির্ধারিত ট্র্যাফিক ও ক্লিক মেট্রিক্স (traffic and click metrics) এর বাইরে গিয়ে বিজ্ঞাপনগুলি ঠিক কীভাবে ক্রেতাদের প্রভাবিত করছে তা বিশ্লেষণ করতে করতে সহায়তা করে৷ এটি বুঝতে সাহায্য করে যে কোন বিজ্ঞাপনগুলি আসলে কাজ করে, SEM কে মার্কেটিং এর কার্যক্রম হিসাবে ন্যায্যতা দেয় এবং একে মার্কেটিং এর অন্যান্য কাজের সাথে একীভূত করে।

Hubspot ad tracker
Hubspot ad tracker

2. এসএমইরাশ SEMrush

SEMRush এর মাধ্যমে ব্যাপক হারে কিওয়ার্ড খোঁজা, কিওয়ার্ড র‌্যাঙ্ক ট্র্যাকিং (keyword rank tracking) করা, সাইট অডিট(site  audit) করা, ট্রাফিক বিশ্লেষণসহ আরও অনেক কিছু করা যায়। অর্গানিক ভাবে লং-টেইল (long -tail)  কিওয়ার্ডের জন্য র‌্যাঙ্ক করার সুযোগ খোঁজার জন্য SEMRush হল দারুন একটি টুল (tool)। এছাড়াও বিভিন্ন SEM কাজের জন্য টুলটি ব্যবহার করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, SEMRush ব্যবহার করে প্রতিযোগীদের কেন্দ্রীভূত মার্কেটিং কার্যক্রম জানা যায় এবং তাদের আঞ্চলিক উপস্থিতি বিশ্লেষণ করা যায়। এর ফলে, নির্দিষ্ট কিওয়ার্ডের পিছনে কত টাকা খরচ করতে চান তা বের করা যায়।

এছাড়াও, SEMRush আপনার প্রধান বিজ্ঞাপণ প্রতিযোগীদের খুঁজে বের করতে, তারা কোন কিওয়ার্ডে বিড করছে তা বের করতে এবং তাদের বিজ্ঞাপনের গঠন অধ্যয়ন করতে পারে।এটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যদি  নিজস্ব টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপনের কৌশল তৈরি এবং SERPs-এ অন্যান্য ব্যবসাগুলিকে কীভাবে ছাড়িয়ে যাবেন তা অনিশ্চিত থাকে।

SMERUSH
SMERUSH

3. গুগল ট্রেন্ডস – Google Trends 

Google Trends একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল, ভাষা বা সময় জুড়ে নির্দিষ্ট কিওয়ার্ডের অনুসন্ধানের পরিমাণ ট্র্যাক করতে দেয়। যার ফলে কোন শব্দগুলি বেশি অনুসন্ধান হয়েছে এবং কোনটি নয় তা জানা যায়৷ যেহেতু জনপ্রিয়তা কমছে এমন কিওয়ার্ডের পিছনে টাকা খরচ করবেন না, তাই এটি SEM কার্যক্রমের জন্য একটি অবিশ্বাস্যভাবে দরকারী টুল।

বিশেষ করে, ই-কমার্স ব্যবসার জন্য, একটি নির্দিষ্ট ভৌগলিক এলাকায় পণ্য বা সেবার প্রতি আগ্রহের পরিমাপ জানার জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি শক্তিশালী মাধ্যম। নির্দিষ্ট স্থানে টাকা খরচ করে মার্কেটিং কার্যক্রমের ফলে দীর্ঘমেয়াদী অর্থ সাশ্রয় হবে।

Google Trends
Google Trends

4. কি ওয়ার্ড টুল ডট আইও – Keywordtool.Io

Keywordtool.Io-এর সবচেয়ে ভালো বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি হল এর Google, Bing, YouTube, Amazon, Instagram, Twitter, এবং App Store-এ ট্যাপ করার ক্ষমতা, যাতে বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে কিওয়ার্ড এর খোঁজাখুঁজিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায় এবং আরও ভাল লক্ষ্য করা যায় কার্যক্রমের জন্য। উপরন্তু, টুলটি বেস কিওয়ার্ড নেয় এবং  শব্দ ও বাক্যাংশের বৈচিত্র্য তৈরি করে, যার ফলে সম্ভাব্য কিওয়ার্ডগুলির একটি আরও বিস্তৃত তালিকা তৈরি করা যায়। যা আপনি বিজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত করতে চান।

Keyword.io tool
Keyword.io tool

Keywordtool.Io-এর বিনামূল্যের সংস্করণে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সরবরাহ করতে Google Autocomplete ব্যবহার করে। এতে প্রতিটি অনুসন্ধান শব্দের (searched keyword) জন্য 750টি পর্যন্ত লং-টেইল কিওয়ার্ড ও কিওয়ার্ড প্রস্তাব করে। এছাড়াও, Google-এ অনুসন্ধানের প্রবণতা(trends) বিশ্লেষণ করতে টুলটি ব্যবহার করা যায়, যাতে কাঙ্খিত কিওয়ার্ড এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে পাচ্ছে কি না তা জানা যায় এবং দীর্ঘমেয়াদে এটি মার্কেটিং কার্যক্রমকে সহায়তা করে।

5. গুগল অ্যাডস কি ওয়ার্ড প্লান্যার – Google Ads Keyword Planner

যেহেতু বিজ্ঞাপনগুলি Google এ দেখাতে চান, তাই ব্যবসার জন্য প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ডগুলি নিয়ে গবেষণা করতে এবং সময়ের সাথে সাথে নির্দিষ্ট কিওয়ার্ডগুলির জন্য অনুসন্ধানগুলি কীভাবে পরিবর্তিত হয় তা ট্র্যাক করতে Google বিজ্ঞাপন কিওয়ার্ড প্ল্যানার ব্যবহারের চিন্তা করাই ভালো। কিওয়ার্ড প্ল্যানার সম্ভাব্য কিওয়ার্ডগুলির একটি ছোট তালিকা করতে সাহায্য করবে। ফলে এটি আপনার ব্যবসার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী কিওয়ার্ড বেছে নিচ্ছেন তা নিশ্চিত করবে।

তারওপর , কিওয়ার্ড প্ল্যানার প্রতিটি কিওয়ার্ডের জন্য প্রস্তাবিত বিড অনুমান দেবে, যাতে আপনি নির্ধারণ করতে পারেন কোন কিওয়ার্ডগুলি বিজ্ঞাপনের বাজেটের নাগালে। সর্বোপরি, একবার আদর্শ কিওয়ার্ড খুঁজে পেলে এবং একটি বিজ্ঞাপন প্রচারাভিযান চালু করার জন্য প্রস্তুত হলে,  এই টুলের মধ্যে থেকেই  করতে পারেন।

Google ads keyword planner
Google ads keyword planner

 

6.স্পাইফু – SpyFu

আপনি কি কখনো দেখতে চান যে প্রতিযোগীরা Google-এ কোন কিওয়ার্ড কিনছে, অথবা তারা কোন বিজ্ঞাপন পরীক্ষা(ad test) চালিয়েছে। SpyFu-এর সাহায্যে, আপনি ঠিক সেটাই করতে পারবেন। শুধু একটি ডোমেন অনুসন্ধান করুন, এবং আপনি Adwords-এ ব্যবসার জন্য কেনা প্রতিটি কিওয়ার্ড দেখতে পাবেন, প্রতিটি অর্গানিক কিওয়ার্ড যার জন্য তারা র‌্যাঙ্ক করেছে, এবং গত ১২ বছরে তাদের কাছে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপন । এছাড়াও, আপনি Google, Bing এবং Yahoo-এ আপনার নিজস্ব খরচ এবং SEO র‌্যাঙ্কিং নিরীক্ষণ করতে পারেন।

SpyFu
SpyFu

7. ওয়ার্ড স্ট্রিম WordStream

WordStream হল একটি বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাপনা সমাধান যা আপনাকে গবেষণা, পরিমাপ এবং পারফরম্যান্সের জন্য বিজ্ঞাপন অপ্টিমাইজ করতে সাহায্য করতে পারে। ডাটা বিশ্লেষণের জন্য উন্নত রিপোর্টিং বৈশিষ্ট্য এবং দারুন বিজ্ঞাপন তৈরির প্রবেশাধিকার পান৷ উপরন্তু, WordStream এ আপনার মার্কেটিং কার্যক্রম সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করার জন্য সতর্কতামূলক ও  কর্মপ্রবাহের সরঞ্জাম (workflow tools) আছে।

Word stream
Word stream

উপরের সরঞ্জাম এবং কার্যকর কৌশল সহ, SEM হতে পারে লিড তৈরির জন্য দুর্দান্ত কৌশল। তাই আজই আপনার পিপিসি (ppc) প্রচারাভিযান শুরু না করার কোন কারণ নেই।

 

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং করার কৌশল ও পদ্ধতি

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং করার কৌশল ও পদ্ধতি
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা Search Engine Marketing (SEM) হলো ব্যবসা বৃদ্ধি এবং নতুন গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় গুলোর মধ্যে একটি। 

দীর্ঘমেয়াদে ট্র্যাফিক আকর্ষণ করার জন্য অর্গানিক মার্কেটিং কৌশল ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কখনও কখনও, SERPs বা  Search Engine Result Pages -এ টাকা খরচ না করে সঠিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যায় না এবং সেখানেই SEM সর্বাধিক কার্যকর হয়৷

মনে করুন, Google এ “email marketing tools ” টাইপ করলাম এবং এতে কি হলো:

Woopecker.co  getmail.io এ স্পষ্টতই কার্যকর Search Engine marketing বা SEM কৌশল রয়েছে। তাই দেখা যাচ্ছে  “summer shoes” পেজ  “Sponsored” ভাবে মানে টাকা খরচ বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে। উপরে ছবিতে সবুজ চিহ্নিত স্থানে তাদের দেওয়া সবই বিজ্ঞাপন। সামগ্রিকভাবে অনুসন্ধানের ফলাফল হিসাবে তারা প্রথম স্থান পেয়েছে। 

মোট পণ্য অনুসন্ধানের ৩৫% Google-এ করা হয় এবং গড়ে এর স্থায়ীত্ব মাত্র এক মিনিট। একজন ব্যবহারকারী পণ্য বা সেবার অনুসন্ধান করলে, এটি গুরুত্বপূর্ণ যে আপনার ব্যবসার পণ্য বা সেবা SERP (Search Engine Result Pages) এর শীর্ষে দেখাবে। এটি সবসময় অর্গানিক ভাবে সম্ভব হয় না, বিশেষ করে যখন অন্যান্য ব্যবসাগুলি তাদের পণ্যগুলি আপনার উপরে দেখানোর জন্য টাকা খরচ করে। এরকম হলে SEM কৌশলে বিনিয়োগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই নির্দেশিকা ব্যবহার করে গুগলে বিজ্ঞাপন প্রচার (Google Ads campaign) তৈরি করুন যা আপনার ব্যবসা বৃদ্ধি করবে।

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) কি?

SEM, বা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং, হলো টাকা খরচ করে সার্চ ইঞ্জিন যেমন google, bing তে বিজ্ঞাপন দেওয়া। এর ফলে আপনার ব্যবসার পণ্য বা সেবাগুলি সার্চ ইঞ্জিন ফলাফল পৃষ্ঠাগুলিতে (SERPs) নিশ্চিত দৃশ্যমান হয়। যখন একজন ব্যবহারকারী একটি নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড টাইপ করে, তখন SEM আপনার ব্যবসার বিজ্ঞাপণকে সেই অনুসন্ধানের ফলাফল হিসাবে দেখায়।

আমরা সেরা SEM গুলির তালিকা করেছি। যা ব্যবহার করে SERPs-এ, SEM এর মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে আপনি আপনার পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন সঠিকভাবে দিতে পারবেন। একই সাথে SEM Ad Auction বা বিজ্ঞাপন নিলামের উপাদানগুলিও তালিকা করেছি৷

সার্চ ইঞ্জিন বিজ্ঞাপন নিলাম (Ad Auction) কিভাবে কাজ করে

আপনি SEM-এ বিনিয়োগ করতে চাইলে, আপনাকে একটি বিজ্ঞাপন নিলামে বা Ad Auction এ অংশগ্রহণ করতে হবে। এখানে, Google Ads বেছে নেয়া হয়েছে  Ad Auction এর উদাহরণ হিসাবে।

সহজ কথায়, আপনি যে Google ad বা বিজ্ঞাপন দেখতে পান তা  SERPs-এ দেখানোর আগে একটি বিজ্ঞাপন নিলামের (ad auction) মধ্য দিয়ে যায়। একটি বিজ্ঞাপন নিলামে অংশগ্রহণ  করার জন্য, আপনাকে প্রথমে আপনি যে কিওয়ার্ডগুলিতে বিড (bid) করতে চান তা চিহ্নিত করতে হবে। এবং প্রতিটি  কিওয়ার্ডের প্রতি ক্লিকে আপনি কত টাকা খরচ করতে ইচ্ছুক তাও স্পষ্ট করতে হবে৷

যখন Google নির্ধারণ করে যে আপনি যে কিওয়ার্ডগুলিতে বিড (bid) করেছেন সেগুলি ব্যবহারকারীর অনুসন্ধান ক্যোয়ারীতে (search query) রয়েছে, তখন আপনি বিজ্ঞাপন নিলামে (ad auction) প্রবেশ করবেন৷

কিওয়ার্ড (keyword) সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন প্রতিটি অনুসন্ধানে দেখা যাবে না। কিছু কিওয়ার্ডের বিজ্ঞাপন পৃষ্ঠায় অন্তর্ভুক্ত করার মতো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নেই। উদাহরণস্বরূপ, যখন “মার্কেটিং কি?” টাইপ করা হয় গুগলে, তখন কোন বিজ্ঞাপন দেখতে পাওয়া যায় না।

এমনকি যদি আপনার কিওয়ার্ড একটি বিজ্ঞাপনের জন্য উপযুক্তও হয়, তার মানে এই নয় যে আপনি বিডিং (bidding) জিতবেন৷ বিজ্ঞাপন নিলাম (ad auction) প্রধানতো দুটি বিষয় বিবেচনা করে SERP-তে কোন কোন বিজ্ঞাপনগুলি স্থান পাবে তা নির্ধারণ করার সময়। এক, আপনার সর্বোচ্চ বিড (bid) এবং দুই, আপনার বিজ্ঞাপন গুণমানের স্কোর (ads quality score)।

গুণমান স্কোর হল আপনার বিজ্ঞাপন, কিওয়ার্ড এবং ল্যান্ডিং পৃষ্ঠাগুলির (landing pages) মানের প্রাক্কলন। আপনি আপনার Google Ads অ্যাকাউন্টে কিওয়ার্ডের “status” কলামে আপনার গুণমান স্কোর খুঁজে পাবেন, যা ১-১০ এর মধ্যে হিসাব করা হয়। বিজ্ঞাপনটি একজন ব্যবহারকারীর সাথে যত বেশি প্রাসঙ্গিক, সেইসাথে একজন ব্যবহারকারীর ক্লিক করার এবং একটি ল্যান্ডিং পৃষ্ঠার অভিজ্ঞতা কতটা ভালো, এসবই সামগ্রিক গুণমান স্কোরকে প্রভাবিত করে।

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং কৌশল (SEM Strategy)

SEM কৌশল হলো একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে অর্থপ্রদত্ত অনুসন্ধান বিজ্ঞাপনগুলিকে (paid search ads) অপ্টিমাইজ (optimize) করা৷ একটি ভাল কৌশল তৈরি করার জন্য, আপনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে কীভাবে অর্থপ্রদত্ত বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্মগুলি (paid ads platforms) কাজ করে এবং বিভিন্ন বিষয় (variables) পরিচালনা করে যা কিওয়ার্ড, বাজেট এবং কপি করার কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করে৷

প্রদত্ত বিজ্ঞাপনের (paid ads) সাফল্যের জন্য, SEM কৌশল তৈরির সময় কিছু বিষয় রয়েছে যা বিবেচনা করতে হবে: 

কি ওয়ার্ড ইন্টেন্ট (Keyword Intent)

Pay-per-click বা PPC কৌশল শুরু হয় বিড (bid) করার জন্য সঠিক কিওয়ার্ড বেছে নেওয়ার মাধ্যমে। এর মানে হল কোন কিওয়ার্ডগুলিতে বিড করতে হবে তা নির্ধারণ করা বা অন্য কথায়, কোন প্রশ্নগুলির জন্য বিজ্ঞাপনটি দেখাতে চান তা নির্ধারণ করা৷ বিজ্ঞাপন শুরু করুন আপনার ব্র্যান্ডের বর্ণনা, পণ্যের বর্ণনা এবং এমনকি প্রতিযোগিতার বর্ণনা দিয়ে ।

যদি বাজেট কম থাকে, তাহলে যে কিওয়ার্ডগুলি কেনার ইচ্ছা রয়েছে সেই গুলিতে বিড করতে পারেন৷ যাইহোক, যদি বাজেট বড় হয়, তাহলে ক্রেতার প্রথম দিকের অনুসন্ধানের কিওয়ার্ডগুলিও বিড করতে পারেন। এমনকি আপনার পণ্যগুলির সাথে ঢিলেঢালাভাবে সম্পর্কিত কিওয়ার্ডগুলিতেও  বিড করতে পারেন৷

কিওয়ার্ডের পরিমাণ এবং প্রতিযোগিতা (Keyword Volume and Competition)

কেউ যদি আপনার নির্ধারিত কিওয়ার্ডগুলো অনুসন্ধান না করে, তাহলে বিজ্ঞাপন থেকে কোনো ফলাফল পাবেন না। একই সময়ে, অত্যন্ত বেশি পরিমাণ কিওয়ার্ড আরও প্রতিযোগিতাকে  আকর্ষণ করে এবং কিছু ক্ষেত্রে, প্রাসঙ্গিকতা হারায়। কিওয়ার্ড খোঁজার সময়, বেশি পরিমাণ প্রাসঙ্গিক এবং কম-প্রতিযোগিতামূলক কিওয়ার্ড খুবই সুবর্ণ জায়গা, কিন্তু সেগুলি খোঁজা সহজ নয়। এটি করা তখন চাহিদা (পরিমাণ) এবং বাজেট (প্রতিযোগিতা) এর মধ্যে একটি ভারসাম্যমূলক কাজ হয়ে ওঠে।

কিওয়ার্ডের খরচ (Keyword Cost)

কিওয়ার্ডের জন্য নির্দিষ্ট বিড (bid) এবং Google এ বিজ্ঞাপনের গুণমান স্কোর (quality score) দ্বারা বিজ্ঞাপনের স্থান নির্ধারণ করা হয়। উচ্চতর বিড এবং উচ্চ মানের বিজ্ঞাপন সেরা স্থান দখল করে। মনে রাখবেন, উচ্চ প্রতিযোগিতার কিওয়ার্ডগুলি বেশি ব্যয়বহুল হয়। খুব কম বিড করার অর্থ হল আপনার বিজ্ঞাপন দেখানো হবে না। তাই আপনি নিশ্চিত করবেন যে, কিওয়ার্ডের জন্য প্রতিযোগিতার উপর ভিত্তি করে কতটা খরচ করতে পারেন।

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং অ্যাকাউন্ট এবং ক্যাম্পেইন স্ট্রাকচার (Account and Campaign Structure)

তাত্ত্বিকভাবে, আপনি আপনার সমস্ত কিওয়ার্ড একত্রে করে মোট লটের (lot) জন্য একটি বিজ্ঞাপন দেখাতে পারেন। কিন্তু আপনার বাজেট মুষ্টিমেয় উচ্চ-ভলিউম কিওয়ার্ড (high volume keywords) খেয়ে ফেলবে এবং মানের স্কোর কমে যাবে। তাই Google বিজ্ঞাপন অ্যাকাউন্ট সঠিকভাবে গঠন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

search engine campaign structure

Google এ  বিজ্ঞাপন প্রচারের (Google Ads campaign organization) জন্য বেশ কয়েকটি স্তর রয়েছে:

  • বিজ্ঞাপন (Ad)- নির্বাচিত কিওয়ার্ডগুলির জন্য প্রদর্শিত কপি।
  • কিওয়ার্ড (Keywords)- যে শব্দগুলোতে বিড করা হয়।
  • বিজ্ঞাপন গোষ্ঠী (Ad Group) – থিম অনুসারে গোষ্ঠীবদ্ধ একইরকম কিওয়ার্ডের সেট।
  • প্রচারাভিযান (Campaign) – বিজ্ঞাপন গোষ্ঠী পরিচালনার জন্য সর্বোচ্চ স্তর।

প্রতিটি স্তরে, কোনটি কাজ করছে এবং করছে না তা নির্ধারণ করা যায়। যার ফলে বিজ্ঞাপণের কার্যকারিতা এবং কীভাবে টাকা খরচ করা হচ্ছে সে সম্পর্কে ভালোভাবে জানা যায়।

 

কপি (Copy)

কিওয়ার্ড বাছাই করা ও  আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর, মানসম্পন্ন বিজ্ঞাপন লিখতে হবে এবং ক্লিক “আয়” করতে হবে।

একটি বিজ্ঞাপন কয়েকটি উপাদান নিয়ে গঠিত:

  • ব্যবসার নাম (Business Name)
  • শিরোনাম (Title)
  • প্রদর্শন URL (Display URL)
  • বর্ণনা (Description)

google ads
গুগল অ্যাড

অনুসন্ধানকারীরা তাদের প্রশ্নের সাথে ঠিক কী খুঁজছে, তা বুঝতে হবে। তারপর একটি দুর্দান্ত বিজ্ঞাপন লিখতে হবে যা সকলের কাছে আপনার ব্যবসার পণ্য বা সেবাকে আকর্ষণীয় করে তোলে।

খেয়াল রাখবেন, সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা SEM কৌশল একবার ঠিক করে ভুলে যাওয়া যাবে না। চলমান PPC (Pay per click) ব্যবস্থাপনা বাজেটের অপচয় দূর করতে, বিজ্ঞাপনের সাথে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে এবং বিড করা কিওয়ার্ডগুলি অপ্টিমাইজ করতে সাহায্য করে। এর ফলে আপনার কার্যক্রম থেকে সর্বোচ্চ ROI নিশ্চিত হয়।

ই-কমার্স মার্কেটিং এর আরও জনপ্রিয় উপায় হল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। সোশ্যাল মিডিয়া সেলস ফানেল এর সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুনঃ  ফেসবুক মার্কেটিং এ সেলস বা বিক্রয় ফানেল কী এবং কিভাবে কাজ করে?

লাইক-ফলো দিয়ে সাথে থাকুন

ক্যাটাগরি

জনপ্রিয় পোস্ট